রিডিং বিটুইন দ্য লাইনস: মাহমুদুল হকের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার

হিরণ্ময় কথকতা; মাহমুদুল হকের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার। সম্পাদনা আহমাদ মোস্তফা কামাল। পৃষ্টা ৯৩। মূল্য ১৮০ টাকা।  

 আমরা যে কটি সাক্ষাৎকারের সন্ধান পেয়েছি, সবগুলোকেই গ্রন্থভুক্ত করেছি।

এই বাক্যটা লিখছেন আহমাদ মোস্তফা কামাল ‘মাহমুদুল হকের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার’ বইয়ের ইন্ট্রোডাকশনে। মানে যা পাইছেন, তার সবই নিছেন, কিন্তু নাম দিছেন ‘নির্বাচিত’; যদি সবই নেয়া হয়, তাইলে ব্যাপারটা ‘নির্বাচিত’ কেমনে হয়?

এইরকম অস্বস্তি নিয়াই বইটার পড়া শুরু।


ভাষা নিয়া 

১৬ নম্বর পৃষ্টাতে মাহমুদুল হক বলতেছেন যে,

এক কথায় আঞ্চলিক ভাষা বলে সবকিছুকে চালানো যায় না। বুড়িগঙ্গার ওপারেই আঞ্চলিক ভাষা প্রায় চার ধরণের। কুট্টিদের ভাষা, পুবাদের ভাষা, চৌরাদের ভাষা, কিংবা কাছাইরাদের ভাষার তফাত অনেক।

এবং এর পরের পৃষ্টায় বলছেন বলে লেখা আছে

আমার ধারণা, আমাদের আমির বাংলাভাষা এখনও সম্পূর্ণ তার নিজস্ব রূপ ধারণ করেনি, করতে চলেছে।

এবং ২১ নাম্বার পৃষ্টাতে বলছেন যে,

আমার বিশ্বাস বাংলা ভাষা নিজেই গুরুচণ্ডাল দোষে দুষ্ট। ভাষার এই গুরুচণ্ডালিটাকে কাজে লাগাবার চেষ্টা ছিল দোষটাকে গুণে পরিবর্তন করার।

অথচ আহমদ মোস্তফা কামাল উনার সমালোচনা করছেন ২ নম্বর পৃষ্টাতেই যে,

আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারে যথেষ্ঠ পারঙ্গমতা থাকা সত্বেও… তিনি কখনো কখনো নিম্নবর্গের ঢাকাইয়া চরিত্রের মুখে কলকাতার বুলি বসিয়ে দিয়েছেন।

এখন আপনি যদি মাহমুদুল হকের আঞ্চলিকতা’র বিভিন্নতার এবং গুরুচন্ডালির সম্ভাবনারে আমলে নেন, তাইলে ঢাকাইয়া কোন নিম্নবর্গের চরিত্রের ‘কলকাতার বুলি’ বলাটা কেমনে অসম্ভব হয়? তারপর সর্বশেষ ৮০ নম্বর পৃষ্টায় লেখা

এত একিউরিসি ধারণ করা যায় না তো।

মানে, ঢাকাইয়া চরিত্র ঠিক আছে, কিন্তু সে যে কলকাতার ভাষায় কথা বলতে পারে না – এই রিজিডিটি মাহমুদুল হক নিজেও ত রাখেন নাই এবং বেশকিছু জায়গাতে এইটা নিয়া বলছেন, বইয়ের ভিতরেই। মানে মাহমুদুল হকের ভাষা নিয়া যখন কথা বলা হইতেছে, তখন ভাষা বিষয়ে মাহমুদুল হকের কথা-বার্তার কোন রিলিভেন্সই নাই! Continue reading

ভাস্কর চক্রবর্তীর কবিতা: সেলিব্রেটিং অ্যা ‘ট্রু’ পোয়েটস লাইফ

 

তুমি আমার ঘুম, ভাস্কর চক্রবর্তী, প্রতিভাস, ১৯৯৮। পৃষ্টা: ৬৪।

ভাস্কর চক্রবর্তী’র এই কবিতার বইটা আমি তখন পড়ি নাই; শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণাটা যখন পড়ছিলাম। অবশ্য তখনই পড়া যাইতো, কিন্তু উনার একটা বই পইড়াই সন্তুষ্ট ছিলাম যে, উনার কবিতা পড়া হইছে।

