দঈত আননাহাল

 

…Living in the dream;
Dream of a silent death!
soon
like a blink
of your eyes…

-D.A.

Self Portrait.

দঈত আননাহাল লিখতে গিয়া লিইখা ফেললাম দঈত আনহালাল; শালা, মাঝে মইধ্যে এইরকম টাল!

ত, এইরকম টাল জিনিসরেও কবিতা মনে হইতে পারে; যে টললো, টলোমলো, কবিতা হইলো। এইরকম শব্দের প্যাঁচ দিয়া, চুল’রে বাল এবং বাল’রে চুল বানাইয়া যে সহজ-সরল মরমী বেদনার কবিতা, তার ভাব ও ভঙ্গিমা কতজনরে যে চু্‌ইদা শেষ কইরা দিছে; তার প্রমাণ আজো (জীবনানন্দ) উৎপাদিত হইতেই আছে! টু বি কন্টিনিউ নামে…

আমি যে নাম’টা ভুল লিখছি সেইটা ভুল। টালামি না পুরাটা; প্রথম নাম শুনলে কয়েকবার উচ্চারণ করা লাগে, তারপর লিখলে লিখাটা সহজ হয়। আমি ভাবছিলাম যে ভুল লেখার জন্য সরি বলবো একবার। কিন্তু লিইখা ত ফেলছি, সরি বললে কি আর ফেরত আসবে! বরং আরো প্যাঁচাইতে থাকবে। এরচে বেটার পরে যাতে আর ভুল না লিখি। সরি বললে ভুইলা যাবো যে ভুল করছিলাম; কারণ সরি দিয়া ভুলটারে ভুলে যাওয়ার যোগ্যতা আমি পাইলাম। ফরগিভ অ্যান্ড ফরগেট। কিন্তু এই যে বললাম না, এইটা মনে থাকবো বেশিদিন। কিন্তু একটা সময় পর্যন্তই। এর পরে আরেকটা নাম ভুল লিখা হবে। এইটা যদি চলতেই থাকে, তাইলে সব নামই কি ভুল লিখবো আমি? এইটা সর্ট অফ টালামি হইছে।

বিল্ডিং থিকা নাইমা দেখি বরই গাছের তলায় দাঁড়াইয়া ঝালমুড়ি খাইতেছে শে। গাড়ির জন্য ওয়েট করতেছে। বলতেছে, ছয়টা দিন অনেক রিল্যাক্সে কাটলো। মালয়েশিয়ায় গেছিলাম। ওইখানে জন্তু জানোয়ার দেইখা ভালো লাগলো। ওদের ইকো পার্কটা বেশ রিচ। এইরকম ছুটি দরকার মাঝে মধ্যে। আমি হলের দিকে যাইতেছিলাম। হাতে নেটবুকের পাউচ ব্যাগ, টিস্যু বক্স এবং বই নিয়া বেশ ঝামেলাতেই আছি। হাত দিয়া বেড় পাইতেছি না। জিনিসগুলা সব পড়ি পড়ি করে। ওরা আরো কি কথা বলে এইটা শোনার জন্যই হয়তো আমার এই যাওয়াটা রিউইন্ড করলাম একবার। কিন্তু আর কোনকিছু শুনি নাই। দেখলাম, দেখে নাই শে আমারে। দেখেই নাই শে আমারে। কিন্তু আমি যে দেখছি, আমার অস্বস্তিটাই খালি। আরো মনে হইতে থাকলো, আর কি কি অস্বস্তি আমার আছে। যেমন, হলে বালিশ না থাকলে মোটা কয়েকটা বইয়ের উপর গামছা চাপা দিয়া যে আমারে ঘুমাইতে হয় এই কথা বলার ভিতর দিয়া মাহি ভাইয়ের সাথে ইউনির্ভাসিটিতে চান্স পাইয়া বৈধভাবে সিট এলোটমেন্টের ক্ষমতা দেখানোর রাতটারে কি আমি গোপন করতে চাইতেছিলাম যেহেতু উনার আচরণের ভিতর উনি এমনই ভদ্রলোক এবং নিয়ন্ত্রিত যে আমি পারি নাই নিজ’রে লুকাইতে আর; নানা পাটেকার হইছি আবার।

