কবিতা: মে, ২০১৯

মুহূর্তের কণা

মুহূর্তেই উইড়া যাবে বেদনা;
মুহূর্তেই আরেকটা কণা খুঁইজা পাবে তোমারে

তুমি বলবা, “অইসব তো পুরানা কথা…
আমি মনেও রাখবো না!”

কণাগুলা জমতে থাকবে,
আরেকটা অবয়ব আসবে, তারেও
বলবা তুমি, “ভুইলো না আমারে!”

একই মেমোরি আমাদের, একই রকম ভুইলা-যাওয়া
একটা মুহূর্তেরই ভিতর উইড়া যাবে, যেন কোন বেদনা

 

ধর্ম

ইসলাম আসার পরে পৌত্তলিকদের ধর্মের মতোন ভুইলা যাইও আমারে তুমি

 

মরণের মতোন সামান্য দূরে থাকো

মরণের মতোন সামান্য দূরে থাকো,
খালি একটা দম মিস হইতে পারে যেমন
কোন কারণ ছাড়াই

থাকো নিয়তির মতোন
যে কোন মুহূর্তেই ঘটতে পারার মতোন একটা বাস্তবতা যেমন
নাই বইলাই আছে
আর তার থাকতে পারার ভিতর না-থাকাটা প্রোলঙ হইতে হইতে একটা রাতের মতোন ভোর হইতে হইতে নাই হয়া যাইতেছে

আমি ভাবললাম, এইরকম কোনকিছু থাকতেই তো পারে!
তুমি বললা, যা কিছু নাই, যা কিছু ছিলো না, কোন না কোন কারণ নিয়াই আছে…

আমি অবিশ্বাসীদের মতোন স্থির হয়া থাকি একটা না-থাকার বিশ্বাসে
একটা নারিকোল গাছের ছায়া ধীরে ধীরে স্পষ্ট হইতে থাকে, বাতাসে
কাঁপে

একটা কনফিউশনের মতোন থাকতেই থাকে
আমাদের না-থাকা একটা বিশ্বাসীদের মনে…

বকুল, বকুল

একটা চিন্তা থিকা অনেকগুলা ভুলের মতোন
ঝর ঝর করে বাতাসে পইড়া যাইতেছে ফুল

কানতেছে; বলতেছে, ‘বকুল, বকুল…’

 

ভুলের কাছে

দশ মাইল হাঁইটা আমি একটা ভুলের কাছে গেলাম,
গিয়া দেখি যে ভুল, সে ভুলই আছে।
আমারেও সে কনফার্ম করলো, “আমি তো ভুল,
আমার কাছে কেন আসছেন!”

একটা ভুলের কাছে গিয়া আমি ভুলভাল ভাবতে থাকি,
ভাবি, যে ভুল সে তো ভুইলাই আছে;
কোথাও কোন ঠিক যে আছে – এইটা তো মানতেই রাজি না সে

ফিরার পথে দেখি,
গাছের ছায়ায় বইসা একটা বান্দর দাড়িপাল্লা নিয়া পিঠা ভাগ করতেছে।

 

‍‍দ্য উইক অ্যান্ড দ্য স্ট্রং

ব্রেকিং ব্যাডের লাস্ট সিজনের ১১ নাম্বার এপিসোড এই সিনটা আছে। জেসিরে পুলিশের কাস্টডি থিকা বাইর কইরা নিয়া আসে সল। একটা ডেজার্টে মিট করে ওয়াল্ট জেসির লগে। তখন সে তার বাটপারি কথা আবার শুরু করে, জেসিরে কয়, এই শহর ছাইড়া চইলা যাও। একটা চাকরি করো বা তোমার যা ভাল্লাগে, এমনো তো হইতে পারে একটা মেয়ের সাথে তোমার দেখা হইলো, ফ্যামিলি লাইফ শুরু করতে পারলা, তোমার বয়স তো এখনো কম! এইসবকিছু। তখন জেসি চেইতা যায়, কয়, আমার লগে বাপগিরি দেখানোর তো দরকার নাই! আমার লাইগা না, তোমার নিজের সেফটির লাইগা আবার চইলা যাওয়াটা দরকার। কও যে, তোমার ফেভার লাগবে! আর আমি যদি চইলা না যাই মাইকের মতোন আমারে খুন কইরা ফেলবা! এই কথাটা সরাসরি কইতে পারো তো তুমি! তাই না! ওয়াল্টার কিছু কয় না আর। জেসি কানতে থাকে। আর ওয়াল্টার গিয়া তারে জড়ায়া ধরে। (পরের ঘটনা অবশ্য আরো বাজে।)

