কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০২১

শীতকাল

“রোদ উঠে গেছে”
শীতকাল’টাও চইলা যাবে, কয়দিন পরে

যে কোনকিছু’র চইলা যাওয়া-ই আমারে বিষণ্ন করে

ভালোবাসার পরীক্ষা

আবার পরীক্ষা দিতে হবে ভালোবাসার,
আবার, আবার
প্রশ্নফাঁসের এই পরীক্ষাগুলা দিতে
আমার ভাল্লাগে না আর

নিজেরে কতো নকল
করতে পারে লোকজন আর অদের কি
টায়ার্ডও লাগে না!

হায় খোদা! আমারেই কেন
বারবার বলা লাগবে,
আবার, আবার ভুল উত্তরগুলা
লেখা লাগবে, আর
একটা ফেইল করার গ্লানি নিয়া
হাঁইটা বেড়াইতে হবে একলা একটা রেললাইন দিয়া
অথবা বইসা থাকা লাগবে চুপচাপ কোন নদীর পাড়?

কেন রে ভাই, চুতমারানি?
কেন, দ্য হোয়াই?

টু লি পো

কথাগুলারে আমি এক হাজার মাইল দূরে পাঠায়া দিবো
লি পো, অরা কি চিন্তা করাইতে পারবে কাউরে, এতো দূরে?
(তোমার মতন এমন বন্ধু আমি কি আর পাবো?)

আমি এক হাজার বছর আগে আমার কথাগুলারে পাঠায়া দিবো
লি পো, কেরু খায়া কানতেছে যেই কিশোর ছেলে’টা তার বাচ্চা প্রেমিকা’র লাইগা
বয়স হয়া গেলে সে-ও তো হাসবো, এই কথা মনে কইরা
তার চোখের পানির মতো মদ আমি জমায়া রাখতেছি তোমার জন্য

লি পো, আমাদের কথাগুলা আমরা ভাসায়া দিবো
সাগরে এক ফোঁটা পানির মতো, বাতাসে ভাসতে ভাসতে হারায়া যাবে
হৃদয়ে যেই কথাগুলা শেষ হয়া যাইতেছে, যেই কথাগুলা শেষ হয় না কোনদিনও

এইরকম কথাগুলারে আমরা এক হাজার মাইল দূরে, এক হাজার বছরের পরে
পাঠায়া দিবো; “আমি জানি, তুমি শুনতেছো;
তুমি শুনতেছো তো?”

একটা কবিতা

একটা কবিতা আমি পাইলাম নন্দায়, বারিধারায়
একটা কবিতা আমি পায়া যাবো কিছু দূর হাঁটলে মহাখালি, তেজগাঁয়
কবিতা ছড়ায়া আছে মতিঝিলে, চকবাজারে, পুরান ঢাকায়
ঢাকা শহর ভর্তি ছড়ানো কবিতা, ড্রেনে ড্রেনে, ফুটপাতে, ভাঙা রাস্তায়
ফকির-মিসকিনের মতন আমি কবিতা কুড়াই আর কবিতাগুলা আমারে চিইনা ফেলে
কয়, আপনি না গতকালকেই আসছিলেন! ‘পৃথিবীর গভীর, গভীরতর অসুখ’
নিয়া আপনি আর কদ্দিন নিজের চিকিৎসা’র খরচ তুলবেন?

বিনয় মজুমদার

আর তুমি মনে মনে ভাবলা, কবিতা লিখতেছি তো
আমি গায়ত্রী’রে নিয়াই; তোমার চাকা যাইতে যাইতে
কই যে গেলো আর তুমি চলন্ত চিন্তার মতো ডুবতে
ডুবতে সাবমেরিন থিকা হয়া উঠতে চাইলা নীল তিমি
মাছ; শব্দগুলারেই ভাবলা এগজিসটেন্স, আর
বাংলা কবিতা লিখতে হইলে প্রেমিকা যেহেতু লাগেই
একটা! তাঁর দুনিয়ার ভিতর শব্দগুলারে ঠেইলা দিলা
যেন তোমার ভুট্টা চাঁদের গুহার দিকে কোনদিনই
যাবে না জাইনা সকল বকুল ফুলের মতন ঝরে যাবে
বইলা বিশাল দুপুরবেলা তুমি অঘ্রাণের শ্বাসের মতন
বাঁইচা থাকলা, বললা, গায়ত্রীরে আমি চিনতাম, কিন্তু
শে তো আমারে চিনতো না! এইরকম না-জানা’রে
আবিষ্কার করতে করতে আমরা দেখলাম, চাঁদের
গুহার দিকে রকেট যাইতে থাকে নতুন পানির খোঁজে
আর ভুট্টা-খেতে পইড়া থাকে ভুট্টাগুলা, পোকায়
খাওয়া পুরুষ প্রেমের জীবন; যেন চাঁদ স্বপ্ন দেখতে
ছিল, তোমারেই, আর আমরা ভাবি, আমরা ব্যর্থ
বইলাই এক একজন এক একটা বিনয় মজুমদার

আমি জানি

জানা নাই,

জানা নাই ব্যথা আমি
তোমারে কেমনে জানাই!


