স্বপ্নের গরুগুলি

স্বপ্নের গরুগুলি ঘাস খাইতেছিল মুনের মাঠে। আর আমি রেড মার্সের আম বাগানে বইসা আছি। অথচ পাশাপাশি। সামারের হালকা বাতাস। কোন গান নাই। কানেক্টিভিটি নাই যেহেতু। আওয়াজ ছাড়াই কেমনে যে বাঁইচা রইছি আমরা! গরুদের ঘাস চিবানির আওয়াজ আছে। আছে বাতাসের শিষ। অখচ কোন গান নাই। যেন গেরিলা আক্রমণ করবে কনশাস ড্রোনগুলা। এইরকম একটা পিকচার। দূরে, ভ্যালির দিকে তাকায়া রইছি আমি। কখোন আসবে কনশাস ড্রোন? জাগায়া তুলবে আমারে ড্রিমের ভিতর থিকা…

যেহেতু রুরাল এরিয়া ড্রিম পুলিশও নাই কোন। এই জায়গাটা যে শহর না, এইটার লাইগা কোন মন-খারাপও নাই আমার। লেজার-লাইটের লাইগা বা স্কাই-ওয়াইড জোনের ‘টার্জান অফ দ্য জাঙ্গল’-এর লাইগা। এই এপিসোডে লেডি-টার্জান কি আবার রি-বিল্ড করতে পারবে হিউম্যান স্পেসিস’রে?- এইরকম বুক ধড়ফড় করা টেনশনও নাই। কয়েকটা গরু ঘাস খাইতেছে। আর আমি। একটা কন্সটেন্ট সন্ধ্যাবেলা। তাকায়া থাকতে থাকতে চোখ ব্যথা করে। মনেহয় ইল্যুশন কোন, ড্রিম তো না… কয়েকটা ক্র্যাপের মায়া-পাখি বইসা রইছে। ওরাও তাকায়া থাকে। গাছের পাতার মতোন রঙ। বাতাসে একটু একটু ভাসে। গিয়া বসে গরুদের পিঠে। গরুগুলি পাত্তা দেয় না। মনেহয় ওরা জানি নাই। না-থাকাগুলি ভালো ছিল।

আমি থাকতে পারি না বেশিক্ষণ। আমার ঘুম ভাঙে। স্বপ্নের গরুগুলি স্বপ্নেই থাইকা যায়।

২.

অফিসে আসার পরেও এই হ্যাং-ওভার থাকে অনেকক্ষণ। দুই ডোজ অ্যান্টি-ইলিউশন খাওয়ার পরে কাজে বসলাম। একটু পরেই পামেলা আসলো। পামেলাই যে খালেদ এইটা বুঝতে আমার বেশ টাইম লাগছে। পরে অরে জিগাইলাম, বাই-সেক্সুয়াল’রা এইটা শুরু করছে শুনছি। কোন সমস্যা হয় না তোমার? পামেলা কইলো, মাঝে-মধ্যে একটু গড়বড় তো হয়-ই; আগেও হইতো না মাইনষের? একজনের মেসেজ আরেকজনরে পাঠাইয়া দিলো? হইতো তো; তো, এইরকম-ই, এতো সিরিয়াস কিছু না। পামেলা আমার অফিস কলিগ। একটা মেমোরি বিল্ডিং ফার্মে কাম করি আমরা। ও ডিরেক্টর লেভেলে চইলা গেছে। অর কালার সেন্স থুবই ভালো। মেমোরিগুলা পুরা রিয়াল লাগে। আর ও ডিফরেন্সিয়েটও করতে পারে কালার কনট্রাস্টগুলি লিগ্যাল ইস্যুগুলাতে। একবার তো এমন এক কেইস আসলো এম.এম.এম.ও ফেইল, হিউম্যান ইন্টারভেনশন মাস্ট, তখন পামেলা ইর‌্যাশনালিটি ইমপ্যাক্ট দিয়া জিনিসটারে বাইর কইরা দিলো। এরপর থিকা-ই ও পুরা সেলিব্রেটি ইন্ডাষ্ট্রিতে।

