নোটস: ফেব্রুয়ারি – মার্চ ২০২০

 

ফেব্রুয়ারি, ২৩

দেখবেন এইটা হয়, যখন কোন খারাপ কথা বলে মানুশ বা খারাপ কাজ করে; আর তারপর বুঝতে পারে, তখন কয় যে, ‘ফাইজলামি করছিলাম’ বা ‘বুৃঝি নাই’ 🙂 – এইভাবে এড়ায়।”

এইটা একটা ওয়ে-আউট। ‘ভুল বলছিলাম’ বা ‘সরি’ না বলতে পারা’টা খালি ইগো’র ঘটনা না, একটা ফেইলওরের ঘটনা হিসাবেই দেখতে পারাটা দরকার।

২.
আমি দেখি, সমস্যাটা হইতেছে যে কোন ঘটনা’রে একটা ‘কমন ন্যারেটিভ’-এর ভিতরে আটকানো’টা। যে, এইটার মানে হইতেছে অইটা, অইটার মানে হইতেছে সেইটা – এইরকমের কমন ফেনোমেনাগুলা।

একটা প্রটোটাইপের এগেনেস্টে আরেকটা প্রটোটাইপ দাঁড়া করানোটা কোন কাজের জিনিস বইলা মনেহয় না আমার কাছে। মানে, এইখানে ব্যক্তি বাদ দিয়া অবজেক্টিভ কোন সিস্টেম কাজ করে – তা না; বরং ব্যক্তি অবস্থানগুলারে, অ্যাক্টগুলারে আমরা একটা অবজেক্টিভ সিস্টেমের আন্ডারে যখন নিয়া বন্দী করি, প্রসেস হিসাবে সেইটা একইরকমের হইতে থাকে।

তাই বইলা প্যার্টানগুলা বা জেনারেল ফর্মগুলা যে এগজিস্ট করে না – তা তো না; একটা ন্যারেটিভের জায়গায় আরেকটা ন্যারেটিভ-ই বরং বেস্ট-ফিট করে। কিন্তু মুশকিল হইলো, সব নিয়মগুলাই আবার তাদের একসেপশনগুলা দিয়া ভ্যালিডেড হইতে থাকে। আলাপ আবার, অবজেক্টিভ সিস্টেমের ফাঁক দিয়া ব্যক্তিতেই ফিরা আসে।

ব্যক্তিরে বা তার অ্যাক্টরে যেইরকম একটা জেনারালাইজড প্রসেসের বাইরে দিয়া দেখা সম্ভব না, আবার যখন একটা জেনারালাইজেশনরেই আমরা আল্টিমেট ধইরা নিবো তখন ব্যক্তির অ্যাক্ট করার জায়গাগুলাও ন্যারো হইতে থাকার কথা।…

কোন ব্যক্তিরে বা অ্যাক্টরে ডিফাইন করা যায় না বা যাবে না, এইরকম না; বরং যেই যেইভাবে লোকেট করি আমরা সেইটারে আল্টিমেট হিসাবে না নেয়াটা থিওরেটিক্যালি জরুরি একটা জিনিস, সবসময়ই।

 

ফেব্রুয়ারি, ২৩

‘অটোবায়োগ্রাফিক্যাল’ বা ‘বেইজড অন অ্যা ট্রু স্টোরি’ দেখতে আমার ভাল্লাগে; এই কারণে না যে, এইগুলা ‘সত্যি’ জিনিস বলে, বরং ‘সত্য’ জিনিসটারে কেমনে কন্সট্রাক্ট করে – সেইটা অনেকবেশি ক্লিয়ারলি দেখা যায়, এইরকম ‘পারসোনাল’ ইভেন্টগুলার ভিতরে।

