।। ম্যালিস ।।

ম্যালিস পইড়া অবাক হইছিলাম ফার্স্ট চ্যাপ্টারেই; আরে, এইরকম স্ট্রেইট কেন, এইটাই কি চাইতেছেন রাইটার? পয়লা চ্যাপ্টারেই সবকিছু বইলা দিতেছে! সব রহস্য শেষ হয়া যাইতেছে, এইটা কি রকমের থ্রিলার! একটু অস্বস্তিও হইতেছিল, রাইটার তো না, একটা কারেক্টার বলতেছেন। এই রাইটার এবং কারেক্টারের ডিফরেন্স ক্লিয়ার হইছে আরো পরে। যখন আপনি রাইটার (রাইটারও তো একটা কারেক্টারই – এই ভেদবুদ্ধি এইখানে এক্সপ্লোর হইছে আসলে) তখন আপনি নিজেরেই সার্ভ করতে থাকবেন। এইটা খুব ইম্পসিবল একটা ব্যাপার নিজেরে সেইভ না কইরা লিখতে পারাটা। কারেক্টারটা রাইটারের ইন্সটিংক্ট নিয়াই ছিল আর খুব খেয়াল না করলে আপনার চমকাইয়া উঠার কথা কি কি জিনিস সে হাইড করতেছিল বা কিভাবে সে নিজেরে সাজাইতেছিল। বিশেষ কইরা, হাইড করতে পারাটাই যখন আমাদের দেশে সাহিত্য, তখন এই বই পড়াটা আরো বেশি মজার। Continue reading

ক্রিয়েটিং অ্যা ফিমেইল গেইজ ইন বাংলা-সাহিত্য

এই সময়ে, এই সময় বলতে ২০১৫-এর ঢাকা শহরে, ভার্জিনিয়া উলফ-এর চাইতে অ্যানাএস নিন অনেকবেশি রিলেভেন্ট হওয়ার কথা, কারণ উনি খালি নারী-আবেগ’রে রিফ্লেক্ট করেন না, এইটা করতে গিয়া একটা পুরুষ-ফিগার এর ধারণাও ক্রিয়েট করেন। সাহিত্যে এই জিনিসগুলা প্যাসিভলিই থাকে। মানে, একজন মাইয়া কে ও কি জিনিস, সেইটা পোলা’র গেইজটা দিয়াই ডিফাইনড হয়। অ্যানাএস নিন-এ ফিমেল গেইজ’টা থাকে টুওয়ার্ডস দ্য মেইল-অবজেক্ট। যেইটা একটা কনজাম্পশন প্যার্টান’রে সাজেস্ট করে, যেইখানে ফিমেইল বডি’টা পার্টিসিপেট করতেছে না খালি একটা টুল হিসাবে, বরং সেন্টার পয়েন্টটাতেই অপারেট করতেছে। Continue reading

চাঁদের পাহাড়ঃ বাঙালি ও বাংলা-ভাষার অ্যাডভেঞ্চার

স্কুল লাইফে এই বই পড়ি নাই বা পড়লেও আসলে কিশোর থ্রিলার বা কিশোর ক্ল্যাসিকের চাইতে ‘ভালো বই’ কখনোই মনে হয় নাই। এই কারণেই হয়তো মনেও নাই। পরে ভাবলাম যে, পড়ি। এবং পড়তে গিয়া কিছু জিনিস চোখে পইড়া গেলো, যেইটা না-বলার কিছু নাই।

 

বাঙালির পেশা

অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় বাঙালি তরুণের সম্ভাব্য সামর্থ্যগুলা কি কি? বিভূতিবাবু বলছেন, “ফুটবলের নামকরা সেন্টার ফরওয়ার্ড, জেলার হাইজাম্প চ্যাম্পিয়ন”। আর তাঁর আশংকা হইলো “পাটের কলের বাবু” হইয়াই না জীবন পার করতে হয়।

“ফুটবলের নামকরা সেন্টার ফরওয়ার্ড, জেলার হাইজাম্প চ্যাম্পিয়ন, নামজাদা সাঁতারু শঙ্কর হবে কিনা শেষে পাটের কলের বাবু?” (পৃষ্টা ১৬)।

 

এই বাক্যরে উদাহারণ হিসাবে নিলে, পাটের কলের বাবু’রে বলা যায় বাঙালির কমন পেশাও না ঠিক, একটা অ্যাসপিরেশন – যে হায়েস্ট এই লেভেলে যাইতে পারে সে, যারে ‘বাবু’ বইলা ডাকবে কেউ; অ্যাডভেঞ্চারহীনতা’র একটা বাস্তবতা এবং সম্ভবত কোন নায়ক-চরিত্রও পাওয়া সম্ভব না কোন বাংলা গল্পে বা উপন্যাসে যে কিনা পাটের কলে চাকরি করে, অ্যাজ অ্যা ‘বাবু’। মানে, পাইলেও সে স্যাড একটা কারেক্টারই হওয়ার কথা। হইতে পারে, এইটা তখন একটা ‘ভালো’ চাকরি, পেশাগত নিরাপত্তা, নির্দিষ্ট নিয়মের এবং কমন একটা সাফল্যের জিনিস. সোসাইটিতে । এই যে নায়কের ‘আন-কমন’ হইতে চাওয়া, এইটা তারে অ্যাডভেঞ্চারের দিকে খালি টানে নাই, ‘কমন’ বা ‘অপজিট’রে একভাবে ডিফাইন করার অধিকারও দিছে।

