মে মাসে লেখা কবিতা, ২০১৬।

গ্রেগর সামসা

সকালবেলায়, একটা তেলাপোকা ঘুরতেছে শরীরে তোমার।
তোমার কানের পিছনে গুঁজে দিতেছে নিজেরে সে,
নেমে যাইতেছে কাঁধে, পিঠে
একটা মানুষ হইয়া জড়াইয়া ধরতে চাইতেছে তোমার সারা শরীর
আর ঠোঁটের উপর হয়া উঠতে চাইতেছে আরেকটাই ঠোঁট

সারি সারি পিঁপড়ার মতোন তোমার শরীরের ভিতর থেকে
জাগাইয়া তুলতেছে আরেকটা শরীর
শরীর, যা ঘুমায়, জাইগা উঠে আবার
আবার, আবার… আরেকটা শরীরই চায়

অনেক না-পাওয়ার পরে যখন ঘুম ভাঙবে তার
দেখবে, সকাল কই? এখন তো সন্ধ্যাকাল,
পর্দার ফাঁকে সূর্য এখনো তো ডুবে নাই!

তেলাপোকাটা হয়তো এখনো ড্রিমে,
আরেকটা মানুষেরই মতো
পিছন থিকা জড়ায়া ধরে রাখছে তোমারে

ঘুম ভাঙার পরেও অনেকক্ষণ, অনেকক্ষণ শুইয়া থাকবা তুমি
যেন ঘুম ভাঙে নাই, যেন কোন তেলাপোকা নাই দুনিয়ায়
যেন সূর্যটা ডুবতে গিয়াও ডুবতে আর পারবে না কোনদিন

হালকা আলোর একটা ঘরে সময়টা স্থির হয়া আছে
চোখ খুললেই সে যাইতে শুরু করবে, একটা তেলাপোকার মতোই, ধীরে ধীরে…

 

মিথিক্যাল

‪‎মিথের মধ্যে ‪মিথ্যাটাই সুন্দর।

 

রেইন, রেইন

আই লাভ, আই লাভ… শি সেইজ, শি সেইজ। শি ইজ টকিং লাইজ। টকিং লাইজ। ইটস ন্যাচারাল। আই টোল্ড হার। নো বডি গেটস হার্ট। ইউ নো দ্যাট। শি স্মাইলস। শি স্মাইলস। উইথ হার বিউটিফুল আইজ। শি ব্লিংকস। শি ব্লিংকস। লাইক দ্য রেইনড্রপস ফলিং অন দ্য ট্রিস।

 

শহীদ কাদরী

বন্য প্রেমিকা খুঁজে পাবে প্রিয় কবি
কিন্তু একসাইটমেন্ট পাবে না, পাবে না, পাবে না…

 

ইনডাজল ইউরসেলফ ইন দ্য প্রসেস অফ ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং

একটা পিঁপড়ার কনশাসনেস আমারে ঘুমাইতে দিতেছে না।
আমি ভাবতেছি, ছোট্ট একটা ফাঁক যে থাইকা গেলো
নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য
ইল্যুশনের সাপটা আসবে এই পথ দিয়াই,
ঘুমায়া গেলে।
একটা হাতি অসহায় দাঁড়ায়া আছে ট্রাফিক জ্যামে…

কারেক্টারগুলি তখন জোর কইরা চলে আসতেছে
আরেকজন একজনের মতোন, একজন আরেকজনের মতোন হয়া উঠতে চাইতেছে;
সন্দেহ করলেই কয়, বিলিভ মি!
আরো বেশি ইনটেন্স হইয়া উঠতে থাকে,
আমি-ই পিছায়া আসি তখন
ভাবনারে আর ভাবি না, থাকুক অরা
অদের মতোন, আদার হয়ে অন্য কারো ড্রিমে

আমার ঘুম আসে না
একটা পিঁপড়ার কনশাসনেস আমারে জাগায়া রাখে

একটা ইন্দুর কিছু শব্দ খাইতে থাকে
কয়েকটা বাচ্চা তেলাপোকা বাঁইচা থাকার আনন্দে হাঁটে;
ঘরের ভিতরে অনেকগুলি ঘর,
পাস্ট আর ফিউচারের অনেকগুলি মানুষ
বোবা সিনেমার মতো কথা কয়, চলাফেরা করে, হাসে
আর কান্তে গিয়া চোখের পানি ফেলে
চোখের সামনে চলতে থাকা সিনেমার স্ক্রীণে
হাত রাখি, মায়া-ই লাগে… অথচ ওরা
চলেই যাবে, অথবা থাকতেই থাকবে

পিঁপড়াটা আমার ঘাড় থিকা গলা বাইয়া
কানের ভিতর ঢুইকা আটকাইয়া গেলে
ওর এগজিসটেন্সটা কি টের পাওয়া যাবে?

