তুমি চলে যাওয়ার পরে – গুস্তাভ ফ্লবেয়ার।

 

তুমি চাইছিলা আমি যাতে তোমারে সবকিছু বলি, আমরা একজন আরেকজনকে ছেড়ে যাওয়ার পরে আমি সেইটা করছিলাম।

তো, আমি খুব মন-মরা আছিলাম; এইটা এতো সুন্দর  আছিলো। যখন আমি তোমার পিছনটা দেখলাম হারাইয়া যাইতেছে ট্রেনের কর্ম্পাটমেন্টে, আমি ব্রীজে উঠে আসছিলাম, আমার নিচ দিয়া তোমার ট্রেনের চলে যাওয়াটারে দেখার লাইগা। আমি খালি এইটাই দেখছিলাম; তুমি ছিলা তার ভিতরে! যতক্ষণ দেখা যাইতেছিলো আমি তাকায়া ছিলাম ট্রেনটার দিকে, আর তার আওয়াজ শুনতেছিলাম। অন্য আরেকটা পাশে, রোউন-এর দিকে, আকাশটা ছিল লাল আর বেগুনি রঙের ফিতার স্ট্রাইপ দেয়া। আকাশটা ঘন অন্ধকার হয়া যাবে যখন আমি রোউন-এ পৌঁছাবো আর তুমি প্যারিসে পৌঁছাবা। আমি আরেকটা সিগ্রেট ধরাইলাম। কিছু সময়ের লাইগা সামনে পিছনে করলাম। তারপর, আমার এতো অসাড় আর ক্লান্ত লাগতেছিলো, আমি রাস্তার ওইপারে একটা ক্যাফে’তে গেলাম আর এক গ্লাস ক্রিচ খাইলাম।

আমার ট্রেন চইলা আসলো স্টেশনে, তুমি যেইদিকে গেছো তার অপজিট ডিরেকশনে। কর্ম্পাটমেন্টে, এমন একজনের সাথে দেখা হইছিলো যারে আমি স্কুলে পড়ার সময়ে চিনতাম। আমরা অনেকক্ষণ কথা বলছিলাম, রোউনে ফিরা আসার পুরা সময়টাতেই।

যখন আমি আসলাম, আমার সাথে দেখা করার লাইগা লুইস সেইখানে ছিল, যেইরকমটা আমরা ঠিক করছিলাম, কিন্তু আমাদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমার আম্মা ঘোড়ার গাড়ি পাঠায় নাই। আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, আর তারপর, চাঁদের আলোতে ব্রীজের উপর দিয়া হাঁইটা পোর্টের দিকে গেলাম। শহরের এই দিকটাতে দুইটা জায়গা আছে যেইখানে আমরা ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করতে পারি।

দ্বিতীয় জায়গাটাতে, মানুষজন একটা পুরান চার্চে থাকে। তখন অন্ধকার। আমরা কড়া নাড়লাম আর মহিলাটারে জাগাইলাম, যে তার নাইটক্যাপ পইড়া দরজায় আসছিলো। দৃশ্যটা কল্পনা করো, রাতের মাঝখানে, পুরানা সেই চার্চের ইন্টিরিয়র তার পিছনে – তার চোয়াল একটা হাই আটকাইতেছে; একটা মোমবাতি পুড়তেছে; যে জরির শালটা শে পড়ছিলো তার পাছার নিচ পর্যন্ত ঝুলতেছিলো। ঘোড়াগুলা জুততে হইতেছিলো, অবশ্যই। চাবুকের ব্যান্ডটা ভাঙা ছিল, আর আমরা অপেক্ষা করতেছিলাম যখন তারা একটা দড়ি দিয়া ওইটা মেরামত কইরা দিতেছিল।

বাড়ি যাওয়ার পথে, আমি লুইসরে আমার স্কুল ফ্রেন্ডের কথা বললাম, যে তারও স্কুল-ফ্রেন্ড আছিলো। আমি ওরে বললাম কিভাবে তুমি আর আমি একসাথে আমাদের সময় কাটাইছিলাম। জানালার ধারে, চাঁদটা জ্বলজ্বল করতেছিল নদীর উপরে। আমি আরেকবার জোছনা রাতে বাড়ি যাওয়ার কথা মনে করতেছিলাম। আমি লুইসরে সেইটা বর্ণনা করলাম: মাটিতে ভারী বরফ ছিলো তখন। আমি একটা স্লেজগাড়িতে ছিলাম, আমার লাল ওলের টুপিটা পড়ছিলাম আর ফারের আলখাল্লাতে ঢাকা ছিলাম। ওইদিন আমি আমার বুটগুলা হারাইছিলাম, আফ্রিকা থিকা আসা আদিম মানুষদের একটা এক্সিবিশন দেখতে গিয়া। সবগুলা জানালা খোলা ছিল, আর আমি আমার পাইপ টানতেছিলাম। নদীটা ছিলো অন্ধকারে। গাছগুলি ছিলো অন্ধকারে। চাঁদের আলো পড়ছিলো মাঠের বরফে: সার্টিনের মতো স্বচ্ছ দেখাইতেছিল তাদেরকে। বরফে ঢাকা বাড়িগুলারে দেখতে দলা পাকাইয়া শুয়ে থাকা ছোট ছোট ভাল্লুকের মতো লাগতেছিলো। আমি কল্পনা করতেছিলাম যেন আমি রাশিয়ার প্রান্তরে আছি। আমি ভাবতেছিলাম যেন কুয়াশায় বল্গাহরিণের চিঁহিহি শুনতে পাইতেছি আমি, ভাবতেছিলাম স্লেজগাড়ির পিছনে আমি দেখতে পাবো নেকড়ের দল দৌড়াইতেছে। নেকড়েদের চোখগুলা রাস্তার দুইপাশে কয়লার মতো জ্বলতেছে।

যখন শেষে আমরা বাড়িতে পৌঁছাইলাম, তখন রাত একটা বাজে। বিছনায় যাওয়ার আগে আমি আমার কাজ করার টেবিলটা গুছাইতে চাইছিলাম। আমার স্টাডির জানালায়, চাঁদ তখনো আলো দিচ্ছিলো – পানিতে, গুণ টানার পথে, আর, ঘরের কাছটাতে, আমার জানলার ধারের টিউলিপ গাছে। যখন আমার কাজ শেষ হইলো, লুইস তার ঘরে চইলা গেলো আর আমি আমার ঘরে।

 

ফরাসী ভাষা থিকা ইংরেজীতে অনুবাদ করছিলেন লেডিয়া ডেভিস। ইংরেজী টেক্সটের লিংক: http://www.theparisreview.org/fiction/6038/ten-stories-from-flaubert-lydia-davis

 

Leave a Reply