পোশাকের কান্না

যতক্ষণ আমি ছিলাম তোমার গায়ে, তুমি হাসছিলে

আর ছুড়ে ফেলে দেয়ার পর দেখি, আমি আর আমি নাই

কি যে আর্তনাদ জেগে ওঠে, সকালবেলায়![pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

সমস্তকিছুই অহেতুক, অর্থহীন মনে হতে থাকে

তোমার শরীর থেকে ঝরে পড়ে, বারান্দার দড়িতে ঝুলে থাকি

 

দেখি  একটা চড়ুই ডাকছে

পাশে ওঠছে নতুন দালান, অস্থি-মজ্জার মতো পেঁচানো কাঠগুলি তার গায়ে,

সেই ফাঁকগুলি থেকে তিনতলায় উঁকি দিচ্ছে একটা বানর…

ছোট্ট একটা মেয়ে-শিশু ঘুমাচ্ছে, বিছানায়

আরো আরো কতকিছু বলবার বাকি রয়ে গেলো…

 

এইভাবে শুরু হচ্ছে দিন, তোমারও…

 

কিভাবে আমিও মূর্ত হয়ে উঠতে পারি

তোমার চিন্তা ও সম্মতি ব্যতীত?

 

আমি ভাবছি, এই বিচ্ছিন্নতা হয়তো ভালো,

কিন্তু এই দমবন্ধ করা ভাবনায়, আমি আটকে যাচ্ছি

কোন এক দিন হয়তো

এইরকম একটা সকালবেলাতেই আমার মৃত্যু!

 

হঠাৎ করেই ঝোল-এর হলুদ দাগ দেখে মনে হবে

এরে তো আমার আর কোন দরকার নাই…

 

প্রতিবারই যখন তুমি খুলে ফেলে ছুড়ে দাও

আমি ভাবি, এইবারই হয়তো শেষ

আমার দমবন্ধ করা চিন্তার ভিতর আমি আটকে থাকি

সারাটাদিন

 

রোদ এসে পড়ে, একটু পরে

নির্মাণকাজ শুরু হবে, শ্রমিকেরা উঁকি দিবে

আমার শরীরে আটকে যাবে তাদের চোখ

ঘিঞ্জি দালানগুলি ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ ওর গায়ে

একটা ভূমিকম্পের অপেক্ষায়

ঠেলে-ঠুলে, কোনরকম তাদেরও দিন পার হচ্ছে…

একটা কাকের পা কি শক্ত হয়ে চেপে বসছে আমার কাঁধে!

 

এই রোদ্রকরোজ্জ্বল দিনে, বারান্দার দড়িতে ঝুলে

এতসব কিছু দেখতে দেখতে

আমি ভেবে যাচ্ছি তোমার কথা:

প্রতিদিনের কান্নার মতো যা যা কিছু ঘটে যায়, তার নিরবতাগুলি

তোমার শরীরে ঘষে ঘষে আমি মুছে ফেলতে চাই

 

যেন কোনদিনই, কোনকিছুই ঘটে নাই!

 

 

মার্চ ৯, ২০১০