আমাদের সময়ে কবিতা লিখেন বইলা যাঁদের সাথে পরিচয় আছে, উনারা সবাই দেখি ভাস্কর চক্রবর্তীরে চিনেন। শীতকাল আসার আগে আগে উনার কবিতার বইটার নাম নেন, আমিও কইছিলাম একবার হেমন্তের বাতাসে শীতের গন্ধ পাইয়া যে, শীতকাল চইলা আসলো,সূপর্ণা! কিন্তু অ্যাজ সাচ উনার কবিতা নিয়া তেমন কিছু শুনি নাই, বাংলাদেশে।

বা হয়তো বলছেন লোকে; বলাবলি’র ভিতরই যে সবসময় সবকিছু থাকবো, তাও ত না। কতকছিুই ত পইড়া আছে। আমিও বলি না। কিন্তু এই বইটা পড়ার পরে ভাবলাম যে, কিছু বলা যায়; যা কিছু আমরা পড়ি, তা নিয়া কিছু ত বলার থাকে। হয়তো মাঝে-মধ্যে বলি; মাঝে-মধ্যে বলি না। এইক্ষেত্রে, বলা আর না-বলা খুব কাছাকাছি কিছু জিনিসই শেষ পর্যন্ত – এইরকম একটা স্বস্তিও থাকে আর কি!

এমনিতে, উনার সর্ম্পকে ট্যাগ লাইন ছিল আমার ‘মধ্যবিত্তের কবি’ ( শক্তি চট্টোপধ্যায় একটা এস্কেপ পয়েণ্ট পাইয়া গেলেন)। উনি মধ্যবিত্ত লাইফটারে খুব এনজয় করছেন উনার কবিতায় – এইরকম ভাসা ভাসা কিছু ব্যাপার ছিল মনে হয়। যা-ই হোক, সেইটারে খুব একটা আর মনে রাখি নাই। উনার কবিতা পড়তে ত ভালোই লাগে এবং আসলে শব্দের কিছু সূত্র ধরতে পারলে আমার ধারণা অন্য অনেকের কবিতাই পড়তে খারাপ লাগার কথা না। কিন্তু একটা সময় পরে, কবিতার শ্রুতিমধুরতাও ক্লান্তিকর হয়া উঠতে পারে, ১০ বার, ২০ বার বা ৫০ বার পড়ার পরে। রিপিটেটলি, এইটা যদি তার মিনিংরে রিডিফাইন না করতে পারে। এইটা ভাবতে গিয়াই সম্ভবত মনে হইলো যে, উনার কবিতা আসলে একটা কোর জায়গারে ডিফাইন করে, বারাবার। অন্য প্রায় সবার কবিতাই তো! Continue reading

অসম্পূর্ণ বুক রিভিউ…

অসমাপ্ত আত্মজীবনী। শেখ মুজিবুর রহমান। দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড। ২০১২।

 

 “আমি অনেকের মধ্যে একটা জিনিস দেখেছি, কোন কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। অনেক সময় করব কি করব না, এইভাবে সময় নষ্ট করে এবং জীবনে কোন কাজই করতে পারে না। আমি চিন্তাভাবনা করে যে কাজটা করব ঠিক করি, তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয়, সংশোধন করে নেই। কারণ, যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না।” (প.  ৮০)

 

সম্পাদনা বিষয়ে

প্রথমত, বইটা আরো ভালোভাবে এডিটেড হইতে পারতো, টেক্সটটা ঠিক রাইখাই। যেমন চ্যাপ্টারগুলার এক একটা নাম হইতে পারতো, পর্ব থাকতে পারতো – বংশ-পরিচয়, প্রথমদিকের রাজনীতি, কলকাতায়, জেল-জীবন… এইরকমের। মানে, তাইলে বইয়ের যে স্ট্রাকচার, সেইটা আরো রিডেবল হইতে পারতো পাঠকের কাছে। সেইটা না হওয়ার একটা কারণ হইতে পারে যে, যে বা যারা সম্পাদনা করছেন তারা হয়তো ভাবছেন যে, এইরকম করলে সেইটা লেখকের টেক্সটের উপর ‘হাত দেয়া’ হইতে পারে। কিন্তু এইটা ভাবতে গিয়া উনার এইরকম একটা টেক্সটরে আরো ভালোভাবে হাজির করার সুযোগটারে নষ্ট করছেন। কারণ এডিটর হিসাবে টেক্সটটারে চেইঞ্জ না কইরাই গোছানোর দায়িত্বটা এডিটর নিতে পারতেন, কিন্তু নেন নাই।

আরেকটা সেনসেটিভ জিনিস হইলো, মূল পান্ডুলিপি’র সাথে বইয়ের টেক্সট’টা কতটুক, কেমনে সম্পাদনা করা হইছে এইটা নিয়াও কোন বাতচিত নাই। পলিটিক্যালি এই জিনিসটা ট্রান্সপারেন্ট রাখতে পারাটা দরকার আছিলো, তা নাইলে সন্দেহ আসলে থাইকাই যাবে।

