লাভ সং

 

সবার  শেষে, তুমি আমারে শোনাও এমন নৈতিক কিছু, যেন আমি ভুলে থাকতে পারি
বাস্তবতা ও প্রকৃতি, যারা ঝুলে আছে,
বানর সদৃশ্য ভাবনারে যারা আরো আরো ঝুলাইয়া দিচ্ছে
তড়িঘড়ি সকালের আনন্দে, ওদের সাথে মেলাও বলে
খুলে দিচ্ছে দড়ি – হারমোনিয়ামে গান আর ত গাইবো না খালি
মাউথঅগ্যানের লোভে পড়ে রেললাইন, যা আসলে মফস্বল
মেডিভেল সোসাইটি খুঁজতে খুঁজতে আসছিল এই বাংলায়, হয়তোবা বাঘ নয়
কাঠল-পাতা চিবাতে চিবাতে গিয়াছিল ভুলে – কেন যে কেন যে
আমার জন্ম এই গ্রীষ্মের রোদে আবার বিয়ার খাওয়ার লোভে উঠেছিল জেগে;
বৃষ্টিরই গান গাইতে গাইতে হইছিলো কুপোকাত, তোমার গাদলা দিনে
চাইছিলো পিছলা খাইতে, আর সেই দৃশ্য দেখবা তুমি জানালায় বসে
লেবুগাছের আড়ালে, ওই চলে যায় যে ভুত, দিনে-দুপুরে;
চোর নয়, তবু সে আসছিল কেন? খালি দেখতে যে দেখবার মতো কেউ
রয়ে গেলো কিনা কেউ, মাইগ্রেশনের পরে; ২ঘণ্টা জিজেকের বক্তৃতা শোনার মতো ধৈর্য্যে
আটকা পড়ে, মাকড়সার জালে, ছিঁড়ে-খুঁড়ে আসছে বাইর হয়ে
হারেরেরে রেরে, শব্দ তোমায় ছাইড়া দিলো কে রে
কসাই হয়ে যায় না কেন তারা আজ মাংসের দোকানে;
হয়তো ক্রেতা নয়, কবিতা লেখারই তরে, তাদের জিহ্বা লকলক করে
পিছনের রানের মাংস দেখে, আগামীর ঝোলের লোভে
তাহাদের বাড়াভাতে ছাইমাখা গোপন পার্টি মিটিংয়ে মিটিমিটি হাসি হাসি
জোছনামাখা রাতে কে যে আসে ভাঙ্গা ঘরে প্রতিকৃতি সাজায় মশারির ঢেউয়ে
ভেসে যায় ওই মেঘ, উপ্রে, আরো কাদাময় তোমাতে কেমনে পিছলা খাইতে পারি আমি
সেই দিনও ভেসে যায়, অনাদরে রইলো যে কোণে, ঘরের দেয়াল ঘেঁষে
তারে দিও এক গ্লাস জল, পানি-দেয়া ভাতের সাথে লাউয়ের ঝোল
কাঁচামরিচ থাকলে ভালো, না হইলেো চলে তবে এই যে গরিবিপণা এরে তুমি
মিশতে দিও গঙ্গার জলে, হুড়াহুড়ি স্নানে, মেঘনার তীর ঘেঁষে একটু ডাইনে
পইড়া রইলো ভূমি, যে স্পেস, তারে তুমি কল্পিত করো, তারপর দেখো
এই ফটো তুমি চিনতে পারো কিনা, না চিনলে জিগাইবো তারা,
আরো কিছু তত্ত্ব কইতে পারবো ত আমরা?নিরজনে সখী, নুহাশপল্লীতে?
তোমার আধা, রাধা শরীর হয়া পেঁচাইয়া ধরবে কি আমায়?
তুমি নারী কি গো শরীর হইবা হৃদয়ে আমার? অথবা ঔষধ বাগানে
আসবে সাপ, লেজে যার বিষ, দিয়া যাবে গোখরা বেহুলার ক্রন্দন
‘মর জ্বালা’ – উঠিলো কাঁদিয়া কোলের শিশু, ওগো রূপবান, জোকাষ্ট্রা
অডিপাসরে আর জাগাইয়ো না, মিথবন্দী পুরুষজীবন লইয়া দিয়ো না মরিতে;
তবে কি আমার কল্পনার কলকাঠি লইয়াই ফুটিতে হইবে করুণ ফুল
চলিত ভাষা কয়, তুমি ত আর নাই, বাংলা-কবিতায় অজস্র বটিকা
সঙ্গদোষ, লজ্জাবাতাস, শীতকামনা, রইদ ও ফুঁ দিয়া উইড়া যাওয়া বিষাদ
বোতলে কইরা হইতেছে বিক্রি; যদিও বাণিজ্য শিখে নাই আজো মুসলমানের পুত
কইরাছিলো কৃষিকাজ, এখন শ্রমিক ও বাউল, এনভায়রমেন্টে লিঙ্গ ঠেকায়া কয়,
‘ইহারে বাঁচান! আদি-যোনী, মাতার’; যেমন জন্ম মাত্রই পাপ, খোঁজা বানায় দেন
আমারে, করেন উদ্ধার; দোতলার ছাদ থিকা, যদি পড়ে যাই, ধইরেন রে, বাপ!
স্লিপে ক্যাচ ধরার মতোই এতোটাই সোজা, লুফে নিলো করতলে
তুলে নিলো দ্রুতরথে, এরপরে দিলো দৌড়; না জানিতে চাইছিলো কি গানে ও উপহারে
