কবিতা: জুন , ২০১৯

ভুইলা যাওয়ার মতোন

ভুইলা যাওয়ার মতোন তোমারে মনে রাখি,

মনে রাখি, যেইভাবে একটা গাছের ছায়া
মিইশা থাকে, অন্ধকারে।


ভূত টূত

ভোঁতা ভোঁতা কথাগুলা
ভূত সাইজা বইসা থাকে…

ভূত টূত
আছে তো কিছু, তাই না?
আমি বলি

হাসে শে,
ভূতেদের কথা বিশ্বাস করে না।


সিন্ডেরেলা 

…তারপর, দরজার বাইরে পড়ে আছে তোমার অনেকগুলা জুতা, কাদা-মাখা


রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

তুমি বরং জুনিয়র ফ্রেন্ড পোষো

 

রাস্তায় দেখলাম দুইজন হাসি, যাইতেছেন…

দুইজন হাসি, যাইতেছেন চলে, আমারই পাশে
রাস্তায় একটু সময় দেখলাম, উনাদের;
উনারা হাসি, হাস্যোজ্জ্বল, হাসতেছেন…

আর আমি ভাবতেছি দুপুরবেলার একটা ছাদের কথা,
রইদ নিভে যাইতেছে, একটা বিকাল দখল করে নিতেছে তারে,
গান বাজতেছে, নাচ শিখাইতেছেন কোন ফ্ল্যাটে, কোন আপা…

দুইজন হাসি যাইতেছেন কিনা, এইরকম কোন ছাদের দিকে?
অথবা এইরকম কোন ছাদের কথা ভাইবা হাসতেও তো পারেন উনারা

আমি ভাবলাম, আমার ভাবনা হয়া থাকলেন উনারা,
তারপর উনাদের হাসির মতোন, উনারা
একটা বাতাস যেন, আসছিলেন

মেমোরি হয়া থাকলেন,
কইলেন আমারে মনে মনে,

‘দেখো, কিছুই তো থাকে না…’

 

চাঁদের অমাবস্যা

“আমি চাঁদ,” কইলো ছাদের কোণায়
দাঁড়ায়া থাকা একটা লাইট

আমি শুইয়া শুইয়া দেখতেছি, বলতেছি
“ওগো চাঁদ, তুমি আসো না কেনো
আমার ঘরে আর…
বেগম আকতার তো ডাকতেছেন,
তুমি শুনছো না আগে তাঁর গান?”

চাঁদ হাসে, শরমায়, কয়, “আমি তো
চাঁদ না,
এমনে এমনে কইছিলাম…”

এইরকম খাঁটি সততা (অনেস্টিও না) দেইখা,
আমিও হাইসা ফেলি, কই, “ঠিকাছে,
কি আর করা যাবে!
তুমি চাঁদ না হও, আমি তো বামুন,
হাইট একটু কম
মশারির ভিতর দিয়া তোমারে ধরি?”

তখনই বিজ্ঞানমনস্কতায়,
লাইট আমার,
শে-ও তো নিইভাই যাইতে চায়

 

না-থাকা’র দুনিয়া

“একটা ব্যাঙ কেক খাইতেছো, দেখো!
অর জিহ্বা দেখা যাইতেছে না,
কি যে ফানি, ব্রিটিশ একটা ব্যাপার” আমি বলতেছি,
তুমি শুনতেছোই না; কি কি জানি ভাবতেছো;
ভাবতেছো, বৃষ্টি এখনো কেন নামতেছে না! 
অথবা ভাবতে ভাবতে চলে গেছো অন্য কোথাও
যেইখানে আমি নাই, আর নাই কোন কেক খাইতে থাকা ব্যাঙ

থাকতেছো তুমি তোমার না-থাকা নিয়াই…

আর ব্যাঙ’টা আমার চোখের সামনে কেক খাওয়া
শেষ কইরা চা খাইতেছে এখন

আমি দেখতেছি একলা একলা

যেহেতু তুমি শুনতেছো না, ব্যাঙ’টারে
আমার আর ভাল্লাগতেছে না,
অন্যযেকোনএকটামানুষ-ই সে এখন

ব্যাঙ হয়া আর থাকতে পারতেছে
না

 

বিকালবেলায়

জগতের সকল হয়ে আমি জগতের সকলের কাছে বইসা আছি। কোন এক বিকালবেলায়। সন্ধ্যা হইতেছে। একটা ফুলের দিকে তাকায়া আরেকটা ফুল জিগাইতেছে, “কি নাম তোমার?” ফুল কয় ফুলের নাম। ফুলে ফুলে কথা হয়। বাতাস অদেরকে দোলায়। গান গায়। সিনেমা বানায়। আমি দেখি। আমার দেখার ভিতর সন্ধ্যা নাইমা আসে। সবসময়। সবসময় মনেহয়, দুনিয়ার সকল নামে আমি ডাকতেছি তোমারই নাম।

 

কিছু জিনিস

কিছু জিনিস ফেলে যাবো আমরা,
সময়ের হাতে;
কিছু জিনিস পইড়া থাকবে,
মনেও থাকবে না,
ফেলে গেছিলাম যে;

কিছু জিনিস আমরা
ফিরা পাইতে পারবো না,

মনে হবে, কিছু জিনিস ছিলো,
নাই আর এখন;

তখন
মাইনা না নিতে পাইরা, বলবো আমরা,
সবসময় সবকিছু তো থাকে না, তাই না!

 

বৃষ্টি

আমরা বসে দেখতেছি, বৃষ্টি

বৃষ্টি পড়তেছে, রাস্তায়

আমি আর আমার টেবিল বসে বসে দেখতেছি

 

জীবন, জামদানি শাড়ির মতোন…

জীবন, একটা জামদানি শাড়ি হয়া জড়ায়া ধরো আমায়

বাইরে তখন সন্ধ্যা,
সুতি শাড়িটার ঘ্রাণ
বাতাসে বৃষ্টির মতোন
ভাসতেছে
এখন

গলির শেষ মাথায়, যেইখানে
জ্বলতেছে একটা লাইট
নাইমা আসতেছে শে, ধীরে
ছায়ার ভিতর…

একটা জামদানি শাড়ি’র মতোন
জীবন,
জড়ায়া ধরে রাখলো আমায়

Leave a Reply