তর্কে কি কি জিনিস করবেন না

[তর্ক করা আমার অনেক দিনের স্বভাব। বাজে স্বভাব-ই একটা। 🙁 যদিও চুপ কইরা থাকার প্রাকটিস করতে চাই এখন, কিন্তু পারি বইলা মনেহয় না।

তো, নানান সময়ে তর্ক করতে গিয়া কিছু জিনিস অবজার্ভ করছি। ভাবলাম, বইলা রাখা যাইতে পারে তো, এইসব নিয়া! 🙂 ]

১. রেটরিক করতে (মানে, ঠেস মারতে) পারটারে যুক্তি দেয়া হিসাবে ভাইবেন না। দুইটা মোস্টলি আলাদা আলাদা জিনিস।

২. কোন আর্গুমেন্টরে ন্যারোড ডাউন কইরা ফেইলেন না। যেমন ধরেন, কেউ কইলো ক্রিকেট খেলার লগে পলিটিকসের রিলেশন আছে; তখন এইভাবে আর্গুমেন্টটারে মোকাবেলা কইরেন না যে, ক্রিকেট খেলার পুরাটাই পলিটিকসের ঘটনা। 🙁

৩. পাবলিকরে খুশি করার লাইগা বা খালি জিতার লাইগা তর্ক কইরেন না। কোন তর্ক যদি সার্টেন ইস্যুরে এক্সপ্লোর করতে না পারে, ব্যাপারটা আসলে খামাখা।

৪. কোন মানুষরে অপমান কইরেন না। ব্যাপারটা তখন তর্ক থাকে না।

৫. সবার লগে তর্ক করার দরকার নাই। সবার লগে তর্ক করলে প্রেম, ভালোবাসা, শত্রুতা, ঘৃণা, এইসব কার লগে করবেন! 🙂

৬. সবচে ভালো হইতেছে, নিজের লগে তর্ক করা।কিন্তু এই কারণে নিজেরে অপছন্দ করার দরকার নাই। মানে, তর্ক করার লগে কাউরে পছন্দ করা বা অপছন্দ করার রিলেশন কমই। তবে যাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে তেমন কোন পরিচয় নাই, তাদের সাথে তর্ক করতে যাওয়াটা কিছুটা রিস্কি, কথাগুলা মিসলিডিং হওয়ার চান্স বেশি থাকে। Continue reading

‘বাংলার দর্শন’ বই নিয়া

Rayhan Rhyne এর ‘বাংলার দর্শন’ (প্রাক্ উপনিবেশ পর্ব) বইয়ের ইন্ট্রু’টা পড়ছি, কয়দিন আগে। পড়ার পরে তিনটা জিনিস মনে হইছে। ভাবলাম, বইলা রাখা যাইতে পারে।

