নোটস: ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ [পার্ট ১]

ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩

– বাংলাদেশের বইয়ের বাজার –

যে কোন আলাপে প্রিমাইজটা ইম্পর্টেন্ট, যে কোন বেইজগুলার উপরে দাঁড়ায়া আপনি কথাগুলা বলতেছেন। অই প্রিমাইজগুলা বদলাইলে আলাপের ধরণও বদলায়া যাবে। প্রিমাইজগুলা স্ট্যাটিক না, বদলাইতেই পারে, কিন্তু অইগুলা ঠিক না কইরা নিলে কোন আলাপ করাটাও মুশকিল। তো, মোটাদাগে, আমার আলাপের প্রিমাইজগুলা হইতেছে এই ৫টা:

১. বাংলাদেশে বই পড়ে স্টুডেন্টরাই। এই গ্রুপটাই সবচে বড় কাস্টমার। বইয়ের বাজারের একটা বড় অংশও হইতেছে টেক্সট বুক। ভার্সিটির না, বরং স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার বই।

২. বাংলাদেশে এই টেক্সট-বইয়ের বিজনেসটা করে গর্ভমেন্ট। এখন যে কোন বিজনেস যদি গর্ভমেন্ট করে, সেইটা খারাপ-বিজনেস হইতে বাধ্য। খালি প্রফিটেবিলিটির জায়গা থিকাই না, প্রডাক্টিভিটি, বিজনেস অপারেশনসের জায়গা থিকাও এইটা বাজে এবং দুর্নীতিরও বড় একটা ঘটনা। আর এইটা পলিটকাল কন্ট্রোলের টুল তো অবশ্যই। এই টেক্সট-বুক বিজনেসের ভিতর দিয়াই গর্ভমেন্ট বাংলাদেশের বইয়ের মার্কেটরে কন্ট্রোলের মধ্যে রাখে।

৩. এর বাইরে গল্প-কবিতা-উপন্যাস-ননফিকশনের বই চলে না – ব্যাপারটা এইরকম না। কিন্তু এই ধরণের বইগুলা দরকারি-জিনিস হয়া উঠতে পারে নাই। এমনকি ফ্যাশন হিসাবেও বাংলা-কবিতা বা ফিকশন পড়াটা স্মার্ট কোন ঘটনা না। ইংলিশ-বই ব্যাপারটাই স্মার্ট এবং কম-বেশি দরকারি ঘটনাও। মানে, এমন কোন বাংলাদেশি রাইটারের বই নাই, যেইটা না পড়লে অনেককিছু আপনি মিস কইরা যাবেন। বা কোন বাংলাদেশি রাইটারের বই নাই যেইটা বাংল-ভাষার কমিউনিটির বাইরে ইন্টারন্যাশনাল কোন ইন্টারেস্টের ঘটনা হয়া উঠতে পারতেছে। বাংলাদেশে গল্প-উপন্যাস-কবিতার যেই নিশ-মার্কেটটা আছে, অইখানেও ইন্ডিয়ান-বইই ডমিনেন্ট। নন-ফিকশন ক্যাটাগরিতেও ইন্ডিয়ান-বাংলা বই যেহেতু প্রাচ্যবিদ্যা বা ইন্ডিয়ান-কালচারের লগে কানেক্টেড, প্রডাক্ট ক্যাটাগরি এবং রিচনেসের জায়গা থিকা বাংলাদেশের বাংলা-বই খালি কমই না, মোটামুটি নাই-ই আসলে।

৪. আর এইটা খালি সাহিত্য-ধারণার এবং কনটেন্টের রিচনেসের ঘটনাই না, ভাষার প্রাকটিসের লগে রিলেটেড একটা ফেনোমেনা-ই। বাংলা-ভাষা লিখিত হওয়া শুরু করছে কলোনিয়াল পিরিয়ড থিকা, অই সময়ে কলকাতায় যেই সাহিত্য-ভাষা তৈরি হইছে অইটাই এখনো পর্যন্ত “বাংলা-ভাষা”। অইটা কম-বেশি চেইঞ্জ হইলেও এর বাইরে গিয়া নতুন সাহিত্য-ভাষা তৈরি হইতে পারে নাই এখনো। অই প্রাকটিস ও ধারণাটা খালি একটা অভ্যাসের জিনিস না, কনশাস বোঝা-পড়ারও ঘটনা, যেইটা সরতে টাইম লাগার কথা। মানে, বাংলা-ভাষা এবং বাংলাদেশের রিডার – এই জায়গাটাতে একটা ডিসকানেকশন আছে। যেইটার কারণে কনটেন্টের জায়গাটাও সাফার করার কথা।

