আর্কাইভ: করোনা ভাইরাস নিয়া পাবলিক পোস্ট (মার্চ ৯ – এপ্রিল ১৫, ২০২০)

মার্চ ৯

স্যানিটাইজার ইউজ করা তো ভালো, মাস্ক পরাও। এইটা কইরা করোনা ভাইরাস থিকা বাঁচা যাবে না – আমরা জানি; কিন্তু তারপরও আমরা যে সাবধান আছি, সেইটা দেখাইতে পারাটা তো জরুরি। মানে, আমি যে ‘সচেতন’ আর এইটা এফোর্ড করতে পারি – এইরকমের স্টেটম্যান্টও তো আছে! (সাবধানতা’টা থাকার পরেও।)

অনেকটা ধরেন, বামপন্থী দলগুলার, বা আর্টিস্ট-ইন্টেলেকচুয়ালদের আওয়ামী বিরোধিতার মতো; যে আমরা তো এটলিস্ট প্রতিবাদ’টা করতেছি! এফেক্টিভ হোক বা না হোক, সেক্সি তো অবশ্যই। 🙂 বরং, এই সেক্সিনেসটাই একভাবে জরুরি হয়া উঠে!

আজকে ধরেন, গর্ভমেন্ট বা এনজিওগুলা যদি রাস্তার মোড়ে মোড়ে ফ্রি স্যানিটাইজার আর মাস্ক বিলাইতে শুরু করে, ব্যাপারটা এতোটা সেক্সি থাকতে পারবে না তখন। এই ‘প্রতিবাদ’ করার ঘটনা’টাও, একইরকম। সবাই বা অনেকে যদি করতে পারে, বা করতে থাকে, তখন এতোটা ‘ক্লাস’-এর ব্যাপার হইতে পারবে না আর। মানে, সাবধান হওয়া যাবে না বা ‘প্রতিবাদ’ করা যাবে না – এইরকম না, একটা ‘ক্ল্যাসি’ বা ‘সেক্সি’ হওয়ার চাইতে ম্যাস লেভেলের ঘটনা বা এফেক্টিভ হইতে পারাটা জরুরি মনেহয়।

 

মার্চ ১৬

কি করা যাইতে পারে? ভাবলাম…

করোনা ভাইরাস নিয়া লেখালেখিগুলা পইড়া দুইটা জিনিস ক্রুশিয়াল মনে হইছে – যারা অলরেডি ইনফেক্টেড হইছেন তাদেরকে আইডেন্টিফাই করা, আর তাদেরকে আলাদা রাখতে পারা, যাতে ছড়াইতে না পারে আর।

তো, এর লাইগা কয়েকটা জিনিস করা দরকার –

১. করোনা ভাইরাসের ইনফর্মেশন জানার এবং জানানোর জন্য ১টা সরকারি হেল্প-লাইন ক্রিয়েট করা দরকার।

জেলা বা এলাকা-ভিত্তিক হেল্প-লাইনও থাকতে পারে।

২. করোনা ভাইরাস যাচাই করার যেই টেস্টিং কিট – সেইটা কোন কোন হসপিটালে আছে, জানানো দরকার।

সব থানা/উপজেলা/ওয়ার্ডে অ্যাভেইলেবল করা দরকার। গর্ভমেন্ট থিকা না পাইলে কমিউনিটির লিডার’রাও এই কাজ করতে পারেন কিনা…

৫০০০/৭০০০ হইলেই কাজ চলার কথা তো মনেহয়। ডিস্ট্রিবিউশনটা জরুরি, কোথাও ফেইলা না রাইখা।

৩. যেই যেই এলাকায় রোগী পাওয়া যাইতেছে বা যাবে, সেইগুলা জানানো দরকার। চলাফেরা রেস্ট্রিক করাটা জরুরি।

