শি, অ্যান্ড দ্য রিটার্ন অফ শি (২)

 

এই সিরিজটার নাম হইতে পারতো – পুরুষের প্রেম বা অন্য আরো অনেককিছুই। এই টানাগদ্যের ফর্মটাও অনেক কমন একটা ন্যারেটিভ ফর্ম আর সাবজেক্টটাও – না-পাওয়া প্রেম [প্রেম পাওয়া যায়, এই ব্যাপারটাই কি রকম না! এইখানে গরুর (ইদানিং অ্যাট একচুয়াল লিখতে গিয়া লিখে – গাভী’র) দুধের চা পাওয়া যায়’র মতোন]।

তো, আমি হয়তো ভাবছিলাম যে, একটাকিছু ইনসার্ট করতে পারবো, কিছু একটা কি হবে না? – আমি লিখলে? হয় নাই আসলে। এই রায় আমি-ই দিতে চাই। কমপ্লিটও হয় নাই পুরা সার্কেলটা, লেখার। সিরিয়ালটাও হয়তো ঠিক করা লাগবে। কিন্তু অনেক তো হইছে আসলে। ২০১৩-তে শুরু করছিলাম, ২০১৪-তেই লেখা মোস্টলি, তারপরে ২০১৫ আর ২০১৬-তেও লিখা হইছে কয়েকটা। তো, লিখছি যেহেতু থাকলো, একটা জায়গায়। এর বেশি কোনকিছু না।

————————-

১ ।।

————————-

 

রেলস্টেশনে

একটা রেলস্টেশনে আইসা দাঁড়াইছি। কতগুলা ফলের ঝুড়ি বইসা আছে প্ল্যাটফর্মে; কলা, কমলা আর আঙুর, ঝিমাইতেছে। কুত্তা একটা, কংক্রিটের মইধ্যেও কী কী জানি শুঁকে। মাল-গাড়ি’র একটা বগি থাইমা আছে আরেকটা লাইনে, একটু দূরে। ট্রেইনেও মানুষজন নাই কোন। খালি শি’রে নিতেই আসছে মনেহয়। পারলে ট্রেনটাও এই প্ল্যাটফর্মেরই থাইকা যাবে। শি আর যাবে না আসলে। আমরা চা খাইতে খাইতে খেয়ালই করতে পারবো না, কোন ট্রেন আছে কি নাই। পাশের গাবগাছের পাতলা ডালে পাতারা নড়বো বাতাসে। সময় একরকমের স্থবিরতাই আসলে। অথচ এই স্থবিরতাও দুললো, মৃদু ভূমিকম্পের ভিতর ট্রেনটা চলতে শুরু করলো হঠাৎ, হুইসেল ছাড়াই, সাদা-কালো নির্বাকযুগের সিনেমার মতো। খুবই ধীরে, যেন যাইতে চায় না সে, না-যাওয়ার মতো কইরাই চাকাগুলি ঘুরতেছে। প্রতিটা কণা ঘুরতেছে এতো ধীরে যে, সরতেছেই না সে, অথচ চলেই যাচ্ছে, যাবে… চলে-যাওয়া, এতো দীর্ঘ, এতো বিশাল, না-যাওয়ার মতোই, না-থাকার মতো সময়! ট্রেনের চাকার কাছে আমার পুরা জীবন, পুরা দৃশ্য আটকাইয়া আছে। একটা ছোট্ট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে। আর শি’রে নিয়া ট্রেনটা চলে যাইতেছে… এখনো, এই এতদিন পরে। 

 

হাঁটতে হাঁটতে

হাঁটতে হাঁটতে উঁচা একটা টিলাতে গিয়া বসলাম। দুপুর থিকা একসাথে ঘুরতেছি আমরা। এইখানে যাই, ওইখানে যাই; আমাদের ভাল্রাগেনা। হাঁটতে হাঁটতে শহরের শেষে, শরতের দুইটা শাদা মেঘের মতো একসাথে ভাসতে ভাসতে এই দূরে চলে আসছি। বসার আগেই মনে হইলো, বাসায় ফিরতে হবে। আমাদের ঘর-সংসার আছে, সমাজ-সভ্যতা আছে; আর এইখানে শেয়াল-কুকুর-বিলাই-সাপ-পুলিশ-গার্ড কতকিছুই না থাকতে পারে। এইখানে থাকাটা ঠিক হইবো না। তারপরও বসলাম আমরা। একটু সময় বইসা থাকাই তো। টিলার উপরে সন্ধ্যা নেমে আসতেছে ধীরে; ধানখেতে বাতাস নুয়ে পড়ে। আমার কাঁধে মাথা রাইখা কানতেছে শে, আর বলতেছে, এমন জন্ম কেন হইলো আমাদের! ধরো, আমরা অন্য কোন দেশে চইলা গেলাম, অন্য কোন দুনিয়ায় আর তারপর আমরাই থাইকা গেলাম; হইতে পারে না, এইরকম!

এইরকম একটা দিন; তারপর এইদিনও শেষ হয়া যাবে। বাসার পাশের একলা জামগাছের ভূত শি’র লাইগা ঝুইলা আছে ডালে। সেও হয়তো কান্দে। আমি আমারে দেখি চুপচাপ বসে আছে। আমি আর থাকতেই চাই না এইখানে। এইরকম একটা দিনের শেষে; শি’র পাশে, অনুতাপের সন্ধ্যায়। কী ভুল করলাম আমরা সারাদিন। কী ভুল! কী ভুল! শি’র জামার ফুল, শি’র খোঁপার কাঁটা, বলতেছে; খরগোশের মতো লম্বা আমার কানে কানে। Continue reading