নোটস: জানুয়ারি, ২০২২ [পার্ট ২]

জানুয়ারি ১১, ২০২২

১.
১৪ শতকের আগে এই অঞ্চলে ‘মুসলমান’ বা ‘হিন্দু’ বইলা কোন আইডেন্টিটি ছিল না। (এরপরেও এতোটা ঘটনা ছিল না। এইটা ১৮ শতকের শেষের দিকের ঘটনাই।)

২.
এই কথা আমি আগেও ভাবছি, পুরান যত কাহিনি আছে রামায়ণ, মহাভারত, জাতক, কোন জায়গাতেই ধর্ম হিসাবে ‘হিন্দু’ – এই ঘটনা পাইবেন না, দুনিয়ার সবাই-ই হিন্দু, জাত-টাত জাস্ট আলাদা। যাদের জাত নাই, তারা ম্লেচ্ছ, বা এইরকম কিছু। হিন্দুই! মানে, ধর্ম বা রিলিজিয়ন হিসাবে কোনকিছু ফর্ম করে নাই।

একই ভাবে, ‘মুসলমানরা’ ‘ইন্ডিয়া’ দখল করে নাই। দিল্লী দখল করছিল, ‘ইন্ডিয়া’ বইলা আলাদা কোন দেশই তো ছিল না! আর তাদের আইডেন্টিটিও ছিল আরব, আফগান, তার্কিশ, এইরকম; ‘মুসলমান’ কখনোই না। মোগল’রাও ‘মুসলমান’ ছিল না, ছিল শিয়া ও সুন্নী। (এইখানে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইতেছে পারস্যের লগে এই অঞ্চলের সবসময়ই খাতির ছিল, যার ফলে কালচারাল এক্সচেইঞ্জ দেখবেন অনেক বেশি হইতে পারছে।)

তো, এই মিস-কনসেপশন বা ভুল-ধারণা খুবই বাজেভাবে আছে, আমাদের আলাপ-আলোচনা’তে। এই বেইজ থিকা সরতে পারাটা সবচে জরুরি।

৩.
এইটা এখন আমি খুব জোর দিয়া এখন বলতে পারতেছি রমিলা থাপারের দুইটা কথার কারণে। ১০ম শতকের দিকে মোহাম্মদ ঘুরী’র দিল্লী দখলের সময়ের কথা বলতে গিয়া উনি বলতেছিলেন, “Today we speak of them as a collective entity, labelling them ‘the Muslims’, and label the hosts also collectively ‘the Hindus’. But these labels are historically inaccurate… Neither of these two communities had a homogenous culture and religion… People more frequently identified by caste, occupation, language, region and religious sect, than by the religious labels we use today.” (p. 438, The Early India)

“Hindus did not use this name for themselves until about fourteenth century, and then only sparingly.” (p. 440, The Early India)

হাউএভার, এই জায়গাগুলা ডিটেইল করার দরকার তো আছেই। ইন ফিউচার, করার ইচ্ছা আছে আমার।

৪.
আরেকটা জিনিস হইতেছে, এই সাব-কন্টিনেন্ট যে দিল্লী-বেইজড গোলামির জিঞ্জিরে বান্ধা পড়লো, সেইটা হিস্ট্রিতে একটা “মুসলিম” অবদান হিসাবে আইডেন্টিফাই করার ঘটনা হিসাবেই দেখতে পারা দরকার। যেই কারণে এখনকার “ইন্ডিয়ান কালচার” দেখবেন ‘মুসলিম আইডেন্টিটির’ বাইরে যাইতে পারে না। গেলে, বেইজটারে আর ধইরা রাখতে পারে না।

৫.
রামমোহন রায়, কেশবচন্দ্র সেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’রা আসলে হিন্দু-ধর্মের ‘পুনর্জাগরণ’ ঘটান নাই, এক অর্থে, হিন্দু-ধর্মরে আসলে আবিষ্কার করছেন উনারা। কলম্বাসের মতোই। কিন্তু উনারা মারা যাওয়ার পরেও এই জিনিসটারে লোকেট করতে হেসিটেট করতেছি আমরা।

Continue reading

নোটস: জানুয়ারি, ২০২২ [পার্ট ১]

