কালচারাল মিডল-ক্লাস নিয়া ১

দেখতে দেখতে ঢাকার (বা বাংলাদেশের) কালচারাল মিডল-ক্লাস জিনিসটা নাই হয়া যাইতেছে। কোন কিছু তো একবারে নাই হয়া যায় না, তাদের ডমিনেন্সের জায়গাটা ইনভ্যালিড হয়া উঠছে অলরেডি। (ধানমন্ডি লেকের পারে, ঢাবি’র চারুকলার বাইরে আর ছায়ানটের ভিতরে, কয়েকটা সেমি-এলিট স্পেইসে কিছু ধ্বংসাবশেষ, ওয়ার্ল্ড লোকাল হেরিটেজের অংশ হিসাবে আরো কিছুদিন মনেহয় থাইকা যাবে।)

এই কালচারাল ক্লাসটা এমার্জ করছিল ১৯৬০’র দিকে। কলকাতার কালচারাল ময়দান থিকা মাইগ্রেট করা আর দেশের অন্য শহর থিকা জড়ো হওয়া কলেজ-ইউনিভার্সিটি পাশ করা, সরকারি চাকরি করা, আর্ট-কালচার করা বা বুঝদার লোকজনরাই ছিলেন এইখানে। এখন উনাদের মাতবরি নাই হয়া যায় নাই, তবে কইমা আসতেছে।

এই কারণে না যে, এইখানে একটা সাব-অল্টার্ন বিপ্লব হয়া গেছে 🙂 বরং উল্টাটা। একটা গ্লোবাল ক্লাস চইলা আসছে। যারা খালি লোকাল না, গ্লোবাল বইলাই লোকাল। ওরহান পামুক তার একটা লেখায় এই ক্লাসটার কথা কইতেছিলেন। সারা দুনিয়ার এলিটরা – চীন, জাপান, ইন্ডিয়া, ইউরোপ, মেক্সিকো, আম্রিকা, কানাড, অস্ট্রেলিয়া… সবদেশের এলিটদের একটা কমন জায়গা তৈরি হইতেছে। তো, আমার ধারণা, এরা খালি একটা ক্লাস না, তাদের কনজাম্পশন প্যাটার্নের ভিতর দিয়া তারা একটা স্পেসিস হিসাবে এমার্জ করতেছে। উদাহারণ হিসাবে ‘ওমেগা-থ্রি’ ডিমের কথা কইতেছিলাম একবার, বা অরগানিক ফুড, হাবিজাবি অনেক জিনিস আছে।

মানে, আমি এনভায়রনমেন্ট-সেন্সিসিটিভনেসটারে মকারি করতেছি না, কিন্তু এইটা একটা পার্ট। যেমন, কয়দিন আগেও ছিল এই জিনিসগুলা যে, আফ্রিকা’তে মানুশ না খায়া মরতেছে, সিরিয়াতে মানুশ মারা যাইতেছে… এইগুলা কনসার্ন হওয়ার মত জিনিস না – তা না; এইসব ইস্যুতে সাবস্ক্রাইবড হইতে পারাটা প্রাইমারি একটা ঘটনা; তারপরে ধরেন, আপনি আফ্রিকা ঘুইরা নিজের চোখে দেইখা আসছেন, সিচুয়েশন আসলে এতোটা খারাপ না, কিছু ডেভোলাপমেন্টও হইতেছে, এইরকম। 🙂 পূর্ব-ইউরোপের দেশগুলাতে কয়েকটা বছর থাইকা আসাটা বরং আরামের।…

উনারা, লোকাল কালচারে ইন্টারেস্টেড না – তা না; বরং বগুড়ার দই কেমনে প্যারিসের বুটিকশপগুলাতে অ্যাভেইলেবল করা যায় সেইটার একটা রাস্তা বাইরই কইরা ফেলছেন প্রায়। দুয়েকজন ফ্রেন্ডও আছেন কড়াইল বস্তিতে থাকেন।… মানে, টাকা-পয়সা আছে – এইটা দেখানোটা কোন বড়লোকি ব্যাপার না; বরং আমরা ‘কালচার’টারে বুঝি আর প্রমোটও করি আমাদের লাইফস্টাইলের ভিতর দিয়া। ঘটনা’টা এইখানে। গ্লোবাল-লোকালদের।

এইটুক মনেহয় লোকেট করা যায়, বা এটলিস্ট দেখা যায়। এই ক্লাস’টা খুব সুপার-ডুপার জিনিস বা ফাউল জিনিস – তা না; এইটা জাস্ট নিউ একটা মাস্ক।

যে কোন চেইঞ্জই তো ঠিকঠাকমতো ভিজিবল হইতে টাইম লাগে একটু, এই যে একটা লোকাল কালচারাল ক্লাসের নাই হয়া যাওয়াটা, আর এই জায়গাটাতে একটা গ্লোবাল কালচারাল ক্লাসের এমার্জ করাটা নতুন ফেনোমেনার জায়গা থিকা আমি জাস্ট মার্ক করে রাখতে চাইলাম, এইখানে।

Leave a Reply