যে কোন ভাষাতেই ভালো লেখক তো দুই-চাইরজনের বেশি নাই

আইজ্যাক বাশিভিস সিঙ্গার ইয়েডিশ ভাষাতে লেখেন, এই ভাষাতে কম-বেশি ১৫ লাখ লোক কথা কয়, দুনিয়ায়। মানে ধরেন, ঢাকা শহরের রামপুরা টু নদ্দা এলাকার লোকেরা এর চে বেশি বাংলা-ভাষায় কিচির-মিচির করেন মেবি, ডেইলি।

তো, এক ইন্টারভিউয়ার উনারে জিগাইতেছিলেন, ইয়েডিশ ভাষা’তে তো ভালো রাইটার খুববেশি নাই! উনি কইলেন, হ, দুই-চাইরজন আছে; কিন্তু যে কোন ভাষাতেই ভালো লেখক তো দুই-চাইরজনের বেশি নাই।

উনার কথা আমার কাছে সত্যি বইলা মনেহয়।

তো, অন্য ভাষাগুলাতে যেইটা আছে, অনেক অ্যাভারেজ রাইটার আছেন। এই অ্যাভারেজ রাইটার’রা সাহিত্য-ভাষা’রে বাঁচায়া রাখেন। এই অ্যাভারেজ রাইটার’রা জরুরি – এমন কথা উমবের্তো একোসহ আরো অনেকে কইছেন।

কিন্তু কেন জরুরি? আমার ধারণা, উনারা একটা ইকো তৈরি করতে পারেন, একটা এক্সটেনশন করতে পারেন – গ্রেট রাইটারদের; এই ইকো’র কারণে, এক্সটেনশনের কারণে ব্যাপারগুলা সোসাইটিতে ছড়ায়া পড়তে পারে, ধীরে ধীরে একসেপ্টেড হইতে পারে।

দুই-চাইরজন রাইটার দিয়া কনটেক্সট’টা তৈরি হয় না। অ্যাভারেজ রাইটার’রা এই কনটেক্সট বা ‘সাহিত্যের টেস্ট’টাতে কন্ট্রিবিউট করেন।…

২.
সাত-আট বছর আগে কইছিলাম, অ-কবিতা বা যা কবিতা হইতে পারে নাই – সেইটা কবিতার শত্রু না, কবিতা শত্রু হইতেছে – অ্যাভারেজ কবিতা; যে এই এই জিনিস হইতেছে কবিতা – এইভাবে ‘সংজ্ঞা’র ভিতরে কোনকিছুরে আটকায়া ফেলার তরিকা’টা।

তো, অ্যাভারেজ অ-দরকারি জিনিস না, কিন্তু অ্যাভারেজ তখনই বাজে যখন সে নিজেরে গ্রেট বইলা দাবি করতে থাকে। (মেবি, এইভাবে আরো অ্যাভারেজনেস শো করতে থাকে। 🙁 )

৩.
পুরান লেখা’টা –

অ্যাভারেজ কবিতা

May 3, 2013
দুর্জন কবি হইলেও পরিতাজ্য। – Jamil Ahammed

এই বিষয়ে বরং Underground সিনেমাটার একটা জায়গা কথা মনে করা যাইতে পারে; যেইখানে মার্কো, যিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে টিটোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়া উঠেন, তার বন্ধুরে আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকাইয়া রাইখা প্রচার করেন ‘বিপ্লবের শহীদ’ বইলা; তো একটা সময় তার সেই বিপ্লবী বন্ধু’র নামে কালচারাল সেন্টার ওপেন করতে গিয়া, একটা কবিতা পাঠ করেন। সিনেমার মধ্যে মার্কো হইলো গিয়া ‘দুর্জন’, যে কিনা আবার কবিতাও লিখে! কিন্তু আপনি যদি কাহিনির এই প্রেক্ষাপটরে বাদ দেন, কবিতাটারে পছন্দ না করার কোন কারণ নাই। খুবই আবেগী, প্রচলিত ধরণের অ্যাভারেজ একটা কবিতা।

কবি হিসাবে ‘পরিতাজ্য’ হওয়ার যদি কোন জায়গা থাকে, সেইটা হইলো এই ‘অ্যাভারেজ কবিতা’। ‘ভালো’ বা ‘খারাপ’ বইলাই কেউ কবিতা লিখেন না, কিন্তু কবিতা লেইখা যখন কেউ ‘ভালো’ বা ‘খারাপ’ হইতে চান, তখন সেইটা একটা ‘অ্যাভারেজ’ ঘটনা।

যিনি কবিতা পড়েন না, কবিতা বুঝেন না বা গুরুত্ব দেন না – সেইসব মানুষরা কখনোই কবিতার লাইগা কোন সমস্যা না। একটা পলিটিক্যাল সেন্সে দেখতে গেলে, অ্যাভারেজ কবিতাই হইলো কবিতার আসল শক্রু বা ‘পরিতাজ্য’; দুর্জন এইখানে কোন ঘটনা না।তবে ঘটনা হইলো অনেক সময় কবির ধূর্ততা বা চালাকি অ্যাভারেজ কবিতার প্রডাকশন বাড়াইতে শুরু করে। মানে, বেইজ’টা হইতেছে কবিতা; কবি বা যিনি কবিতা লিখতেছেন, সেই মানুষটা, এতোটা না।

সিনেমার সিনটা দেখলে আরেকটা বাজে জিনিস দেখবেন – কবিতায় যেহেতু বাতাস আছে,মোটামুটি একশ ফ্যান ছাইড়া বাতাস চালানো হইছে আর মার্কো চরিত্রের দিক থিকা ব্যাপারটারে চূড়ান্তভাবে অভিনয় করানোর চেষ্টা করা হইছে। একজন কবি ( যতই দুর্জন হন) যখন কবিতা পড়েন, তখন অভিনয় করার দরকার পড়ে না, শব্দগুলা, উচ্চারণগুলাই এক ধরণের পারফর্মেন্সের ভিতর থাকার কথা।

——————

সিনেমায় মার্কো’র কবিতাটা:

Why is the wind always blowing
When we remember our beloved?

Why does the wind beat the windows
And doors of our brothers?

Is the wind only blowing
Or is the sky crying with us?

Leave a Reply