অক্টোবর, ২০১৬: ড্রাফটস

রোড অ্যাকসিডেন্ট

কোন একদিন আর্লি সকালবেলা
ধরো, পাঁচটা বা সাড়ে পাঁচটা
খালি রাস্তায়
কোন এক মাইক্রোবাস আইসা
আমার শরীরের উপর তুইলা দিলো তার চাইরটা চাকা…

আমি মইরা গেলে পরে, আমি ছাড়া
এই দৃশ্যের কথা, মনে রাখবে যেই ইয়াং ড্রাইভার
তার মুখটাও আমি দেখতে পাইলাম না…

 

আমি আর আমার টাইম

কোনদিন একটা দিন-ই তো;

সকালের আলো আসে
উঠানে, সরিষা খেতের হলুদে, দূরের নদীতে…

একটা দূরে গিয়া কোনএক দূরে শেষ হয়
তারপরে আশুগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া…

এরপরে আরো আরো না-জানা আর চাইলেই জানতে পারা যায় এইরকম ঘটনা…

ম্যাপে দেখা নাম, জায়গাগুলি, বিভিন্ন শেইপ, বিভিন্ন কালার

স্পেইস তো লিমিটেডই এই দুনিয়ায়
কুয়াকাটাও গিয়া শেষ হয় এর্ন্টাটিকায়।

তখন মনেহয় টাইমের কথা…

চুইয়া চুইয়া পড়তেছে কোন এক স্পেইস বাইয়া

এখন সকাল, এখন বৃষ্টি, এখন রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম…

এখন একটা টিনের বাড়ির সামনে, সবুজ ঘাসের ভিতর ফুটতেছে দুইটা গোলাপি রংয়ের ঘাসের ফুল

প্যাকঁ-কাদায় ভর দিয়া আসতেছে দুপুর…
ভাবতেছে, কোনএকটা দিন একটা দিন-ই তো, আমরার

 

জানা

…কিন্তু জানা কোনদিন, সামান্যভাবে, তোমাকে পাবো না আমি…/আহমেদ মুজিব

হয়তো আমাদের না-জানাগুলির ভীড়ে একটা জানা কোণায় গিয়া বইসা আছে;
তারে আর দেখা-ই যাইতেছে না
শীত আসার আগে শরৎ-এর বাতাসের মতোন
মুছে যাইতেছে, ধীরে

একটা না-দেখার মতোন আমাদের একটা জানা; ছিলো, আছেও মনেহয়

না-থাকা, থাকতে থাকার মতোই তো কোন একটা ঘটনা
শুক্রবার সকালে ইট-ভাঙ্গা বাদ দিয়া কয়েকজন লেবার করতেছে চিল্লা-পাল্লা
সারারাত ঘেউ ঘেউ কইরা ঘুমাইতেছে
সামনের বাসার কুত্তাটা;

তার কথা কইয়া স্পেসিফিক কোন মানুষরে ইন্ডিকেট করতে পারলে

কবিতা হবে না?
হবে তো, হবে না কেন? হবে…

মৃদুমন্দ বাতাসেরা বলে, দুর্গাপূজার ঘ্রাণে
গাছের পাতায় রইদ বসে

শাদা শাদা বিল্ডিংগুলি শরীর শুকায় ওদের,

বিভিন্ন আলোর শেইড বিভিন্ন দিক থিকা আসে
একটা জানা ঘুপটি মাইরা বইসা থাকে অনেকগুলি না-জানার কমর্ফোটের ভিতরে

 

চোরের কাহিনি

মুর্গি চুরি বাদ দিয়া আমি গেলাম
পুকুর পাড়ে, দুপুরের পরে

কুয়া’র পাড়ে’র থম-মারা সুনসান
ভালোই লাগতেছিল না;

কোন এক যুবতী বউয়ের গোসল বাঁশ-ঝাড়ের চিপায় দাঁড়ায়া দেখার মতোন একটা দুপুর

পুকুরের ঘাটেও নাই কোন হাঁস
নাই কোন গোপন দেখার মতোন দৃশ্য

মুর্গি চুরি বাদ দিয়া আমি খামাখাই গেলাম

গিয়া দেখলাম পুকুরের পানি নিরব
নিরব বাড়ি-ঘর, তার পাশের রাস্তা-ঘাট

একলা এই রাস্তায়
যেন আমি হাটেরই লোক, যাইতেছি কোথাও…

চোর-ই না কোন

 