Continue reading

রেজিসট্যান্স ইন থট

“ordinary people are never terrorists” – রেহনুমা আহমেদ তাঁর টর্চাড ট্রুথ  বইটার “ইউ ক্যান নট ইট কোল” ‘রেজিস্ট্যানস ইন ফুলবাড়ি’ লেখাতে, একটা ডকুমেন্টারি দেখতে গিয়া একজন অফ-স্ক্রীণ মহিলার বলা কথাটা বলতেছিলেন।

আমি ভাবতেছিলাম, হাউ কুড শি কনভিন্স হার নট টু এক্সটেন্ড দ্যা ট্রুথ! এইকথায় ত আছে যে, টেররিস্ট হইলো একস্ট্রা-অর্ডিনারি বিষয় এবং এই সময়ে টেররিস্ট হওয়ার মটিভেশনটাই এইখানে; যেইখানে এইটিইসে ঘটনাটা ছিল পাড়ার মাস্তান হওয়া এবং পরে পলিটিক্যাল দলের ক্যাডার হওয়া। যখন আপনি টেররিস্ট হইতে পারেন, খালি তখনই আপনি সাধারণের সিরিয়ালের বাইরে গিয়া খাড়াইতে পারেন! আপনি টেররিস্ট না হইলে আপনি অর্ডিনারি-ই। কি করেন আপনি? ছাত্র, চাকরি করেন, কবিতা লিখেন, মাস্টারি করেন, ব্যবসা, বহুত টাকা-পয়সা বা ভ্যাগাবন্ড-ই [এইগুলা তো হইছে অনেক]… তারপরও অর্ডিনারি-ই!

মিনিংয়ের যে মাল্টিপ্লিসিটি সেইটা ইগনোর করার মানে হইলো যে কোন ইস্যুরে সিঙ্গুলার ফর্মের ভিতর আটকাইয়া দেয়া; এইটারে কি বলা যায়, রেজিসট্যান্স ইন থট?

Continue reading

কবি নজরুলের ভাষা, ক্লাস-স্ট্রাগল এবং প্রেম

কাজী নজরুল ইসলামের এইসব নিয়া ত অনেক লেখা হইছে। অনেকলেখা পড়ি নাই; তারচে বেশি আসলে পড়তে পারি নাই। কারণ আলাপের একইরকমের প্যার্টানটাতেই আটকাইয়া গেছি; যারা লিখছেন, উনারা হয়তো বলছেন নতুনকিছু, কিন্তু পুরানা-ভঙ্গির ভিতর নতুনের-আশা আমার মইরা গেছে অথবা সাহিত্য যে খালি পুরানেরই রিপিটেশন এই আইডিয়াতেই আমল আনতে পারি নাই আর!

তো, কাজী নজরুল ইসলাম নিয়া নতুন কইরা আলাপ করার ইচ্ছা হইলো কাজী মোতাহার হোসেনের স্মৃতিকথা  বইটা পইড়া। উনার বইটাতে নজরুল’রে নিয়া কয়েকটা লেখা আছে, ওইগুলার বেসিসেই কবি নজরুল ইসলাম’রে বোঝার একটা কোশিশ (নজরুল-এফেক্ট) করা।

কাজী মোতাহার হোসেন লিখতেছিলেন –

সে যুগে (১৯১২) চোস্ত ভাষা বলতে বঙ্কিমী ভাষাই বুঝাত;… দেখা যায় ততদিনে (১৯১৯) ভাষাটা অনেকটা রাবীন্দ্রিক হয়ে এসেছিল আর ভাবও প্রায়ই রবীন্দ্রনাথের থেকে ধার করা… একটা সময়  (১৯২৬) লক্ষ করলাম, আমার ভাষার বঙ্কিমী ও রাবীন্দ্রীক ভাব কেটে গিয়ে একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য এসে পড়েছে। দীর্ঘ সমাস, আর দুরূহ শব্দ বিদায় নিয়েছে; ভাষা হয়ে উঠেছে সহজ, প্রাঞ্জল আর বাহুল্যবর্জিত বা অনাড়ম্বর – যাতে পরিমাণ মত মূর্চ্ছনা থাকলেও গিটকারীর প্রাধান্য নেই। (কাজী মোতাহার হোসেন, আমার সাহিত্যিক জীবনের অভিজ্ঞতা, স্মৃতিকথা, প. ৭৩ – ৭৫)।

যদিও উনি ক্লেইম করছেন যে, বঙ্কিম ও রবীন্দ্রনাথের চাইতে উনার ভাষা চেইঞ্জ হয়া আসছে, ততো একটা হয় নাই আসলে; বাহুল্য, অনাড়ম্বর আর প্রাঞ্জলতা –  এইসবকিছু রয়া গেছিল বা আছে; এই যে চেইঞ্জ, এর গরিমা উনি দিছেন ওই সময়কার মুসলমান লেখকদের কনশাস এফোর্ট’রে, শিখা-গোষ্ঠীরে; হয়তো এইটা উনারে দাবি করতে হেল্প করছে, কিন্তু সাহিত্যে বুঝতে পারা এবং লিখতে পারা দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনা; উনার ভাষা-বদল বইলা যদি কিছু ঘইটা থাকে সেইটা জায়েজ করার কথার মতো সাহিত্যিক উদাহারণ হিসাবে তার আগ পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলামই আছিলেন। Continue reading