প্রেম ও কবিতার মফস্বল – আমাদের খঞ্জনপুর।

।। আমাদের খনজনপুর ।। মঈনুল আহসান সাবের ।। পেইজ ৮৮।। পয়লাবার ছাপা হয় ২০০৪-এ।।

স্যাড, রোমান্টিক একটা উপন্যাস। একটু একঘেঁয়েমি আছে, কাহিনি’টা পয়লা আগায় না, পরে আগাইতে গিয়া আবার শেষ হয়া যায়। কাব্যিকতা থিকা বাইর হইতে পারে না। যেইটা এর বড় স্ট্রেংথ মনে হইতে যাইতেছিলো, সেইটাই দেখা যায় এর সমস্যা। কাব্যিকতা জিনিসটা মেবি ভালোই, কিন্তু কোন উপন্যাসরে তার কাব্যিকতার ভিতরে আটায়া ফেলতে পারাটা ভালো জিনিস মনেহয় নাই।

না-বলা প্রেমরেও যে গ্লোরিফাই করা লাগছে – এইটাও ‘ম্লান’, ‘ম্রিয়মাণ’ হইছে পরের দিকে আইসা, এতো যে টাইম লাগছে, এইটাই ঘটনা বরং; মানে, না হইয়া তো আর কোন উপায় নাই, এই রবি-ভূত আর বেশি দূর টাইনা নিতে পারা’র কথা তো না। যেইখানে জীবন, চারপাশ ‘বাস্তব’ হয়া উঠতেছে, উনাদের (মানে, নায়ক, নায়িকার) ‘রোমান্টিক’-ই থাকতে হইতেছে, এইটা একটা প্যারা-ই। না পাইরা শেষে ‘বাস্তব’-এ নিজেদেরকে অ্যাকোমোডেড করতে চাইছেন। তো, ওই কাব্যিকতার কারণেই এতোটা ডিলে হইছে মেবি। এইটা খারাপ বা ভালো – তা না; কাহিনি হিসাবে কম বিলিভেল হইতে পারছে।

আরেকটা জিনিস চোখে পড়ছে, বাংলা-ভাষায় কবিতা যেহেতু ‘লিখিত’ একটা ঘটনা, সেইটারে মানুষের মুখে আনার চেষ্টাটা দুয়েকটা জায়গায় সিরিয়াস হইতে গিয়া ফানি হয়া গেছে। যেমন, খনজনপুরের নাম কেমনে খনজনপুর হইলো এইরকম একটা জায়গায় বলা হইতেছে যে, বাজার বসতো আর ওইখানে ভিক্ষা করার লাইগা খঞ্জরা আসতো; তখন বাজারি’রা কইতো যে, “খঞ্জরা আসছে, খঞ্জরা আসছে…”; তো, বাংলাদেশে কোন জায়গায় লোকজন ‘খঞ্জ’ কয়, এইটা আমার এক্সপেরিয়েন্সের মধ্যে নাই। আবার একটা জায়গায় একজন লোক মাঝ রাইতে মাইনেষে চিল্লায়া চিল্লায়া রাস্তায় জিগান, “ও, মানুষ তোমার বাড়ি কই…” এইরকম। মানে, মঞ্চনাটকে এইরকম হইতে পারে, কিন্তু কাহিনি হিসাবে একটু ফানিই লাগছে, “ভাই” না বইলা “মানুষ” বলাটা। এইটা এক রকমের ‘কাব্যিকতা’র ধারণা থিকাই আসছে মেবি।
Continue reading