একটা ইর্ম্পটেন্ট জিনিসটা উনি ফিল করছেন, এই যে বাংলার দর্শন, তারে তো বাংলার কনটেক্সটে পড়া হইতেছে না, পড়ার চান্স আছে বরং ‘পশ্চিমা দর্শনের’ কনটেক্সটে, যার ফলে মিনিং একই রকম থাকতেছে না! উনি এইভাবে বলছেন, “বাংলার দর্শনের পরিভাষাগুলোর তাৎপর্য খুঁজতে হবে এগুলোর সঙ্গে যুক্ত সংস্কৃতির ভিতর।… সহজিয়া মতের ‘সহজ’কে কেউ যদি ফরাসি ‘সুজে’ (Subject)-এর সঙ্গে মিলিয়ে দেন কিংবা হেগেলের ‘স্পিরিট’-এর ধারণা দিয়ে লালন সাঁইয়ের ‘অরূপ রতন’কে বুঝতে চান, তাহলেও একই রকম অর্থবিপর্যয় ঘটে। পশ্চিমের দর্শনের পরিভাষার সঙ্গে বাংলার দর্শনের পরিভাষা বা উভয় দর্শনের তুলনামূলক পাঠ নিশ্চয় হতে পারে, কিন্তু পশ্চিমা দর্শনকে মানদন্ড ধরে তার আলোকে বাংলার দর্শন পাঠ করা হলে তাতে এ অঞ্চলের দর্শন সম্প্রদায়গুলোর অবস্থান যে সঠিকভাবে বোধগম্য হবে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায়।” উনার এই কথা খুবই ঠিক যে, রেফারেন্স সিস্টেমটা ইর্ম্পটেন্ট; কোনটার সাপেক্ষে আমরা রিড করতেছি; কিন্তু একটা টেক্সটরে তো কোন না কোন রেফারেন্সের বেসিসেই রিড করা লাগবে, সেইটা ‘বাংলা সংস্কৃতি’-ই হোক বা ‘পশ্চিমা দর্শন’। আমার ফেভারিট এক্সাম্পল দিয়া বলি, আল-কেমি তো একটা সময়ের ঘটনা, অইটা তো নাই এখন, বরং এর জায়গায় কেমেস্ট্রি চলে আসছে; তো এখন আল-কেমি’রে আলকেমি’র কনটেক্সটে পড়া কি পসিবল? হুবহু একইরকম না হইলেও, ঘটনাটা এই রকমেরই। “বাংলার দর্শনরে” আপনি বাংলার কনটেক্সটে কেমনে পড়বেন? বাংলার দর্শন বলতে যে বৌদ্ধ চিন্তা-পদ্ধতিরে লোকেট করতে চাইছেন রায়হান রাইন, সেইটা কোন না কোন ‘বর্তমান’ এর রেফারেন্স দিয়াই তো রিড করা লাগবে। এর ‘অরিজিনাল’ মিনিংটারে রিভিল করার লাইগা পুরা একটা সিস্টেমরে আন-ফোল্ড করার কথা হইতেছে, যেইটার প্রেজেন্স অ্যাজ সাচ নাই কোথাও। মানে, উনি রেফারেন্স সিস্টেম হিসাবে সাজেস্ট করতেছেন – “বাংলার সংস্কৃতি”রে। কিন্তু এই “বাংলার সংস্কৃতি” কি জিনিস? Continue reading

আর্টের বিচার কেমনে করবেন?

আমাদের ‘আর্ট ধারণা’র মুশকিল’টা কই বা কোন জায়গায়? – সেইটা নিয়া আবারো বলি। আর্টের কাজ কোন ‘সমাজের চিত্র’রে ঠিকঠাক মতো তুইলা ধরা না; মানে, এইটা তো সোসাইটি’তে নাই! বা এইটা আমাদের সমাজের রিয়েল চেহারা! – এই টাইপের ক্রিটিক করা’টা। যে, সমাজের লগে ‘মিল’ থাকা লাগবো! এইটা আর্টরে বিচার করার কোন তরিকা হইতে পারে না। (আর্টের সাথে সোসাইটির বা সোসাইটির সাথে আর্টের একটা রিলেশন আছে বা থাকেই।)