প্রতিটা এলাকাতেই আলাদা কইরা একটা কোয়ারেনটাইন সেন্টার তৈরি করা যাইতে পারে। হাসপাতালের চাইতে স্কুল, কলেজ, হোস্টেল, আবাসিক হোটলগুলা বরং বেটার অপশন হইতে পারে।

৪. রোগীদেরকে আলাদা করতে পারাটা যতোটা জরুরি, তার চাইতে বেশি জরুরি তাদেরকে যারা দেখ-ভাল করবেন বা কাছাকাছি যাইবেন, তাদের প্রটেকশন।

কারা দেখ-ভাল করবেন, কিভাবে করবেন – এই জিনিসগুলারও একটা গাইড-লাইন বানায়া পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্টরা আমাদেরকে জানাইতে পারেন।

৫. মানে, এইটা তো কোন পারসোনাল ইস্যু বা রাষ্ট্রীয় সমস্যা না খালি, একটা সোশ্যাল ক্রাইসিস; তো, সোসাইটি হিসাবে একসাথে মোকাবিলা করার কথা ভাবাটাই মনেহয় বেটার।

এখন পর্যন্ত আলাপ যা দেখছি, তা হইতেছে ব্যক্তি হিসাবে কি কি করবেন বা করবেন না; আর গর্ভমেন্ট কি করতেছেন বা করতেছেন না – এইগুলা নিয়া আলাপ হইতেছে। এইগুলা অ-দরকারি না। কিন্তু সোশ্যাল ইনিশিয়েটিভ নিতে পারাটা জরুরি।

এইরকম সোশ্যাল ইনিশিয়েটিভ নিতে পারা সহজ জিনিস না। কিন্তু যারা অ্যাক্টিভিস্ট আছেন, কাজ করার কথা ভাবেন, এই পয়েন্টগুলা হয়তো কন্সিডার করতে পারেন।

 

২.

জিনিস’টা নিয়া কথা-বলা’টা মুশকিলই একটু এখন; কারণ এখন আসলে ঠিক কথা-বলার টাইম না, বরং পারলে কিছু কাজ করার।… তারপরও যেহেতু মনে হইছে, ভাবলাম বইলা রাখি।

এই যে ভাইরাস, এইটা কিন্তু খালি চোখে দেখতে পাইতেছি না আমরা। আর যতক্ষণ না এইটা সিমটমগুলার ভিতর দিয়া হাজির হইতেছে, মানুশরে মাইরা ফেলতেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বুঝতেও পারতেছি না। তো, এইটা যে প্রসেস, আমাদের ‘বোঝা-পড়া’র; সেইটারে সন্দেহ করা উচিত না কিছুটা?

যে, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবো না, নিজে ফিল না করলে বুঝবো না – এইরকম ‘বাস্তব-ভিত্তিক’ জিনিসগুলা তো বড়সড় রকমের অবস্টেকল। এমন না যে, এইভাবে বুঝা যাবে না; কিন্তু ‘বুঝতে পারা’ জিনিসটারে এইটুকের ভিতরে আটকায়া ফেলাটা ভুল হবে।

জানা বা বোঝার তরিকা অনেকগুলা। বরং জানা-বোঝা যে তরিকাগুলা আছে, তাদের ব্যাপারে সবসময় ক্রিটিক্যাল থাকাটা জরুরি। কোনকিছু আমরা দেখতেছি – তাই বইলা এইটা যেমন সত্যি না, কোনকিছু আমরা দেখতেছি না বইলাও সত্যিও না। মানে, সত্যি জিনিস’টা দেখা বা না-দেখার উপ্রে ডিপেন্ডেড না এতোটা।

যেইভাবে, এই দুনিয়া, আমাদের এগজিসটেন্সের কারণেই থাকতেছে না; বরং আমাদের এগজিসটেন্সটা এই দুনিয়ার ভিতরে আছে। খুব মাইনর একটা জিনিসই এইটা; কিন্তু আমাদের চিন্তা, কাজ বা বাঁইচা থাকার ভিতরে এইটা অনেকসময় আমরা মিস কইরা যাই বইলাই আমার মনেহয়।


মার্চ ১৭

ব্যাপারটা এইরকম না যে, করোনা ভাইরাস নিয়া গর্ভমেন্ট বা মেইনস্ট্রিম মিডিয়া কিছু করতে পারতেছে না; বরং কিছু করতে যে চাইতেছে না – এইটা ভয়াবহ ব্যাপার।

২.