৫. আরেকটা ঘটনা হইতেছে বাংলা-বইয়ের বাজার বাংলাদেশের বাইরে নাই-না, অইটা প্রডাক্ট হিসাবে অই লেভেলে এক্সিলারেটেড হইতে পারে না, যেইখানে ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন পসিবল হইতে পারে। কনটেন্টের বাইরেও ফিনান্সিয়াল লেনদেনের প্রবলেম এইখানে আছে, যার জন্য ই-বুক এবং অডিও-বুক বিজনেস মিনিমাম কোন জায়গাতে রিচ করতে পারে নাই।

যদিও এই প্রিমাইজগুলা আরো ব্যাখ্যা করা যায় এবং নতুন কিছু অ্যাড করা যায়, কিন্তু আপাতত, এইটুক রিলিভেন্ট পয়েন্ট হিসাবে থাকতে পারে। আর চিন্তার জায়গাতে চাইলে এন্ডলেসলি যেমন সামনের দিকে যাইতে পারি আমরা, পিছনের দিকেও যাইতে পারি তো। এই কারণে মিনিমাম এই কয়েকটা পয়েন্টরে ধরে নিতেছি।

এই প্রিমাইজগুলার লগে কয়েকটা প্রেজেন্ট কন্ডিশন বা অবজারভেশনও অ্যাড করতে চাই আমি। যেই অবজারভেশনের বেসিসে কয়েকটা ডিসিশানের কথা আমি বলতে চাই। বাংলাদেশের বইয়ের বাজার নিয়া আমার অবজারভেশন মোটাদাগে ছয়টা –

১. বুক পাবলিকেশন এবং বই-ছাপায়া দেয়ার বিজনেস যে একই ঘটনা না – এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা এখনো ক্লিয়ার না। এখনো পর্যন্ত বই ছাপানোটারেই “পুস্তক প্রকাশনা” বিজনেস বইলা ধইরা নেয়া হয়। কেউ একজন একটা বই লিখলো আপনি সেইটা ছাপায়া দিলেন – এইটাই হইতেছে পাবলিশারের কাজ। এইটা সরকারি-বই ছাপানো জায়গা থিকা আসছে বইলাই আমার ধারণা। বাংলাদেশে “সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনা” অইটারই একটা বাই-প্রডাক্ট, যার ভিতর দিয়া পাবলিশার হিসাবে নিজেদেরকে ক্লেইম করা যায়, সরকারি অফিসে বই সাপ্লাই দেয়া যায় এবং সরকারি-ছাপার কাজ পাইতে সুবিধা হয়। এমনকি বই ডিস্ট্রিবিউশন করাও পাবলিশারের কাজ না!

২. বাংলাদেশে বুক ডিস্ট্রিবিউশন কোন সিস্টেম নাই। হাইস্কুল, মাদরাসা এবং কলেজ লেভেলের নোটবই এবং বিসিএস পরীক্ষার জন্য কারেন্ট এফেয়ারস বই-ই মোটামুটি জেলা-উপজেলা শহরগুলাতে পাওয়া যায়। এর বাইরে বই বেচাকেনার মেইন জায়গা হইতেছে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় বাংলা একাডেমির বইমেলা। তা নাইলে ঢাকায় দুই-চাইরটা বইয়ের দোকান এবং অনলাইনে রকমারি-তে বই বেচা।

৩. বাংলাদেশে নানান পদের বইয়ের কোন ডিমান্ড নাই বা রিডার নাই, নাকি বই-ই নাই – এই নিয়া কিছু তর্ক থাকলেও, এইটা ‘ডিম আগে না মুর্গি আগে’র ঘটনা না এতোটা। বরং বই জিনিসটারে বিভিন্ন ক্যাটাগরির নিডের লগে রিলিভেন্ট কইরা তোলা যায় নাই।

৪. আর এরজন্য রাইটারদের রয়ালিটির বেবস্তা করলেই সমস্যার সমাধান হয়া যাবে না আর কি! 🙂 বা রাইটারদেরকে বাজারি-বই লেইখা “স্বাবলম্বী” হইতে হবে – এইরকমও না। একজন রাইটার একইসাথে ভালো-রাইটার এবং পপুলার-রাইটার হইতে পারেন, কিন্তু ক্যাটাগরি হিসাবে দুইটা আলাদা ঘটনাই। একজন ভালো-রাইটার বা ভালো-বই অবশ্যই একটা ঘটনা। সৈয়দ মুজতবা আলী বা বিষাদ-সিন্ধু এখনো বাংলাদেশের বেশি-বেচা বইগুলার লিস্টে থাকার কথা।

