কবিতা: মার্চ, ২০২৪

কাকের কবিতা

আমরা ভালোবাসা, আমরা পাপ
আমরা বিকালবেলার আকাশে
খামাখাই ঘুরতে থাকা দুই-একটা কাক

রইদ মাখতেছি ডানায়
ডানা জোড়া নিয়া কই আর যাই!
ভাবতেছি,

ভাবতে ভাবতে সনধা
বইছে বাতাস মনদা

আমরা ছন্দ-মিলের বাইরে একটা কবিতা
আমরা সুর ভুইলা যাওয়া একটা গান
ঘুরতে থাকা কয়েকটা কাক

বাড়ি

আমি তো বাড়ি যামু!
তোমার বাড়ি কই? – আমি জিগাই তারে।
সে আবারো বলে, আমি তো বাড়ি যামু, ভাই!

তার বাড়ি কই? সে জানে না।
আমিও জানি না, তার বাড়ির কথা।
আমার তখন বাড়ির কথা মনেহয়।

আমিও বাড়ি যাইত চাই।
তোমার বাড়ি কই? – কেউ জিগায় আমারে।

একটা ছায়া ছায়া উঠান, রইদ, বাতাস
একটু দূরে কেউ কথা বলতেছে,
বলতেছে, জোরে কথা বলিস না,
ঘুম ভাইঙ্গা যাবে ওর…

বাড়িতে শুয়ে আছি আমি,
যেন এইটা কোন ড্রিম
Continue reading

কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নোও দাইসেলফ

আমরা কি জানি না?
আমরা তো জানি।
আমাদের জানা-বোঝা-ই দেখি
আমরা বানায়া রাখে আমাদেরকে

আমরা কুয়াশায় হাঁটি
আমরা টের পাই বাতাস
চেইঞজ হইতেছে ধিরে ধিরে
বাতাস আইসা থাইমা থাকতেছে
একটা মোমেনটে আমাদের দমে

আমরা জানি, আমাদের জানা’রে
পুরাপুরি জানতে পারতেছি না আমি
দমে দমে দম ফেলার-ই ফুসরত নাই
দমে দমে মনরে বলি, বলো,
“লা ইলাহা ইললাল হু মুহামমদুর রাসুলললাহ…”

দম ফুরায়া যায়, আমাদের জানা শেষ হয় না

এইখানে

এইখানে বিকাল, এইখানে সনধা
এইখানে ছাদ, এইখানে কার্নিশ,
এইখানে এইখানে আরে একটা কাক

এইখানে ভালোবাসা, এইখানে চুপ কইরা থাকা
এইখানে ধিরে ধিরে চলে যাইতেছে সময়
এইখানে ব্রিজের গোড়ায়,
পানি ঘুরতেছে ড্রিমের ভিতর; কার?

এইখানে, এইখানে তুমি বসো
এইখানে বিকালের রইদ, এইখানে সনধার বাতাস

Continue reading

নোটস: মে, ২০২৪

০১.০৫.২০২৪
ছুটির দিন, বাজারে গেছি, সকালবেলায়। একজন ইয়াং বাজারি, হইতে পারে তার দুইজনের নতুন সংসার – জামাই-বউ, ছোট একটা বাচ্চাও থাকতে পারে, এইরকম। হাফ-কেজি হাফ-কেজি কইরা তরকারি কিনতেছে।

একটা ছোট্ট, সুন্দর, কিউট মিস্টি কুমড়া (ছবি তুলতে পারলে ভালো হইতো, কি যে কিউট, সেইটা দেখানো যাইতো…) দেখায়া দোকানদার’রে জিগাইলো, এইটার দাম কত? দোকানদার মিডল-এইজড, আমার বয়েসিই হবে; কইলো, ৮০ টাকা।

রাস্তার পাশে দোকান, তরকারির ডালাগুলার সামনে আমরা দুইজন ছাড়াও আরেকজন বয়স্ক মানুশ ছিলেন, অনেক জিনিস কিইনা দাম বুঝায়া দিতেছিলেন। দাম শুইনা উনি হাইসা দিলেন। ইয়াং বাজারি জাস্ট স্পিচলেস হয়া গেলো; অইটা সামলায়া, চেইতা গিয়া কইলো – বেচার কি দরকার, এই মিস্টি কুমড়া যাদুঘরে সাজায়া রাখেন!

