দেব ডি.

দেব ডি. হইলো প্রথম সাকসেসফুল ব্লেন্ড হলিউডি ধারণা এবং বলিউডি এক্সপ্রেশন এর।

কিছুদিন ধইরাই সিনেমাটার গান দেখি; এওয়ার্ড ফাংশনগুলাতেও দেখি নমিনেশন পায়, দুই-একটা পুরস্কারও পায় ছোটখাট ক্যাটাগরিতে। আরো শুনলাম যে, দেবদাস ভার্সন; তখন আরো আগ্রহ হইলো। তো একদিন কিইনাই ফেললাম, ডিভিডি।

এক বসাতেই দেখা হয়া গেলো। এককথায় বলতে গেলে, আমি খুবই ইমপ্রেসড। দ্য ওয়ে দ্য স্টোরি ওয়াজ মোল্ড এবং রি-ক্রিয়েটেড, একটা উপভোগ্য ব্যাপার।

চরিত্র দিয়া কাহিনি বলা হয়। যিনি পারু, তিনি গ্রামে থাকেন। আর দেবদাস ব্যাটা লন্ডনে। তো যখন দুইজনে লায়েক হয়, তখন সেক্স চাপে দুইজনের মাথায়। দেব পারুরে কয়, তাঁর ছবি বুবসের ছবি পাঠাইতে। পারুও নানান কাহিনি কইরা সেই ছবি পাঠায়। দেইখা তো দেব এর মাথা গরম। সাথে সাথে দেশে ব্যাক করে। কিন্তু শালা চান্স তো পায় না! এর মধ্যে এক বিয়াবাড়িতে গ্রামের এক পোলা দেব’রে কয় যে, পারু’র মতো মাল হয় না; খাট ভাঙইয়া ফালাইবে শে! শুইনা তো দেব এর মাথা গরম, যে মেয়ে নিজের ন্যুড ছবি পাঠাইতে পারে, শে তো আরো কতকিছুই করতে পারে! ব্যাস, খেল খতম। আরেকজনরে বিয়া কইরা পারু শহরে। আর সেই ব্যাটার বোনের সাথে ফস্টি-নস্টি করতে গিয়া দেব ব্যাটাও কনফিউজড, শহরে চইলা আসে।

ইন্টারেস্টিং ঘটনা হইলো, চন্দ্রমুখী’র। শে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। বাপ ইন্ডিয়ান, মা ফরেনার। বয়ফ্রেন্ডরে সাক করার ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়াইয়া পড়ে। আর যায় কই! নরম্যাল লাইফ এর দ্য এন্ড। বাপ আর মা মেয়ে’রে নিয়া দিল্লী ছাইড়া অন্য কোথাও পালায়। বাপ তো সহ্যই করতে পারে না। কয়, মেয়ের ভিডিও আমি দেখছি, দেইখা বুঝা যায় যে, শে জানতো যে শে কি করতেছে! মেয়ে যতোই বলে, আমি এখনো ভার্জিন। তাঁর কথা কেউ বিশ্বাস করেও না। বাপ একসময় মুখের ভিতর পিস্তল ঢুকাইয়া আত্মহত্যা করে। মেয়েরে পাঠাইয়া দেয়া হয়, তাঁর বাপের গ্রামের বাড়িতে। দাদাবাড়ির গ্রামের দমবন্ধ অবস্থায় (গ্রাম ও শহর আসলে দুইটা দুনিয়া, পানি আর ডাঙা) শে মা’রে ফোন কইরা বলে যে শে আর কক্ষণো এই কাজ করবে না, তারে শহরে ফিরাইয়া নিয়া যাওয়া হোক। কিন্তু মা-ও এই বোঝা টানতে রাজি না। একসময় শে নিজেই ফিরা আসে শহরে। কারো কাছে থাকার জায়গা পায় না। এক ক্যাফে তে একজন তারে দেইখা চিনে এবং চুন্নিলালের কালেকশনে নিয়া যায়। যেইটা একটা স্বর্গ! শে পড়াশোনা করতে পারবে। পছন্দমতো খদ্দের নিতে পারবে। ইচ্ছা না করলে নাই। পরীক্ষার সময় কোন ডির্স্টাব নাই। কারণ ফরেন জিনিসের চাহিদা ব্যাপক এবং শে সংকর হওয়ায়, তাঁর ডিমান্ড খুবই ভালো হওয়ার কথা। আর তখনই শে তাঁর ‘চন্দ্রমুখী’ নাম নেয়।