৫. কিন্তু এইটা একজন সেলিব্রেটি রাইটার আবিষ্কার করতে না-পারার রেজাল্ট না, বরং একটা একো-সিস্টেম তৈরি না-করতে পারার ফেইলওর। খালি ইকনোমিকালি না, পলিটিকাল জায়গা থিকাও। যেইটা বাংলাদেশে তৈরি করার কোন ইনিশিয়েটিভও নেয়া হয় নাই। এবং অই জায়গাগুলাতেও কথা-বলার ও নজর দেয়ার নজিরও নাই তেমন। Continue reading

নোটস: জানুয়ারি, ২০২৩ [পার্ট ২]

জানুয়ারি ১৭, ২০২৩

– বাংলাদেশের ভার্সিটি –

[সম্ভবত গোলাপগঞ্জে এলাকাবাসীর লগে অইখানের ভার্সিটির স্টুডেন্টদের মারামারি নিয়া কথা বলতে গিয়া জিনিসটা নিয়া কথা বলা শুরু করছিলাম। কিন্তু এইখানে ডিপ-রুটেড কিছু জিনিস আসলে আছে।]

মার্চ ২২, ২০২২
২০০১/০২ সালের দিকে যখন সিলেটে থাকতাম তখন এই জিনিসটা ফার্স্ট খেয়াল করছিলাম, যে ভারসিটির স্টুডেন্টদেরকে সিঅলটি লোকাল পাওয়ারফুল লোকজন খুব-একটা পছন্দ করেন না; মানে, হেইট করেন – এইরকম না, কিন্তু “পছন্দ” করেন না। ভারসিটির স্টুডেন্টরাও লোকাল লোকজনের লগে একটু ডিসট্যান্স রাইখাই চলতো। মানে, একসেপশন যে নাই – তা না, কিন্তু ওভারঅল এইরকম একটা সিচুয়েশন বা ধারণা ছিল। কয়দিন আগেও দেখবেন, সাস্টের ঘটনায় লোকাল লোকজন আগায়া আসে নাই, ভারসিটির স্টুডেন্টরাও ‘মুখ ফসকায়া’ তালেবান বইলা ফেলছিল অন্যদেরকে, উনাদের ফ্রিডম ক্লেইম করতে গিয়া।…

তো, এইটা খালি সিলেটের সাস্টের ঘটনাই না, ঢাকা ভারসিটির শুরু থিকাই এই ঘটনা থাকার কথা। ঢাকার নবাব বাড়ির লোকজন কাজী আবদুল ওদুদরে নাকে খত দেয়াইছিলেন বইলা শোনা যায়, ইকনোমিকসের টিচার হিসাব উনি যখন কইছিলেন, মহাজনের সুদের চাইতে ব্যাংকের ইন্টারেস্ট জায়েজ হওয়া দরকার, এইরকম একটা কথা।… জাহাঙ্গীরনগরেও মনে পড়ে যে, একটা সময় আশে-পাশের গেরামের লোকজনের লগে মারামারি হইতো। মানে, বাংলাদেশের ভারসিটিগুলা খালি “ইয়াং পিপলদের ফ্রি-স্পেইস”-ই না, এইখানে আরো কিছু ঘটনা আছে, যেইটা একটু খেয়াল করা দরকার আমাদের।

বাংলাদেশের এডুকেশন সিস্টেম, পলিটিক্স এবং সমাজের বাইরের ঘটনা না এইগুলা। এটলিস্ট তিনটা জিনিস আমি এইখানে দেখতে পাই।
এক, ভারসিটির স্টুডেন্ট এর বিপরীতে “সমাজ” বা “এলাকাবাসী” বইলা এমন একটা জিনিসরে আইডেন্টিফাই করা যেইটা হইতেছে আদতে ভিলেন! যেহেতু ফরমাল এডুকেশন, পড়াশোনা বা জ্ঞান মানেই হইতেছে ‘মর্ডানিটি’র একটা ঘটনা, সেইখানে আপনি ‘শিক্ষিত’ মানেই হইতেছে আপনি ডিফরেন্ট একটা কিছু, সমাজের অন্য মানুশের মতো না, যারা ‘জানে-না’। অই ‘না-জানা’ ‘অশিক্ষিত মানুশগুলা’ হইতেছে সমাজ! ‘শিক্ষিত’ হিসাবে আপনি অই সমাজের বাইরের ঘটনা। কলেজ, ভারসিটিগুলাতে এই ট্যাবু খুব স্ট্রংগলিই আছে না, এই ট্যাবু মেইন আইডেন্টিটির একটা পার্ট।