মানে, আমরা চাইরজনই (ইয়াং-বাজারি, বয়স্ক লোকটা, আমি আর দোকানদার) চুপ হয়া গেলাম এই কথার পরে, কারন আমরা তো একভাবে ফিল করতেছিলাম যে, দারিদ্রের যাদুঘরের সামনে আমরা দাঁড়ায়া আছি! আর ছোট্ট, সুন্দর, কিউট মিস্টি কুমড়াটা আমাদেরকে দেখে হাসতেছে।

/মিস্টি কুমড়া

#বাজারেরআলাপ

০৫.০৫.২০২৪

গাড়িতে রেডিও শুনতেছি। মিউজিশিয়ান অর্নব এনডোর্স করতেছে রেডিও চ্যানেলটারে, ঢাকার নাম্বার ওয়ান রেডিও চ্যানেল।

পয়লা ইনডিয়ান-বাংলার একটা পুরান গান বাজাইলো, তারপরে শুরু হইলো নন-স্টপ হিন্দি গান! নো ডাউট, ঢাকার এক নাম্বার রেডিও চ্যানেল এইরকমই তো হওয়ার কথা। 🙂

এইগুলা ঠিক পলিটিকাল না-বোঝাও না, কালচারাল বলদ গার্বেজে সব জায়গা অকুপাইড

হাইওয়েতে গেলে গাড়ির রেডিও’তে গান শুনি; কিনতু আমি মনে করতে পারতেছি না গত কয়েক বছরে কোন রেডিওতে বাংলাদেশি সিনেমার গান শুনছি কিনা… মানে, বাংলাদেশের রেডিও স্টেশনগুলাতে বাংলাদেশি সিনেমার গান বাজানো যাবে না – এইরকম কোন নিয়ম তো নাই, তারপরও একভাবে ‘নিষিদ্ধ’ হয়া আছে জিনিসটা… কেন? 🙂

মানে, রেডিও’তে বাংলাদেশি সিনেমার গান বাজাইলে প্রেস্টিজ থাকবে, বলেন! পুরা পাংচার হয়া যাবে না! ‘লোকজন’ হাসাহাসি করবে না যে, কি ক্ষ্যাত! বাংলাদেশি-সিনেমার গান বাজায়!

জিনিসটা জাস্ট খেয়াল কইরা দেখেন, বাংলাদেশের রেডিও স্টেশনগুলাতে বাংলাদেশি-সিনেমার গান-ই ‘নিষিদ্ধ’, ট্যাবু হয়া আছে একভাবে… ‘সবাই’ (মানে, কালচারাল-বলদগুলা) ‘সম্মিলিভাবে’ (কোন গোপন চুক্তি না, বরং এক ধরনের মিচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ভিতর দিয়া) এই কাজ করতেছে… ইন্টারেস্টিং না জিনিসটা?
Continue reading

নোটস: এপ্রিল, ২০২৪

০২.০৪.২০২৪

বুয়েটের ঘটনা হইতেছে ফলস কনশাসনেসের একটা ঘটনা; মানে, অনেক দিক থিকাই…

ফলস-কনশাসনেস বইলা আমি বুঝাইতে চাইতেছি যেইসব জায়গা থিকা ঘটনাটারে দেখার এবং বুঝার ট্রাই করা হইতেছে, পক্ষে এবং বিপক্ষে – দুইটা পজিশনই এমন-সব জায়গাতে গিয়া রিচ করতেছে, যেইটা ফার ফ্রম রিয়ালিটি-ই না, বরং এমন একটা কনশাসনেসের জায়গা থিকা অপারেট করে যেইট রিয়ালিটির জায়গাটারে এড়ায়া চলে…