বরং উল্টা ঘটনাটাই বেশি ঘটে। এক ধরণের আর্টের ধারণার ভিতর দিয়াই আমরা একটা সোসাইটি’রে বা রিয়ালিটি’রে দেখি বেশি। যার ফলে, একটা আর্ট সোসাইটিতে বা সোসাইটি’র এগজিসটিং আর্টের ধারণাটাতে কতোটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে – সেই জায়গা থিকা একটা বিচার হইতে পারে। (এইটাই যে একমাত্র ক্রাইটেরিয়া – তা না। কিন্তু সোসাইটি’র জায়গা থিকা দেখতে চাইলে এইভাবে দেখাটা এফেক্টিভ হইতে পারে।) যেমন ধরেন, শেক্সপীয়র নাটক লেখার পরে বা ভ্যান গঁগ ছবি আঁকার পরে নাটক বা ছবি-আঁকা ব্যাপারটারে একইভাবে দেখতে পারতেছি না আমরা আর। উনারা একটা ‘স্ট্যান্ডার্ড’ তৈরি করছেন – তা না; যে, এমনে এমনে লেখা লাগবো বা ছবি-আঁকা লাগবো। আর্টের ভিতর দিয়া সোসাইটিরে আমরা যেইভাবে দেখতাম বা সোসাইটি নাটক-লেখা বা ছবি-আঁকা’রে যেমনে দেখে, সেইটা আর ‘ঠিকঠাক’ থাকতে পারে নাই। আরো কাছাকাছি এক্সাম্পল দিলে, মিনিমাম অর্থেও, আজম খানের আগে-পরে বাংলাদেশের গান একই রকম থাকে নাই; এমন না যে সবাই আজম খানের মতোন গাইতে শুরু করছেন। এইরকম। ‘ট্রাডিশনাল’ গানও যে বন্ধ হয়া গেছে – তাও না। আরেকটা রকম ইমার্জ করতে পারছে, গান গাওয়ার; গ্রাম-বাংলা’র জায়গায় ‘শহর’ দেখা গেছে, বাংলাদেশে। এইরকম। Continue reading

অন জোকস (২)

: তুম ইতনে পেরেশান কিঁউ হো, অর্জুন?
: মত পুছো, মেরা দিন ইতনে বাকোয়াজ যা রাহে হে না… মতলব…
: গার্লফ্রেন্ড সে লড়াই হোয়ি?
: উমম হুঁ
: তো ফির?
: ভাই সে…
: বাই সে!
: বাই সে নেহি, ভাই সে! মে বাই সে কিঁউ লড়ো ইয়ার!… লড়োঙ্গা তো ইয়াহা কিঁউ বেঠেঙ্গে, অ্যায়সে…

………………………………………………………………………………………..

জোকস যে কি পছন্দ আমার! সিনেমা’তে এইটা মোটামুটি কমেডি সিন, জোকস।

এক পার্টি’তে গিয়া আলিয়া ভাট গাঞ্জা খাওয়ার লাইগা বাথরুমে ঢুইকা দেখে সিদ্ধার্থ মালহোত্রা মুখ বেজার কইরা প্যানের উপরে বইসা রইছে, তখন এই কনর্ভাসেশন হয়।

দুইটা জিনিস এইখানে। ব্রেকাপ ছাড়া, প্রেমের ঝামেলা ছাড়া হিন্দি সিনেমা’তে অ্যান্ড ইভেন লাইফেও ইয়াং লোকজনের আর কি কারণে খারাপ লাগতে পারে? :p ভাইয়ের লগে মারামারি করা’র কারণে মন-খারাপ এইটা তো খুবই অ্যাবসার্ড ব্যাপার! :)আলিয়া ভাট খালি গাঞ্জা খাইছে বইলা না, এমনেও এইটা তো একটা ডিসট্যান্স রিয়ালিটি। 🙂 এই কারণে বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড টাইপের ঝামেলা যে না, এইটা মন থিকা সরতেই টাইম লাগে। Continue reading

বই শুরু’র আগে… [রুমি’র কাহিনি]

চিটাগাং গেছিলাম ঘুরতে, ফয়েস লেকের রিসোর্টে থাকছিলাম দুইদিন। সেকেন্ড দিনে জিইসি মোড়ে আইসা ব্যাংকের পুরান অ্যাকাউন্ট ক্লোজ কইরা জামালখানে বইয়ের দোকানে গিয়া বই কিনছিলাম কয়েকটা। রুমির কবিতা এর মধ্যে একটা। ‘RUMI Selected Poems’, Coleman Banks এর অনুবাদ করা [লগে John Moyne, A.J.Arberry আর Reynold Nicholson আছিলেন]। পেঙ্গুইন বুকস বইটা ছাপাইছিলো ১৯৯৯-এ, এর আগে হার্পার কলিন্স ছাপাইছিলো ১৯৯৫-এ। আমি পাইছি ২০০৪ এর রিপ্রিণ্ট ভার্সনটা।  কক্সবাজার যাওয়ার পথে পড়লাম, ঢাকায় ফিরার পথে আর ঢাকায় ফিরার পরে। পড়তে পড়তে মনে হইলো, কাহিনিগুলি বাংলায় লিখি। 

