হোয়াই বিশ্বজিৎ?

 

ওইদিন বিএনপি’র অবরোধে ত আরো ২/৩ জন মারা গেছেন! বিশ্বজিৎরে নিয়া এতো কথা, কবিতা, আলাপ-আলোচনা কেন? – এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিছেন কিনা আমার জানা নাই। আমার কাছে, বিশ্বজিৎ এর খুন হওয়াটা অবশ্যই সিগনিফিকেন্ট একটা ঘটনা, কারণ এই একটা মরার সিন আপনি বাংলাদেশে প্রথম টিভিতে দেখতে পাইতেছেন। এইটা সিনেমার বানানো কোন সিন না, ইটস রিয়েল। কয়েকজন মানুষ চাপাতি দিয়া কোপাইয়া একজনরে মাইরা ফেলতেছে। ইমেজটারে আপনি আর আলাদা করতে পারতেছেন না। এইটা আপনারে চাইপা ধরছে; টিভিতে নায়কের ভঙ্গি ফলো কইরা আপনি কথা বলেন, নায়িকার প্রগলভতারে আপনি ট্রান্সমিট করেন ডেইলি লাইফে। এখন সন্দেহ হয়, এই যে মৃত্যুদৃশ্য সেও ত আপনার জীবনে চইলা আসতে পারে! এই যে ইমেজের ফ্রাস্টেশন, এইটা একদিক দিয়া কবি-সাহিত্যিকদের আপ্লুত কইরা থাকতে পারে। যেমন, নূর হোসেনের ক্ষেত্রে তার ফটোগ্রাফ। এই ফটোগ্রাফ না থাকলে, নূর হোসেনরে নিয়া কবিতা লিখাটা টাফ হইতো, শামসুর রাহমানের এবং অন্যদের। কবিতাগুলা বা আলাপ-আলোচনাগুলা কেমন হইছে, এর চাইতে কেন সম্ভবপর হয়া উঠছে, সেইটা নিয়াই বলতে চাইতেছি আমি। আই হ্যাভ স্ট্রং ডাউট, টিভিতে প্রচারিত হওয়া ছাড়া বিশ্বজিৎ এর মৃত্যুটা এতোটা ইনটেনস হইতে পারতো কিনা।  

আলাপ-আলোচনায় ত অবশ্যই থাকতো, কারণ বিশ্বজিৎ এর অরাজনৈতিক পরিচয়। আমি আওয়ামী লীগ বিএনপি করি না, এরপরেও আমি মারা যাইতে পারি। এই চিন্তারও একটা বড় কন্ট্রিবিউশন আছে। সে যদি বিএনপি’র কর্মী হইতো বা আওয়ামীলীগে’র নিশ্চুপ সমর্থক, তার প্রতি এই যে ‘অরাজনৈতিক’ (এই শব্দ নিয়া আমারও সন্দেহ আছে) দরদ পলিটিক্যালিই থাকা সম্ভব হইতো না। এইক্ষেত্রে, হিন্দু-মুসলমান তেমন কোন টেনশন তৈরি করে না।

কিন্তু এই দুইটা সিগনিফিকেন্সরে বাদ দিলেও, এইটা ত একটা খুনের ঘটনা। দর্শক/রিডার হিসাবে টিভি-সংবাদের এবং পত্রিকার-খবরের আপনার রোলটা কি? সবচে’ প্রথমে আপনি কি তারে ইগনোরই করতে চাইবেন? তারপর যখন পারবেন না তখন দোষী কে, তারে খুঁজতে যাইবেন? কাউরে হিরো বানানোর তাগিদটা খুব ভিতর থিকা ফিল করবেন, অনেক দেরিতে হইলেও কোন বিশ্লেষণে হয়তো কিছুটা রাজি হইতে পারবেন যে, এইটা আসলে কিলারস ইনস্টিংক্ট অথবা সমাজ-ব্যবস্থার দুর্বলতা। লেটস ফেইস ইট! যা-ই হোক, বিশ্বজিৎ’রে নিয়া এই লেখাটাও পড়তে পারেন আপনি, বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় মুড়ি খাইতে খাইতে। মানে, দর্শক-প্রতিভার বাইরে আসাটা একদমই সম্ভবপর না আর! অন্ত:ত এই ঘটনার পরে। একটা বাণীই মনে পড়তেছে এখন, “উই অল শ্যুড বি অন দ্য টিভি। উই অল শ্যুড বি ফেমাস ফর ফিউ মিনিটস!” (অরিজিনাল মিনিং সম্ভবত রেটরিকই ছিল, এখন এইটা ট্রাজেডী হিসাবেও পড়া যাইতে পারে।)

 

 

Leave a Reply