বাংলা একাডেমির ভাষায় মতিকণ্ঠের নিউজের অনুবাদ

 

ফেব্রুয়ারি মাস আসতেছে সামনে। চারদিকে বই ছাপানোর নিউজে আমার মনে ভাষা-প্রেম একটু আগেই চইলা আসছে।

মতিকণ্ঠ পড়ছেন তো? বেশ হিউমারাস না! হিউমিলেশনও আছে। আর হিউমিলেশন আছে বইলাই হিউমার করাটা পসিবল হয়, বেশিরভাগ সময়। এই হিউমিলেশন যতোটা না ঘটনার (মানে, নাই যে সেইটা না), তারচে বেশি ভাষা থিকাই আসে।

মানে ঘটনা, সেইটা যা-ই হোক, এর যে রিপ্রেজেন্টশন, সেইটাই হইলো ঘটনাটা। ঘটনা আসলে ভাষার ভিতর দিয়াই ঘটে। আর ভাষারে আপনি যতো কব্জির জোর দিয়া ঘুরাইতে থাকবেন ঘটনা ততোই ঘটতে থাকবো। এমনিতে পত্রিকা-টিভি-রেডিও’র ভাষাই হইলো আমাদের জীবনের ঘটনা। এর বাইরে গল্প-কবিতা ত থাকলোই।

মানে, আপনি জানেন যে, পাখিটারে কয়, বক-পাখি; এখন আপনি বক-পাখি না কইয়া কইলেন, বগা-পাখি। এতে কইরা বক-পাখি ইন্সট্যান্ট বগা-পাখি হয়া যায় না খালি, তার যে দুইটা পা সেইগুলা ঠ্যাং হয়া যাইতে পারে। পাখি হিসাবে আরোবেশি পাতলা, এমনকি পাখি-ই হইতে পারলো না, মনে করেন। মানে, এইরকম মনে করাটা সম্ভব হইতে পারে। খালি বক-পাখি থিকা বগা-পাখি লিখার কারণেই। আবার ধরেন, আকাশে বকপাখি তো ওড়তেছেই। সেই বক-পাখি ওড়ে বইলাই বগা আর কখনোই পাখি হইতে পারে না।

এখন রিডার হিসাবে এনাফ লিটারেট না হইলে আপনি এই বক-পাখি আর বগা-পাখি’রে আলাদা করতে পারবেন না। আর মজাটা এইখানেই এমপ্লিফাই হইতেছে যে, কেউ কেউ হয়তো বুঝতেছেও না! না-বোঝার যদি কেউ না-থাকে, বোঝাটার মিনিং তৈরি হইতেছে না।

আমি মনে হয় ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে পারতেছি না। এইজন্য ভাবলাম, মতিকণ্ঠের ভাষাটারে অনুবাদ কইরা দেই।

জাস্ট একটা এক্সম্পাল হিসাবেই মতিকণ্ঠের ভাষারে বাংলা একাডেমি’র ভাষায় কনর্ভাট করার চেষ্টা করলাম। মূল লেখা পড়েন (http://bit.ly/1D77UtF), হাইসা নেন।

তারপরে নিচেরটা পড়েন।

তখন কিছুটা বোঝা যাইতে পারে, এই যে ভাষা, এইটা একটা ক্লাস সুপিয়রিটির ঘটনারে কিভাবে আপহোল্ড করে।

_________________________

 

সাংবাদিকতা করে বার্গম্যান আর টাকা খরচ হয় আমার: ড. কামাল

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মনগড়া বিতর্ক সৃষ্টির অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও কানে ধরে দাড়িয়ে থাকার শাস্তি পাওয়ায় বিদেশি সাংবাদিক ডেভিড ব্যার্গম্যানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সংবিধানের প্রনেতা দলের অন্যতম সদস্য, খ্যাতনামা আইনজীবী ও দেশের একমাত্র নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের শ্বশুর গনফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং অনেক রাজনৈতিক জোটের সহায়ক ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের সংবিধানের পিতা সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন ওরফে আইনের ময়দানে কিংবদন্তী ফুটবলার কামাল হোসেন।