আমি আর্কাইভে কাম করি। মাঝে-মধ্যে অর পুরান জিনিস দরকার পড়ে, তখন আমারে রিলাই করে খুব। কয়, আমার লগে কথা কইলে নাকি খুবই সুথিং লাগে, গল্প-গুজব করতে করতে অন্য অনেক কিছু ভাবতে পারে শে। ট্রান্সফর্ম করতে পারে অনেক চিন্তা। এইরকমই আসছে আজকে। তখন আমি খালেদের কথা জিগাইলাম। পামেলা হাইসা দিয়া কইলো যে শে-ই খালেদ। দুইটা নাম যেহেতু এফোর্ড করতে পারতেছি, দুইটা এগজিসটেন্স-ই নিলাম! আপনার মতো ডরাইলে কি আর লাইফ এনজয় করা যাবে? এইভাবে তো হবে না! হাহা হা কইরা হাসে…। চইলা যায়।

ফাইল নিয়া চইলা যাওয়ার পরেও আমি পামেলার কথা-ই ভাবলাম। খালেদ কেন হইতে গেলো শে? এত বড় অফিসিয়াল পজিশন, নাম-ডাক, এতকিছুর পরেও…। আর এমনিতেও তো অনেক রিস্কি একটা ব্য্যাপার। রাস্তা-ঘাটে ড্রিম-পুলিশের সাথে কোলাবরেশনে ফ্লার্ট-গ্যাংও নামছে। ওইদিনই ট্রেনের বাথরুমে ধরা খাইলো ইয়াং একটা মেইল। ইভেন লিফটে চুমা খাইতে গিয়াও একজনের লিপ কলাপস কইরা দিলো। মানে, ফ্লার্ট তো ফ্লার্ট, ওইটা দিয়া রেইপ করতে গেলে তো ধরা; আর মেইল-ইগো এতোটাই ইরেসেসটিবল যে, আটকাইতে পারে না। জেনটিক সায়েন্সেও প্রুফ করা যায় নাই যে, এইটা ন্যাচারাল ফেনেমেনা; কিন্তু ভ্যাকসিন নিতে গেলে আবার সাইড এফেক্ট বহুত। কিন্তু সবাই তো ভাই সেইফ সিকিওরড লাইফ চায়। এইজন্য তিনটা প্রডাক্টিভ স্পার্ম ডোনেট কইরা ভ্যাকসিন নিয়া নেয়।…

আমি ভাবতেছিলাম, একটা কমন মেইলের ইগো পামেলার কি কামে দেয়?

 

৩.

কেইসটা আসলেই অনেক জটিল। ফর্টি-ফাইভ ইয়ারস ওল্ড এক পুরুষ। ডিভোসর্ড। পোলা আছে একটা। এক্স-ওয়াইফের লগে থাকে। এক্স-ওয়াইফ হ্যাপিলি ম্যারেড। সে কোন স্পাউস ম্যানেজ করতে পারে নাই। প্রডাক্টিভিটি অ্যাবনরমালি কমতেছে। রিটায়ারমেন্ট এইজ পর্যন্ত যাইতে পারবো না। এখন সে তার নানীর নামে চাইল্ড অ্যাবিউজের মামলা করছে। আসল কথা হইতেছে, নানীর বিশাল প্রপার্টি। পুরাটা সোসাইটি-অউনড। এইটার ভাগ যদি তারে দেয়া লাগে তাইলে বেশ বেকায়দাতেই পড়তে হবে। সবগুলি মেমোরি ফার্মের ইনফরমেশন আছে; পুরা লাইফে সে কখনো মেমোরি ইন্সটল করে নাই। এমনকি কোনদিন সেক্সুয়াল ড্রিমও কিনে নাই। যেইটা বেশ আন-ইউজ্যুয়াল। পোলারে কয়েকটা মেমোরি গিফট করছে অবশ্য। কিন্তু সেইগুলি তো আর কাউন্টেবল না।

কিন্তু ছবিটা দেখার পরে অবাক হইলাম। আরে এইটা তো জয়নাল! জয়নাল আবার বিয়া করলো কখোন! কখোনই বা ডির্ভোস হইলো! বাচ্চাও পয়দা দিলো!

 

৪.

