ড্রাফটস: ফেব্রুয়ারি, ২০১৭।

ভাবতেছিলাম…

‍‍ভঙ্গিমাগুলিই তো গান!

কি কি জানি কইয়া তোমারে আমি কি কি জানি বুঝাইতে চাইলাম
কি কি জানি কইতে কইতে আমারে আমি কি কি জানি না কইতে চাইলাম

একটা ফর্মের বাইরে আইসা আরেকটা ফর্মের ভিতরই দাঁড়াইলাম

জাইনা ফেলার মতো একট অন্ধকার অন্য মানুষদের মতোন আমরারে পইড়া ফেলতেছে

আমরা তো যাইতে চাইতেছি না কোথাও!

ফুটপাতে দাঁড়ায়া রইছি, শীতের বাতাসের তো এতো জোর নাই যে
উপড়াইয়া ফেলবে আমরা’রে ছোট দুইটা গাছের মতোন…

ঝড়-বাদলের দিন আসলে তখন দেখবো নে!

অথবা তার আগেই, আমরা যে দাঁড়ায়া ছিলাম
নিজেদের থাকাটারে নিতে পারতেছিলাম না আর আমরাই,
অনেক অনেক ব্যাঁকা-ত্যারা অনেককিছুই ভাবতেছিলাম,

ভাবতেছিলাম (যেন ভাবতে পারাটাই বাঁচায়া ফেলতে পারে আমরা’রে, এইরকম কইরা) যে,
ভঙ্গিমাগুলিই তো গান!

 

উইন্ডো’র এই পারে

একটা ঘোলা জানালার ওইপারে গান,
বিকালবেলার চাঁদ
উঁচা উঁচা টাওয়ার, মোবাইল কোম্পানিগুলির

কি কথা ভাইসা যায়?
কি কথা থাইমা থাকে, এই পারে?

গুলশান লেকের ধারে…

সিগ্রেটের ধোঁয়াও তো ফুরায়

না-থাকাগুলিরে মাইনা নিতে নিতে মনেহয়,
ছিলো যে – সে-ই বিভ্রম,

গাছের পাতা থিকা রোদ একটু একটু কইরা ঝইরা পড়ে
নিজেদের দেখাইবো বইলা এলইডি’র বাতিগুলি জ্বলে

না-থাকাগুলি থাকতে থাকতে
কতো কি যে বানায়, বলে
‘রাত তো হইছে, এইবার যান…’

নাইমা আসি রোডে,
বসন্ত আসছে ধুলা আর বালিতে

কচ কচ করতে থাকা দাঁতে যেন গতরাতের চুমা লাইগা আছে

ধুলা-লাগা জানালাটা তখনো কপি করতেছিল তারে

 

বসন্ত

‘কুহু কুহু…’ বইলা একটা কোকিল ডাইকা উঠলো দুপুরবেলায়, বনানী’র রাস্তায়।
কুহু কইলো তখন, ‘দেখো, কোকিল ডাকতেছে!’

গাছের পাতার ধুলাগুলি তখন হাসতে হাসতে পড়ে যাইতেছিল, বাতাসে…

 

জানি না

জানি না – জানার পিছে দৌড়ায়া দৌড়ায়া কত কত মাইল গেলে
পাবো – জানি না
বইসা আছে হয়তো; গায়ে ওড়না

মুখের একপাশ – স্থির, কোন এক ভাবনার মতোন
মনেহয় শ্যামলা রং গায়ের, ব্রোঞ্জ কালার

এইরকম বসছে যে, তাতেও সায় নাই;

হঠাৎ-ই না-দেখার মতোন আমি
দেখলাম,
যদিও শে দেখে নাই আমারে

আমার ছায়ার চাইতে অল্প একটু দূরে
জানি না বইসা আছে
তার নিজের না-জানার ভিতরে
আরো অন্য কোন আনন্দ নিয়া

তার চেহারা মনেহয় দেখছি আমি আগে,
কিন্তু চিনি না আর তারে

জানি না হইয়া বইসা আছে যে আমার জানার সামনে

 

কেরু

অ্যাম আই ফরেন টু ইউ?

