দিদারুল আলম ভূঁইয়া

দিদারুল আলম ভূঁইয়া’র ঘটনা’টাতে (উনি রাষ্ট্রচিন্তা নামে একটা নতুন পলিটিক্যাল প্লাটফর্মের অর্গানাইজার; সেকেন্ড ওয়াইফ উনার নামে নারী-নির্যাতনের মামলা করলে পুলিশ সেকেন্ডবারের মতন উনারে গ্রেফতার করে) মনে হইলো আবার, যখন আপনি পলিটিক্স করতে যাইবেন, পাবলিকের দরবারে যাইবেন, আপনারে পলিটিক্যাল, ফিলোসফিক্যাল বোঝা-পড়ার বাইরে মোরাল জায়গাগুলা নিয়াও প্রিপারেশন নিতে হবে আসলে। কারণ আপনার পারসোনাল লাইফ আর পারসোনাল না তখন; ইলেকশনে কমপিট করার লাইগা যেমন হলফনামা দিতে হয়, পলিটিক্সেও এই হলফনামা বা স্বীকারোক্তি দিয়া রাখলে বেটার। ভিপি নূর অন্য অনেককিছুর বাইরে উনার পারসোনাল লাইফের ইন্ট্রিগ্রিটির জন্যই এখনো টিইকা আছেন। উনারে প্যাঁচাইতে গিয়া কিন্তু উল্টা ধরাই খাইতে হইছে সরকারের।

ফরহাদ মজহার যখন গুম হইছিলেন, তখন এই জিনিসটা নিয়া একবার আলাপ হইতেছিল আ-আল মামুনের সাথে, রাজশাহীতে গিয়া, ২০১৮ সালের দিকে হবে সেইটা। যদ্দূর মনে পড়ে উনারে এইরকম কথাই বলছিলাম যে, সমাজে একজন পাবলিক ফিগারের পারসোনাল লাইফরে বাতিল কইরা দিতে পারি না আমরা, তার পাবলিক কাজকামের লগে মিলায়াই দেখতে হবে; এখন কেমনে দেখবো – এই জায়গাটা হয়তো ক্লিয়ার না কখনোই।

নেলসন ম্যান্ডেলা জেলে যাওয়ার আগেই, যখন পার্টিতে উঠতি লিডার তখনই উইনি ম্যান্ডেলার প্রেমে পড়ছিলেন, সেকেন্ড বিয়া করছিলেন। জেলে থিকা বাইর হওয়ার পরে উইনি’র লগে তার ডির্ভোস হইছিল, মেবি উনি তখন প্রেসিডেন্ট। মানে, এইটা নেলসন ম্যান্ডেলার বেটাগিরি না আসলে, বরং উনি যেই দুইজন মহিলার লগে রিলেশনে ছিলেন, উনারা দুইজনেই মেবি কন্সিডারেট ছিলেন, পাবলিক লিডার হিসাবেও উনারে বিশ্বাস করতেন। রিলেশনের শুরু এবং শেষটা উনারা ভালোভাবে করতে পারছিলেন।

মানুশ হিসাবে আপনার প্রেম-ভালোবাসা-ঘৃণা এইসব ইমোশন সবসময় এতোটা কন্ট্রোলের মধ্যে থাকে না, কিন্তু আপনি ক্লিয়ার থাকতে পারেন নিজের কাছে, এবং পাবলিক ফিগার হইলে, পাবলিকের কাছেও; এতে আপনার উপর পাবলিকের বিশ্বাস কমে না। কয়দিন আগে, কিরণ রাও আর আমির খান করলো না! একটু বেশি নাটক হইলেও জিনিসটা ভালো।

এখন আমি যেহেতু পাবলিক ফিগার না, আমার পক্ষে এইগুলা বলা সহজ। (কেউ আমরা ফেরেশতা না, শয়তানও না; গুড হিউম্যান বিইয়ং’রাও আছেন, সবার কাছে একসেপ্টবল না হইলেও। আমি অই ক্যাটাগরি লোক – এই ক্লেইম আমার নাই।) আর কবিদের উপ্রে তো লোকজনের চেত এই কারণেও যে, এইসব ইমোশনাল ইস্যুগুলা উল্টা আরো এপ্রিয়েশট করা হয়, মাফ কইরা দেয়া হয় যে, কবি তো, একটু করবেই! (আসলে এইরকম না ব্যাপারটা। কাউরে কবি মনে হইলে, তার অনেককিছু মাফ কইরা দেয়া যায় আর কি…)
পলিটিশিয়ান, পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালদের ব্যাপারেও যে মাফ করা যায় না – তা না; কিন্তু উনারা যখন গোপন করেন, তখন পাবলিক বিশ্বাসের জায়গাতে ধাক্কা খায়, ইনিশিয়ালি মনে করতেই পারে, গোপন করলো কেন! তারে তো আমরা আমাদের কাছের লোক ভাবছিলাম! তো, পিপলরে যদি আপনি কাছের লোক বানাইতে চান, তাদের লগে ভেদ বা ইনফরমেশন গ্যাপ যতো কমানো যায়, ততই তো ভালো, তাই না?

এইটা জরুরি না যে, আপনার ইমোশনাল ‘ভুলগুলার’ (ক্রাইম না বা হয়তো পাপও না) কথা আপনি বইলা বেড়াইবেন, কিন্তু লিগ্যাল বা ডকুমেন্টেড যেই জিনিসগুলা, সেইগুলা না-বলাটা ‘বিশ্বাসভঙ্গের’ একটা ঘটনা হয়া উঠে।

কাউরে রিলেশনের ব্যাপারে এডভাইস দিতে চাইতেছি না আমি। বা এইভাবে মোরালি যে ভিক্টিমাইজ করা হইতেছে, একট ট্যাবু বানানো হইতেছে ‘ভালো মানুশের’ – এর এগেনেস্টেই আমি। আমি বলতে চাইতেছি পলিটিক্স করতে গেলে আপনারে ‘ভালো মানুশ’ হইতে হবে – এইটা জরুরি না হইলেও, আপনার পারসোনাল লাইফের ব্যাপারে স্পষ্ট হইতে পারাটা দরকার, তা নাইলে পাবলিক আপনারে কাছের মানুশ মনে করতে পারবে না আসলে। এর বাইরে অন্যসব ঘটনাগুলা তো আছেই।…