অথচ ঘটনা হইতেছে, এইরকম ‘অশিক্ষিত’ লোকদের নিজেদেরও তেমন কিছু করার নাই আসলে ‘সমাজ’ নিয়া, বরং উনারাই হইতেছে পাওয়ারলেস অংশটা! ‘অশিক্ষিত’ এবং ‘গরিব’ লোকজন ‘সমাজ’ এর ডিসিশান-মেকার না, বরং এগজিস্টিং পাওয়ার-স্ট্রাকচারেরই ফলোয়ার। মর্ডানিটি উনাদেরকে ‘মুক্তি’ দিবে না, বা উনাদেরকে আইডিওলজিক্যালি নিতে পারে না – এইটাও মেবি উনারা টের পাওয়ার কথা। যার ফলে, ‘শিক্ষিত’ মানুশদের লগে সমাজের ‘অশিক্ষিত’ মানুশদের কোন ডিসট্যান্স নাই – এই জিনিসটা সত্যি কথা না। কিন্তু উনারা এটলিস্ট পলিটিক্যালি একটা দল আরেকটা দলের দুশমন না।

এইখানে আসে সেকেন্ড পয়েন্ট’টা। যে, ‘শিক্ষিত লোকজন’ ‘সমাজ-ঘৃণার’ নামে গরিব ও ছোটলোকদের দিকে ঘৃণা কেন জারি রাখেন তাইলে? ধরেন, বাস-মালিকদেরকে দোষ না দিয়া কেন ছরমিকদের দোষ দেন? বা ‘গরিব’ ও ‘ছোটলোকরা’ কেন ভারসিটির স্টুডেন্টদের নিজেদের লোক মনে করে না?

ভিজিবিলিটির একটা ইস্যু তো আছেই, যে মালিকের চাইতে ম্যানেজার বেশি খারাপ। এর বাইরে, এইটা পাওয়ারের জায়গাটা মোস্টলি ইনভিজিবল এবং আন-কোশ্চেনড থাকার জায়গা আছে। ভারসিটির স্টুডেন্ট হিসাবে আপনি যদি না বলেন যে, সমাজে কেউ পাওয়ারফুল না হইলে রেইপ করতে পারে না! তাইলে তো সরাসরি পাওয়ারের লগে কনফ্লিক্টে চইলা গেলেন। কিন্তু আপনি যদি বলেন, “সমাজের অশিক্ষিত পুরুষেরা” রেইপ করে, তাইলে তো সাপও মরলো, লাঠিও ভাঙ্গলো না। পুরুষ তো আছে, প্যার্টিয়ার্কিও আছে, কিন্তু পাওয়ারও যে আছে, সেইটা না-বলাটা পলিটিক্যালি সেইফ রাখতে হেল্প করার কথা।

মানে, এইটা খুব কনশাস জায়গা থিকা ঘটতেছে – তা না, একটা সাব-কনশাস 🙂 এওয়ারনেস কাজ করার কথা। কিন্তু এতে কইরা যা হয়, পাওয়ারের জায়গাটারে এভেয়ড করার ভিতর দিয়া সমাজের একটা ইস্যু খুব কম সময়েই ভারসিটির স্টুডেন্টদের ইস্যু হয়া উঠতে পারে এখন। একইসাথে ভারসিটির স্টুডেন্টদের ইস্যুরে একটা ক্লাসের সমস্যা হিসাবেই ভাবতে পারার কথা (“সমাজ” বা “এলাকাবাসী”র না, বরং সমাজের) গরিব ও ছোটলোকদের।

এইখানে একটা ডিস-কানেকশন তৈরি হইছে। এইটা হইতেছে আমার থার্ড পয়েন্ট’টা। এইটা যেইভাবে বটবৃক্ষ হয়া উঠছে, সেইটা জাস্টিফাইড হয়া উঠছে “আমরা রাজনীতি বুঝি না” এবং “আমরা রাজনীতি করি না” বা “খারাপ লোকরাই রাজনীতি করে” – এইরকম একটা পজিশন হিসাবে, যেইটা গত ৩০/৪০ বছরের একটা ঘটনা আসলে।

২.
জানুয়ারি ১৭, ২০২৩

এইখানে পিয়াস করিম একটা ইন্টারেস্টিং কথা বলতেছিলেন। যে, ১৯৭১-এর পরে পলিটিকাল-এলিটরা কোসঠাসা হয়ে পড়ছিলেন (যারা পাকিস্তান আমলে আওমি লিগের রাজনীতির ভিতর দিয়া পাওয়ার গেইন করছিলেন, তারা), আমলা-এলিট, মিলিটারি-এলিট এবং কালচারাল-এলিটদের মোকাবেলায়। কারণ রাজনীতি কইরাও উনারা উনাদের বিজনেস বাঁচাইতে পারেন নাই, সরকারিকরণের হাত থিকা।