 

পাকিস্তানের সময়

এই বইয়ের রাজনৈতিক গুরুত্ব ত আছেই। বইয়ের সময় মোটামুটি ১৯৪০ থিকা ১৯৫৪ পর্যন্ত (শেখ মুজিবুর রহমানের ২০ থিকা ৩৪ বছর বয়স পর্যন্ত), মানে যখন পাকিস্তান আন্দোলন শুরু হয় এবং যখন শেষ হইতে শুরু করে, পলিটিক্যালি – সেই সময়টার কথা। কিন্তু এর পুরাটাই যে আছে, তা না; এইটা শেষ পর্যন্ত একজন ব্যক্তিরই দেখা, যিনি অনেকদূর পর্যন্ত ইনভল্ভড ছিলেন। যার ফলে ঘটনাগুলা বাদ যায় নাই, যেমন, রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ডের যে জেল-হত্যা সেইটা সত্যেন সেনের লেখায় খবুই বড় ঘটনা হিসাবে আমরা পাইছি, কিন্তু এই ঘটনা তিনি কিছুটা দূর থিকাই দেখছেন এবং বর্ণনা করছেন। কিন্তু ঘটনার যে বর্ণনা সেইটা উনার রাজনৈতিক যে বিবেচনা, সেইটা দিয়া বায়াসড। আর সেইটাই সম্ভবত মেইন পয়েণ্ট বইটার।   Continue reading

সিমন দ্য বেভোয়া

মেয়েদের হার মেয়েদের জিত।  সিমন দ্য বেভোয়া। সংকলন ও ভাষান্তর: সন্দীপন ভটাচার্য। জুলাই ২০০৮। মন ফকিরা।

প্রচারের ফলে ‘নারীমুক্তি’ শব্দটা এখন পুরুষের মুখে-মুখে, সে তারা মেয়েদের ওপর যৌন পীড়নের ব্যাপারে সচেতন হোক বা না-হোক। পুরুষের এখন মনোভাবটা যেন এই যে, ‘বেশ, তুমি যখন ফ্রি, চলো, বিছানায় যাই।’ অন্য কথায়, ছেলেরা এখন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক, কদর্য, হিংস্র। আমার যৌবনে আমরা মঁপারনাস ধরে হাঁটতে-হাঁটতে কোন কাফেতে গিয়ে বসতাম, নিপীড়নের কোন ভয় ছিল না। হ্যাঁ, আমরা হাসতাম, চোখ টিপতাম, কটাক্ষ করে তাকাতাম। আর এখন কোন কাফেতে বসে কোন মেয়ের পক্ষে একা বই পড়া প্রায় অসম্ভব। পুরুষেরা আগ বাড়িয়ে কথা বলতে এলেও সে যদি একা থাকার ব্যাপারে দৃঢ় হয়, তো তারা তাকে ‘কুত্তি’ বা ‘খানকি’ বলে চলে যায়। ধর্ষণের ঘটনা এখন অনেক বেড়ে গেছে। সাধারণ ভাবে পুরুষ-আগ্রাসন ও বিদ্বেষ এখন এত স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে শহরে কোন মেয়ে আর স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।”

(পৃষ্টা ২২)

মন ফকিরা পাবলিকেশন্সের বইগুলা আমার পছন্দ। অনেকসময়ই উনারা পরিচিত লেখকের অপরিচিত টেক্সটগুলা ছাপান। এই কথাটা আমার মনে হইলো অসীম রায়-এর ‘লেখকের জবান’ বইটার কথা মনে কইরা। এমনিতে বইগুলার সাইজগুলা ভালো, ১০০/১৫০ পৃষ্টা; অল্পদিনে পড়া যায়, খুব বেশি দিন ধইরা রাখার উপায় নাই, মানে, ভালো ত ভালোই। আমার পছন্দ মাইনর টেক্সট, যা কিছু লেখক না লিখলেও পারতেন, কিন্তু যখন লিখলেন, তখন আর তারে ইগনোর করা গেলো না, এইরকম টাইপের। [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote] 

ত, সিমন দ্য বোভেয়া’র দুইটা ইন্টারভিউরে অনুবাদ কইরা বই আকারে উনারা ছাপাইছিলেন ২০০৮ সালে। পড়ছিলাম মাস ছয়েক আগে (এখন ত প্রায় ১বছর হইতে চললো), তখন ২/১টা কথা মনে হইছিলো, সিমন দ্য বোভেয়া সর্ম্পকে।