জানুয়ারি ১, ২০২২

একটা লিস্ট দেখলাম কয়দিন আগে, যেইখানে ‘হাইপ উঠার কারণে ফেমাস হইছিল, কিন্তু সিনেমা হিসাবে এতোটা ভালো কিছু না’ – এইরকম একটা লিস্ট বানানো হইছে। তো, কম-বেশি ঠিকই আছে জিনিসটা; পুরাপুরি একমত হওয়া তো কঠিনই। কিন্তু এইরকম একটা ক্যাটাগরি যে আছে, বা হইতে পারে – এই জিনিসটা পছন্দ হইছে।

অইখানে একটা সিনেমা ছিল, DUNKRIK; ক্রিস্টোফার নোলানের। অইটা দেখছিলাম আমি, এই কারণে কিছুটা রিলেট করতে পারছি। সিনেমা’টা যে খারাপ – তা না, কিন্তু হাউ-কাউয়ের কারণেই দেখছিলাম, যে আরে, ক্রিস্টোফার নোলানের সিনেমা! সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের কাহিনি! ফেসবুকের নিউজফিডে ১০টা পোস্ট, ম্যাগাজিনগুলাতে রিভিউ, ক্রিটিক’রা কথা কইতেছে, দেখা লাগবে তো! শুরু’র সিনটা ইন্টারেস্টিং ছিল। কিন্তু অই তো, এভারেজ মুভিই মোটামুটি। নোলানের সিনেমা নিয়া কথা কইতে গেলেও এইটা নিয়া খুববেশি কথাও হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু হিট ছিল তখন, আলাপের সাবজেক্ট ছিল একটা, ইনকামও খারাপ হওয়ার কথা না। তো, এইভাবে এভারেজ জিনিসই হিট হয় – তা না, কিন্তু এভারেজ জিনিসও হিট হইতে পারে।

আমাদের চারপাশে যেইসব জিনিস নিয়া কথা-বার্তা হইতেছে, সেইসব নিয়াই ইন্টারেস্টেড হই আমরা। অইগুলাতেই পার্টিসিপেট করি। এর বাইরে গেলে তো আসলে কথা কওয়াই পসিবল না। ধরেন, কয়দিন আগে DONT LOOK UP নিয়া যে মাতামাতি’টা হইলো, অইটা দেইখা মনে হইলো AVATAR যখন রিলিজ হইছিল, শতাব্দীর সেরা সিনেমাও মনেহয় বানায়া দেয়া হইছিল! 🙂 তো, এইরকম হয় আসলে। হওয়াটা দোষের কিছু না। কিন্তু দ্যান এগেইন, ইমোশনালি চার্জড-আপ হইতে পারাটা বা সেনসেশন ক্রিয়েট করতে পারাটাই গ্রেট আর্টের ঘটনা না আর কি সবসময়!
বরং আমি খেয়াল কইরা দেখছি, যে কোন নতুন আর্টের, সুন্দরের ‘হিট’ হইতে একটু টাইম লাগে, (সবসময় না হইলেও) বেশিরভাগ সময়। কারণ এইখানে যেই সুন্দরের ঘটনা’টা, সেইটা আমাদের এক্সপেরিয়েন্সের ভিতরে থাকে-না না, অনেকটা আবছা-ভাবে থাকে, সেইটারে কানেক্ট করতে টাইম লাগে একটু। চিনতে সময় লাগে। [ও, আরেকটা গ্রুপ অবশ্য আছে যে, ও, এই জিনিসটা হিট হয়া যাইতেছে! যাই, দুইটা গাইল দিয়া আসি! 😛 ] এই কারণে যখন কোনকিছু হিট হয়, সেইটা ‘খারাপ’ – তা না, কিন্তু ওভারহুইলমড হওয়ার আগে একটু টাইম নেয়াটা বেটার।

ট্রু আর্ট (লাইক ট্রু লাভ) অলওয়েজ টেইকস টাইম! 🙂

Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২১ [পার্ট ৩]

ডিসেম্বর ২১, ২০২১

ভালো-মানুশের মিথ

দুনিয়ার সব সমাজেই এই জিনিসটা আছে, কিন্তু আমাদের সমাজে এইটার একস্ট্রা আরো কিছু ভ্যালু আছে, বা বেশ স্ট্রংলি আছে বইলা ফিল করি আমি যে, ভালো-মানুশ হওয়াটা হইতেছে একটা ‘যুক্তি’ বা ‘লজিক’। এর অনেকগুলা সাইড-এফেক্টও আছে, এটলিস্ট তিনটা জিনিসের কথা মনে হইছে এখন।