যেমন গতকালকে @Pawn Sacrifice দেখার সময় মনে হইতেছিল; ববি ফিশারের দাবা’তে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ান হওয়ার ঘটনা’টা নিয়া বানানো; অইখানে ববি ফিশার’রে দেখানো হইতেছিল, খুবই প্যারানইয়া টাইপের। খেলার আগে ভাইগা যায়। ফার্স্ট খেলায় হাইরা যাওয়ার পরে কয়, পাবলিকের সামনে খেলবো না, ক্যামেরার আওয়াজে ডির্স্টাব হয়, এই সেই। তো, এইগুলারে প্যারানইয়া মনে হওয়ারই কথা, পাবলিকের, মানে আমাদের। কারণ সে যেইগুলারে তার সমস্যা বলতেছে, অন্যজনের বা আরো অনেকের তো এই সমস্যা নাই! তার কেনো হইতেছে! তার মানে এই সমস্যাগুলা নাই আসলে! 🙂

পরে, তার অপোনেন্ট যখন হারতে থাকে, সেই অপোনেন্টও চেয়ার থিকা উইঠা বসে, কয়, চেয়ারের পায়ার ভিতরে কিছু ঘুরতেছে, সে অই চেয়ারে বসবো না। মনে হইতে পারে, তারও প্যারানইয়া হইছে! 🙂 কিন্তু না, পরে তার’টা প্রমাণ পাওয়া যায়, দেখা যায়, স্টিলের পাত ঠিকাছে, পাতের ভিতরে দুইটা মৌমাছি ঘুরতেছিল আসলেই। 🙂

মানে, দুইজনে দাবা খেলতে খেলতে অই কনশাসনেসের লেভেলে চইলা গেছিল যে, স্টেইজের কোণাতে একটা ক্যামেরার আওয়াজ, চেয়ারের পায়ার স্টিলের খোলের ভিতরের মৌমাছির ঘুরাটাও তারা ফিল করতেছিল।

তো, আমাদের সোশ্যাল লাইফে এইগুলা হরদম হয়। কেউ একজন ক্লেইম করলেন যে, দেখেন এইখানে একটা পাতলা চালাকি হইতেছে! ‘মুক্তিযুদ্ধ’ নাম দিয়া অনেককিছু কাভার করা হইতেছে! ৫/৭ বছর আগেও অনেক জিনিস ক্লিয়ার ছিলো না তো আমাদের কাছে। ইভেন, অনেককিছু নিয়াই হাসাহাসি করতে পারি তো আমরা! এই ক্লেইমগুলারে বাড়াবাড়ি মনে হইতে থাকে আমাদের কাছে।

কিন্তু যারা যা দেখতেছে, আর আমরা তা দেখতেছি না বইলা, ফিল করতেছি না বইলা, সব সময় ‘অতি-আবেগ’ ‘ইল্যুশন’… এইসব না-ও হইতে পারে।

তো, ববি ফিশার আসলে ‘প্যারানয়েড’-ই হয়া যান, অফিসিয়ালি। 🙁 দাবাতে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে পালায়া পালায় থাকেন, আম্রিকান গর্ভমেন্টের নজরদারি এড়ানোর লাইগা। এই-সেই। মানে, বাজেভাবেই এন্ডিং হয় তার লাইফের, সিনেমায়।…

 

ফেব্রুয়ারি, ২৮

গান বা মিউজিক খুবই ক্রুশিয়াল একটা জিনিস। এই কারণে না যে, গান শুনলে মন হালকা হয়, পেইন কমে বা ফিলিংস বাড়ে, বরং গান একটা পাতলা পর্দার মতন, যেন আমি গান শুনতেছি, কিছু করতেছি না, অথচ গান শুনতে শুনতেই অন্য কিছু করতেছি আমি, করতে পারতেছি। মানে, আমি যে অন্য কোনকিছু করতেছি, এর লাইগা গানটা একটা দরকারি বেইজ বা আড়াল। যে, আমি তো গান শুনতেছি!

