অ্যাবসার্ড ইজ দ্য নিউ রিয়েল: ফানি গেইমস

ফানি গেইমস যে ওয়েটিং ফর গডো’র সেকেন্ড পার্ট এইটা প্রুভ করাটা একটু মুশকিলই হওয়ার কথা। করা যাইবো না যে তা না; কিন্তু এতো ডিটেইলসের তো দরকারও পড়ে না মনেহয় সবসময়।

গডো’তে যেমন দুইজন আছেন, ফানি গেইমসেও দুইজনেরই খেলা এইটা। (আরো অনেক কাহিনি’তেও দুইজন আছেন নিশ্চয়।) তবে এইখানের খেলাটা দুইজনের মধ্যের না এতোটা। দুইজন দুইজনের জায়গা থিকা বাইর হইয়া অন্যদের লগে খেলতেছেন। গডো’তে অডিয়েন্স সেইফ কারণ তাঁরা জানেন যে উনারা নাটকের পার্ট না, উনাদেরকে দেখানো হইতেছে খালি। ফানি গেইমসে ব্যাপারটা এক্সটেন্ড হইছে, ওই অ্যাবসার্ড দুইজন আইসা তাদের নাটকটা করা শুরু করছে আমাদের মতোন কমন পিপলদের লগে।

আমরা, যাঁরা কমন পিপল, ফ্যামিলি ম্যান, চাকরি-বাকরি করি, তেমন টাকা-পয়সা নাই হলি আর্টিসানে যাওয়ার মতো, কিন্তু আছে কিছু, মাঝে মধ্যে ফরেন মদ খাইতে পারি, বছরে/ছয়মাসে একবার ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবি, এইরকম; ডিসাইড করতে পারতেছি না এই নাটকটাতে বিশ্বাস করবো কিনা। চাইলেই দৌড়ায়া বাইর হইয়া যাইতে পারি আর ফিরা আসলাম না। কইলাম যে, ভাই এইগুলা তো নাটক-ই। কিন্তু যেই ডর এইটা ইনসার্ট করে আমাদের মনে, সেইটা থিকা বাইর হওয়া যায় না। Continue reading

নায়ক ও ভিলেন এবং নায়িকা

অদৃষ্টের, মানে না-দেখার হাত এতোটাই লম্বা যে, মনে হইতে থাকে যা কিছু দেখাইলাম না, সেইসব কিছু যেন আর ঘটলোই না। অথচ যা ঘটে সেইটা ঘটনা না কখনোই, ঘটনাগুলা সবসময় আমাদের ভাবনার ভিতরেই ঘটতে থাকে। সিনেমা আসার পরে এই মনে-হওয়াগুলা এক্সপ্লয়টেড হইতে পারতেছে আরো।

বাংলা-সিনেমাগুলাতে এক ধরণের সিন আছিলো যে, নায়িকা খুবই কষ্ট পাইছে আর তখন সাইড-নায়ক তারে জড়ায়া ধইরা সাত্বনা দিতেছে, ওই সময় নায়ক আইসা দেইখা ফেলে। সে যেহেতু সবসময় (আসলে সবসময় তো না) কামভাবেই জড়ায়া ধরে নায়িকারে সে ভুলভাবে ভাবতে পারে যে, এই কামভাব-ই এইখানে আছে! পরে অবশ্য ভুলটুল ভাইঙা যায়, কারণ সিনেমার শেষ হইতে হয়। লাইফেরও শেষ হইতে হয়, তবে ভুল-টুল না ভাঙলেও লাইফের খুবএকটা সমস্যা হয় না। কিন্তু সিনেমার টুইস্ট’টা এইখানেই। আপনি আরো ১০জন’রে বলতে পারেন, ‘আই লাভ ইউ’, কিন্তু আপনি ত মিন করেন নাই; আর যেহেতু মিন করেন নাই, সেইটা এগজিস্টই করে না। মানে, সাইড-নায়কের ধোন যদি খাড়ায়ও একটু নায়িকার শরীরের স্পর্শে সেইখানে নায়িকার তো কিছু করার নাই। সাইড-নায়কের ধোন থাকলে এইখানে নায়িকার কি করার থাকতে পারে? আপনি যখন নায়ক তখন আপনারে নায়িকার এইসবকিছু না-বোঝাটারে বুঝতে হইবো। তা নাইলে আপনি কখনোই নায়ক না। নায়ক হইলো উঁচা টাইপের একটা জিনিস। বাইট্টা না কোনমতেই। বাইট্টা মানে আপনি আসলে একটা রিয়েল ভিলেন। এমনকি হিটলারও হইতে পারেন। এখন হিটলার’রে পছন্দ করলে কি তিনিও আর নায়িকা থাকতে পারবেন? Continue reading