এক হইতেছে, ‘ভালো-মানুশ’ (একটা স্ট্যান্ডার্ড সেন্সেই) না হয়া আপনি ‘ভালো’ কিছু করতে পারবেন না। মানে, কেউ ভালো-গান গাইতেছে, কিন্তু লোকটা তো ভালো না! তার মানে, তার গান-গাওয়া হইতেছে না আসলে।

এইটা খালি গান না, এনিথিং অ্যান্ড এভরিভ্রিং দিয়া রিপ্লেইস কইরা নিতে পারেন। এর উল্টাও হয় যে, কেউ একজন ভালো-জোকস বলতেছে, তাইলে লোকটা মনেহয় ভালোই। 🙂 একজন মানুশ ‘ভালো’ – এইটার কল্পনা ছাড়া তার কোন কাজরে ‘ভালো’ আমরা মনে করতে পারি না। মানে, কেউ ‘মানুশ হিসাবে ভালো-না’ কিন্তু ‘ভালো-কথা’ বলতেছেন বা ‘ভালো-কাজ’ করতেছেন – এই সিচুয়েশনটা আমাদের পক্ষে চিন্তা করাটা ইজি বা নরমাল কোন ঘটনা না।

আর অন্যদিক দিয়া একজন মানুশ যেহেতু মানুশ হিসাবে ভালো, উনার ভুল-কথা বা ভুল-কাজ এতোটা বাজে-জিনিস না, কারণ উনি তো ভালো-মানুশ!

এখন জিনিসগুলা যে আলাদা – এই দাবি আমার নাই। কিন্তু রিলিভেন্সগুলা স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড না। এইভাবে মিলায়া দেখার অভ্যাসটারে আমাদের বরং খেয়াল করাটা দরকার। মোরালিটি এবং ইন্টেলেকচুয়ালিটি অপজিট কোন জিনিস না, কিন্তু কেমনে কাজ করতেছে – সেইটা নিয়া ভাবতে রাজি না-হওয়াটা জায়গাটারে একটা ‘মিথ’ বানায়া ফেলছে এখন, আমাদের সমাজে।

সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, যিনি অ্যাক্ট করতেছেন, তার জায়গা থিকাও এই ঘটনা’টা ঘটতেছে যে, “আমি তো সৎ আছি, আমি ভুল চিন্তা কেমনে করবো!” মানে, ভালো-মানুশ হওয়াটা একটা এডভান্স বা সুপিরিয়র ঘটনা হয়া আছে আমাদের সমাজে, যেইটা হইতেছে আরো বাজে জিনিস। মানে, আপনি ভালো-মানুশ, অন্য কারো ক্ষতি করতেছেন না, এই-সেই, এইটা তো বেসিক! এডভান্স লেভেলের কোন ঘটনা না। আর এইটা খালি সমাজে আপনার রেসপন্সিবিলিটি না, একটা পারসোনাল ঘটনাও যে, মানুশ-হওয়া মানেই হইতেছে ভালো-মানুশ হওয়া, আদারওয়াইজ অইটা তো মানুশ-হওয়া হইতে পারে না! কিন্তু ভালো-মানুশ জিনিসটা একটা সুপিরিয়র বিইং হয়া আছে, আমাদের সমাজে।
যার ফলে দেখবেন, একজন মানুশরে ভালো-না প্রমাণ করাটাই এনাফ, তার কাজ-কামের চিন্তা-ভাবনার এনকাউন্টার করা লাগে না তখন। এমনকি কোন ‘সাধারণ’ (খুবই বাজে টার্ম এইটা) মানুশ যদি ‘ভালো’ হন, তারেও দেখবেন ‘মহান’ বানানির একটা তোড়জোর শুরু হয়। মানে, ভালো-হওয়াটা যেন একসেপশনাল ঘটনা!