না-পাওয়া’রে হাতে নিয়া বইসা আছি
একটু পরেই পাওয়া আইসা নিয়া গেলো তারে

না-পাওয়া’রে হাতের মুঠা’তে ধইরা রাখছি তবু

পাওয়ার ঘটনা ঘটার পরেও না-পাওয়ার মোমেন্ট’টাও
থাকতেছে তো; ছিলো যে, সে তো এমনিতেও, আছে-ই তো…

 

অংক

বান্দরটা যে পিছলায়
এইটা বান্দরটারই দোষ

বাঁশে তেল না থাক
একটা বান্দর কেমনে বাঁশ বাইয়া
উপ্রে চইলা যায়? একবারেই?
মানুষ হিসাবে এইটা মানা যায় না

রোবটে এই কাম করলেও আমরা মানবো না

তেল তো একটু থাকা-ই লাগে
না থাকলেও আমরা ইমাজিন
করতে পারি তো!

বান্দর তুমি যতোই বান্দর হও
বাঁশে তেল আমি মাখবোই
অংক করার আগে, তারপরে ভাববো

হাসবো; বান্দর আসলে একটা বান্দরই

 

অন্তহীন পথে, রিকশায়

তোমার অন্তহীন পথে আছে ভাঙা-চোরা রাস্তা

যত জোরে যায় রিকশা তার চাইতে আরো আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকে মন

সিগন্যাল না মাইনা উল্টাদিক থিকা আসে শীতের বাতাস
কয়, ‘আমিই ফার্স্ট, আমিই ফার্স্ট…সাইবেরিয়া!’
দুইটা বাসের মতোন পাশাপাশি গা ঘেঁষাঘেষি কইরা

‘উদ্বাস্তু না অরা? ইমিগ্রেন্ট?’ জিগাইলো আমারে,
ডিপ্লোম্যাটিক জোনের দেয়ালের ওইপারে দাঁড়ানো সহজ, নিরীহ গাছটা

অন্তহীন পথের ভাঙায় থেন্না খাইলো আবার, রিকশাটা
চাইলের বস্তার মতোন একটু ঝাঁকি খাইলো আমার শরীর

যেন একশ টাকা থিকা একটাকার কয়েন একটা পইড়া গেলো, ঝনঝনাইয়া

 

লাইক ইউ! 

লাইক আমি হাজার বছর ধরে পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে
লাইক কুড়ি বছর পরে তখন তোমারে নাই মনে
লাইক বেতের ফলের মতো ম্লান হেসে
লাইক বাংলার রূপ আমি দেখিয়াছি পৃথিবীর রূপ দেখিতে চাই না আর
লাইক স্বাধীনতা তুমি [এমন লাইক’রে এখন আর কন্সিডার না করা হইলেও, আছে…]

লাইক ভাত দে হারামজাদা মানচিত্র খাবো
লাইক এতটুকু চায়নি বালিকা
লাইক ভালো আছি ভালো থেকো
[এইসব লাইকও থাকবো না আর কয়দিন পরে…]

লাইক লাইকার মতো একটা কুত্তা-ই শেষমেশ স্পেসে চইলা গেলো!
[আসলে তো মরতে হইছিল]

লাইক তবু লাইক,
লাইক লাইক করতে করতে করতে আমরা বাংলা কবিতা লিখবো

লাইক লাইক লাইক, লাইক হবে তো?

 

ইগো

[অ-তে অজগর ঐ আসছে তেড়ে…]

একটা বিশাল অজগর সাপের পেটের ভিতর বইসা আছি।

অজগরটা হাল্কা একটু অস্বস্তি নিয়া ঘুইরা বেড়াইতেছে।

হজম কইরা ফেলবে কিনা বুঝতেছে না
নাকি উগরাইয়া ফালায়া দিবে

আমি তো মইরাই যাবো একদিন না একদিন;
অজগরটার লাইগা খারাপ-ই লাগতেছে

 

 

 

Leave a Reply