যারা ইসটুডেনট-পলিটিকসের ‘পক্ষে’ কথা বলতেছেন, তাদের জায়গাগুলা তো আমরা বুঝতেই পারি, ‘ছাত্রলিগের গৌরব-গাঁথা’ যারা বাজাইতেছেন, বাকশালি-মিডিয়া ও বাম-বাটপারে’রা, এরা যেই ‘যুক্তি’ বা কনশাসনেস নিয়া কথা কন, অইটা যে ফলস প্রিমাইজ – সেইটা বুঝতে ‘বিজ্ঞানী’ বা বুদ্ধিজীবী হওয়ার দরকার পড়ে না; মানে, উনারা ‘অযৌক্তিক’ কথা বলতেছেন – তা কিনতু না, উনাদের একটা ‘যুক্তি’ আছে, উনারা পাগল না, উনাদের একটা কনশাসনেস আছে, সেইটা ফলস বা ভুয়া…

আর যারা বুয়েটে ইসটুডেনট-পলিটিকসের বিপক্ষে আছেন, তাদের ‘যুক্তিগুলা’র ভেরিয়েশন আছে; উনারা কিনতু ছাত্রলিগ’রে ব্যান করতে চাইতেছেন – এইটা বলতে পারতেছেন না, বলতেছেন কেউ পলিটিকস করতে পারবে না! তো, কেন পারবে না? বা উনারা কেন চান না? কারন বুয়েট হইতেছে একটা সফিটসেকেটেড জায়গা; একটা নেশনাল-ভারসিটি না, এইটা চবি, জবি, ঢাবি, রাবি না; এইটা ইসপেশাল, এই কারনে পারবে না।

তো, এইটা ইসপেশালিটি বা এলিট-ইসটেটাস ধইরা রাখার ঘটনা না! যে, একটা দুর্গ আমরা এখনো বাঁচায়া রাখছি! এইটা একটা ফলস-কনশাসনেসেরই ঘটনা। একটা জুলুমের শাসনে ‘নিরপেক্ষ’ হয়া থাকার কোন ইসপেইস এইখানে নাই; মানে, আপনি ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধি শক্তি’ না এবং একইসাথে নয়া-বাকশালিও না – এইটা খালি পলিটিকাল এবং ইনটেলেকচুয়াল পজিশন হিসাবেই না, সোশাল এবং পারসোনাল পজিশন হিসাবেই পসিবল না; এইভাবে কনটিনিউ করতে চাওয়ার ইচ্ছা বা আকাংখা তো থাকতেই পারে, কিনতু পসিবল তো না!

আর না যে, সেইটারে এলিট-পজিশন বা অধিকার – যেই জায়গা থিকাই দাবি করতে চান সেইটা হাস্যকর না হইলেও বেশ করুণ একটা ঘটনা-ই তো; তার চাইতে বড় কথা কনশাসনেসের জায়গা থিকা এই ক্লেইম’টা অনেক আগে থিকা বাতিল (এবং ফলস) একটা জায়গা…

তারপরও ইনিশিয়ালি যে বুয়েটে এইটা টিইকা ছিল সেইটার একটা ট্রাডিশন তো ছিল-ই, তবে রিসেনট টাইমে পসিবল হইছিল আবরার ফাহাদের খুনের কারনে; এবং বুয়েটের ইসটুডেনটদের যুক্তিও এইটাই যে, ইসটুডেনট-পলিটিকসের নামে খুন করা হইছে, ফিউচারেও হবে; কিনতু ছাত্রলিগ বলতেছে, না, আমরা খালি ডর দেখাবো, খুন করবো না; ‘কনট্রোল’ করবো… মানে, এইটা হইতেছে কনফ্লিক্টের জায়গাটা…

এই জায়গাটাতেই রিচ করা যাইতেছে না, একটা ফলস-কনশাসনেসের জায়গাতেই বেপার’টা ঘুরপাক খাইতেছে, আর এই কারনেই এইটা একটা মিডিয়া-ঘটনা হিসাবে বাকশালি-মিডিয়াতে জায়গা করে নিতে পারতেছে বইলা আমি মনে করি; কারন বাকশালি-মিডিয়ার একটা কোর জায়গা হইতেছে যে কোন ধরনের ফলস-কনশাসনেস তৈরি করা, এবং তারে টিকায়া রাখা… Continue reading

