স্ট্রাগল অফ মিনিং

তপনরায় চৌধুরী’র অরিয়েন্টালিজম রিডিংটা নিয়া লিখবো বইলা ভাবছি অনেক আগেই। কিন্তু লেখা হইতেছে না, তাই ভাবলাম যদ্দূর পারি আরেকবার আরেকটু নোট নিয়া রাখি, পরে পারলে আবার লিখবো নে।

অরিয়েন্টালিজমের ক্লেইম এইটা যে, ইউরোপ তার কলোনি হিসাবে ইন্ডিয়া বা অন্যান্য জায়গা দখল করতে পারছে তার নলেজের সুপিয়রিটি প্রুফ করার ভিতর দিয়া। প্রাচীন ইন্ডিয়া বা আদি ভারত-মাতা আসলে ইউরোপেরই আবিষ্কার করা নলেজ। এই নলেজ’রে অ্যাকসেপ্ট করার ভিতর দিয়া ইন্ডিয়ান ইন্টেলকচুয়ালরা আসলে খাল কাইটা ইউরোপিয়ান কুমিরদেরকে নিয়া আসেন। এই জায়গায় তপনরায় চৌধুরী’র ক্লেইমটা অনেকটা নিচে থাইকা তলঠাপ দেয়ার মতো। উনি বলতেছেন যে, ইন্ডিয়ান এলিটরা এই নলেজরে খালি নেন-ই নাই, যাচাইও করছেন। এই যাচাইয়ের জায়গা নিয়াই উনি ডিটেইল বই লিখছেন একটা। এর বিপরীতে হাবিলার-গোষ্ঠীরে নিয়াও উনি হাসি-ঠাট্টা করছেন এইকারণে যে উনাদের থিওরেটিক্যাল বেইস ওই অরিয়েন্টালিজমই।

তপনরায় চৌধুরী সমালোচনা করছেন যে, এলিটরাই গ্রহণ-বর্জন করছেন! নিন্মবর্গীয়রা কইতেছেন যে, গরিবরাও পুরাটা নেয় না। না-নেয়ার ভিতর দিয়াই উনারা নলেজে কন্ট্রিবিউট করেন আসলে। মানে, নলেজ জিনিসটা একতরফাভাবে ঘটে না। এইটা মিথ্যা কথা না। নলেজরে ক্রিটিসাইজ করতে পারার ভিতর দিয়াই পাওয়ারের ক্রিটিসিজম কইরা ফেলতে পারেন উনারা। সাঈদ, তপনরায় চৌধুরী এবং নিন্মবর্গের হাবিলদার’রা ফুকোর পাওয়ার নলেজের উপর বেইস কইরাই নিজেদের আর্গুমেন্টগুলারে এক্সপ্লোর করতেছেন।

একটা নলেজ কোন না কোন পাওয়ার স্ট্রাকচাররেই সার্ভ করে। সিমিলারলি একটা পাওয়ার স্ট্রাকচার কোন একটা নলেজ বেইসরেই সাবস্ক্রাইব করে। কিন্তু এই লাইনটা লিনিয়ার হওয়ার কথা না। যেইরকম ভাবা হয় যে, ইউরোপের নলেজ বেইজই হইলো র‌্যাশনালিটি, বইলা-ফেলতে-পারার বাহাদুরি বা ধরেন, বিজ্ঞান-চিন্তা। এখন এই র‌্যাশনালিটি বা বিজ্ঞান-চিন্তা পুরাটা কাভার করতে পারে না, এই না-পারা’র এর ভিতর দিয়াই বরং অরিয়েন্টালিজমের স্কোপটা বা ডিমান্ডটা ক্রিয়েট হয়। আমাদের না-পারাগুলাই হইতেছি ‘আমরা’। মানে, নলেজ-এর কোন ‘আদার’ না থাকলে সেই নলেজ সাসটেইন করার কথা না, এই ফরম্যাটে। অরিয়েন্টালিজম ডিফার করার ভিতর দিয়া সাবসটিটিউট করাটারে রিভিল করে। যে, প্রাচীন ভারত ইউরোপিয়ান ড্রিমের ভিতর দিয়াই এগজিস্ট করে, ইউরোপ’রে বাতিল করে না, রিলিভেন্ট কইরা তোলে। করে কারণ, এইটা ছাড়া ইউরোপ সাসটেইন করতে পারে না; যে, আপনারে ইউরোপরেই মোকাবিলা করা লাগবে। এইটা তখনই নেসেসারি যখন আপনি সিমিলার গ্রাউন্ডে অপারেট করতেছেন। অ্যালকেমি আর কেমেস্ট্রি’র কথা বলা যাইতে পারে এইখানে। ধারাবাহিকতাটা একটা মিনিংয়ের জায়গাতে আইসা পুরাপুরি আলাদা হয়া উঠতে পারতেছে কিনা; যতক্ষণ পর্যন্ত না পারে এইটা ডমিনেন্ট থট প্রসেসটারেই কনটিনিউ করার সার্পোট’টা দিতে থাকে।

এই কারণে অরিয়েন্টালিজমের কোন ক্রিটিসিজম বা ইমপ্লিকেশন দাঁড়া করাইতে হইলে সেইটা নলেজ বেইজটারে শিফট না কইরা কখনোই ঘটতে পারে না। বরং কোশ্চেনটা আবারো এইটাই যে, অরিয়েন্টালিজম বলতে আসলে কি জিনিস বুঝবো আমরা?

 

Leave a Reply