থার্ড জিনিসটা আরো বাজে, যখন আপনি ‘ভালো’, আপনি তো আসলে কম্পারেটিভলি ভালো; সমাজে কিছু খারাপ-মানুশ থাকা লাগে তখন। মানে, যখন অনেক অনেক খারাপ-মানুশ আছে সমাজে, তখন ভালো-হওয়াটা আরো বেশি মিনিংফুল হইতে পারে তো! আর ভালো-মানুশ যেহেতু রেয়ার (বাংলায় ব্রাহ্মণদের মতো), তারা কেন টেম্পু’তে, রিকশায় চড়বেন, উনাদের হেলিকপ্টার না থাকুক, দামি-গাড়ি তো থাকা দরকার! (অবশ্য গরিব না হইলে ভালো-মানুশ হওয়াও তো টাফ! 🙁 )

আমি বলতে চাইতেছি, এইখানে ক্রুশিয়াল একটা আলাপ আছে। ভালো-মানুশ জিনিস’টা জাস্ট ইনোসেন্ট কোন ঘটনা না, একটা ব্রাহ্মণবাদের ব্রাঞ্চ বরং অনেকটা। যেইটা সোসাইটির বেসিক একটা জিনিস হওয়ার কথা।…

Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২১ [পার্ট ২]

ডিসেম্বর ১১, ২০২১

১.
গত ডাকসু ইলেকশনে প্রো-আম্রিকান একটা ফোর্স ভিজিবল হইছিল – স্বতন্ত্র জোট নামে। ইন্টারেস্টিং ঘটনা হইতেছে বামাতি (পরথম আলো, ডেইলি স্টার গ্রুপ) এবং এনার্কিস্টরাও তাতে সার্পোট দিছিল। (মেমোরি থিকা বলতেছি, ফ্যাক্ট হিসাবে ভুল না মনেহয়।) মানে, এই জিনিসটা খেয়াল করার মতো একটা ঘটনা। যেইখানে টের পাওয়া যায় পুঁজিবাদী বা কমিউনিস্ট হওয়া একটা আইডিওলজিক্যাল মাস্ক ছাড়া আর কিছু না, কালচারালি একই ঘটনা।

২.
একটা পপুলার ‘গুজব’ তো অনেকদিন থিকাই চালু আছে যে, শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার লিডারশিপের মধ্যে বেসিক ডিফরেন্স হইতেছে শেখ হাসিনা সরকারি-আমলা, পুলিশ, মিলিটারি, মিডিয়া, সুশীল সমাজের লগে আতাঁত কইরা চলতে রাজি হইছেন, খালেদা জিয়া রাজি হন নাই। কিন্তু বাংলাদেশে এই ইভিল-ফোর্সটাই ক্ষমতা’তে আছে (এই জায়গাটারে ঠিকমতো ডিফাইন করা হয় নাই); ১৯৭১ সালের পর থিকাই এর ফর্মেশন শুরু হইছে, ১৯৯১’র পরে পলিটিক্যাল পাওয়ার হিসাবে অর্গানাইনজড হইছে, এবং ১/১১’র পর থিকা জায়গা থিকা আরো কনফার্মড একটা পজিশনে আসতে পারছে। বারবার আন্দোলন-সংগ্রামের পরে, মানুশের রক্তের বিনিময়ে, ডেমোক্রেসির নামে একটা গোষ্ঠীর হাতেই পিপলের ক্ষমতারে বর্গা দেয়া হইছে।

এরা সময়-সুযোগ মতো প্রো-ইন্ডিয়ান যেমন হইতে পারে, প্রো-আম্রিকানও হইতে পারবে, এমনকি প্রো-ইসলামিস্টও। যেইটা পারবে না সেইটা হইতেছে পিপলের লগে মিলতে পারবে না, অই কাতারে ‘নামার’ আগে দেশ ছাইড়া পালাবে, ইভেন সুইসাইড করবে।
বাংলাদেশের সমস্যা এই ক্লাস, কালচার এবং আইডিওলজির লোকজন, সবসময়।

৩.
রেব’রে মহান বানানোর কাজে মিডিয়াও প্রপাগান্ডা-মেশিন হিসাবে কাজ করছে। অই নিউজ-ক্লিপগুলা সামনে আনা দরকার, প্রাপাগান্ডাগুলা। আম্রিকার গর্ভমেন্ট এরে খারাপ বলছে – এইটা ভালো-জিনিস অবশ্যই; কিন্তু আম্রিকা খারাপ বলার আগেও এইটা খারাপ-ই ছিলো।

 