 

প্লে দ্য গেইম

যে আইতে পারে, যাইবোই তো শে
যে ছিলো, শেও তো থাকে নাই
অথবা চাইছিলো হয়তো…

তো তো তোতাপাখি

খাঁচার ভিতর

কয়েকটা শব্দই বলে, রিপিট করে

রিপিটেশনের ভিতর মনেহয়

যাওয়া-আসাটারে ক্রিয়েট করা যাইতেছে বারবার

অথচ, প্রত্যেকবার, যখন আসে শে,
‘মনেহয় অক্ষয়, চলে যাবে না!’

২.
না যাওয়ার পথের ধারে কাঁটাতারের বেড়া
দেয়ালগুলি আরো উঁচা উঁচা
ছবি দেখলেই বোঝা যায়, একটা সাপের লেজ
হইতেছে লম্বা…

৩.
তখন একটা সন্ধ্যা গিইলা ফেললো অস্পষ্ট অন্ধকার আমরা’র

আমাদের এক্সপেক্টশন, একটা ব্যাগ থিকা বাইর হওয়া বিলাই
চোখ পিট পিট কইরা চায়া থাকলো
দেখলো, আমাদের শরীর কয়েকটা আলোর রেখা-ই, ইমেজের হারিকুরি…

‘বাঁইচা যে আছো তুমি, ছবি কই?’

৪.
একটা ঘুম হইতেছে আরেকটা ঘুমের মতোই
সকালবেলায় চড়ুইও এন্ডকোর্স করে,
‘আমিও তো কইছিলাম সেইটাই!’

৫.
তোমার কথার মনুমেন্টে বইসা থাকা মিনিংয়ের কাক আমি
কনটেক্সটের বাতাস আইসা নাড়ায় আমার শরীর
নড়ি না আমি, আমিও তো মনুমেন্টেরই একটা পার্ট…

৬.
ওগো মৃত্যুঞ্জয়, লাইফবয় সাবান দিয়া ধুইয়া নেন শরীরের ময়লা আপনার

৭.
একদিন আমরা যাইতে যাইতে আটকাইয়া যাবো,
পজ হবে না কোনদিন আমাদের দৃশ্য?

৮.
রাস্তা পার হওয়ার সময় বাস-ট্রাক-কার ডাকে,
‘আসেন আমাদের চাকার তলে…’

মরবো যে আমরা তেমন রেলক্রসিংও আর কই!

কমে আসতেছে তো…

একটা রিপিটেশনের ভিতর প্রতিবার ইনসার্ট করা নতুন মিনিংয়ের মতোন
সরে আসতেছি মনেহয়

মনেহয় তুমি নতুন কোন শব্দ,
কোনদিন আমি উচ্চারণই করি নাই

‘শব্দ দিয়াই ধামাচাপা দিবা আমারে তুমি?’

৯.
না-বলার ভিতর,
অনেকদূর থিকা একটা ম্লান হাসি আসতেছিল গড়াইয়া গড়াইয়া…

আটকাইলো মাঝপথে আইসা

হাসিটা আমার দিকে তাকায়া আছে আর
আমিও হাসিটার দিকে তাকাইতেছি এমনভাবে,
যেন কোনদিন এর আগে আমরা আমাদেরকে দেখি নাই!

 

তোমার অন্য নাম

কতো অপরিচিত ভাষায় আমি ডাকলাম তোমার নাম।
কতো শব্দের মিউজিকের ভিতর আমি আবার তোমারে হারায়া ফেললাম…

‘…কিন্তু এর কোন মিনিং তো নাই!’

– রাস্তায় অনেকগুলি গাড়ির হর্ণ একসাথে বাইজা উঠার মতোন
বইলা উঠলা তুমি তখন।

সন্ধ্যার বড় চাঁদ উঠলো আকাশে।
রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম…

আমাদের জানা আর বোঝার ভিতর আমরা
আমাদেরকে হারায়া ফেললাম।

 

 

Leave a Reply