জয়নালরে আমি চিনতাম ছোটবেলায়। তখন সে লোকাল স্পেইসশীপ চালায়। মাত্র লাইসেন্স পাইছে। মার্স, আর্থ আর মুন – এই তিন ডেস্টিনেশনের ভিতরই থাকে। কোনসময়ই শিডিউল ঠিক রাখতে পারে না। খালি তাড়াহুড়া করে, তা নাইলে ইচ্ছা কইরা প্যাঁচ লাগায়, প্যাসেঞ্জারের কথা পছন্দ না হইলে। এইজন্য মার্চেন্টরা সবসময় অরে এভেয়ড করে। লাইসেন্স বাতিল হওয়ার টাইমে আবার কয়দিন ঠিকঠাকমতো চালায়া হাতে-পায়ে ধইরা চালু রাখে। আসলে ও বইসা থাকে খালি স্টাডি ট্যুর-এর ট্রিপগুলির লাইগা। রেইট-টেইট কমায়া এক শেষ অবস্থা। অন্য স্পেইসশীপের কেউ আর এই কারণে এই ট্যুরগুলাতে কমপিট করতেও আসে না। মালিকের লগেও অর আলগা খাতির। অর পাগলামি দেইখা হাসে। কিছু কয় না। এখন আর স্পেইসশীপ ট্যুর লিগ্যাল না বইলা কর্মাশিয়ালি চালু করতে পারে না। কোন স্কুল চাইলেই খালি স্টুডেন্ট নিয়া যাওয়া যায়। কিন্তু মালিকের মনে আশা, কোন না কোনদিন আবার হয়তো চালু হবে… তখন জয়নালই হবে তার অ্যান্ড্রোমিডা!

কিন্তু জয়নাল ধরাটা খায় আসলে আমাদের ট্যুর’টা দিয়াই। বেশি কেরামতি দেখাইতে গিয়া মার্সের রাডারের বাইরে চইলা যায় আর প্রচন্ড আওয়াজে বাচ্চা-কাচ্চারাও ডরে চিল্লাইতে থাকে। তখন রেসকিউ মেশিনরা আইসা আমাদেরকে নিয়া যায়। একমাস জয়নালরে স্পেইসে ফালায়া রাখে, শাস্তি হিসাবে। ও আসলে ফান  করতে চাইতেছিল, চাইতেছিল আমরা যাতে আরো মজা পাই। পাইতেছিলামও আমরা। নিজের উপর অনেক বেশি কনফিডেন্স আছিলো ওর। ভাবছিল মনেহয় যে, ও একইসাথে ফান করতে পারবে আর চালাইতেও পারবে। দুইটা জিনিস কেন, অনেকে দশটা জিনিসের ব্যালেন্সও রাখা যায়… কিন্তু জয়নাল ওয়াজ টু মাচ ইন টু দ্য ফান!

একমাসের শাস্তি কাটায়া আসার পরে মালিকের কাছে স্পেইসশীপ বুঝাইয়া দিয়া ও চইলা যায়। কোথায় যে যায়, কেউ কোন খবরও জানে না। কই থিকা যে আসছিলো, সেইটাও আমাদের জানা ছিল না। ও যাওয়ার পরে সেই কথা মনেহয় আমরার। আরে! একবার অবশ্য কইছিলো যে, অর ছোটভাইয়ের বয়স আমাদের মতোন ছিল; রেডিয়েশন সেন্টারে মারা গেছে। ওইটা সে মাইনা নিতে পারে নাই। এক ডাক্তাররে জখম কইরা মুনের পাহাড় থিকা সে পালায়া আসছে আর্থে। এইরকম কোন একটা কাহিনি। কিন্তু ওর কথা তখন আমরা বিশ্বাস করি নাই। এখন তো জিগানোরও কেউ নাই।

এতদিন পরে ওর চেহারা দেইখা আবার চমকাইলাম।

 

৫.

খালেদ’রে এমনিতে আমি একটু এভেয়ডই করি। সে খুবই কর্ডিয়াল। এখন তো দেখা হইলেই হাসে। আমিও হাসি। জিগাই-ও, কেমন আছেন? মাঝে-মধ্যে সোশ্যাল গেদারিংগুলিতে দেখা হয়। অফিসের পামেলা-ই বেটার আসলে। মোর প্রফেশনাল। ইন্ডিভিজ্যুয়াল হিসাবে অ্যাক্ট করাটা খুবই মুশকিল। এতোটা ফেইক কে আর করতে পারে! অনেকে তো ডুপ্লিকেট-ই হায়ার করে এইসব পার্টির লাইগা। পামেলা সেইটা না কইরা নিজের ইনফিরিয়রটারে হাজির রাখে। খারাপ না ব্যাপারটা।

ওইদিন পার্টিতে আরো বেশি কর্ডিয়াল খালেদ। কইলেন, জয়নাল’রে চিনতেন আপনি? আমি তখন পুরা হিস্ট্রিটা কইলাম। কইলাম, আপনি তো জানেনই এইসব… আমারে আর কেন জিগাইতেছেন! সে কইলো, না, না অনেকসময় টোনটাতে হিডেন থাকে তো স্টোরিটা। যেমন, আপনার ফান ইলিমেন্ট’টা মাইনর হিসাবেই শুনছি আমি, অথচ মেজর একটা ব্যাপার হইতে পারে তো… এইরকম।

পরের দিন পামেলা’রে যখন অফিস দেখলাম আমি, মনে হইলো চিনে-ই না!