কিন্তু গান বা মিউজিক তো আছেই সবসময়। ইভেন ইন ল্যাঙ্গুয়েজ, আমরা যে মনে করি মিনিংটা ইর্ম্পটেন্ট, সেইটাও কোন না কোন মিউজিকের ভিতর দিয়াই অ্যাপিয়ারড হইতে থাকে। মিউজিকটাই আছে, এইরকম না, কিন্তু যেইটারে ভঙ্গিমা বলি, স্টাইল বা প্যাটার্ন… এইসবকিছুর বাইরে গিয়া কোন মিনিংই তো থাকতে পারে না, শেষমেশ!

তো, শব্দ বা বাক্যের মিউজিক নিয়া কনসার্নড হওয়ার মেবি দরকার নাই, কিন্তু এইটা না থাকলেও আছে, কোন না কোনভাবে কাজ করতেই থাকে।…

ফেব্রুয়ারি, ২৯

অ্যাপিয়েরেন্স যে কেমনে রিয়ালিটি হয়া উঠে, এইটা সবচে ভালো ভাবে বুঝা যাইতে পারে এই ২৯শে ফেব্রুয়ারি বা লিপইয়ার দিয়া।

একটা চিন্তা তো দেখতেছি যে, আজকে যদি একটা পোস্ট দেই ফেসবুক আবার ৪ বছর পরে সেইটা দেখাবে! 🙂 কিন্তু ঘটনা তো কোনভাবেই এইটা না, এই পোস্ট আপনি যে কোন সময়ই দেখতে পাইবেন। টাইমলাইনেও থাকবে, কি-ওয়ার্ড দিয়া সার্চ করলেও পাইবেন। যেইটা হবে যে, অন দিস ডে বইলা যে সিলেক্টিভ মেমোরি দেখায়, সেইখানে ৪ বছর পরে দেখাবে। এখন ফেসবুক চাইলে নন-লিপিয়ারগুলাতে ২৯ তারিখটারে যদি ২৮ তারিখের ভিতরে ইনক্লুড কইরা দেয়, চইলাও আসতে পারে।… মানে, এইটা একটা অ্যাপিয়ারেন্স, অন দিস ডে’র, যেইটারে সত্য বা রিয়ালিটি বইলা ধইরা নিতেছি আমরা। দুইটা একই জিনিস তো, না! তাই না?

আরো গ্রেটার এক্সটেন্ডে যদি দেখেন, এই যে লিপিয়ার, এইটা তো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের কাহিনি, এখন আপনি যদি বাংলা ক্যালেন্ডার বা হিজরি সন গোণার ভিতরে চইলা যান, তখন তো এই পুরা লিপিয়ার জিনিসটাই নাই! 🙂 মানে, আমি বলতেছি না যে, লিপিয়ার জিনিসটা এগজিস্ট করে না! কিন্তু এইটা একটা অ্যাপিয়ারেন্সই। তো, এইরকম অ্যাপিয়ারেন্সগুলারে ট্রুথ বইলা ভাবাটা ঠিক না আর কি!…

 

মার্চ ২

~ হিউম্যান ভ্যাসেল ~

গডফাদার নিয়া লিখতে গিয়া একবার কইতেছিলাম, দুনিয়ার অনেককিছুই গডফাদারের ঘটনাগুলা দিয়া বইলা ফেলা পসিবল! 🙂 এপিক টাইপের জিনিসগুলা নিয়া এইরকম হয়। পরে আবার মনে হইছে, ঘটনাগুলা যে গডফাদারের মাপে ঘটে, তা তো না, বরং গডফাদার যেই ন্যারেটিভ দিয়া আগায়, সেইটা দিয়া অনেককিছু এক্সপ্লেইন কইরা ফেলা যায় আর কি! যেমন, আমাদের এগজিসটেন্সের মিনিং কখনোই মিথগুলার বাইরে যাইতে পারে না, এইরকম অনেকটা।