তো, সরকার কারা? 🙂 ভার্সিটি পাশ করা লোকজনেরাই তো! মেবি স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় উনাদের অই পাওয়ার নাই, কিন্তু পাওয়ারে তো কম-বেশি উনারাই যাবেন সরকারি চাকরির অই পোস্টগুলাতে। এই কারণে ভার্সিটি হইতেছে আসলে এক ধরণের কালচারাল অরিয়েন্টেশনের জায়গা, মিডল-ক্লাসের এলিটিজম শেখার। স্কুল-কলেজও আসলে অইটাই, যেইখানে কিছু সাবজেক্ট ও স্কিল শেখানো হয় না, বরং কালচারাল অরিয়েন্টশনটাও একটা ঘটনা। আগে যেমন মিশনারি স্কুলগুলা ভালো ছিল এখন এলিটদের ইংলিশ-মিডিয়ামের বাইরে ঢাকার কয়েকটা স্কুল-কলেজই ভালো, কারণ এইখানে এলিটদের বাচ্চাদের লগে আপনার বাচ্চা “ফ্রেন্ড” হইতে পারবে। আর এই এলিটিজম হইতেছে সমাজের ‘অশিক্ষিত’ ‘অর্ধশিক্ষিত’ মানুশদেরকে হেইট করা।

মানে, এইখানে যদি কোন “অর্ধশিক্ষিত” “অশিক্ষিত” মানুশ না থাকে, আপনি হেইট করবেন কারে? বা কার তুলনায় “শিক্ষিত” হয়া উঠবেন? সমাজের সবাই-ই যদি “শিক্ষিত” হয়, তাইলে কি “শিক্ষিত” হওয়ার কোন মানে থাকতে পারে? এই যে “শিক্ষিত” হওয়া – এইটা সবসময়ই একটা কম্পারেটিভ ঘটনা, যে অল্প-কিছু সিলেক্টিভ লোকজনই হইতে পারার কথা। এইটা এই ভার্সিটি-শিক্ষার সিস্টেমের মধ্যে ইনহেরিয়েন্ট একটা ঘটনা। যে, দে আর দা চুজেন ওয়ানস! উনারা “বেশি জানেন”।

এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, উনারা “জানেন না”, বরং এই জানাটা একটা ক্লাস-স্ট্যাটাসের ঘটনা। আপনি ভার্সিটিতে পড়ছেন মানেই হইতেছেন আপনি একটু আপার-ক্লাসের লোক। এই ডিফরেন্সটা একটা জ্ঞান-তাত্ত্বিক ঘটনা না, এইটা সোশাল-ডিলেমাও, যেইটা একটা কনফ্লিক্টের দিকে টার্ন করে।

(টু বি কন্টিনিউ…)

Continue reading

নোটস: জানুয়ারি, ২০২৩ [পার্ট ১]

জানুয়ারি ১, ২০২৩

নিউজ-মিডিয়ার “পজিটিভ নিউজ”

বাংলাদেশে নিউজ-মিডিয়াতে, মানে পত্রিকা-টিভি-ওয়েবপোর্টালে “পজিটিভ নিউজ” পাবলিশ করার ট্রেন্ড অফিসিয়ালি শুরু হয় মেবি ২০১৪-২০১৫ সালের দিকে। এইরকম একটা ভাইব তোলা হয় যে, দুনিয়াতে কি খালি সব খারাপ জিনিসই ঘটে নাকি! দেশের সব খবরই কি খারাপ! গর্ভমেন্ট কি খালি সব খারাপ কাজ করে! ভালো কিছুই কি নাই!

তখন ভালো-ভালো কিছু নিউজ করার ট্রেন্ড চালু হইলো 🙂 এখন তো মোটামুটি ৮০% – ৯০% নিউজ-ই “উন্নয়ন”-এর। (“ডিজিএফআই নিউজ” কি বলা যাইতে পারে টার্ম হিসাবে?) যেইটা একটা অল-আউট প্রপাগান্ডা হিসাবে শুরু হইছে ২০১৮ সালের পরে।

তো, এলান বাদিউ’র একটা কথা ছিল এইরকম যে, সমাজে যখন জাস্টিস থাকে, ভালো-বিচার হয়, তখন সেইটা নিয়া হাউকাউ করার কোন ঘটনা কিন্তু ঘটে না, বরং যখন কোথাও ছোট-খাট একটা অন্যায় ঘটে, ভুল-বিচার হয় তখন সেইটা নিয়া মানুশের কথা বলা লাগে, তা নাইলে অ-বিচারের জায়গাটারে আইডেন্টিফাই করা যায় না, তার কোন সলিউশন করা যায় না।