এই পারু, দেব এবং চন্দ্রমুখী বর্তমান সময়ের কারেক্টার, যাঁরা সেক্সরে ধামা-চাপা দিতে চায় না; এঁরা এক্সপ্লোর করতে চায়, কিন্তু সেইটা করতে গিয়াই ধরাটা খায়।

চুন্নিলাল ক্যারেক্টারটা একটু মাইনর হয়া গেছে। দেব যখন শহরে আসে তখন চুন্নিলাল তারেও কালেক্ট করে। এবং দেব যায় চন্দ্রমুখীর ঘরে। একটা সময় দেব চেষ্টা করে পারু’র সাথে যোগাযোগ করতে; আর পারুও তাঁর শোধটা নেয়, ট্রাডিশ্যানালি যেইটা দেখানো হয় যে, দেব মরার সময়েও শে অনুরক্ত; কিন্তু সেই টাইম তো আর নাই!

চন্দ্রমুখী’র সাথে দেব এর যখন খাতির হয়, তখন একসময় চন্দ্রমুখী বলে, আমার বাপ তো আমার পাশে দাঁড়াইতে পারতো! যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন সে পুরুষ হয়া গেলো, আমার বাপ হইতো পারলো না – এই টাইপের একটা ব্যাপার। তখন তাঁর প্রেমিক তাঁর বাপ হয়া তারে বুকে জড়াইয়া ধইরা বলে যে, কিচ্ছু হয় নাই মা, আমি তোমার সাথে আছি!

যা-ই হোক, আমার ৮০টাকা উসুল হইছে, এই সিনেমা দেইখা।

আর আসল কথা-ই বলা হয় নাই, এইটা একটা মিউজিক্যাল ড্রামা। রূপবান- এর মতো অজস্র-অসংখ্য গান আছে। মানে কথা-বার্তা কম, মিউজিক আর পিকচারাইজেশনটাই মূল।

এইরম হলিউডি-বলিউডি মিক্সিং এর চেষ্টা তো অনেকদিন ধইরাই চলতেছিলো। যেইটার ধারাবাহিকতায় বস্তির-কুত্তা কোটিপতি (দোষ খালি বাংলা-সিনেমা’র নাম এর!) অস্কার পাইছে; আমার মনে হইছে, এই সিনেমা সেইটার একটা বেইজ লাইন। যেইখানে বলিউডে সেক্স জিনিসটা অনেকটাই আনস্পোকেন থাকে, ভাবে-সাবে বোঝানোর চেষ্টা থাকে; সেইখানে এই জিনিসটারে প্রায়োটাইজ করা হইছে, একটা ওপেন ইস্যু হিসাবে নিয়া আসা হইছে।

এইটা এনটারটেইনিং একটা মুভি। দেখতে খারাপ লাগার কথা না। আমি আমার এক ফ্রেন্ডরে এইটার কথা বলছিলাম; সেও দেইখা বললো যে, খারাপ না; পারু তো ভালোই দেখাইছে। শি ওয়াজ এগ্রেসিভ। পারু কারেক্টার-এর জন্য মাহি গিল বেস্ট ডেব্যুডেন্ট হিসাবে কয়েকটা প্রাইজ মনে হয় পাইছেন!

 

 

 

Leave a Reply