তো, এই জিনিস মনে হইলো, ফিতার খেলা নিয়া আবার ভাবতে গিয়া। এইটা নিয়া লিখছিলাম একবার। (কমেন্টে লিংকটা দিতেছি)। ফিতা খেলা জমানোর লাইগা যেইটা করা লাগতো, হাটের দিন, বুধবারে, আগে নিজেরা নিজেরা খেলতো। মানে, অরা ৫/৭ জন দলের লোকই, দুইজন যেন অর্গানাইজার আর বাকি কয়জন যেন খেলোয়ার, এইভাবে নিজেরা কয়েকটা গেইম খেইলা, হাসাহাসি কইরা, বাইরের কাস্টমার ধরার ট্রাই করতো। এইরকম।

আগেরদিনে টেম্পুতে বা এখনো সকালে বা রাতে মিনিবাসে এইভাবে ছিনতাই, রেইপ হয় তো। যেন সবাই যাত্রী, এইরকম ভাইবা আসল যাত্রীটারে তোলার পরে তারে বিপদে ফালানো হয়।

তো, এইটা মনে হইতেছিল, যেই জিনিসগুলারে বইয়ের রিভিউ বলা হইতেছিল বা এর হাইপ-তোলা দেইখা।

মানে, আমারে ভুল বুইঝেন না আবার! 😞 বইয়ের রিভিউ তো কাছের মানুশজনই করবো। অ্যাকাডেমিক জার্নালেও পিয়ার রিভিউ ইর্ম্পটেন্ট একটা জিনিস। কর্পোরেট কোম্পানিগুলাও ফ্রি স্যাম্পেলিং কইরা ওয়ার্ড অফ মাউথ ক্যাম্পেইন করে। মানে, এইগুলা আছে। শেষমেশ নিজেরা নিজেরাই তো করা লাগে। বা যারা করেন, তাদেরকে একলগের মানুশ মনে হইতে পারে।… মানে, জিনিসটা খারাপ না, লোভ দেখানোটা বা অ্যাট্রাক্ট করাটা। ইলিগ্যাল তো না, বা মেবি অনৈতিকও না।

অনেক সময় দেখবেন, নিউজপেপারে অ্যাডগুলাও নিউজের মতন কইরা দেয় বা দিতো। বা অনেক প্রডাক্ট বা ব্রান্ড নাটক সিনেমাতে দেখায়া দেয়। এইভাবে আর্টরে বা লাইফরে অ্যাড বানায়া ফেলে! 😛 হলিউডের একটা সিনেমাও ছিল এইরকম, একটা কাপল সাব-আর্বান মিডল ক্লাস এলাকাতে বাসাভাড়া নেয়, তারপরে এই সেইটা কিইনা নেইবারদের লগে আড্ডা দিয়া সেইগুলার সোশ্যাল ভ্যালু ক্রিয়েট করে। অরা চইলা যাওয়ার পরে লোকজন টের পায় যে, আরে, এরা তো সেলসম্যান ছিল! 😀

তো, মানুশের চে ভালো মিডিয়াম তো আর নাই, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট করার লাইগা। আমি খেয়াল কইরা দেখছি, নিজের ভালোলাগার জিনিস তো আছেই, কিন্তু আরো দুয়েকজন যখন ভালো বলে, তখন শিওর হওয়া যায়, জিনিসটা যে ভালো!… এইটা সমস্যা না, বরং জিনিসগুলা কমবেশি এইভাবেই ছড়ায়, হিউম্যান ভ্যাসেলের মাধ্যমে।

কিন্তু এই ডিফরেন্সের জায়গাগুলারে বা প্রসেসের জিনিসগুলারে মার্ক কইরা রাখা যাইতে পারে মনেহয়! বিজ্ঞাপণের আর রিভিউর। জমায়েতের আর ভ্যালু জাজমেন্টের। ইমোশনের আর ক্রিটিকের। এইরকম আর যা যা কিছু আছে বা আসতে পারে, আর কি। আর এর বেসিসে এর এফেক্টিভনেসও বাড়ে, কমে মনেহয়।

Leave a Reply