একইরকমভাবে নিউজ-মিডিয়ার কাজ ছিল (এখনো কিছু জায়গাতে আছে) “নেগেটিভ নিউজ” প্রচার করা না, বরং সমাজের অই অ-বিচারের জায়গাগুলারে তুইলা ধরা, শাউট-আউট করা। কারণ “উন্নয়ন” যদি ঘটেই, বিচার যদি থাকেই সেইটারে আলাদা কইরা বলার দরকার পড়ে না। সেইটা আপনি-আমি আমাদের ডেইলি লাইফের ভিতর দিয়া কম-বেশি টের পাওয়ার কথাই। আলাদা কইরা বলা যাবে-না না, অইটা একটা প্রপাগান্ডা-মেশিনের বাইরের কোন জিনিস আর হয়া উঠতে পারে না।

তো, নিউজ-মিডিয়া ভর্তি “পজিটিভ নিউজ” (পড়েন, সরকারি-প্রপাগান্ডা) দেখতে দেখতে মানুশ আসলে টায়ার্ড। [যেইরকম দেখবেন, ফেইসবুক ভর্তি ‘সুখের ছবি’ আমাদেরকে খুব বেশি আনন্দ দেয় না, এই কারণে না যে, মানুশ জেলাস! বরং আমরা জানি, এইগুলা পার্শিয়াল জিনিসই, পুরা ঘটনা না, আমাদের লাইফের।…]

এখন মানুশ “নেগেটিভ নিউজ” চায় না, কিন্তু এই “পজিটিভ নিউজগুলার” একটা উদ্দেশ্য যে হইতেছে, অন্যায়-অবিচারের ঘটনাগুলারে হাইড করা, সেইটা আমরা টের পাই।

যেই কারণে “পজিটিভ নিউজ” খালি ভুয়া জিনিসই না, ধীরে ধীরে “অশ্লীল” একটা আইটেমে পরিণত হইছে এখন।

সুখে শান্তিতে থাকা

আমি ভাবতেছিলাম, একজন মিনিমাম সেন্সিবল মানুশের জন্য বাংলাদেশে এই সময়ে বাঁইচা থাকার সবচে বড় শাস্তি কোনটা?

আমার কাছে মনে হইছে, দেশ-সমাজ-রাষ্ট্র নিয়া চোখ বুইজা থাকা, এট এনি কস্ট “পলিটিক্স” না করা, এবং চারপাশের অন্যায়-অত্যাচার-জুলুম-নিযার্তন নিয়া কোন টু-শব্দটা না কইরা একজন (ইউরোপিয়ান, আসলে কলোনিয়াল) “ইন্ডিভিজুয়াল” হয়া থাকা! অ্যাজ ইফ কোনকিছুই ঘটতেছে না! যা কিছুই ঘটতেছে, তা নিয়া আমার কিছু যায় আসে না!

এইরকম একটা পজিশন নিয়া কতো মানুশ যে তাদের ডেইলি লাইফ পার কইরা দিতেছে! “সুখে শান্তিতে” থাকতেছে! অথচ আমি ভাবতেছি যে, এর চে টেরিবল জিনিস আর কি হইতে পারে!

Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২২ [পার্ট ২]

ডিসেম্বর ১৭, ২০২২

ফুটবল খেলার স্টাইল, ফরম্যাট বা স্কিল-সেটের কথা যদি ধরেন, তাইলে কিন্তু আইডিয়ালি আর্জেন্টিনার খেলা যদি কেউ পছন্দ করেন, তার কিন্তু ব্রাজিলের খেলাও ভালো-লাগার কথা, এবং ভাইস-ভার্সা। মানে, দুইটা টিমেরই ট্রাডিশন হইতেছে স্টাইলিশ ফুটবল খেলা, এমন পাস ক্রিয়েট করা যেইগুলা মোটামুটি আন-বিলিভেবল। খেলায় স্পিড যে নাই – তা না, কিন্তু অইটা মেইন স্ট্রেংথ না, বরং অনেক সময় বল নিয়া চুপচাপ দাঁড়ায়া থাকে, কয়েক সেকেন্ড, মোটামুটি সব খেলাতে। দুই দলই।

অন্য দিকে জার্মানি, ফ্রান্সের খেলার ধরণ কাছাকাছি রকমের। বুলেটের মতো ছোটে! জিতেও বেশি। যেইটারে মোটাদাগে ইউরোপিয়ান ফুটবল বলে লোকজন। যদিও স্পেনের খেলা একইরকম না। নেদারল্যান্ডসও অনেক শরীর দিয়া খেলে।

তো, আমি বলতে চাইতেছি ব্রাজিল ভার্সেস আর্জেন্টিনা – এই যে দুশমনি, এইটা খেলার জায়গার ঘটনা না এতোটা, অন্য অনেক ফ্যাক্টর বরং থাকার কথা এইখানে।