আজ আদালতের রায় ঘোষনার পর এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন কামাল হোসেন।

নিজ চেম্বারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান-বিশেষজ্ঞ বলেন, আমি বাংলার সংবিধানের পিতা, সংবিধান-বিশেষজ্ঞ। ডেভিড বার্গম্যান আমার জামাতা। অতএব লক্ষ লক্ষ বৎসর ধরে চলে আসা পারিবারিক রীতি অনুযায়ী বাংলার সংবিধান সম্পর্কে ডেভিডের শালী। আর শালীর সঙ্গে দুলাভাইয়ের সম্পর্ক যে এই বাংলায় কত মধুর, তা বিস্তারিত বলে আপামর দুলাভাইদের চঞ্চল করতে চাই না। অথচ শালীরূপী সংবিধানের সংগে মধুর দুষ্টামি করার কারনে এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ডেভিডকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে দিল। শুধু জরিমানা করেই এই নিষ্ঠুর ট্রাইবুনাল থামে নি, তাকে কানে ধরে কাঠগড়ায় দাঁড় করে রেখেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

এমন শ্বশুর কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি: কামাল

হুহু করে কেঁদে উঠে আইনের ময়দানে কিংবদন্তী ফুটবলার কামাল হোসেন বলেন, যখন সংবিধান লিখতে বসছিলাম, তখন একটি বিশেষ ধারা সংযোজন করে যদি আজ সংবিধান-বিশেষজ্ঞদের ফ্যামিলি মেম্বরদের জন্য সংবিধানের সঙ্গে সকল প্রকার মশকরাকে বৈধ করে দিতাম, আজ আমাদের ডেভিডকে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না, আমার পকেট থেকেও পাঁচ হাজার টাকা খরচ হতো না।

অশ্রু মুছে সংবিধান-বিশেষজ্ঞ বলেন, ডেভিড শালা অকর্মণ্য, কোন কাজকর্ম করে না। সারাদিন ট্রাইবুনালে, নুরুল কবীরের কার্যালয়ে আর মগবাজারে পড়ে থাকে। রাতে বাড়ি এসে বলে, বাবা ভাত খাবো। ওকে লালন পালন করতে গিয়ে আমার চেম্বারের সব আয় রোজগার খরচ হয়ে যাচ্ছে। দুই ঈদে আড়ং থেকে পাঞ্জাবী কিনে দিতে হয়, ব্রান্ডের শাট কোট সুট বুট ঘড়ি ফাউন্টেন পেন ইত্যাদিও আমাকে যোগাতে হয়। নাতী নাতনীর মুখের দিকে তাকিয়ে তাও মেনে নেয়া যায়, কিন্তু এই শালা বিদেশি অকর্মন্য’র ব্লগিং বাবদ জরিমানার টাকাও যদি আমাকে পরিশোধ করতে হয়, তাহলে তো পথের ফকির হয়ে যাব।

এক পর্যায়ে বার্গম্যানের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবিধান-বিশেষজ্ঞ বলেন, হাটহাজারি’র খলিফা আল্লামা শফী হুজুর যা বলেছেন, ঠিক বলেছেন। এই নাস্তিক ব্লগারের সঙ্গে একমাত্র কন্যার বিয়ে দিয়ে আজ আমি ডুবতে বসছি। এই অকর্মন্য ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালায় আর ৫ হাজার টাকা খরচ হয় আমার পকেট থেকে। তার বদলে যদি টবী কেডমেনের শ্বশুর হতাম, আজ আমার এই গরিবি দশা হতো  না।

পকেটে হাত দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে কামাল হোসেন বলেন, বাংলার আর কোন বাবা যেন লন্ডনের ঘরজামাই ঘরে এনে আমার মতো লালবাতি না জ্বালায়।

 

Leave a Reply