শামসুর রাহমান

বাক-স্বাধীনতার বান্দরের পিঠে চলছে বাংলাদেশ


তুমি আছো, থাকতেছো…

শব্দের ভিতরে তুমি মুখ লুকায়া রাখতেছো,
ঘটনার ভিতরে তুমি ডুবে যাইতেছো,
তোমারে খুঁজতেছে সাগর পাড়ে দাঁড়ায়া থাকা
একটা ডিঙি নাও, আর তুমি ভাইসা যাইতেছো;
টাইমের ভিতরে মুখ লুকায়া রাখতেছো, আরেকটা টাইম

জীবনের ভিতর তুমি বসে থাকতেছো আরেকটা গোপন জীবন

অন্ধকার রাতে, মাঠের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকা আরেকটা অন্ধকার যেমন


বসন্তকাল

বসন্তকালরে ব্যাখ্যা করার পরেও সে বসন্তকাল।

পুরান প্রেমের ধুলা শরীর থিকা ফেলে দিয়া
গাছগুলা ডাকতেছে, “কুকিল, তুমি কুথায়!”


কবিতা ও ববিতা

“আমি একটা কবিতা লিখবো, ববিতা!”
ববিতা কইলো, “আগে জাফর ইকবাল হয়া দেখান!”


আমি চলে যাইতেছি

দরজায় তুমি দাঁড়ায়া আছো
দরজা খুলে বাইর হয়া, সিঁড়িতে দাঁড়ায়া
আমি পিছন ফিরা তোমারে দেখতেছি,
একটা আবছা আলোর ভিতর
দরজার কাঠ’টাতে হেলান দিয়া
তুমি আমার দিকে তাকায়া হাসতেছো;
আমি চলে যাইতেছি,
তোমার দাঁড়ায়া থাকা’টা কি যে খুশি ছিল,
আমি চলে যাইতেছি, আর
নামতে নামতেই মনে হইতেছে,
দরজা বন্ধ করার পরে
কানতেছো না তো
তুমি?

বসন্তের ধূলা-বালি

“বসন্তে হইবো আমি ভাবনা-বিলাসী”
ভেসে যাইতে যাইতে বাতাসে বলতেছে ধূলা-বালি

দেবদাস ভাবতেছে, এরা কারা?
পার্বতী ও চন্দ্রমুখী?

১৪২৭

বসন্ত আসে
পাভলভের ইন্দুরের মতন
আমাদের মনে

লাস্ট ট্রেন

কেউ থাকবে না, বুঝছো!
এই মন-খারাপগুলাও শীতশেষের কুয়াশার মতন
পাতলা হইতে হইতে বাতাসে উইড়া যাবে,
মনে করতে গিয়াও মনে করা যাবে না কতকিছুই,
আমার নাক-ডাকা অথবা তোমার না-আসা ঘুম
একটা শিশুর মতন হামাগুড়ি দিয়া আসতে থাকা ভোর
আর তেমন কিছু না কইরাই পার হইতে থাকা দিনের মতন
এই দিনগুলাও যাবে, ফিরা আসবে না কেউ, কোনকিছুই

যাইতে যাইতে একটা পাহাড়ের কিনারায় গিয়া দাঁড়াবো
অথবা একটা সাগড়ের পাড়,
আর আশেপাশে তাকায়া কাউরে খুঁজতে থাকবো আমরা,
যারে বলতে পারা যায়, “আমারে তুমি নিয়া যাও অন্য কোথাও!”

সেই কারো মুখের দিকে তাকায়া আমার মুখের কথা
তোমার মনে পড়বে না আর

মনে হবে,
কে জানি, কি জানি… ভাবতে ভাবতে
প্লাটফর্ম ছাইড়া চলে যাইতেছে একটা অন্যমনস্ক ট্রেন

দ্য এন্ড

অনেক অনেক রইদের ভিতর নিভে আসতেছিলো অনেক অনেক রইদ


একটা ভীড়ের দোকানে

ঘুরতে, ঘুরতে
কাঁধে প্রজাপতির ব্যাগ নিয়া
উড়তে, উড়তে
প্রেমিকের জন্য
চকলেট কিনতেছে
কিশোরী মেয়ে’টা
একলা একটা
ভীড়ের দোকানে
আর
নিজেরেই অনেকবেশি
মিস করতেছে
শে

কবিতা ও ববিতা ২

আরে, কেউ মারা গেছে একটা ‘প্রতিবাদী কবিতা’ লেইখা ফেলি!
আরে, প্রেমে পড়ছি, একটা ‘প্রেমের কবিতা’ লেইখা ফেলি!
আরে, ব্রেকাপ হইতেছে, এটলিস্ট একটা ‘বিরহের কবিতা’ তো লেখা লাগবে এখন!

কবিতা: শুওরের বাচ্চা, তুই দূরে গিয়া মর!

Leave a Reply