ডিসেম্বর ১২, ২০২১

[যেই লোক একটা কাজ ভুল জাইনাও সেই কাজটা বারবার কইরা যাইতেছে, সেই লোকটা কাজটারে ভুল বইলা ভাবতেছে না আসলে, সে শয়তান না হইলেও ট্রাপড বা অভিশপ্ত-ই, এক রকমের।]

যেই লোক একটা কাজ ভুল বইলা বুঝতে পারার পরে সেইটা করা বাদ দিতে পারছে, সেই লোক কোন সন্দেহ ছাড়াই একজন ভালো-মানুশ।
যেই লোক, একটা ভুল-কাজ করার আগেই বুঝতে পারছে, আর সেই কাজটা করা থিকা নিজেরে থামাইতে পারছে, সেই লোক আরো ভালো একজন মানুশ।

তবে অই লোকটাই হইতেছে সবচে ভালো-মানুশ, যে তার ডেইলি লাইফের কাজকামের ভিতর দিয়া ভুল-কাজ বা ভুল-চিন্তাগুলারে সবসময় এড়ায়া চলার রাস্তা বানাইতে পারতেছে নিজের জন্য।

#########

কবিতার বা আর্টের ব্যাপারে এই জিনিসটা আমি কম-বেশি ফলো করি। যেই কবিতা আমার পছন্দ না – তার ব্যাপারে নিন্দা-মন্দ করি না নরমালি, যদি না সেইটা এস্থেটিক্যালি বা পলিটিক্যালি পাওয়ারফুল হয়া উঠতে থাকে। মানে, কোনকিছু’র নিন্দা-মন্দ করতে পারাটারে আমি ক্রিটিকের কাজ বইলা মনে করি না। বরং কোন ‘খারাপ-জিনিস’ বা ‘বাজে আর্ট’ যদি আর্ট হিসাবে সমাজে এস্টাবলিস্ট হইতে থাকে, পাওয়ারফুল হয়া উঠতে থাকে, সেইখানে কথা-বলার দরকার আছে।

একইভাবে, যেই জিনিসরে কবিতা বা আর্ট মনে করি, তারে হাইলাইট করাটাই না, বরং কোন জায়গা থিকা ‘ভালো-আর্ট’ মনে করি সেইটা বলতে পারাটা বেটার। জায়গাগুলারে মার্ক করাটা তারিফ করা বা বদনাম করার চাইতে জরুরি জিনিস।

মানে, কোনকিছু এস্টাবলিশড হয়া আছে বইলাই সেইটা ‘বাজে-জিনিস’ আর কোন আর্ট ‘প্রতিষ্ঠা’ পাইতেছে না বইলাই তারে ‘তুইলা ধরতে হবে’ – এইটা খুবই সিউডো (pseudo) একটা জিনিসই না খালি, বরং এর লগে তেমন কোন রিলেশন আসলে থাকার কথা না কারো, ক্রিটিক হিসাবে।

পলিটিক্যাল, এবং ইন্টেলেকচুয়াল জায়গাগুলাতেও ব্যাপারগুলা মনেহয় এইরকমই।

Continue reading

নোটস: ডিসেম্বর, ২০২১ [পার্ট ১]

ডিসেম্বর ১, ২০২১

মারামারি করার অভ্যাস তো ছিল আমার, যদিও বেশিরভাগ সময় মাইর-ই খাইতে হইছে, তারপরও মারতে যে পারি নাই পরতিপক্ষরে, তা না; কিছু তো মারছিই। একবার বেশ সিরিয়াস হয়া গেছিল। (ছোটবেলার কথা-ই, ১২/১৩ বছর বয়সে যা হয়।)

হকি খেলতে গিয়া শালার বল টার্গেট কইরা হকিস্টিক ঘুরাইছি, আর আরেক পোলার নাকে গিয়া লাগছে সেই বাড়ি। নাক ফাইটা রক্ত বাইর হইতে লাগলো। যতো না ব্যথা পাইছে, তার চাইতে রক্ত দেইখা অর কান্দা গেলো বাইড়া। অর মা’রে ডাইকা নিয়া আসলো। অর মা-ও চিল্লাচিল্লি শুরু করলো! আসলে অই পোলা এর আগেও মাইর খাইছে আমার হাতে, এখন চান্স পাইয়া পাড়ার লোক জড়ো করতেছিল। অর মা’রও জিদ ছিলো। আমার আম্মারে গাইল্লাইতে গাইল্লাইতে বাসার সামনে চইলা আসলো। পোলারে মানুশ করতে পারে নাই! এই-সেই। এক কেলেংকারির ঘটনা আর কি।

