নোটস: অগাস্ট, ২০২১ [পার্ট ১]

অগাস্ট ০১, ২০২১

কোন রিস্ক ছাড়া কোন সত্যি কথা বলা কোনদিনই কি সম্ভব?

এমন না যে, রিস্কি কথা-বার্তা মানেই ‘সত্যি কথা’; বরং যখন আপনি কোন না কোন সত্যি কথা বলবেন, দেখবেন সেইটা অনেকের জন্য ভালো হইলেও, এইটা কোথাও না কোথাও কারো না কারো ক্ষতি করতেছে; তখন সেইটা রিস্কি হয়া উঠে। কে যে আপনার দুশমন হয়া উঠতেছে, আপনি নিজেও জানবেন না।

সত্যের যেহেতু নিজের একটা ক্ষমতা আছে, সত্য ক্ষমতার জন্য সবসময়ই রিস্কি। অবৈধ ক্ষমতার জন্য তো আরো বেশি।

কিন্তু যখন অনেক মানুশ সত্যি কথাগুলা একসাথে বলার সাহসটা করতে পারবে, বলতে শুরু করবে, এই রিস্কটা কমতে থাকবে; আর সত্য-কথা বলার জিনিসটা একটা ‘সামাজিক অভ্যাস’ হিসাবে তৈরি হইতে পারবে। এই বলতে-পারা এবং বলতে-না-পারার স্ট্রাগলটা যে কোন সমাজে কম-বেশি সবসময়ই আছে। আর আমাদেরকেও সবসময় চেষ্টা করতে হবে, সত্য যেন সহজে অ্যাপিয়ারড হইতে, সেই সমাজ তৈরি করার জন্যে। আর যত মিনিমাম লেভেলেই হোক, সত্য বলার ভিতর দিয়াই এই কাজটা করতে হবে, আমাদেরকে।

#########

জ্ঞানের, বা আর্টের বা যে কোন ডিসিপ্লিনের চিন্তার কোন অথরিটি কি নাই? আমার কথা হইতেছে, আছে। যে কোন বিষয়েই আমার চাইতে কম-জানা লোক যেমন আছেন, বেশি-জানা লোকও আছেন। জ্ঞানের বা চিন্তার বা আর্টের ভিতরে যত ডুববেন, তত টের পাইবেন এই জিনিসগুলা।

কিন্তু মুশকিল হইলো, সেইটা সামাজিক অথরিটির জায়গাগুলার সাথে গুলায়া ফেললে টের পাওয়া যাবে না এতোটা। এই অথরিটির মধ্যে অনেক বই-পড়া লোক আছেন, ভার্সিটির টিচার আছেন (রমিলা থাপার যেমন, আর্লি এইজ ইন্ডিয়ান হিস্ট্রির একজন অথরিটি); কিন্তু কেউ বই পড়ছেন বইলাই, ভার্সিটির টিচার বইলাই অথরিটি না (টি.এস. এলিয়ট যেমন মর্ডান পোয়েট্রির একজন অথরিটি, এইরকম আরো আছেন, বা থাকার কথা)।

[যেমন হুমায়ূন আজাদের চাইতে আহমদ ছফা বাংলা-সাহিত্যের বড় অথরিটি ছিলেন (আমার ধারণা), একটা সময়। এখন এই অথরিটি ভালো না খারাপ, বা কেমনে তৈরি হয় এবং বাতিল হয়, এইগুলা পরের আলাপ আসলে।…]

এই জায়গাটা রিকগনাইজ করতে পারাটা সবসময় দরকারি। তা নাইলে আমরা নতুন চিন্তা না পাইয়া, সবসময় চিন্তার নতুন নতুন অথরিটি পাইতে থাকবো। যেইটা সবসময়ই বাজে ব্যাপার একটা।
Continue reading

কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০২২

ভাষা ও কনটেক্সট

বিস্টির ফোঁটাও
জমিনে
একটু তেরছা হয়া পড়ে

 

এক্সপেরিয়েন্স

তামার তার হওয়ার পরে
লোকটা বলতেছে তার নিচের দিকে তাকায়া

হে বাল, তুমি পাইকো না আর!