ডিসেম্বর ২০, ২০২২

বদরুউদ্দীন উমর

বদরুউদ্দীন উমর হইতেছেন, সেই সময়ের ইন্টেলেকচুয়াল যখন আইডিয়ালিস্ট হওয়া এবং সোশ্যাল লাইফে ভালো-মানুশ হয়া থাকাটারেই আমরা একটা ইন্টেলেকচুয়াল ঘটনা বইলা দেখতাম। এখন অবশ্যই সময়-সুযোগ মতো পজিশন চেইঞ্জ করতে পারা (মানে, ধান্দাবাজ হওয়া) এবং সোশ্যালি বাটপার হওয়াটা ইন্টেলেকচুয়ালিটির ঘটনা না, যদিও কম-বুদ্ধির মিডিয়া-পিপললরা এইটাই বুঝাইতে চায় আমাদেরকে। বরং আমরা আসলে বুঝতে পারি যে, আইডিয়ালিস্ট হওয়াটা ন্যারো একটা জিনিসই, এবং ভালো-মানুশ হওয়াটা হইতেছে মিনিমাম সোশ্যাল-রিকোয়ারমেন্ট, বা এর যে ন্যারেটিভ, সেইখানে কম-এফেক্টিভ হয়া থাকার একটা ঘটনাও ইনক্লুডেডে। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের চিন্তা-ভাবনায় বদরুদ্দীন উমরের ইন্টেলেকচুয়ালিটি একটা পাস্ট বা অতীতের ঘটনা, যেই বেইজটা এখন আর ভ্যালিড তো না-ই, বরং প্রবলেমেটিকই কিছুটা।

এমনকি আইডিওলজিক পজিশনটারে রিভিউ করতে রাজি না হয়া বদরুদ্দীন উমর কিছু হিস্ট্রিকাল-লাইও প্রডিউস করছেন। (এইরকম একটা নমুনার লিংক নিচের কমেন্টে দিতেছি।) আমার ধারণা, এইরকম আইডিওলজি-এক্সট্রিমিস্ট হওয়ার বিপদ নিয়া আমরা খুববেশি কনশাস হইতে পারি নাই এখনো। যে, উনারা তো ভালো-মানুশ! আর যিনি ভালো-মানুশ তিনি তো ভুল-কথা কইতে পারেন না! এখন একজন জানা-বোঝা লোক খারাপ-মানুশ হইবেন না – এইটা আমাদের এক্সপেক্টশন, এবং এইটা খারাপ-এক্সপেক্টশন না, কিন্তু কেউ একজন ভালো-মানুশ বইলাই ঠিক-কথা বলতেছেন – এইটা ভুল একটা প্রিমাইজ, কোন ডাউট ছাড়াই। তো, বদরুদ্দীন উমরসহ অন্য বামপন্থী-বুদ্দিজীবী’রা এই ভুল-প্রিমাইজটার উপর ভর দিয়াই চলতেছেন, যেইটা এখন আর সাসটেইন করতে পারতেছে না। (বা এখনো পারলেও, বেশিদিন আর পারবে না আসলে।)

সবচে আনফরচুনেট ঘটনা হইতেছে, উনার চিন্তার কোন ক্রিটিক তো দূরে থাক, কোন সিগনিফিকেন্সও এখন পর্যন্ত হাইলাইট করা হয় নাই। কয়েকজনরে বলতে শুনি, উনার এই এই বই ভালো! কিন্তু কেন ভালো? – এই নিয়া আলাপ দেখবেন মিসিংই না খালি, নাই-ই। মানে, বাংলাদেশে, আমাদের চিন্তা-ভাবনার দুনিয়াতে উনার চিন্তা-ভাবনার রিলিভেন্সটা আসলে কই? (আমি কোশ্চেন হিসাবেই বলতেছি। ইন ফিউচার, কোন একটা আনসার দেয়ার ট্রাই আমিও করবো মনেহয়।)
Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২২ [পার্ট ১]

ডিসেম্বর ০৩, ২০২২

এইটা খুবই ভুল-ভাবনা যে, ফেইসবুকে ঢুকলে বা অনলাইনে থাকলে সারা-দুনিয়ার খবর আমরা পাই। বরং আমাদের চোখের সামনে যতটুক দেখি, ততটুকরেই সারা-দুনিয়া বইলা ভাবার ইল্যুশনটা আরো বড় হয়। (এমনকি আমার সন্দেহ ফেসবুকে ডাইবারসিটির জায়গাটাও রিডিউস করা হইতেছে অনেক।)

