কবিতা: জুন, ২০১৮

ইনসেইন

আমি আবার গিয়া বসছি তোমার কাছে। তুমি আবার চেইতা রইছো। আমি কিছু বুঝতেছি না। বুঝতেছি না যেহেতু আমারও চেত উঠতেছে। কিন্তু রাগারাগি’টা করতে পারতেছি না আমরা। যেহেতু বাইরে। যেহেতু আরো মানুষ-জনও আছে আমাদের সাথে। তুমি আড্ডা দিতেছো, তোমার ফ্রেন্ডদের লগে। পরে তোমার ফ্রেন্ডদেরকে বলবা, কি রকমের একটা বাজে লোক, জানোস তো না! কিন্তু সামনাসামনি কিছুই বলা যাইতেছে না। আমিও খোঁচা দেয়ার কোন চান্স খুঁইজা পাইতেছি না। এইদিকে বিকাল হয়া যাইতেছে সন্ধ্যা। রাত হইতেছে। আমাদের ঝগড়া’টা আমরা শুরু করতে চাইতেছি আবার। শুরু’র আগে, আমি গিয়া বসছি তোমার কাছে। তুমি ভাব নিয়া বইসা আছো। আর যেহেতু তুমি পাত্তা দিতেছো না, আমি কি ঠিক আমি কিনা সেইটাই আমি বুঝতে পারতেছি না। তোমার কনফার্মেশনের লাইগা বইসা রইছি। তুমি কখোন তাকাবা, আর আমি তোমার চোখের দিকে তাকায়া বুঝতে পারবো যে, এই আমি’টা আমি-ই কিনা। তুমি তাকাইতেছো না। আমি কনফিউজড। ঝগড়াটা কি আমরা শুরু করবো না? আবার?

 

ডোপামিন

অনেক অনেক ডোপামিন জমা হইলো;

অনেক অনেক ডোপামিন
বারুদে আগুন ধরাই, আসো

বৃষ্টির পানিতে ভিইজা যাওয়ার আগে
বৃষ্টির ধারণার ভিতরে পোতাইয়া যাওয়ার আগে

আমার ডোপামিন,
ডোপামিন তুমি
থাকো;

মগজের ভিতর কিলবিল
নড়তে থাকা কেঁচো, মাটিতে সার যেমন
ফার্টাইল করতে আছো

একটা বীজ আসে বাতাসে,
তুমি তারে গাছ বানায়া ফেলো
ধীরে ধীরে, শরীরে বাসা বানায় সে

ডোপামিন, টের পাই তখন
তুমি আছো

আমার ডোপামিন
ডোপামিন তুমি
ওভার-ডোজড

একদিন মাইরাই ফেলবা, তবু…

 

হেলাল হাফিজ

এই নাও একটা লাইক, তোমাকে দিলাম

ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স

খালি রাস্তায় গাড়িগুলি চলে যাইতেছে, তড়তড়াইয়া। মানুষগুলি হাঁটতেছে। সবাই যাইতেছে। কেউ তাড়াতাড়ি। কেউ ধীরে ধীরে। বৃষ্টির পরে বাতাস। সন্ধ্যাবেলা। কেউ বাসায় যাইতেছে। কেউ বাসা থিকা বাইর হইতেছে। অন্ধ একটা গলির শেষ মাথায় একটা বারের স্যাঁতস্যাঁতে দরজা। পানি জইমা আছে, সামনে। সবাই যাইতেছে, কোথাও না কোথাও। টেবিল, চেয়ার, টাইম। আর যারা যাইতে পারতেছে না এখনো; ভাবতেছে, কই যে যাই! যাইতে পারাটাই ঘটনা। আমি আটকায়া থাকি, তোমার এইরকম যাওয়াগুলির পাশে। একটা কালা কাউয়া, কালা ইলেকট্রিকের তারের উপর। একটু পরে, তারে দেখা যাবে না আর।

 

মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে

মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে আইসা বইসা রইছি। চায়ের দোকানে। দুপুর দুইটা বাজে। রইদ। মানুষজন কম। চায়ের দোকানদার চা বানাইতেছে। জিনিসপত্র গুছাইতেছে। আমি আইসক্রীম খাইলাম। তারপর দুধ চা, চিনি ছাড়া। কয়েকটা রিকশা দিয়া আসতেছে কয়েকজন মানুষ। রইদ বাড়তেছে আরো। রাস্তার গর্তে বৃষ্টির পানি শুকাইতেছে। আমি রিকশাগুলি দেখতেছি। রিকশায় মানুষগুলি। এইরকম কোন একটা রিকশায় আসতেছো তুমি। আমি ভাবতেছি। কি যে রইদ! এইরকম রইদ তো আছে, চরপাড়া’তেও মেবি। আমি রইদের সাইডে বইসা রইছি। রইদ দেখতেছি। বইসা থাকতে ভাল্লাগতেছে। আমি জানি, তুমি আসতেছো! এইরকম জানতে পারা’র ভিতর চুপচাপ একটা গাছের মতোন শান্ত হইয়া বইসা আছে দুপুর। মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে। চা’য়ের দোকানে আমি বইসা বইসা মানুষ দেখতেছি। তুমি আসতেছো! কি যে ভালো লাগতেছে আমার! তুমি যে আসছো!

 

তোমার কথা

একটা দুপুর আমি গাছের ছায়া;

ফুটপাতে, রিকশার গ্যারাজে
নাট-বল্টু’র মতোন ঘুরতে ঘুরতে
একটা টায়ারের ভিতর
ভাইবা যাইতেছি খালি –

তোমার কথা।

 

বাতাস

মইরা যাওয়ার ডরে আমি আর মরলাম না
থাইকা গেলাম তোমার ফতুয়া’র কোণা ধইরা

বৃষ্টির পরে, উইড়া যাওয়া ছোট্ট একটা বাতাস হইয়া…

 

আমি তোমার করলার ফুল

আমি তোমার করলার ফুল;
দুপুরবেলা, বৃষ্টির পরে
তিনতলার একটা ছাদের উপরে ফুটে আছি,
বনানীতে
অথবা ধরো বসুন্ধরা অথবা
গাইবান্ধায় অথবা সিলেট অথবা চিটাগাং অথবা
কোন এক জায়গায়
আমি আছি;

তোমার করলার ফুল হইয়া
আমি ফুটে আছি

তুমি দেখবা বইলা, দুপুরবেলা, বৃষ্টির পরে…

বলবা, “আমি একটা করলার গাছ লাগাবো,
এইরকম একটা করলার ফুল থাকবে
আমার বারান্দায়…”

আমি ফুল, হাসতে হাসতে দেখবো তো তখন,
তোমারেও

 

Leave a Reply