টাইগার

এক্সটার্নাল অডিট করতে আসছেন সুশ্রুতি হাসান (সুহা)। যেহেতু উনার নাম এইরকম, উনি সুন্দর কইরা কথা বলার চেষ্টা করেন। যেমন, উনার নাম যদি হইতো প্রজ্ঞা লাবণ্য, তাইলে উনারে চুপচাপ ধরণের হইতে হইতো, যাতে একটু একটু কথা বলবেন, আর তারে ইর্ম্পটেন্ট মনে হইতে হইবো সামহাউ। উনি আমারে কইলেন, আপনি যে আমার চে বেশি বেতন পান, দ্যাট ডাজন্ট নেসেসারিলি মিন যে, আপনি আমার চে একজন বেটার মানুষ! হয়তো এইটা সত্যিই বা সত্যি বইলাই তো জানতাম; কিন্তু একটা সত্যি আর একটা সত্যি-বলা’র অ্যাক্ট – দুইটা যে ভিন্ন জিনিস সেইটা আরো স্পষ্টভাবে টের পাইতে থাকি। আমি অ্যাজ রাসেল সালেহ (রাসা), রস উৎপাদনের দিকটা নিয়া মনোযোগী হইতে থাকি।

সুহা কেন আসছেন এইখানে? উনি এমনিতে বয়সে ছোট, আমর চে। তারপরে আবার জাফরিন নাবিলা (জানা’র) ফ্রেন্ড। জানা খালি জর্জরিত হইতে চায়, নানানরকমের কষ্টে। কয়, দেখো সাহিত্য ভইরা গেছে ছোটলোকে! যাঁরা ঠিকমতো ভদ্রতা জানে না, গ্রাম্য; এক দুই পুরুষ আগে গ্রাম থিকা শহরে আসছে, তারা খালি তাদের কাহিনি বলে, কত গরিব-দুঃখী ছিলো তারা, এখন শহরে থাকে; তারপরেও চান্স পাইলে বাপ-দাদা’র গ্রামে তারা চইলা যাইবো; বাপ-দাদারা নাই যেহেতু উনাদের সম্পত্তি ত আছে, আর এই কারণেই আসলে ওইটাই ভালো! শহরে ত ওরা এখনো ফ্ল্যাট কিনতে পারে নাই বা পারবোও না রিসেন্ট ফিউচারে। আর আমরা যাঁরা গ্রামের বাড়ি বেইচা ফেলছি অনেক আগেই বা দান কইরা দিছি, লন্ডনের সাব-আর্বে একটা বাড়ি থাকলেও, ঢাকাতেই থাকি বেশিরভাগ সময়, মাঝে-মধ্যে হাঁসফাঁস লাগে বইলা গাজীপুরে একটা গ্রামের-বাড়ি বানাইছি, আমাদেরকে লাইফ-ষ্টাইল সাজেস্ট করতে থাকে, থ্রু তাঁদের গ্রাম্য বিষণ্ণতা। এখন সাহিত্যে আমাদেরকে আমাদের ট্রু সেলফকে ডিপিক্ট করা লাগবে, রি-ইনভেন্ট করা লাগবে; এইভাবে একটা ক্লাসরে ডমিনেন্ট রাখা যাবে না আর! আমরা কি মানুষ না! আমাদের জীবন নিয়া কেন আমরা সাহিত্য লিখতে পারবো না!

সাহিত্য ব্যাপারটা যদি অট্টুকই হয়, তাইলে ত ঠিকই আছে। এইখানে আমি কি বলতে পারি! আমি বুঝি যে, জানা আমারে অফেন্ড করতে চায় না। শে তার নিজের একটা অবস্থান চায়, বাংলা-সাহিত্যে। কবি-গল্পকার-সমালোচক-সম্পাদকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং বিশ্বাস করে যে, বাস্তব অভিজ্ঞতা বাইরে গিয়া কখনোই গল্প লিখা সম্ভব না। তার গল্পে বেশিরভাগ সময়ই ভিলেনের রোল’টা আমার জন্য বরাদ্দ থাকে। এমন একজন, যে সফল; ব্যবসা কইরা বহুত টাকা কামাইছে, বা বড় চাকরি কইরা অনেক টাকা বেতন পায়; কিন্তু রুচি খুব খারাপ, গল্পের একদম শেষদিকে গিয়া দরাম কইরা পাদ-দেয়ার মতো তার গ্রাম্যতা এক্সপোজড হয়া যায়! সেইটা ঠিক আছে, মানে একভাবে ত এইরকম দেখাই যায়। কিন্তু আমি তারে কখনোই বলার চেষ্টা করি নাই, এই যে দেখা, এইটাও একটা গল্প-ই আসলে। Continue reading