কি দিলে স্টার্ট লইবে তুমি, প্রত্যাবিহারে কাঁদিবে লোরকা এবং বোর্হেস – একইসাথে
উপগত হইয়া খুলিবে পাছা, কইবে, কবিতা একই এবং বিভিন্নরকম; আম ফলের মতোন
কতিপয় মিষ্টি এবং কতিপয় চুক্কা, কিন্তু তারা অনুবাদযোগ্য এবং অদল বদলে বাদলধারার আগে
অন্যান্যরকমের ভিতর আটকানো যাইতে পারে, মানে উহারা সমাধানসম্ভব অংক বিভিন্ন আয়নায়;
এর চে বেশি আর কিছু ত চায় নাই সিরাজদ্দৌলা, মসনদখানি বাংলার – তথায় রাখা যাবতীয় স্বাধীনতা
গিয়াছিল নিভে, আম্রকাননে; তথায়, হায়; সহসা হইলো মনে, এশিয়ান মোড অফ প্রডাকশন, পুনরুজ্জীবিতের;
তারে কে ভুলিতে পারে, সন্তানহীনতার প্রকোপে, বংশবৃদ্ধির মলে, কিলবিল শুক্রাণুর ভীড়ে, যে পারে বাঁচিতে
তারে ধরে আর মারে, তক্তা নিয়া আইসা বেঞ্চিতে বসে, উড়িল যে সাইকেলখানি, তার পিছন
যেই মাইয়ার ওড়না ওড়ে যায়, টিফিন ক্যারিয়ার হাতে, সিএনজি আইসা ধাক্কা দেয়ার আগে
দুপুরের ভাতে র‌্যয়াল ব্লু সিলফি’র কালা চাকা নষ্ট হোয়ার আগে, কাচুঁমাচু চাইছিলো হাঁটতে
ফুটপাতের মোটরসাইকেল সাইড নেয়ার আগে হয়তো সইরাই যাইতো, মালিকের পুত হওয়ার বাসনায়
যে কবি তারে ডাকতে চাইতেছেন, বালিকা; নাবিলা’র শো রুমের আগে, হয়তো সইরাই যাইতো
এতসব ডিটেইলসরে উপেক্ষা কইরা মাথানিচু ধুলার সাথে মিশে যাওয়ার আকাংখা তার রইলো ধূলায় পড়ে
শিরস্ত্রাণ, মগজ আমার, পারে তো হাঁটতে আবার, খোঁড়ায়া খোঁড়ায়া যায়, কভু নাহি ফিরে চায়
কি আর দেখতেই বা পারি, ডালের বাটিতে ভেসে থাকা পেঁয়াজের মতো পেলবতার লাগি
ভেসে ভেসে আসছি কি এই এতদূর, খামাখাই না একদম; দিনান্তে সূর্য ডুবে যায় আমরা হাসিমুখ
ঘুমাইতে যাওয়ার আগে ভাবি, যা ছিল ছলনা, তারে আর ভাবলাম না, আরো কতকিছু ভাবতে না-চাওয়া
করিতেছে ভীড়, মিশে যাচ্ছে হাওয়ায়; তোমারে ভাবনা করার দিন আসছে আর যাচ্ছে চলে, বলে খালি
দিনান্তে সূর্য ডুবে যায়, জানালায়; মাথা রেখে তার শিকে কেটে গেলো কত যে সন্ধ্যা, আজ আর নাই যে সময়
শব্দ তার সকল নিয়া বসে আছে, একটু সময় নিয়া আইসো তবে, চলে যাওয়ার সময় বলে, ঘাড় বাঁকাইয়া একটু ফিরে
যা আর নাই, তার কল্পনা আকুল হয়ে আসে, স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে, যেন পাথর; এখুনি নামবে পানিতে,
পানিতে পানিতে যাবে মুছে তাহার মলিন মুখ, চৌদ্দ বছর বয়সের, বৃক্ষের বাকলে লিখে রাখার পরে
একদিন স্লিপারে পা রেখে পড়বে মনে, যেদিন হেঁটেছি দুজন রেললাইনের পাশে, ভালোবাসি বলে ধরতে পারি নাই দুইহাত
হয়তো যাইতাম ভুলে, ভুল ভাবনার পথে, যদি না দাঁড়াইতাম হঠাৎ, যদি যা নাই তারে আর না ভাবতাম
জংলায়, বাঁশের ঝাড়ে, সন্ধ্যায় তখন আর এইসবকিছুই এই এই এবং এই বলে ডিফাইন করার লোভে যাইতাম না ফেলে
আমার প্রাণের পর, অন্য আর যে যে তারে এবং তাঁদেরকে বলতাম, এইটুকু মেঘ রাইখো তোমার বগলের ঘামে,
আমারে সম্পূর্ণভাবে ভুলে যাওয়ার আগে, তোমার ছদ্মবেশ রাখিও যতনে, ট্রাঙ্কের ভিতর যেমন পুরানা চিঠিগুলা থাকে;
খামাখাই, অ-দরকারে।

 

 

আষাঢ় ৫, ১৪২০।

 

 

Leave a Reply