যেমন, আমার নিউজফিডের মোটামুটি ৭৫% মানুশই হইতেছে ঢাকা শহরের; যার ফলে রাজশাহীতে গত কয়দিন ধইরা “পরিবহন ধর্মঘট” নামে যেই আজাব চলতেছে, ধর-পাকড় হইতেছে, সরকারিভাবে ইন্টারনেট-সার্ভিস অফ কইরা দেয়া হইছে – সেইটা আমি টের পাইতেছি না। (অই নিউজগুলা মিডিয়াতে তো নাই-ই, ফেসবুকেও স্প্রেড হইতে দেয়া হইতেছে না বইলাও আমার মনেহয়।) কিন্তু নেকস্ট-উইকে ঢাকা-শহরে যখন এই কাজ করা হবে – মনে হইতে থাকবে, পুরা দুনিয়াই অন্ধকার হয়া আসতেছে!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, আমার সাথে ঘটতেছে না, বা আমার এলাকায় ঘটতেছে না বইলা এইটা মেবি “সত্যি” না – এইরকম একটা রিয়ালিটির পারসেপশন খুব স্ট্রংলি এগজিস্ট করতেছে। ফেইসবুকের ভিতর দিয়া বা অনলাইনের ভিতর দিয়া কম্পার্টমেন্টালাইজেশন ঘটতে পারতেছে, আরো বেশিই আসলে।

***

শাহ আলম সরকার

বাংলাদেশের আর্ট-কালচারের ব্যাপারে একটা জিনিস আমি খেয়াল করছি, সেইটা হইতেছে, অনেককিছু আমরা শুনছি, দেখছি, পড়ছি বা জানি, কিন্তু কার লেখা বা বানানো অই আর্ট-ওয়ার্কটা সেইটা আমরা ‘জানি না’!

যেমন ধরেন, ‘এতো যে নিঠুর বন্ধু জানা ছিল না’ ‘আকাশটা কাঁপছিল ক্যান, জমিনটা নাচছিল ক্যান’ ‘বুকটা ফাইট্টা যায়’ ‘বান্ধিলাম পিরিতের ঘর’ ‘খাজা বাবা খাজা বাবা মারহাবা মারহাবা’… টুকটাক বাংলা-গান শুনেন এবং এই গানগুলা শুনেন নাই, এইরকম লোক কমই আছেন। কিন্তু এই গানগুলা যারা শুনছেন তাদের মধ্যে খুব কম (মানে, মিডল-ক্লাসের) লোকই জানেন যে, এইগুলা শাহ আলম সরকারের গান।

এমনিতে, একটা ক্লাসের কাছে উনি তো একজন ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’ই। কিন্তু বাংলাদেশের গানের আলাপে উনার নাম তেমন একটা পাইবেন, অইটা সবসময় এক্সক্লুডেড থাকে। যারা পছন্দ করেন, জানেন, তারাও শাহ আলম সরকারের নাম নিতে শরম পাওয়ার কথা কিছুটা, কারণ ‘স্মার্ট’ হওয়ার বিপরীতে ব্যাপারটা তো ‘খ্যাত’-ই কিছুটা! 🙂

তো, শাহ আলম সরকার একবার বলতেছিলেন, গীতিকবি’র নাম তো কেউ মনে রাখে না। অনেক গান মমতাজ গাইছে বইলাই হিট হইছে, এবং এইজন্য উনি হ্যাপিও। কিন্তু ঘটনা এইটুক বইলাই আমার কাছে মনেহয় না। মানে, গীতিকবি’র চাইতে সিঙ্গারের কথা আমরা বেশি মনে রাখি, এর বাইরেও যেইসব জিনিসরে আমরা ‘কবিতা’ বইলা মর্যাদা দিতে রাজি আছি, সেইখানে এই জনরা’র এবসেন্স তো আছেই, লিরিকস হিসাবেও ‘ফোক’র মধ্যেই রাখি। যেন কেউ একজন এই গানগুলা লেখেন নাই! শাহ আলম সরকার লিখলেও এইটা ‘ফোক সং’, উনার গীতি-কবিতা না!

এইটা একটা সিগনিফিকেন্ট কালচারাল-বদমাইশি।

শাহ আলম সরকারের জন্ম ১৯৬৫ সালে, আর উনার ফার্স্ট গান রেকর্ড করেন ১৯৯১ সালে। সেই হিসাবে উনি কিন্তু ‘নব্বই দশকের কবি’! মানে, খুবই কনটেম্পরারি।

তো, এইটা খালি শাহ আলম সরকারের ব্যাপারেই ঘটে নাই, পুরা একটা কালচারাল হিস্ট্রিরে ‘অচ্ছুত’ কইরা রাখার ঘটনা এইটা। কারণ উনি তো একটা সিলসিলা থিকাই আসছেন, যেইখানে আবুল সরকার, রাজ্জাক দেওয়ান, গফুর হালী, আরো অনেক অনেক নাম পাইবেন।…

কলোনিয়াল-কালচাররে ‘উচ্চতর’ বানাইতে গিয়া কেমনে এই জায়গাটারে ‘ফোক’ কইরা রাখা হইছে, সেইটা খেয়াল করাটা এখন মাস্ট হয়া গেছে আসলে।
Continue reading