 

৬.

জোকারের রোলে আমি। আর জয়নাল চোর।

আমি পাহারা দিতেছি। জয়নাল ফ্রেন্ড হইয়া আসছে যেন।

বিড়ি-সিগ্রেট খাবো আমরা।

আমার খুবই কান্দা কান্দা লাগতেছিল।

এতো পুরান মেমোরি এইগুলি। এইগুলি তো ট্রু-ও, তাই না?

 

তখন দূরে স্ট্যাচু অফ লির্বাটি’র মতো পামেলা দাঁড়ায়া আছে। হাসতেছে।

 

আমি তো জোকস কই নাই কোন!

তোমারে দেখলেই আমার হাসি আসে!

 

তুমি আমারে দেখতেছো, আর দেখো জয়নাল সব চুরি কইরা নিয়া যাইতেছে

আমি দেখতেছি তো!

তাইলে তুমি কিছু কও না কেনো?

তুমিই তারে চুরি করতে দিতেছো!

না, নাআমি কেনআমি না তো

 

আমি প্রুফ করতে পারি না। আমি বুঝতে পারি পামেলা আসলে ইনসার্ট করে ফেলছে নিজেরে আমার ভিতরে। শে দেখতেছে কি করছি আমি এতদিন, গোপনে, জয়নালের সাথে!

জয়নাল এই সোলার সিস্টেমের বাইরে যাইতে পারে নাই কোনদিন। অনেকভাবে সে চাইছে। তার না-যাইতে পারাটা সে আমারে ট্রান্সফার করে দিছে। আমার বেদনা দিয়া আমি সাজাইতেছিলাম সবকিছু আর্কাইভে। এইটুক আমার পাওনা হইছে – আমার বেদনা আমারে কনভিন্স করছে এইভাবে। আমি ট্রাপড হইয়া রইছি। ভাবছি, যদি একবার চইলা যাইতে পারি, কে আর দেখবে তখন আমার বেদনারে! এইরকম ছোট্ট একটা মেইল-ইগো’রে!

পামেলা আমার দিকে তাকায়া হাসতেছিল। অর হাসি ঠিক জিইতা যাওয়ার হাসি না। এমনিতেই। যেন আমি কোন জোকস বলছি। ঠিকমতো বলতেও পারি নাই। তারপরও আমার টমেটোর মতো মোটা নাকের দিকে তাকাইয়াই অর হাসি আসতেছিল। আর আমি কাঁচুমাচু করতেছি। বুঝতেছি না, আমিও হাসবো কিনা!

 

৭.

স্বপ্নের গরুগুলি ঘাস খাইতেছিল মুনের মাঠে। আর আমি রেড মার্সের আম বাগানে বইসা আছি। অথচ পাশাপাশি। সামারের হালকা বাতাস। কোন গান নাই। কানেক্টিভিটি নাই যেহেতু। আওয়াজ ছাড়াই কেমনে যে বাঁইচা রইছি আমরা! গরুদের ঘাস চিবানির আওয়াজ আছে। আছে বাতাসের শিষ। অখচ কোন গান নাই। যেন গেরিলা আক্রমণ করবে কনশাস ড্রোনগুলা। এইরকম একটা পিকচার। দূরে, ভ্যালির দিকে তাকায়া রইছি আমি। কখোন আসবে কনশাস ড্রোন? জাগায়া তুলবে আমারে ড্রিমের ভিতর থিকা…

 

বিলবোর্ডের একটা ছবি এইটা। ময়লা হইতেছে…

 

আমি জানি পামেলাও একদিন থাকবে একটা বিলবোর্ডে।

 

মেবি একটা শাদা বোরাক-ই শে। উড়ে যাইতেছে…

 

14516446_10153886821460849_2481678924597280619_n

 

Leave a Reply