আমি বুঝলাম পালাইতে হবে। দৌড় মাইরা একটা চিপায় চইলা গেলাম। এক চোট ঝগড়া-ঝাটি হইলো। আমি ভাবছিলাম, পাবলিকলি পিটানি খাইতে হবে আমার। কিন্তু নাটক হইলো না কোন। আম্মা অই পোলার মা’রে কইলেন, চিল্লাচিল্লি বন্ধ করতে। অন্যের কথায় নিজের পোলারে মারবেন কেন! উনার যা বিচার করার সেইটা উনি করবেন। সিন-ক্রিয়েট যেন না করা হয়, বাসার সামনে। দপ কইরা আগুন’টা নিইভা গেল। পোলার বিচার করে না, শাসন করে না, কি রকম মা! – এইরকম গুজুর-গুজুর ফুসুরফুসুর হইলো কিছু।

কিন্তু আমি বুঝলাম কপালে গর্দিশ আছে আজকে। খিদার চোটে বাসার বাইরে থাকার তো কোন উপায় নাই, বিকালের দিকে ফিরলাম বাসায়। কিন্তু কি আজব! আম্মা কোন মাইর-টাইর দিলো না! গোসল-টোসল কইরা খাওয়া-দাওয়া করলাম। দ্যান, উনি খুব শান্তভাবে থ্রেট’টা দিলেন, আর যদি কোনদিন অই পোলাপাইনের লগে খেলতে যাই তাইলে কোনদিন আর এই বাসায় ঢুকতে পারবো না। আর বুঝাইলেন, মানুশের কথায় উনি মাইন্ড করেন নাই, কিন্তু আমার কারণে উনারে যে এতোগুলা কথা শোনা লাগলো, সেইটা যেন আমি মনে রাখি। আর আমিও বুঝলাম আসলে, যারা সবসময় এইরকম গায়ে পইড়া ঝামেলা করতে চায়, অদের সাথে চলা-ফেরা করার তো কোন দরকার নাই।…

২.
তো এই ঘটনার কথা মনে হইলো, MR. ROBOT’এর একটা সিন দেইখা। এক কাস্টমার আইসা দোকানদার বাপের কাছে কমপ্লেইন করে যে তার পোলা ম্যানিব্যাগ থিকা টাকা চুরি করছে; বাপ তো অবাক হয়, পোলা টাকা চুরি করছে! তখন কাস্টমার’টা এক্সপ্লেইন করতে থাকে, চেইতা যাইতে থাকে। বাপ’টা তখন কয়, না, আমার পোলার বিচার আমি করমু না, আপনে বাইর হন! কাস্টমার তো অবাক হয়া যায়, এইটা কেমনে সম্ভব! বাপ হয়া পোলারে চুরি করতে দিবে! বিচার করবে না কোন!

কাস্টমার’টা চইলা যাওয়ার পরে বাপ’টা পোলারে ডাকে, কয়, টাকা’টা দে! পোলা পয়লা চুরি’র কথা না কইলেও, পরে টাকাটা দেয় বাপরে। বাপে কয়, এই টাকা দিয়া কি করবো, চল, সিনেমা দেইখা আসি! পোলা কয়, পাল্প ফিকশন দেখবে! 🙂

[এই সিনটা একটা ইমাজিনেশনই পোলার, চাইল্ড-হুড মেমোরি’র।]

৩.
তো, এইগুলা আসলে ফান বা সিরিয়াস ঘটনা না, বা অ-বিচারও না। বরং আমরা সবাই মনেহয় বুঝি যে, পাবলিকরে খুশি করাটা কোন বিচার না; মোরালিটি এইরকম স্ট্রেইট-ফরোয়ার্ড জিনিস না। ইট হ্যাজ ইটস অউন কার্ভস! কিন্তু মোরালিটির কার্ভগুলা একটা জাস্টিসের দিকেই ঝুঁইকা থাকে, সবসময়। আর এইগুলা পারসন টু পারসন আলাদা আবেগের ঘটনা না। একটা ইউনিভার্সাল জায়গা থিকাও এই জিনিসগুলা ফিল করতে পারি আমরা।

Continue reading