কনটেক্সট অফ ফ্রিডম

আমরা কথা বলতেছি,
কিন্তু কেউ কারো কথা শুনতেছি না

কারণ কথাগুলারে ট্রান্সমিট করার লাইগা
এইখানে কোন বাতাস নাই


রইদের দিন

আমি হইতেছি রইদের দিনে
রাস্তায় শুইয়া থাকা কুত্তাটা

তুমি আমার মাথার নিচের পাত্থরটা


বাবল-লাইফ

বড় একটা বাবলের ভিতর বইসা
ছোট ছোট বাবল ফাটাই

মনেহয়, “এই জীবন তো মিছে নয়”…

Continue reading

কবিতা: অগাস্ট, ২০২২

দ্য রেইন

আবারো লাগলো ভালো
সকালের এই মেগ, এই আলো

রাস্তায় রাস্তায় মানুশেরা সবাই
আলোর বেগের চাইতে দুরত
চলে যাইতে চাইতেছে, আর
আটকা পইড়া থাকতেছে ট্রাফিক জ্যামে,
একটা অসহায় লুক দিতেছে কম-বেশি সবাই

থানার সামনের দুইটা গাছ, চুপচাপ দেখতেছে
“আমরাও কি তাইলে হাঁটতে শুরু করবো নাকি?”
এইরকম হয়তো ভাবতেছে, একটু বাতাসে…

মেগগুলা উড়ে যাইতেছে আকাশে,
ময়লা নদীর পানির মতো তারা ছড়ায়া পড়তেছে

বিস্টিরে ডাকতেছে অলিভিয়া, রুনা লায়লার সুরে, ইউটিউবে
“আয় রে মেঘ আয় রে…”

 

আবুল হাসান রিভিজিটেড

সব ঝিনুকেরই খোল শক্ত হয়া থাকে
সব ঝিনুকের ভিতরেই বালির বেদনা থাকে না

মুখ বুজে সয়ে যাওয়া মানে মুক্তা ফলানো না

 

অগাস্ট ভাইবস

যদি রাত পোহালেই শোনা যেত,
তেলের দাম বাড়ে নাই

 

তালগাছের কবিতা

রইদের ভিতরে সামনের বিল্ডিংটা কাঁপতেছে,
যেন ঝিমাইতেছে দুপুরের বাতাসে

দূরে, একটা তালগাছ, এক পায়ে দাঁড়িয়ে…

Continue reading

কবিতা: জুলাই, ২০২২

মাইগ্রেন

অনেকদিন পরে মাইগ্রেন আইসা বলে,
শোনো, আমি আছি তো!

আর সমস্ত দুনিয়া আন্ধার হয়া আসে, তারপরে…

 

গরু’র কান্না

তোমরা সবাই গরু হয়া যাও!
ছল ছল চোখে তাকায়া থাকো,
আর অল্প কয়টা টাকায় বেচা হয়া যাও!

তোমরা কেউ একটা মহেশ হইয়া থাকো!
শরৎচন্দ্র হইয়া আমরা গল্প লেখবো গরিব গফুরের,
যে কিনা তার গরুরেই শুধু ভালোবাসতো!

তোমাদের এই গরু-ভাব তুমরা ছাইড়া দিও না!
কাঁদো বাঙালি কাঁদো!
আর কিছুদিন, আরো কিছুদিন গরু হইয়াই থাকো!

 

ক্রিঞ্জ

দাঁতের চিপায় জইমা থাকা
গরুর মাংসের মতো,
থাকো!

 


আম ও আপেল

আম’টা ভাবলো,
আমি তো আপেল হবো!

আমি কখনোই পাকতে গিয়া নষ্ট হয়া যাবো না!
Continue reading

কবিতা: জুন, ২০২২

ঘুম

এমন ঘুম আসলো আমার,
এমন ঘুম
বুঝছো!
মনে হইলো যেন
মারা গেছি আমি
আর তারপরে
তোমার সাথে
দেখা হইলো
আমার

তুমি জিগাইলা
আমারে,
“তুমিও মারা গেছো তাইলে?
হায় হায়, এই এতোদিন পর…”

তোমার মুখে
গালের শিরায়
রক্তের নদী বয়ে যায়

আর সেই নদীর পাড়ে
বইসা থাকতে থাকতে
কি যে ঘুম
আসলো আমার
বুঝছো!
কি যে একটা ঘুম
মরণের মতন

শান্ত, নিষ্পাপ
যেন একটা ঢেউ
আসতেছে
অনেক দূর থিকা
আর কোন কিনারা
সে খুঁজে পাইতেছে না…

 

মেটামরফসিস

একদিন সকালবেলা ঘুম থিকা উঠার পরে একটা তেলাপোকা বইলা উঠলো, শোনো, আমি কিন্তু কোনদিনই কাফকা হবো না!

 

সক্রেতিস

যেই লোক জানেন যে উনি কি জানেন-না
তিনি

যেই লোক জানেন যে উনি কি জানেন

তার চাইতে
একটু বেশি জানেন

 

সৈয়দপুরে সন্ধ্যা

দূরে কোথাও সন্ধ্যা হইতেছে
ভেড়ার লোমের মতন খসে পড়তেছে বাদামি আলোর রঙ

অন্ধকার, যেন অন্য আরেকটাই কালার
নেমে আসতেছে ধীরে ধীরে

দুনিয়ার দৃশ্যগুলার উপর

Continue reading