ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফ

সকালবেলা একটা কলা আর বনরুটি কিইনা হাঁটতে হাঁটতে অফিসে যাইতেছেন একজন নারী; কাঁধে ব্যাগ, কিছুটা সংকোচ আছে যদিও। এই শহর – অপরিচিতের ভীড়, সেই সংকোচরে আর বাড়তে দেয় না। কলাটা ছিলাইতেছেন তিনি আর বনরুটির সাদা ক্রীম বাইর হয়া আছে একটু। এই দৃশ্যরে ইগনোর কইরা তিনি যেন হাঁইটা যাইতে পারেন এই শহরে, আরো অনেকদিন, অস্বস্তি ছাড়াই। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় ব্রেকফাস্ট করা যায়, রাস্তায় ইফতারি করার মতো, রিকশায় যাইতে যাইতে সিংগারা দিয়া লাঞ্চ করার মতো। দুপুরে কোথাও বইসা খাওয়ার মতো সময়ের বিলাস ত অসম্ভব! এতো যে দৌড়, কই যাইতে চাই আমি? [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

দ্রুত হাঁইটা আইসা ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়াইছেন আরেকজন নারী, সুন্দর তিনি; ঘামতেছে তার কপাল, হাত দিয়া সরাইতেছেন চুল। মোটর সাইকেলের পিছনে জামাইয়ের বা ভাইয়ের কোমর ধইরা বসছেন যিনি, হাই তুলতেছেন, একটু। মনে করাইলেন, এখন সকাল হয়।

 

হালকা মেঘের আকাশের নিচে একটু বাতাস; রিকশায় পড়া মুখস্ত করতে করতে যাইতেছেন দুইজন কিশোরী, হয়তো এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাচ্চারে স্কুলে দিয়া পার্কে বইসা আছেন কয়েকজন মা; তাদের ক্লান্তি অফুরান, অপেক্ষার। আর তার উল্টাদিকে রাস্তার ডানপাশের খোলা হোটেলে, রুটি সেঁকার পরে ডিম ভাজতেছেন যেই নারী, ব্যস্ত খুবই। পাশের রুমের ডে-কেয়ারে বাচ্চা মে’রে রাইখা, পোলিও’তে নষ্ট হওয়া বাঁকা পা নিয়া অফিসের লিফটে উঠতেছেন যিনি, তিনি বাইরের কেউ না, অফিস আইডি ঝুলতেছে গলায়।

ক্যান্টিনে ফটোগ্রাফের ভিতর ঝাপসা অবয়বের আরো কয়েকজন নারী; সিম্বল, নারী-প্রগতির।

 

বৈশাখ ৫, ১৪২০

 

Leave a Reply