এইরকম হয়। আমি বইলা ভিজিবল যে জিনিস তার বাইরে হঠাৎ একটুখানি যে প্রকাশিল, সে-ই প্রকৃত হয়া গেলো। এই পরিচয় প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। যে আসল, সে ত আসলে একটুখানি। তারপর খালি স্মৃতি কল্পনা এবং অনান্য রকমের ভিতর লেপ্টালেপ্টি।

পরে এর প্রতিদান পেয়েছিলুম। ঈদের ছুটির পরে হলে আইসা দেখি টিচার কোয়ার্টারের এক্সটেন্ডশন হিসাবে রুমটাই গায়েব হয়া গেছে! যেহেতু প্রতিশোধ নেয়া হইছে আমার উপর, আমি আর কুকামটা করিই নাই, এইভাবে ভুলে ছিলাম। ভুল ছিলাম আসলে। এই যে মনে পড়লো, তখন আর নানা পাটেকর হইতে চাইলাম না। টু বি ফ্রাঙ্ক, পারলাম না আসলে। কিন্তু তারে কি আর এভেয়ড করা গেলো! করলাম না, কিন্তু সে ত ছিল আমার মনের গভীর গোপনে। মুখে একটু একটু দাড়ি-গোঁফ, কাঁচুমাচু, ছোটখাট আগ্নেয়গিরি। যেহেতু সে সৎ, তার আছে চিৎকার করার অধিকার! গান না গাওয়ার।

আমি ভুল লিখছিলাম এইজন্য চুপ কইরা আছি। আবার এর অর্থ এইরকম যে আমি আর বলতেই পারতেছি না। আটকাইয়া গেছি। কিছু দূর ভালো। তাইলে অনুমান সম্ভব হয়। অথবা এতোটাই দূর যে কোন অনুমানই নাই। অনুমানহীন একটা জীবন আমরা পার কইরা গেলাম। যা যা আছে তা তা-ই আছে। যা যা নাই তা তা আর নাই। এইরকম।

অথচ কচ্ছপের মতোন খোল থিকা মাথা উঠে। আবার ঢুকে যায়। সাগরের পারে বালুতে সে হাঁটতেছে। ভাবতেছে। এরমধ্যে লালচোখের ঘরগোশ বাইর হয়া গেলো। আমি ভুলে গেছিলাম এখন সন্ধ্যা। নরোম আলো নিবে যাচ্ছে দেখে মনে হইলো, কেন গেলাম না আমিও। নির্দিষ্ট দূরত্বে ফলো করতে করতে গোয়েন্দা কাহিনির মতোন। তোমার পরকীয়া, গোপন প্রেম আবিষ্কারে। গাড়িটা যাইতে যাইতে হঠাৎ শাহবাগ থিকা বামে ধানমন্ডি না গিয়া যাইতে থাকলো সোজা বনানী’র দিকে। ১১ নাম্বার রোডের মাঝামাঝিতে। ওহ্ ক্যালকাটার সামনে গিয়া থামলো। র’এর এজেন্ট? যেই বাংলায় মাসুদ রানা মিত্রারে নিয়া বিছনায় গড়াগড়ি খায় সেই বাংলাতে র’এর এজেন্টের সাথে তুমি সন্ধ্যার রেস্তোঁরায়! আমিও যাই; জিগাই র্স্টাটারে কি পাকোড়া আছে? কয়, ওইটা ত নর্থ ইন্ডিয়ান খাবার, পাল আমলে কৌনজে খাওয়া শুরু হয়। আপনে মিষ্টি খাইতে পারেন। কিন্তু মিষ্টি ত আমি খাওয়ার পরে খাই। দিনাজপুরের পাপড় দেন তাইলে। ভাতটা কলাপাতায় দিয়েন না। খেজুর ত অবশ্যই বেচেন না, তাই না? না, না আমাদের দেখাদেখি নদ্দায়, বারিধারার নর্দমা যেইখানে, অ্যাক্টিভিস্ট অরুন্ধতী’র নর্মদা না; বেশ ডার্টি একটা প্লেইসে ওহ্ ঢাকা! নামে খুলছে একটা। ওইখানে খেজুর পাইবেন। ওরা প্রকৃত বাংলা খাবার চিনে না। আমরা কিন্তু ভাতের চাল গঙ্গার জল দিয়া ধুই! আপনার কমর্ফোটের জন্য বললাম। ইর্ম্পোটে অনেক টাকা খরচ হয়। বুড়িগঙ্গার যা অবস্থা। ডেইলি স্টার’টা দেখতে পারেন।

