দ্য অ্যাক্ট অফ কিলিং

ইন্দোনেশিয়াতে, ১৯৬৫/১৯৬৬ সালে, পামুডা-পানকোসিলা নামের একটা প্রো-গর্ভমেন্ট অর্গানাইজেশন পাঁচ লাখ মানুষরে মারছিলো কমিউনিস্ট সন্দেহে, সুর্হাতো’র সামরিক সরকারের আমলে। লোকাল গ্যাংস্টাররা এই অর্গানাইজেশনের মেম্বার হিসাবে এই খুনের কাজ করছিলো। তো, যাঁরা এই কাজ করছিলেন তাদের একজনরে নিয়া এই ডকুমেন্টারি সিনেমাটা বানানো হইছিল, ২০১২-তে। এই সিনেমা একটা ধারণারেই রি-প্রডিউস করে যে, ট্রু অ্যাক্ট ইজ দ্য ইভেন্ট ইটসেলফ। যে মারছিল সে আসলে মারাটারে ম্যাটেরিয়ালাইজ করতে পারে নাই বা চায় নাই ওই অ্যাক্টের সময়টাতে, তার সেন্সে; এইটা ছিল তার কাছে হলিউডি সিনেমার একটা অ্যাক্ট, নট দ্য কিলিং ইটসেলফ। আর সে যখন সিনেমার ভিতর, টিভি স্ক্রীণে নিজেরে দেখতেছে তখন সে ফিল করতে শুরু করতেছে, এইটা একটা অ্যাক্ট অফ কিলিং!

আরো একটা মজার ব্যাপার আছে এইখানে; উনারা, গ্যাংস্টাররা নিজেদেরকে ব্যাখ্যা করতেছেন এইভাবে যে, গ্যাংস্টার শব্দটার অরিজিন আসলে ফ্রি-ম্যান, এখন উনারা যেহেতু ফ্রি-ম্যান, উনারা ত যে কোনকিছুই করতে পারেন! এইভাবে নিজেরে ব্যাখ্যা করতে পারাটা জরুরি; যেমন ধরেন, আল মাহমুদ তাঁর ছোটবেলার স্মৃতিতে লিখতেছিলেন, উনি ছিলেন একা এবং অ্যাডভেঞ্জারাস একজন কিশোর, একলা একলা ঘুইরা বেড়াইতেন, সীতাকুন্ডে থাকতেন যখন বা ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে, এইরকম; উনার এই একলা কল্পনা করতে পারাটা আসলে জরুরি কবি-পরিচয়’রে ভ্যালিড প্রমাণ করার লাইগা। এইটা ছাড়া কবি হিসাবে অ্যাক্ট করাটা খালি না, কবিতা লিখাই হয়তো পসিবলই ছিল না আল মাহমুদের!

যে পার্টিকুলার পারসন’রে চুজ করা হইছে ডকুমেন্টারিতে, উনি সিনেমার টিকিট কালোবাজারী করতেন; এখন যাঁরা শপিংমলগুলাতে সিনেমা দেখেন, তাদের লাইগা এই পেশাটা ইমাজিন করাটা একটু মুশকিলেরই; কিন্তু আমরা দেখছি, কাউন্টারে টিকিট নাই, ভীড়ের ভিতর টিকিট বেচতেছে কয়েকজন, দুই/পাঁচ/দশ টাকা বেশিতে। তো যাঁরা এইটা করেন, উনারা পাওয়ারফুল, হিট-সিনেমা হইলে উনাদের কাছ থিকাই টিকিট কিনতে হইতো। তো, কমিউনিস্ট সরকার যখন পাওয়ারে আসলো, তখন হলিউডি-সিনেমা চালাইতে দেয় না আর সিনেমাহলে, মানুষজন সিনেমা দেখতে আসে না তেমন একটা, উনাদের ইনকাম ত নাই-ই, পেশাও রিস্কে পইড়া গেলো। তাঁদের নিজেদের সারভাইবালের লাইগাই উনারা কমিউনিস্টদের খুন করছিলেন, এইরকম কথাও কইলেন; তখন উনারা নিজেরাই হলিউডি-সিনেমা বানাইতে থাকলেন নিজেদের লাইফে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

একটা পত্রিকা অফিসের দোতলায় ইন্টারোগেশনের পরে এই মারা’র কাজগুলা করতেন গ্যাংস্টাররা। পত্রিকা অফিসের একজন সাংবাদিক, উনি এইটা কবুল-ই করলেন না যে উনি এইটা জানতেন! কারণ আমাদের ইগনোরেন্সের ভিতরই আমরা সবচে ভালোভাবে আমাদের অ্যাক্টগুলারে পাচার কইরা দিতে পারি যে, আরে ভাই, আমি ত জানতামই না এইটা খারাপ কাজ, জানলে কি আর আমি এইটা করি নাকি!

শেষে, অভিনয় করতে করতে গ্যাংস্টার যখন ফিল করেন যে, এইটা খুবই বাজে একটা জিনিস এই অপমান আর মরে-যাওয়ার ফিলিংসটা, তখন উনি চুপ কইরা থাকেন এবং আমার মনেহয় তখন উনি ফিল করেন যে, উনি জানতেন আসলে; খালি উনি-ই না, এই অ্যাক্টের সাথে জড়িত অন্যরাও; কিন্তু এইটারে ইগনোর করছিলেন। একটা মাস কিলিং আসলে একটা কালেক্টিভ অ্যাক্ট অফ ইগনোরেন্স। যা ঘটছে তা ঘটে নাই আসলে বা যেইটা ঘটছে সেইটা ছাড়া ‘আমরা’ সারভাইভই করতে পারতাম না!

ভিকটিমরা আমাদের স্বপ্নে আইসা হয়তো আমাদের না-জানা’রে বিশ্বাস করতে পারে, মাফ কইরা দিতে পারে; কিন্তু এই যে দুনিয়াতে কখনোই কোনকিছুই ঘটে নাই – নিজেদের এই না-জানা’র অ্যাক্টের লাইগা নিজেদেরকে মাফ করতে পারাটা অনেক টাফ একটা জিনিস; স্পেশালি এই সিনেমা দেখার পরে। মানে, আপনি চাইলে এইভাবে ভাবতে পারেন।

 

Leave a Reply