ইংলিশ অনুবাদে কাহিনিগুলি কবিতার ফরম্যাটে লেখা। কবিতা বলতে যেইরকম একটা অস্পষ্টতারে মিন করে সেই প্রি-অ্যাজিউমড ব্যাপারটারে মনেহয় এভয়েড করতে চাইছি আমি এইখানে। অনেকগুলি লিখলাম। অনেকগুলি পরে লিখবো বইলা দাগাইয়া রাইখা দিলাম। এইরকম করতে করতে মার্চ থিকা নভেম্বর, ২০১৬’র মধ্যে তেতাল্লিশ’টা কাহিনি বাংলায় লিখলাম। আরো কাহিনি আছে উনার লেখায়, কবিতায়।

এই কাহিনিগুলি খুব নতুন কিছু না। অন্য কোথাও হয়তো শুনছি বা পড়ছি। তবে কাহিনির ফ্যাক্টগুলি উইকিপিডিয়ার মতো অথেনটিক না। নিজের মতো কইরাই বলছেন। একটাকিছু বলতে চাইছেন উনি কাহিনি দিয়া, ঠিক এখনকার চালু ‘যুক্তি’ দিয়া না। যে, দেখেন এইরকম কিন্তু ঘটে আর এইটার মানে কিন্তু এইটা। আমাদের এখনকার সিচুয়েশনটারে যখন যুক্তি দিয়া ব্যাখ্যা করতে পারতেছি না আমরা তখন এইভাবে কেউ যখন একটা কাহিনি দিয়া ডিফাইনড কইরা দিতেছেন, সেইটা তো ভালো লাগে। মনেহয় দুনিয়াটা খালি ইউরোপিয়ান এনলাইটমেন্টের কলোনি না, আরো আরো টেরিটরি আছে। যারা যারা এইরকম ভাবেন না উনারাও এইরকম কেউ কেউ ভাবে বইলা আনন্দ পান মে বি।

‘অন্ধকারের হাতি’ নামে একটা কাহিনি লিখছেন রুমি (মানে, কাহিনিটা আরো অন্যান্য সোর্স থিকাও আমরা জানি), এইরকম: কয়েকজন হিন্দু লোক একটা হাতি দেখানোর লাইগা নিয়া আসলো একটা জায়গায় যেইখানে কেউ কোনদিন হাতি দেখে নাই। অন্ধকার একটা ঘরে যখন হাতিটারে দেখতে গেলো এক একজন, শুঁড় ধইরা কয়, এইটা তো পানির পাইপের মতোন; ঠ্যাং ধইরা কয়, এইটা তো মন্দিরের থামের মতোন, দাঁত ধইরা কয়, এইটা তো পোরসালিন দিয়া বানানো তলোয়ার (সে আবার খুশি হয়, এইরকম সুন্দর কথা কইতে পাইরা)… মানে, আমরা যট্টুক দেখি সেইটা দিয়াই পুরাটারে বুঝার কোশিশ করতেছি। কিন্তু যদি সবার হাতে একটা কইরা মোমবাতি থাকতো, যদি সবাই একসাথে অন্ধকার ঘরটাতে ঢুকতো, তাইলে আসল হাতিটারে দেখতে পাইতো।

তো, রুমি হইতেছেন একটা মোমবাতি। আশা করি উনার হাতিটারে দেখতে পারবো আমরা আবার, একদিন। Continue reading