এইরকম একটা সিন আমার লাইফে ঘটছিল। একজন আমারে কইলো যে, শে তো আমার প্রেমে পড়ছে। তো, আমি তারে কইলাম, তোমার প্রেমিক দুইদিন আগে ফেসবুক প্রোফাইলে যে সুন্দর ছবিটা ঝুলাইছে সেইখানে ওর বিছনায় তোমার নগ্ন ঠ্যাং এখনো দেখা যায়। দেখো, তুমি প্রেমে পড়ছো – এই কথা কওয়ার কোন দরকার নাই, পারলে তোমার প্রেমিকরে কইও ছবিটা প্রোফাইল পিকচারে না দিতে। তোমাদের প্রেমের ছবি দেখতে আমার একটু খারাপ তো লাগে! তখন শে অনেক শক্ত কইরা অনেকক্ষণ জড়ায়া ধইরা রাখছিল আমারে। যেইরকম কইরা শক্ত ওয়াল্টার দুর্বল জেসিরে জড়ায়া ধরছে, এই সিনটাতে।

তো, আমার কাছে লাগে যে, ঘটনাগুলা যখন ঘটে, তখন আসলে ঘটে না পুরাপুরি, আমরা যখন রিকল করি বা আমরা যখন অন স্ক্রীনে দেখতে থাকি, তখনই আসলে ঘটনাটা ঘটে। কাছাকাছি অন্য আরেকটা রকমে। এই কারণে সিনেমার সিনগুলা অনেকবেশি রিয়েল লাগে। বা গল্প–উপন্যাস–কবিতা–পেইন্টিংয়ে ঘটতে থাকা ঘটনাগুলা। মনে করাইতে পারে আমাদেরকে, আরে, এইরকম এইরকম ঘটছিলো তো! বা ঘটতেই তো পারে! তাই না!

 

প্রাণ-পাখি

শব্দগুলা দিয়া আমি একটা খাঁচা বানাইলাম,
সেইখানে আমি তোমারে রাখলাম

তুমি বললা, আমি থাকবো না তো, আমি চইলা যাবো…

 

না-দেখা

কি সুন্দর! তুমি দেখতেছো।
কি সুন্দর! তুমি না বইলা থাকতেই পারতেছো না!
কি সুন্দর! তুমি লিখতেছো, তারপর।

তোমারে আমি দেখতেছি না। 
এই যে সুন্দর, আমি দেখতেছি
বলতে চাইতেছি আর লিখতেছি, ভাবতেছি
তুমিও তো দেখতেছোই,

তোমার দেখাটারে আমি ইমাজিন করতেছি

কিন্তু এইরকম ইমাজিন করতে অনেক ক্লান্ত লাগে, বুঝছো!

যেমন অন্ধকারে একটা আবছা ছায়া দেইখা মনেহয়,
আহা! মানুষটারে তো কোনোদিনই দেখলাম না!

 

যেন অন্য কোন কালচার থিকা আসছি

যেন আমি অন্য কোন কালচার থিকা আসছি,
ট্রান্সলেশনে বাদ পইড়া যাইতেছি, বারবার

এমন না যে তুমি ট্রাই করতেছো না,
তুমি বা আমি, আমরা কেউ
নিজেদেরকে আর্টিকুলেট করতে পারতেছি না আর
নিজেদের ভাষায়;

ভাবতেছি, তুমি বা আমি
আমরা কেউ একজন মেবি
নাই-ই, থাকতেই পারি না…

 

Leave a Reply