রিজন-বেইজড রিয়ালিটির অগভীর একটা কাদা-পানির গর্তের ভিতরে হাঁসফাঁস করতে থাকা কয়েকটা পুটিমাছের মতোন…

শিবব্রত বর্মণের ‘বানিয়ালুলু’ বইটা যারা পড়ছেন তারা কি একটা জিনিস খেয়াল করছেন যে, ১১ টা গল্পে একটাও ফিমেইল কারেক্টার নাই?

দুইটা গল্পে ‘স্ত্রী’র কথা বলা হইছে (সেইম-সেক্স ম্যারিজের কথা না বলাতে জেন্ডার হিসাবে ফিমেইল ধইরা নিতেছি); ‘ভেতরে আসতে পারি’ গল্পে একজন আছেন, যিনি মারা গেছেন, ধারণা করা হয়, তারে খুন করা হইছে; আর লাস্ট গল্পে স্ত্রী’র প্রেমিকরে খুন করে একটা কারেক্টার। খুব বেশি হইলে দুই-চাইরটা লাইন। মানে, আমি বলতে চাইতেছি না, গল্পগুলাতে এই যে প্যারালাল-ওয়ার্ল্ড, এইটা একটা পুরুষ-ওয়ার্ল্ড! 🙂কিন্তু এইটা একরকমের পুরুষ-ওয়ার্ল্ডের কথাই আসলে।

এমনিতে গল্পগুলা ক্রিসপি। ফার্স্ট দুইটা গল্প পইড়া মনে হইতেছিল, অন্য কোন গল্পের এক্সটেনশন। ‘বানিয়ালুলু’টারে মনে হইতেছিল পিটার বিকসেলের ‘আমেরিকা বলে কোন দেশ নেই’-এর সেকেন্ড পার্ট। আর সেকেন্ড গল্পটা হুমায়ূন আহমেদের ‘নিষাদ’-এর এক্সটেনশন! অবভিয়াসলি আমার ‘সাহিত্য-পড়া’র ঝামেলা এইটা। কিন্তু একইরকমের না হইলেও কোন না কোন রেফারেন্স দিয়াই তো আমরা কানেক্ট করি।

আরেকটা মুশকিল হইতেছে, কয়েকটা গল্প পড়ার পরেই টের পাওয়া যায় বাকি গল্পগুলা কই গিয়া শেষ হবে বা শেষে কি হবে; এক্স-ফাইলস সিরিজের এপিসোডগুলার মতো শেষটা খুবই প্রেডিক্টেবল হইতে থাকে। আর জার্নিটা বা প্রসেসটারও একসাইটেটমেন্ট কমতে থাকে; একটা কারণ মেবি বর্ণনাগুলা ভাসা-ভাসা, যেহেতু ‘আমরা জানি না’, যেহেতু আরেকটা দুনিয়ার কথা, এই দুনিয়ার শব্দগুলা জাস্ট ফ্লাওয়ারি কিছু জিনিস হয়া থাকে, ফানি না হইতে পারলেও।

এমনো মনে হইছে আমার, আরেকটা দুনিয়া মানে হইতেছে আরেকটা কনটেক্সট আসলে। যেমনে আমরা ‘সেক্যুলার’ দুনিয়া দেখি, এর বাইরেও দেখার আরো আরো কনটেক্সট আছে তো; মানে, এর বাইরে যারা আছেন, সবাই তো আর ‘জঙ্গি-সন্ত্রাসী’ না!

বানিয়ালুলু’ গল্পে এই জিনিসটা স্পষ্ট অনেক, যেহেতু রাষ্ট্রীয় দলিলে নাই, নিউজপেপারে মিডিয়াতে নাই, কেউ এইটা নিয়া কথা কয় না, এইটা আসলে নাই! এই যুক্তি মতে, বাংলাদেশে লাস্ট পার্লামেন্ট ইলেকশনে পাবলিক যে ভোট দিতে পারে নাই – এইটা কখনোই ঘটে নাই। 🙂 কারণ এর কোন ভিজিবিলিটি তো নাই! মানে, এই যে ক্যামেরা দিয়া ছবি তুইলা রাখাটা একটা ‘প্রমাণ’, এইটা খালি প্রমাণই না, ছবি না থাকা, প্রমাণ না থাকা মানে এইটা ঘটেই নাই।

গল্পগুলারে রিজন-বেইজড রিয়ালিটির অগভীর একটা কাদা-পানির গর্তের ভিতরে হাঁসফাঁস করতে থাকা কয়েকটা পুটিমাছের মতোন মনে হইছে। 🙁 যারা টের পাইতেছে, কিন্তু বাইর হইতে পারতেছে না, একটু পরে পরে উঁকি দিতেছে, আর তারপরে আবার নিজেদের চিন্তার রিয়ালিটির কাছে ট্রাপড হয়া আছে। রিজনের খাঁচার ভিতরে বন্দী হয়া থাকাটারে যেন প্রেফার করতেছে।

কিন্তু ব্যাপারটা যে এইটুকেই আটকায়া থাকলো, এইটা দেইখা আমার মনেহয় একটু খারাপ-ই লাগছে। 🙁

 

Leave a Reply