 

সকাল সাড়ে সাতটা

সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম থিকা উঠে দেখি
সকাল সাড়ে সাতটাই বাজে,
তারপর আরেকটু টাইম পরে
আবার চোখ খুলি, যেহেতু দেয়ালের ঘড়িটা সামনেই
আমার চোখে পড়ার লাইগাই সে আছে, ঝুলতেছে
দেখাইতেছে টাইম

সাড়ে সাতটাই।
আমি কি আগেই দেখছিলাম এইটা?
নাকি দেখবো বইলা ভাবতেছিলাম আর দেখি নাই,
এইটাই ফার্স্ট টাইম?
অথবা দেখার পরেই চোখ বন্ধ কইরা আবার ওপেন করার পরে
এই ইল্যুশনটাই চাইতেছিলাম?
সময়টারে টাইনা একটু লম্বা করা, চোখের পলকেই…

ছোট্ট একটা গর্তে পইড়া একটা ব্যাঙের লাফানোর মতোন
না-জানার মতোন আনন্দ আমার

আমি ভাবতেছি, আনন্দনগর বাজারে আরো আরো আছে তো দোকান

হাজারো খায়েশি অ্যায়সি

আমি মইরা যাব
তারপর বলবো যে, আমি মরে গেছি।

 

অনেক ট্রাই করার পরে

তুমি নাই,
তোমার না-থাকার ভিতর একটা ডলফিন ম্যাচের বাক্স বারুদ নিয়া কাঠিতে, ভিজতেছে রাস্তায়…

চোখ ঝলসানো আলো ঘরের ভিতর, সারারাত
অথচ কেউ নাই
শাদা শাদা কণাগুলি নিজেরা নিজেদেরকেই পুড়াইলো

তুমি নাই
ছাপান্ন ফুট ব্রীজের উপর থিকা
নরমাল শার্ট-প্যাণ্ট আর জুতা পইড়া
সুপারম্যান লাফ দিয়া নামলো নিচে
দেখা লাগলো আমার একলা, খামাখাই…

তুমি নাই – এইরকম ইনকমপ্লিট দুইটা ওয়ার্ডে
লেখা লাগলো তোমারেই।

তুমি হাসলা, বললা, ‘যা খুশি তা-ই লেখো তুমি,
লিখতে না-পারার কোন লজ্জাও ত তোমার নাই।’

যদি বলতা তুমি, যেই তুমি নাই,
যেই তুমি সুপারম্যানের সাথে
ঘুরে বেড়াইতেছো অন্য কোন গ্রহে,
গ্রহাণু থিকা বাঁচাইতেছো দুনিয়ারে…

বিজি অনেক, অনেক অনেক কাজ

অ-কাজের ট্রয়ের ঘোড়া আমি
দেখে দেখে বুইঝা ফেলছো
‘এরে তো আমার কোন দরকার নাই’
অ-দরকারের ভিতর মুছে গেছি আমি
আমার নাট বল্টু খুলে খুলে পড়তেছে, কাঠের শরীর ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তেছে
বলতেছে, তুমি নাই

অথচ সকাল,
তুমি আর তোমার দিন আর সময় সবই থাকতেছে

আমি জাস্ট প্রিটেন্ড করতেছি,
এই যে ইল্যুশন আমি, তোমার পারসপেক্টিভে, সেইখানে
তোমার না-থাকার ভিতর
তোমারে ইনসার্ট করার অনেক ট্রাই করার পরে মনে হইলো,
আরে, তুমি ত নাই।

‍‍

হোলস

কান্দাটা
একটা সিঁড়ি দিয়া
উঠার মতোন
উঠতে উঠতে,
ছাদের দরজার কাছে আইসা
সামনে পা দিয়া
পড়ে যাইতেছে
নিচে

 

থার্ড পারসন

রোবট’টা ঘুইরা তাকাইলো আমার ভাইয়ের দিকে
তারপর আমার দিকে

রোবটের হাতে ছাতা
আর সানরাইজ টেইলার্সের ব্যাগ

রোবট’টা সামনে হাঁইটা চইলা যায়
পড়ে নাই জিন্সের প্যাণ্ট

রোবট’টার মনেহয় কোন সমস্যা আছে;

যেমনে তাকাইতেছিলো
মনে হইতেছিল নিজেরে সে মানুষ ভাবতেছে

আমরা তারে রোবট ভাবতেছি কিনা
এইটা নিয়া মন-খারাপ করতেছে

 

পি.জি. হসপিটাল

আমি তোমার দিকে তাকায়া থাকতে থাকতে
একটু একটু কইরা মইরা যাবো

বেকুব মাল্টা ফল, তুমি তবু গোল

 

 

Leave a Reply