এই ভাইরাসের মহামারী’রে বন্যা বা সাইক্লোনের মত ভাবতে পারলে হয়তো অ্যাকশন নিতে বেশি সুবিধা হইতে পারে।

সাগরে সাইক্লোন দেখা গেলে কি করি আমরা? আগে থিকা জাহাজ, নৌকারে সইরা আসতে বলা হয় পাড়ে। সাগর পাড়ের মানুশজনরে আশ্রয়কেন্দ্রে বা বাড়িতে থাকতে বলা হয়, যতক্ষণ ঝড়টা থাকে। যদি না জানানো হয়, তাইলে তো যারা সাগরে ছিল, তারা তো সাবধান হইতে পারতেন না, অনেকেই মারা যাইতেন। ঘরের বাইরের মানুশজনও। আগে অনেক মানুশ মারাও যাইতো। কিন্তু যদি জানানো যায় মানুশ’রে, তখন তারা সাবধান হইতে পারেন। মানুশও কম মরে।

তো, এই কারণে ইনফরমেশন গোপন না কইরা জানানো’টা ভালো। এই জানানোর দায়িত্ব গর্ভমেন্ট, মিডিয়া, সরকারি লোকজনদের, মেডিকেল-সায়েন্সের মানুশ-জনদের। উনারা কথা না কইলে বরং অন্যদের কথা-বলার সুযোগটা তৈরি হইতে থাকে। কোন জায়গায় কয়জন করোনা রোগী ধরা পড়ছে, জানলে মানুশ জানলে প্যানিকড হবে না, না-জানা থিকা হবে।

মানুশদেরকে বাঁচাইতে হবে না; মানুশজন যাতে নিজেদেরকে বাঁচাইতে পারে, সময় মতো অ্যাক্ট করতে পারে, সেই সুযোগটা দরকার। অফিস-আদালত যদি বন্ধই করা লাগে দুইদিন পরে না কইরা দুইদিন আগে করেন।

আগামীকালকে, সারা দেশে সব ব্যাংকগুলার সামনে সমাবেশ করার কথা। ৬০টা ব্যাংকে ৫০০০ কইরা হইলেও ৩ লাখ মানুশরে ক্লোজ প্রক্সিমিটিতে দাঁড়াইতে হবে। এদের মধ্যে কারো একজনেরও যদি করোনা ভাইরাস থাকে, এইটা কতো জনরে এফেক্ট করবে, ভাবা যায়! যেইসব এলাকায় করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া গেছে, সেইসব জায়গায় তো অন্তঃত বন্ধ করতে পারেন।

ভয় না-পাওয়ার বেটাগিরি আর ভয় পাওয়ার প্যানিকের মাঝখানেও রেসপন্সিবিলিটির কিছু জায়গা আছে, সেই জায়গাগুলারে এক্সপ্লোর করতে পারাটা দরকারি।

যারা ডিসিশান নেয়ার জায়গাগুলাতে আছেন, ডিসিশান নেন, মানুশদেরকে জানান আর জানতে দেন, এটলিস্ট।

৩.

