মে ২১, ২০২৩
বাকশালি জমিদারির ভিতরেও আরো কয়েকটা জমিদারি আছে। যেমন ধরেন, ডিওএইচএস’গুলা, গুলশান, বারিধারা, তবে সবচে বড় জমিদারি মনেহয় এখন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার। মানে, এইসব জায়গায় রাষ্ট্রের নিয়মের বাইরেও আলাদা আলাদা অনেক নিয়ম আছে।
তো, এইটা দেখেন, যারা ইন্টারনেট সার্ভিস দেন বসুন্ধরা আবাসিকে, তাদেরকে আলাদা ফি (মানে, চান্দা/চাঁদা) দেয়া লাগে। আগে তা-ও কম ছিল, কিন্তু এইটা দিন দিন বাড়াইতেছে। এখন এই টাকা তো আসলে এন্ড-ইউজাররেই দেয়া লাগবে। আর এইটা জাস্ট অনেক ‘নিয়ম-কানুন’-এর একটা।
এইগুলা অপারেট করে বেশিরভাগ কেইসে এক্স-মিলিটারির লোকজন, যাদের গর্ভমেন্ট-অফিসগুলার লগে কানেকশন ভালো। তো, কমপ্লেইন কই করবেন! উল্টা ধরা খাওয়া লাগবে!
নিউজ হিসাবেও এইসব সাফারিংসের কথা কোথাও পাইবেন না। [নিউজের হেডলাইনটা দেখেন, কমেন্টে দিতেছি, কিছু বুঝা যায় কিনা!] নিউজ ছাপাইলেও তো বিপদ!
তো, বাকশালি জমিদারি’র ভিতরেও আরো অনেক জমিদারি আছে এইরকম। প্রজা হিসাবে অনেক জমিদাররেই সালাম দিয়া বাঁইচা থাকতে হয় মানুশের এখন, বাংলাদেশে।
…
মে ২২, ২০২৩
বাংলাদেশে ছোটখাট ইনভেস্টমেন্টের কোন জায়গা নাই বইলাই জমি-জমা, ফ্ল্যাটের দাম বেশি
কয়দিন ধইরা এইরকমের একটা আলাপ দেখতেছি যে, ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট-টেট কিনা একটা লস প্রজেক্ট। তো, অবশ্যই এইটা একটা লস-প্রজেক্ট, কিন্তু আজকে না, আরো ২০-২৫ বছর আগে থিকাই। কিন্তু তারপরও মানুশ-জন ফ্ল্যাট, জমি-জমা কিনতেছে, আর এর দামও হু হু কইরা বাড়তেছে, এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি বাসা-ভাড়াও।
তবে এইটা আসলে খুবই ভুল-ধারণা যে, মানুশ-জন থাকার জন্য ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনতেছে। এর বড় একটা পারপাস হইতেছে এক ধরণের ইনভেস্টমেন্ট আসলে। ফ্ল্যাট কিইনা বা বাড়ি বানায়া ভাড়া দিবে। এখন ভাড়া দিয়া যে ইনভেস্টমেন্টের টাকা উইঠা আসবে না এইটা যিনি ইনভেস্টমেন্ট করতেছেন, উনিও জানেন। টাকা যেহেতু কামাই করছেন, কিছু মানি-সেন্স তো আছে তাদের, তা নাইলে তো টাকা কামাই করতে পারতেন না মেবি। 🙂 তারপরও ব্যাংকে টাকা না রাইখা, অন্য কোথাও কিছু না কইরা ফ্ল্যাট-বাড়ি তারা কিনেন কেন?
এক নাম্বার কথা যেইটা বললাম, ইনভেস্টমেন্টের কোন স্কোপ নাই। ১-২ কোটি টাকা দিয়া কি বিজনেস করবেন? চাঁদাবাজি তো আছেই, বড়লোক হিসাবে ‘এক্সপোজড’ হয়া যাওয়ার রিস্কও আছে, আর অইগুলা দেখা-শোনাও কে করবে, কারে বিশ্বাস করবেন? শেয়ার-মার্কেটে রাখলে তো দরবেশ বাবার পকেটেই ঢুকবে! এইটা কোন সেইফ ইনভেস্টমেন্ট তো না-ই, বরং সবচে রিস্কি জিনিস।
তো, সবচে বড় যেই সাজেশনটা আসছে যে, অই টাকা দিয়া ফ্ল্যাট-জমি না কিইনা ব্যাংকে রাখেন? কিন্তু ক্যাচ’টা এইখানেই। জমির দাম, ফ্ল্যাটের দাম তো বাড়তেছে! ব্যাংকের ইন্টারেস্টের চাইতেও বেশি বাড়তেছে। মাসে মাসে ভাড়া তো পাইতেছেনই, একটা এসেট হিসাবে ভ্যালুও বাড়তেছে। টাকার ভ্যালু যত কমবে এসেটের ভ্যালু তো তত বাড়তে থাকবে আসলে।
আর যদি ‘অবৈধ-টাকা’ হয় ব্যাংকে রাখাটা তো আরো রিস্কি, যে কোন সময় ফ্রিজ কইরা দিতে পারবে গর্ভমেন্ট, কিন্তু এসেট দখলে নেয়াটা তো এতো সহজ না।
এর বাইরেও যারা ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে না বরং থাকার জন্য ফ্ল্যাট কিনতেছেন, লং-টার্ম লোন নিয়া ভাড়ার টাকা দিয়াই তো এসেট বানাইতে পারতেছেন। বা ঢাকা শহরে একটা ‘ঠিকানা’ তো দরকার – এই সেন্স থিকা করতেছেন। মানে, ইকনোমিকসের হিসাব মনিটারি লাভ-লসের জিনিস তো না, সবসময়!
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, মানুশ-জন ফ্ল্যাট-বাড়ি বানায়া যতটা না লস করতেছে, তার চাইতে বেশি সেইফ-ইনভেস্টমেন্ট করতে চাইতেছে আসলে।
আর এর আফটার-এফেক্ট হইতেছে রেন্ট বাড়তেছে, বাসা-বাড়ি খালি পইড়া থাকলেও ঢাকা শহরে বাসা-ভাড়া কমবে না, যতদিন এসেটের ভ্যালু বাড়তেছে। একইসাথে বিজনেস করার কস্টও বাড়তেছে, যার একটা এফেক্ট অ্যাড হইতেছে এন্ড-কনজিউমারের উপরে। এইভাবে একটা ইভিল-সার্কেল ফর্মড হইছে বাংলাদেশে।
তো, এই জিনিসটারে মানুশ-জন ‘ভুল বুঝতেছে’ বইলা পার করতে চাওয়াটা একটা বোকচোদামি-ই না খালি, পিওর ইন্টেলেকচুয়াল হিপোক্রেসিই আসলে।