মুসলমান বাঙালি এবং হিন্দু বাঙালি

 

ভয়ংকর একটা বই পড়তাছি; বইটার নাম: মুসলমান বাঙালির লোকাচার (ছাপা হইছে ইন্ডিয়া রাষ্ট্রের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহর থিকা, ঢাকাতে বিক্রি হয়), লেখক হিন্দু বাঙালি একরাম আলি। মানে, নাম মুসলমান হইলেও ধর্মে তিনি হিন্দু, যেমন তেঘরিয়া’র মানুষেরা ধর্মে মুসলমান হইলেও লোকাচার, মানে মূল আইডেন্টিটি যেমন হিন্দু’র। তিনটা বাক্য বলি বইটা থিকা, তাইলে হয়তো বোঝা যাইতে পারে:

১. “শব-ই-বরাতের সন্ধ্যায় কেউ তেঘরিয়া এলে ভাবতে পারেন, তা হলে কি আজ দেওয়ালি?” (পৃষ্টা – ৩৩)।

২. “বরং শব-ই-বরাতের এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিল রয়েছে রান্নাপুজোর।“ (পৃষ্টা – ৩৫)

৩. “চন্দনের ফোঁটা ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী নেওয়ার কোনও কারণ নেই। তা হলে কেন?” (পৃষ্টা – ৩৬)

‘কারণ’টা হইলো এরা ত আসলে ‘ধর্মান্তরিত মুসলমান’, মানে আগেরকার হিন্দু। অরা মুসলমান হইলেও হিন্দু-ভাব ছাড়তে পারে নাই। সুতরাং অল্টারনেটিভ হিন্দু হিসাবে এই মুসলমান বাঙালি’রে দেখার বা লোকচারের ভিত্তি’তে মুসলমান বাঙালি যে হিন্দু বাঙালিরই একটা এক্সটেনশন – এই প্রস্তাবই বইটার মূল ভাবনা।

এইটা মোটেই কোন ভয়ংকর ব্যাপার না। ‘ভয়ংকর’ তখনই লাগছে যখন ফিল করছি যে, যিনি লিখছেন তিনি এইটা সর্ম্পকে মোটেই এওয়ার না। মানে, এই বিষয়ে উনার কোন পলিটিক্যাল এওয়ারনেসের কোন জায়গা দেখি নাই। উনি ধর্ম-এর বিবেচনা করতেছেন মোটামুটি একটা অ-ধার্মিক (সেক্যুলার) এর জায়গা থিকা; যেইটা আসলে না-হিন্দু, না-মুসলমান, বরং ক্রিশ্চিয়ানিটি’র জায়গা; যা প্রত্যক্ষভাবে ক্রিশ্চিয়ানিটি’র একটা হিন্দু রূপ, যদি ধর্মের জায়গা থিকা দেখতে চাই। (মানে আমি এইভাবে ভাবতে পারলাম আর কি!) Continue reading