বাংলা-ভাষায় দুই ধরণের প্রাণী আছে। 🙂

এই quarantine শব্দ দিয়া টের পাইবেন; যে এর ‘বাংলা’ কি হবে? উনারা হইতেছেন, অনুবাদ-প্রাণী; সত্য’রে ট্রুথ বানাইছেন, ধর্ম’রে রিলিজিয়ন; আর এইভাবে একটা কালচার’রে যে আরেকটা কালচারের দাস বানায়া ফেলার টেকনিকটারে ফলো করতেছেন, এই বুঝ’টা বুঝতে রাজি হইতে পারতেছেন না। ভাবতেছেন, শব্দ আবিষ্কার করতেছি তো আমরা! যেন কলম্বাস! আসলেই কলোনিয়াল কলম্বাসের নাতি-পুতি এনারা।

দুসরা হইলো, সঠিক-উচ্চারণ প্রাণী; অরিজিনালি উচ্চারণ’টা কি হবে? কোয়ারেন্টান, কোয়ারেনটাইন, করেনটাইন… এইসব হাবিজাবি। প্রাচীন নদীয়া জেলার ভাষারে উনারা ‘খাঁটি’ বা অরিজিনাল বাংলা-ভাষা মনে কইরা থাকতে পারেন। মানে, কালচার যে পাত্থর টাইপের জিনিস না, এইটা তো উনারা জানেন, কিন্তু প্রাচীন ও পপ (কোনভাবেই এখনকার বা হ্যাপেনিং জিনিস না) বইলা ভাবতে পারেন।…

আরো অনেক ভাষা-প্রাণী আছেন, থাকতে পারেন। কিন্তু এই দুই ধরণের বিপ্লবীদের আমি এড়ায়া চলতে পছন্দ করি।

আলগা থাকার ট্রাই করি।

 

মার্চ ১৮

নিজেরে বাঁচানোর পয়লা ধাপ হইতেছে, সরকারি প্রেসনোট’রে বিশ্বাস না করা।

Continue reading

ডাইরি: অগাস্ট ০২, ২০১৫।

মিনাবাজারেই গেলাম শেষে, বনানীর আউটলেটে। যাওয়ার প্ল্যান ছিলো না। কিন্তু যাইতে হইলো; মে বি দ্যাট ওয়াজ রিটেন ইন দ্য স্টারস; গ্রহ নক্ষত্রেরই ফের।

সব্জি কিনতেছিলাম। একটু কম কম মানুষই ভালো। আর যেইসব মানুষরা আসে ওইখানে, চেহারা দেখলে বোঝা যায়, টাকা-পয়সা আছে উনাদের। আমরা আসলে একটা ক্লাস-এর লোক – এই সলিডারিটি ফিলিংস সুপারস্টোরের একটা সেলিসং পয়েন্ট। অ্যাম্বিয়েন্সটাও ভালো, পরিবেশ বলা লাগে না। একটা মাইয়া আসলো, সাথে একটা পোলা। মাইয়াটারেই আগে দেখছিলাম, মাইয়াটার দিকে তাকায়া থাকার কারণেই মনেহয় পাশের পোলাটা একটা চিপসের প্যাকেট খুইলা এমন আস্তে আস্তে কিন্তু শব্দ কইরা কামড় দিতেছিলো যে, তারেও দেখা লাগলো। ইয়াং সে। Continue reading

ডাইরি: আষাঢ় ৩০, ১৪২১

 

আমি ত রে ভাই কবি হইতে পারলাম না, মিনিমাম একজন সাহিত্যিকও! জীবনে ও সাহিত্যে ধীরে ধীরে পিছাইয়া পড়তেছি আমি। বিকজ আমি ফিলিস্তিন নিয়া কোন কবিতাই লিখতে পারি নাই। এক একটা হট ইস্যু যাইতেছে চোখের সামনে দিয়া, আমি রোজা রাখতেছি, ইফতার খাইতেছি, অফিস করতেছি, অফিসে কলিগ বলতেছে মাসরুর আরেফিন কাফকা অনুবাদ করছেন, সিঁড়ি ভাইঙ্গা নিচে নামতে নামতেও আমি অনুবাদ করার ইচ্ছা জাগাইতে পারতেছি না, ইন ফ্যাক্ট কবিতারে চালান কইরা দিতে পারতেছি না ঘটনার ভিত্রে, Continue reading