কবি-বন্ধু

বিনয় মজুমদারের এই কথাগুলি পইড়া পয়লা কি হইতে পারে? মনে হবে, অভিমান! পুরান ফ্রেন্ডদের উপ্রে বিলা হইয়া এইসব কইতেছেন। উনার তো এমনিতেই মাথা ঠিক নাই। একচুয়ালি এইসব উনি মিন করেন নাই, আসলে অভিমানই করতেছেন।

একটু পরে যদি আপনি মাইনাও নেন, বিনয় মজুমদারই তো কইছেন, তারপরও মনে হবে – এইভাবে হয়তো বলেন নাই উনি, পড়তে যতোটা হার্শ লাগতেছে। একটা বয়সের পরে পুরান ফ্রেন্ডদের উপর এইরকম ক্ষোভ, অভিমান থাকেই। একটা ডিসট্যান্স তো তৈরি হয়…

 

পেইজ ১

পেইজ ১

 

পেইজ ২

পেইজ ২

 

বা বেশি ভাবতে গিয়া, আপনি চেইতা গেলেন শেষে, এইটাও ভাবলেন – এইসব পারসোনাল ব্যাপার নিয়া মাথা ঘামানির কি আছে! উনার নিজের কোন বিচার-বুদ্ধি নাই নাকি, ফ্রেন্ডদের কথা শুইনাই খালি চলছেন নাকি! উনি নিজেই কি এই ডিসিশান নেন নাই? আর উনার ফ্রেন্ডরা যদ্দূর পারে, করছেই তো। আর অরাও তো ইয়াং-ই আছিলো, নাকি?

মানে, এইসব আবজাব, অনেককিছুই নিজেদেরকে বুঝানোটা পসিবল। মিথ্যাও না মেবি। কিন্তু ঘটনা যেইটা ঘটছে বইলা বিনয় মজুমদার বলতেছেন, সেইটা যে ঘটে নাই তাও তো না। ঘটছেই তো একরকম; মানে, ফ্যাক্ট হিসাবে কেউ তো ডিনাই করেন নাই, মনেহয়। অ্যাকুইজিশনটা নাহয় না নিলেন। যে, আমি তো এইটা ভাইবা বলছিলাম, ওইটা ভাইবা বলছিলাম, এইরকম চোরাগলিগুলি তো আছেই রিলেশনের।

 

পেইজ ৩

পেইজ ৩

 

পেইজ ৪

পেইজ ৪

 

মাহমুদুল হকের কথাও মনে হইতেছে এখন। উনি মনেহয বি.এ. ফেইল। পাথরের ব্যবসা শুরু করছিলেন। সাহিত্যিক-বন্ধুরা কইতে কইতে উনারে ‘আধ্যাত্মিক’ বানায়া দিলেন। কি যে টেরিবল একটা ব্যাপার। এই আলগা-পিরীত আর পিঠে-ছুরি-মারার জিনিসটা ইউনিভার্সাল কোন ইস্যু বইলা মনেহয় না; এইটা কলকাতার হিস্ট্রিক্যাল ইভেন্টগুলিরে মানতে না পারার একটা নমুনাই। কমলা দাস এই সিমটমগুলি নিয়া কিছু কথা কইছিলেন।

হিন্দি-সিনেমা ‘লাক বাই চান্স’-এ একটা সিন আছে। আগেরদিনের নায়িকার এক মাইয়ারে ইন্ড্রাষ্টিতে স্পেইস দেয়ার লাইগা সিনেমা বানাইবেন এক ডিরেক্টর, মাইয়া যাতে হাইলাইট হয় এর লাইগা নতুন হিরো নিবেন। শেষে দুইজন শর্ট লিস্টেট হয়, ফারহান আখতার হইলো একজন। সে নায়িকার মা’র লগে ফ্লার্ট কইরা একটা চান্স নেয়ার ট্রাই করে। পরে সে বাইরে খাড়ায়া শুনে যে, নায়িকার মা তার ডিরেক্টর-ফ্রেন্ডরে কইতেছে, আরেকটা পোলা যে আছে, তারে তো একটু বেশিই কনফিডেন্ট মনে হইতেছে…। পরে ওয়েটিং স্পেইসে যখন তার কম্পিটিটরের লগে দেখা হয় তখন ফারহান আখতার কয়, তোমারই মনেহয় হইবো, আমারে তো কইছে যে, আমার কনফিডেন্স কম, তোমার মতো কনফিডেন্স তো আমার নাই!  অর কম্পিটিটর তো ফাইনাল স্ক্রীণ-টেস্টে গিয়া আরো কনফিডেন্স দেখায় আর পুরাপুরি বাতিল হইতে পারে!

কবি হওয়াটা তো আর হিরো হওয়ার মতো ঘটনা না। কবিতা লিখলে যেমন কবি হইবেন, সুন্দরী বা বাচাল বা ইন্টেলেকচুয়াল বা বা বা টাইপ গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড থাকলেও হইতে পারবেন; সোসাইটিতে সার্টেন পিপলের লগে রিলেশনশীপ রাখলেও কবি হইতে পারবেন। এইটা মোস্টলি সোশ্যাল একটা ব্যাপার। তেমন সমস্যার কিছু নাই। চাকরি করেন কি চাকরি না-করেন, সব্জি চাষ করেন, সফটওয়ার বানান, টিভিতে খবর পড়েন… যেকোনকিছুই করতে পারেন।

জাস্ট মনে হইলো, এখনো যারা কবি-বন্ধুদের লগে থাকেন, উনাদের করা আপনার কবিতার প্রশংসারে ভালোবাসেন, একটু সাবধান থাইকেন। কবিতা লিইখা যখন ‘শহীদ’ হইবেন, আপনার কবি-বন্ধুদের কথা যখন মনে হইবো, তখন যাতে উনাদেরকে আপনি মাফ কইরা দিতে পারেন।

 

[টেক্সটের ছবিগুলি নির্বাচিত সাক্ষাৎকার – বিনয় মজুমদার (কবি প্রকাশনী, ২০১৬) বই থিকা নেয়া]

 

Leave a Reply