ঋতুপূর্ণ ঘোষই প্রথম সাকসেসফুললি সেক্স বেচতে পারছেন কলকাতার সিনেমায়

সিনেমার বাংলা নামটা হইলো, ‘দোসর’; ২০০৬ সালের সিনেমা। সম্ভবত ঋতুপূর্ণ ঘোষই প্রথম যিনি প্রমাণ করতে পারছেন যে, কলকাতার সিনেমাতে সেক্স একটা বেচার জিনিস… শুধুমাত্র কাহিনি হিসাবে না, ইমেজ হিসাবে; যে, কলকাতার সিনেমাতে সেক্স নিয়া আরো সরাসরি হওয়া পসিবল।

যেমন ধরেন, সৎজিত রায় তার পিকু’তে সেক্স’রে যেইভাবে দেখান সেইখানে দর্শক একটা বাচ্চা-ছেলে হিসাবে ধারণা করতে পারে বা শব্দ [অথবা নিরবতা, এই অর্থে যে ‘দ্য ইনোভেশন অফ লাইয়িং’ সিনেমাতে নায়ক যখন ডেটিংয়ের জন্য নায়িকারে আনতে যায় তার বাসায়, তখন নায়িকা উপরের ঘর থিকা বলে যে আসতেছি, তার কিছুক্ষণ পর নায়িকা নামে, নায়ক যখন তারে জিগায়, শে বলে যে আমি মাস্টারবেট করতেছিলাম, তুমি কি আমার আওয়াজ শুনতেছিলা নাকি, নায়ক বা দর্শক তখন সেই নিরবতারে সেক্সের আওয়াজ হিসাবে আইডেন্টিফাই করতে পারে] শুনতে পায় যে সেক্স হইতেছে। এমনিতে ইমেজ হিসাবে কোনকিছু নাই; বা বাপেরা মায়েরা সেক্স করে, আমরা (দর্শকরা) বাচ্চা হিসাবে তা জানতে পারি। কিন্তু ঋতুপূর্ণ ঘোষ দর্শকদেরকে অ্যাডাল্ট হইতে বলেন; বলেন যে, এইটা নিয়া আমরা কথা বলতে পারি ত! Continue reading

কমলকুমার

অগ্রন্থিত কমলকুমার। কমলকুমার মজুমদার। অবভাস। কলকাতা। নভেম্বর, ২০০৮।

 

একটা বইয়ের সব লেখা সব পাঠকের জন্য না। এই কথাটা আমি বুঝতে পারলাম হঠাৎ (এক এক দেশে হঠাৎ আছে বইলা কমলকুমারও বলছেন,  তিনি ঠিক ব্যক্তির পর্যায়ে না বললেও, এইভাবে ট্রান্সলেশন করা যাইতে পারে) ছোট্ট বইটা পড়তে গিয়া, যেইখানে তাঁর কবিতাও আছে; কবিতা, মানে এক ধরণের হয় নাই ঘটনা, যদিও গোলাপ হইছে; হয় নাই মানে খুবই ট্রাডিশ্যানাল আর কি… হিন্দু জীবনের ভার, নিশ্চিতির মতো তার ভাবনার ভিতর আটকাইয়া আছে, এতোটা নিশ্চয়তা কবিতা ত ঠিক অ্যাকোমোডেড করতে পারে না, আবার ঠিক চাপানো যে কাব্যিকতা সেইটারও বাইরের ব্যাপার, হয়তো তা-ই গদ্যই একটা উপায়… এইটাতে আসলে ‘হয় নাই’ নাই, বরং ‘হওয়া’টাই আছে, যারে নিতে পারা যাইতেছে না, অ্যাজ এ হোল যে টোটালিটিটা দাঁড়াইতেছে, তারে অস্বীকার না করতে পারলে লেখার আর কোন অর্থ-ই ত আর নাই। Continue reading

আজম খান নামের ঘটনারে আমার সালাম

১.
বাংলাদেশ মানে যে ঢাকা শহর – এই কালচারাল পরিচয় বানানোটাই আজম খান-এর আসল ক্রেডিট। আজম খানের আগে (তার সময় এবং এখনো প্রায়) আসলে বাংলা-সংস্কৃতি ছিল (বা আছে) কলকাতা-কেন্দ্রিক হয়া। বাংলাভাষার পপুলার গানগুলা উৎপাদিত হইছে অইখানেই: শচীন, হেমন্ত, মান্নাদে ইত্যাদি। এর বাইরে যদি কাজী নজরুল ইসলাম বা আব্বাসউদ্দীনের কথাও বলেন, উনাদের স্বীকৃতিটা ওই কলকাতা থিকাই আসছে। রবীন্দ্রনাথের কথা আর কইলাম না, যেহেতু উনি নিজেই কলকাতা! আজম খানের গানই প্রথম ব্যতিক্রম, যা কলকাতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় নাই, বা অই প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিটারে গুরুত্বপূর্ণ কইরা তোলে নাই। তাই উনারে আমার সালাম জানাই।

২.
তো, এইটার প্রতিক্রিয়া বা এফেক্টটাই বা কেমন হইলো? আমার ধারণা অনেকেরই তথ্য আকারে জানা আছে যে, উনার গানরে একসেপ্ট করা হয় নাই, শুরুতে। কিন্তু সময় যত পার হইছে, ‘বাংলাদেশ’ ধারণাটা যতটা প্রতিষ্ঠিত হইছে, আজম খানের গানও তার স্পেস কইরা নিতে পারছে।

তখন (এবং এখনো) তার গানের বিরোধিতাটা ছিল দুইটা জায়গা থিকা: কলকাতা-কেন্দ্রিকতা এবং গ্রাম-বাংলার অনুসারীরা – এই দুইটা ধারণার লোকজনই তার গানরে নিতে পারে নাই। আসলে গ্রাম-বাংলা বইলা তো কিছু নাই! যা আছে সেইটা পুরানা একটা মিথ, যেইখানে ধারণা করা হইতো যে আছে সহজ-সরল-স্বাভাবিকতা। আজম খান ‘নগর’ নিয়াই চিন্তিত হইছেন, ঢাকা শহরের গানই তিনি গাইছেন মেইনলি। এইভাবে গ্রাম-বাংলার বাংলাদেশরে তিনি ঢাকা শহর দিয়া রিপ্লেইস কইরা ফেলছেন। এইটা একটা ঘটনা, যেইটাতে গ্রাম-বাংলার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হইছেন, মানে চেতছেন। কিন্তু তাদের চেতাচেতির কোন মেরিট আসলে কিছু নাই। কারণ গ্রাম-বাংলা’র কোন কালচার তারা নিজেরাও তৈরি করতে পারেন নাই। আসলে গ্রাম-বাংলা’র নাম দিয়া তারা কলকাতার সফিশটিকেশনরেই সার্পোট করছেন এবং করতেছেন। এর বাইরে এক ধরণের বোকা বোকা গ্রামও উৎপাদিত হইতেছে এখন, টিভি নাটকে।

Continue reading