নোটস: মার্চ, ২০২৪

০১.০৩.২০২৪

নানান জিনিস নিয়াই তো রিভিউ দেখি – বই, সিনেমা… এই রকমের আর্ট-মেটেরিয়াল নিয়া; তো, আমার ধারনা, আমার মতো অনেকেই একসপেরিয়েনস কইরা থাকার কথা যে, এইগুলা বেশিরভাগ-ই মোটামুটি ভুয়া; মানে, পেইড-রিভিউ তো আছেই, কিনতু মিনিমাম রকমের ট্রুথফুলনেসও নাই, বা থাকে না… তো, ধরা খাইতে খাইতে মোটামুটি কয়েকটা ধরন বা প্যাটার্ন আমি মার্ক করছি, এবং এইগুলা মোসটলি এড়ায়া চলি; তো, আমার মনে হইছে, অনেকে ট্রাই করতে পারেন, এই জিনিসগুলা –

১. যারা সুপারলেটিভ টার্ম ইউজ করেন, যেমন ধরেন, ‘আমার জীবনের পড়া সেরা বই!’ পুরা টাশকি খায়া গেছি’, ‘এই বছরের সেরা সিনেমা’, ‘জীবনে এইরকম দেখি নাই, পড়ি নাই’… – তো, সোজা-বাংলায় এই (বেশিরভাগ কেইসেই মেকি) ‘উচ্ছ্বাস’গুলার মানে হইতেছে জিনিসটারে উনারা ডিল করতে পারেন নাই; এইগুলা এভয়েড করা-ই বেটার

২. প্রশংসা করা, নিন্দা করা বা সামারি করাটা কখনো রিভিউ বা ক্রিটিকের কাজ হইতে পারে না

৩. রায় দেয়া যাবে না – তা না; রায় দিতে পারাটা বেশিরভাগ সময়েই বিচার করা/ক্রিটিক করা/রিভিউ করার চাইতে আলাদা ঘটনা

৪. রাইটারের পরিচিত লোকের (দোস্ত হোক আর দুশমন) রিভিউ কম বিশ্বাস করাটাই বেটার

৫. যিনি একটা জিনিসের প্রশংসা করতেছেন, এবং কোন ভিউ-পয়েনট থিকা করতেছেন সেইটা বলতে পারতেছেন না, সেইটা মোটামুটি গালি-গালাজ বা নিন্দা করার মতো খারাপ ঘটনা-ই…

৬. একটা ভালো-রিভিউ কখনো-ই ইমপার্শিয়াল বা ‘নিরপেক্ষ’ না, বরং এমন একটা যেই জায়গাটা থিকা দেখার ট্রাই করা যেইটা দিয়া আর্টরে নতুন কোন মিনিংয়ের দিকে নিয়া যাওয়াটা পসিবল হয়

৭. বস্তুর ডেফিনেশন যেমন বস্তু না, আর্টের ক্রিটিকই আর্ট না

৮. গ্রেট-আর্ট রেয়ার, গ্রেট-ক্রিটিক ইমপসিবল

৯. তবে খারাপ-রিভিউ সবসময় নো-রিভিউ’র চাইতে বেটার

যেই ইস্যু নিয়া বাকশালি-মিডিয়া বেশি গরম থাকে বা থাকবে, মোটামুটি ধরে নিতে পারেন অইটা ডামি-ইস্যু আসলে, অনেকটাই…

০২.০৩.২০২৪

যেইরকম sitcomগুলাতে ব্যাকগ্রাউনডে হাসির আওয়াজ দিয়া বইলা দেয়া হয় কোথায় কোথায় হাসা লাগবে, এইরকম গর্ভমেনট-কনট্রোলড নিউজ-মিডিয়া এবং ফেইসবুক-ট্রেনডও সেট কইরা দেয় আসলে কোথায় কোথায় হিউমার করা লাগবে আমাদেরকে, কোথায় কোথায় চুপ থাকা লাগবে, আর কোন সময় ‘প্রতিবাদি’ হয়া উঠা যাবে…

সার্কাসের মাসটারের চাবুকের ভাব বুইঝা নাচতে পারাটাই হইতেছে গুড-পারফরমেনস, একটা বানদরের

আর ভালো-অডিয়েনস হিসাবে আমাদের কাজ হইতেছে এইটারে ক্রুয়েলিটি হিসাবে না দেইখা করুণ বা ফানি হিসাবে দেখতে পারা

/বি আ গুড-অডিয়েনস Continue reading