সিমন দ্য বোভেয়া’র লেখা আমি খুব একটা পড়ি নাই। হুমায়ূন আজাদের ‘নারী’ নামের বইটা এই অনাগ্রহের একটা কারণ হইতে পারে, ওইটা পইড়া বোভেয়া সর্ম্পকে বেশ খুব ভালো ধারণা হয় নাই; কারণ উনি নারী বিষয়ে অভিজ্ঞতাগুলারে বলতেছিলেন ঠিকই, কিন্তু যখনই একটা ‘তত্ত্ব’-এর ভিতর ফেলতে যাইতেছিলেন, তখন আর ব্যাপারটা পিছলাইয়া যাইতেছিল। মানে, ব্যাপারটারে একটা ‘তত্ত্ব’-এর ভিতর নিয়া আসা যায় না, সেইটা না; বরং একটা ‘তত্ত্ব’-এর ভিতর তারে রিডিউস করা হইতেছিল… একটা জায়গায় উনিও বলতেছিলেন যে,

“… এর শিকড় থাকা উচিত অনুশীলনে, তত্ত্বে নয়। ‘দ্য সেকেন্ড সেক্স’ গিয়েছিল উলটো পথে। সেটা আর এখন বহাল নেই।“

(পৃষ্টা ২৬)

(সর্তকীকরণ বিজ্ঞপ্তি 🙂 ) এইটা আবশ্যিকভাবেই উনার তত্ত্ব-প্রবণতারে বাতিল করে না, আমার সন্দেহটারেই আরো রিলিভেন্ট করে। Continue reading

দিনের কাহিনি

হালিকের দিন। ব্রাত্য রাইসু। পুনর্মুদ্রণ যন্ত্র। ফেব্রুয়ারি ২০১২। প্রচ্ছদ ব্রাত্য রাইসু। পৃষ্টা ৯৬। দাম ৪০০ টাকা।

 

বই কিনার কথা

শেষ পর্যন্ত বইটা কিনতে পারছি আমি! জনান্তিকে,সাম্যদা’রে যখন দুপুরবেলার গরমের ভিতর বইসা জিগাইলাম বইটার কথা, আরো অনেক কবিতার বইয়ের পাশ থিকা বাইর করতে পারলেন উনি; কিন্তু দাম দেইখা একটু চেইতা গেলেন, ‘অর ফাইজলামি আর গেলো না! ৩/৪ ফর্মার বই হইলে প্রতি ফর্মা ২৫/৩০ টাকা রাখি আমি আর ৪ ফর্মার (একচুয়ালি ৬ ফর্মা, ৯৬ পৃষ্টা) বইয়ের দাম রাখছে ৪০০ টাকা! সুমন ভাইয়ের (সুমন রহমান) বইয়ের দাম রাখছিল প্রথমে ৫০০টাকা, যাদের কিনার ইচ্ছা ছিল, তারাও কিনতে পারতো না, এখন ২৫০ টাকা রাখাতে ভালো বিক্রি হইতেছে. . . ’

আমি বলার ট্রাই করলাম যে, আসলে খুববেশি মানুষ তো কবিতার বই কিনে না, এইজন্য হয়তো অল্প কপি বিক্রি হইলেই টাকাটা উইঠা আসবো, এইরকমের চিন্তা থাকতে পারে। কিন্তু পরে মনে হইলো, এইটাই একমাত্র ঘটনা না, কারণ এই ‘দাম বেশি রাখা’র ব্যাপারটা আরো কিছু ব্যাপার সিগনিফাই করে, বেশি দাম দিয়া কিনা জিনিসে ওই ভ্যালু’টাও তো ইম্পোজ করা থাকে যে, এইটার দাম বেশি!

এই দাম কোন না কোনভাবে বইটারে তো স্পেশাল কইরা তোলে এবং এইরকম একটা ধারণা দিতে পারে যে, বইটা খালি কাগজের দামই না, টেক্সটের যেই দাম সেইটাও অনেক। এখন এই টেক্সটের দাম বেশি কিনা – সেইটা অন্য বিবেচনা, কিন্তু এইরকম একটা ব্যাপার ইম্পোজড থাকতেছে এইখানে, ইভেন এইরকমের কোন ইনটেনশন না থাকলেও।

কবিতা দামি কোন জিনিস বইলা আমার মনেহয় না, কিন্তু কবিতার বই দামি তো হইতেই পারে।  অ্যাজ অ্যা প্রডাক্ট, বা বইয়ের ব্যবসা হিসাবেও প্রফিটিবিলিটির একটা চিন্তা থাকাটা দরকার।

Continue reading