বাংলাদেশে কমিউনিস্ট মানে হইলো জমিদারের পোলা

“… কিন্তু মাস দেড়েক পরেই ইন্ডিয়ান হাইকমিশন থেকে আমাকে জানানো হয়, অতুল লাহিড়ী নাকি তাঁদের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছে যে, ঢাকার মুসলমানরা আমাকে আটকে রেখেছে। ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের দায়িত্ব এখন আমাকে কিছুদিনের জন্য একটি হিন্দু পরিবারের সঙ্গে রাখা অতঃপর আমাকে কলকাতা পাঠিয়ে দেওয়া। আমি অবাক হয়ে তাঁদের জানালাম যে মোটেই মুসলমানরা আমাদের আটকে রাখেননি, এটা একটা মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ। আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। অতুল আমাকে ভালোবাসতো, কমিউনিস্ট পার্টি করতো। তাঁর মতো একজনের কাছ থেকে এতটা নীচতা আমি আশাও করিনি।”

/জীবন নদীর পাড়ে, সুমিতা দেবী

———-

১৯৫৮-তে আইয়ুব খাঁ মার্শাল ল দিলে অতুল লাহিড়ী [সুমিতা দেবী’র ফার্স্ট জামাই] ইন্ডিয়ায় চইলা যান, সুমিতা দেবী’রেও যাইতে বলেন, কিন্তু সিনেমার কাজ চলতেছিল বইলা উনি যান নাই [বা হয়তো তখন জহির রায়হানের প্রেমে পড়ছিলেন, যা-ই হোক…]। যাওয়ার সময় অতুল লাহিড়ী তারে কাগজে লিইখা দিয়া যান যে, সম্পর্ক শেষ! পরে ইন্ডিয়ায় গিয়া আবার তারে নিয়া যাওয়ার ট্রাই করেন। নানান ফন্দি-ফিকির করেন…।

সুমিতা দেবী’র বিশ্বাসটা দেখেন দুইটা জায়গায় – ভালোবাসা আর কমিউনিজম। অথচ দুইটাই ডেডলি উইপেন। দুনিয়াতে যত দাবায়া রাখার/লিমিট করার ঘটনা ঘটে তার প্রায় পুরাটাই এই ‘ভালোবাসা’র নামে। মানে, এইটা একটা লম্বা কাহিনি।…

সেকেন্ডলি, কমিউনিস্ট হওয়ার ঘটনাটা; এইটারে এলিট হিন্দুজম বইলা রিড করলে ভুল হবে আসলে। মনি সিং যে কমিউনিস্ট হইছিলেন, সেইটার সেলিং পয়েণ্ট এইটাই যে, উনি আছিলেন জমিদারের পোলা। জমিদারের পোলারাই যেইখানে কমিউনিস্ট হয়, কমিউনিস্ট হওয়ার ভিতর দিয়া আপনিও কিছুটা জমিদার হইতে পারেন তো। 🙂

এই প্রাইডটা দেখবেন বাংলাদেশের [সো-কল্ড] কমিউনিস্টদের এখনো আছে যে, উনারা ডিফরেন্ট! কথা কওয়ারই একটা প্যাটার্ন আছে যেইটা কমন পিপল থিকা আলাদা।  এই ডিফরেন্সটারেই কমিউনিস্ট বইলা ভাবতে পারেন উনারা এবং অন্যরাও। জমিদার ব্যাপারটা যেহেতু পুরান হইছে কালচারালি, এইজন্য দেখবেন একটু ‘গ্রাম্য’ও থাকা লাগে উনাদের। 🙂  Continue reading

কালাচারাল পলিটিকস নিয়া

এই যে ঘটনাগুলি – শাহাবাগ, মতিঝিল; মুক্তিযুদ্ধ, ইসলাম; ব্লগ, হেফাজত… এই বিষয়গুলা যে বাইনারি অপজিট না এইটা বাংলাদেশে এখন যে কারোরই বোঝার কথা। তারপরও বলা, কারণ পলিটিক্যালি এমনভাবে হাজির আছে যে, সেইটা মনে হইলেও কাউরে দোষ দেয়া সম্ভব না। কালাচারাল ক্রাইসিসটারে পলিটিক্যালি ব্যবহার করতে গিয়াই এই ঘটনা ঘটছে। তার মানে এই না যে, এইখানে কোন কালচারাল ক্রাইসিস নাই। বরং এর পলিটিক্যাল সমাধান অনেকে এইভাবেই করতে চাইতেছেন! জোর কইরা সাংস্কৃতিক অনৈক্যগুলারে চাপা দেয়ার এই যে লিবারাল চেষ্টা, এইটাই পলিটিক্যাল ফান্ডামেন্টালিজমরে আরো জোরালোভাবে সামনে নিয়া আসতেছে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

অনেক ধরণের সংকট এবং সম্ভাবনাই একটা সংস্কৃতির ভিতরে থাকে। যেমন, এখনকার বাংলাদেশের কথা যদি ধরেন, আপনি বাঙালি হইলে মুসলমান হইতে পারবেন না, হয় নাস্তিক (পড়েন, ৬০ এর কমিউনিস্ট) হইবেন, নাইলে হিন্দু (ইন্ডিয়ার সার্পোটার); এইটারে বলা যাইতে পারে, সিম্বলিক ট্রুথ এর পূজারী। আবার, আপনি মুসলমান হইলে বাঙালি হইতে পারবেন না, আপনি হয় আফগানিস্তান থিকা আইছেন, নাইলে পাকিস্তানে যাইবার পাঁয়তারা করতেছেন। এইটারে বলা যাইতে পারে ইম্পেরিক্যাল ট্রুথ এর মওলানা। এইভাবে কালচারাল ডিফারন্সিয়েশনের জায়গাটা ছড়াইতেছে।

Continue reading