আমি উনার সাথে আরো কথা কই। আর চোরাচোখে দেখি জুলিয়েটরে। এরা ত বঙ্গের গান বাজায়। লোকটা চইলা যায়, খাবার আনতে। আমি মোবাইলে হেডফোন লাগাইয়া গান শুনি। জুলিয়েট তুমি কখোন বুঝবা, আমরার দোষের কিছু নাই। খালি টাইম ইজ রং। তোমার স্বপ্ন যে আমি দেখছি এইজন্য তুমি তোমার স্বপ্নে এইখানে আসছো; এইটাই রিয়েল। টিভিতে যেমনে কথা কয় আমি সেইরম কইরা কইতে পারবো না। ছন্দে লিখতে পারবো না একটা প্রেমের কবিতা। তুমি দেখতেছো আমারে। আর কইতেছো, কেন তুমি এইখানেও! তুমি যাও!! আমারে ডির্স্টাব করা বাদ দাও! আমি তোমার সাথে সবকিছুই করতে রাজি আছি। স-অ-অ-ব। খালি ভালোবাসতে কইও না। তুমি শালা কখোন বুঝবা, জাস্ট দ্য টাইম ইজ রং।

এইটা ত আসলে একটা সাত্বনা। বিভ্রান্তি।

আমি মনে করতে পারলাম, কেন তুমি কানছিলা যখন আমাদের শরীর আমাদের জড়াইয়া ছিল আর তুমি বলতেছিলা, আই উইল লাভ ইউ টিল আই ডাই!  তুমি আসলে মরতে চাইছিলা; যেহেতু প্রেম আর কনটিনিউ হইবো না, আমাদের মইরা গেলে কী হয়! এইরকম।

আকাশে তারারা জাগতেছে। কাঁচের জানালা দিয়া দেখা যায়। তুমি চেয়ার থিকা উঠে দাঁড়াইলা। হিল পড়ো না তুমি। এতে যে পাছা উঁচা হয়, তোমার ভালো লাগে না। শরীরটা ত বেহুদা। আমার পোশাক হইলো আমার শরীর। এইরকমই ভাইবা নিয়ো তুমি। যেহেতু দূর, কাছাকাছিও। চোখের দিকে তাকাইতে না তাকাইতে মাপতে থাকো কোন সাইজের ব্রা আমি পড়ি। শালার পর্ণ দেখার পরেও রিয়েল ফিলিংস লাগে! এইসব এইসব ঝাড়ি দিতে দিতে র’এর এজেন্টের সাথে লিফটের দিকে চইলা গেলা তুমি। আমি সিঁড়িতে। ভাবি, সিঁড়ি কিরকম একটা আজব জিনিস। একই পা, একই সিঁড়ি। একবার সে আমারে উপ্রে নিয়া গেলো, আরেকবার নিচে।

তোমার গাড়িটা চলে গেলো। ধূলা উড়লো একটু। সন্ধ্যার আলোগুলা পড়ে থাকলো পথে।

চার পেগ খাওয়ার পরেই আমি দঈত আননাহালরে লিখতে থাকলাম দঈত আনহালাল।

 

Leave a Reply