দেখবো দেখবো কইরা দেখা হইতেছিল না; পরে দেইখাই ফেললাম, আনবিলিভেবল নামের এই মিনি সিরিজ’টা। 🙂
রেইপ নিয়া এই আর্টিকেল’টা লেখার জন্য পুলিৎজার প্রাইজ পাইছিলেন রাইটার’রা, ২০১৬ সালে। আম্রিকাতে রেইপের ইনভেস্টিগেশনে অনেক চেইঞ্জও নাকি আসছে, এই আর্টিকেল’টা ছাপা হওয়ার পরে। এই পুরা ব্যাপারটা নিয়া একটা বইও ছাপা হইছে, ২০১৮ সালে। তো, অই আর্টকেল’টা নিয়া বানানো হইছে এই মিনি সিরিজ’টা, ২০১৯ সালে। ১টা সিজন, ৮টা এপিসোড।
দেখতে গেলে যা হয়, অনেক জায়গাতে তো চোখ আটকায়া যায়। এইরকম কয়েকটা জিনিস’টা নিয়া বলি।
একটা হইতেছে, রিপিটেশন। মারিয়া’রে বারবার তার রেইপের কথা বলা লাগে; আর বলা মানে তো খালি বলা না, তারে মনে করাও লাগে; আর যখন মনে করি আমরা বা দেখি, তখন ঘটনা তো বারবার ঘটতে থাকে আসলে! (টিভি অ্যাডগুলা দেখবেন, এই চালাকি’টা করে। এখন নিউজগুলাও করে। অন্য অনেক কিছুই।…) এইরকম একটা বাজে ঘটনা, বারবার বলতে বাধ্য করাটা তো আরেকটা ক্রাইম! আর কোনরকম কমপ্যাশন বা এনগেইজমেন্ট ছাড়া শোনা’টাও খুবই ক্রুয়েল একটা জিনিস। আর এইসবের ভিতর দিয়া একজন রেইপের ভিক্টিমরে সোসাইটি বা তার চারপাশ না, বরং সিস্টেমটাই ভিক্টিম কইরা তোলে।
আর ইল্যুশন’টা কেমনে তৈরি হয় দেখেন, কনটেক্সট’টা দিয়া। যে, মারিয়া’র মধ্যে তো এক ধরণের বেয়াদবি আছে; শে অ্যাটেনশন চায়, এই কারণে শে বানায়া থাকতে পারে, রেইপের ঘটনা’টা – এইরকম অনুমান করাটা পসিবল হয়। মানে, কো-রিলেশন তো আছে ঘটনাগুলার বা আমাদের অ্যাটিটুডগুলার। যেমন, যে রেপিস্ট, দেখা যায় তার ডমিস্টিক ভায়োলেন্সেরও হিস্ট্রি থাকতে পারে – এইটা মিছা কথা না; কিন্তু যেই লোক ডমিস্টিক ভায়োলেন্স করে, সে-ই রেপিস্ট – এইরকম না। মানে, কেউ ড্রাগস করে বইলা ছিনতাইকারী না; কিন্তু অনেকে ড্রাগসের টাকা যোগাড় করার লাইগা ছিনতাই করে তো, এইরকম। মানে, যেই কো-রিলেশনগুলারে আমরা মিলাইতেছি, তার ভিতর দিয়া একটা ইল্যুশন বা রিয়ালিটি’রে তৈরি করতেছি! প্রসেস’টা তো একই! আমাদের কনশাসনেসের জায়গাটাতে আলাদা না করতে পারলে মুশকিলই।
মারিয়া ফোর্সড হয় একটা রিয়ালিটি’রে ইল্যুশন বলতে; একইভাবে অনেক ‘ইল্যুশন’ আছে, যেইটারে ‘রিয়ালিটি’ বলতে পারতেছেন না আপনি। এই জিনিস’টা ট্রমাটিক তো; মেবি পাগলামি’রও শুরু।… এই যে রিয়ালিটি বা ইল্যুশন, এর মাঝখানে দাঁড়ায়া থাকতেছে খালি একটা প্রমাণের সুতা। যে, প্রমাণ তো নাই! বা এতো দূরের জিনিস যে, প্রমাণগুলারে একসাথে করা যাইতেছে না, ভিজিবল করা যাইতেছে না!…
এইখানে দেখবেন, ‘সুফীজম’ বা ‘বুড্ডিজম’ বা ‘মিস্টক’ ব্যাপারগুলা চইলা আসে (অনেক সময় সাত্বনা হিসাবে, রিলিফের টুল হিসাবে বা অজুহাত হিসাবেও…), মানে যেইগুলা রেশনালিটি’র বাইরে, সেই স্পেইসগুলা রিলিভেন্ট হয়া উঠতে চাইতেছে। মানে, এইটা খালি রিয়ালিটি আর ইল্যুশন না, রেশনালিটি আর ইরেশনালিটি’র মাঝখানের স্পেইসটাও, যেইটা চাপা পইড়া থাকতেছে ‘প্রমাণের’ নিয়মগুলার ভিতর।
আমরা বুঝতে পারতেছি, এই নিয়মগুলা এনাফ না, কিন্তু তাই বইলা ঘটনাগুলা যে ঘটে না – তা তো না! যেইভাবে ঘটনাগুলা ঘটতেছে আমাদের দেখার জায়গাটা সেইগুলারে বাদ দিয়া যাইতেছে সবসময়, বা ধোঁকা দিতে পারতেছে; কিন্তু সেইটা তো মানতে পারা’র মতন কোন জিনিস না।
আর এই কারণে, চেইতা যাইতে পারা’টা দরকারি একটা ঘটনা। গ্রেস (পুলিশের ডিটেক্টিভ) টেগার্ট’রে ( সিবিআই’র অফিসার’রে) বিশ্বাস করতে পারে না এই কারণেই যে, কই, অর ভিতরে তো চেত’টা নাই! সে তো ফিল-ই করে না! সে হেল্প করবে কেমনে! মানে দেখেন, ইন্টেলেক্ট কোনভাবেই ইমোশনলেস ঘটনা না, বরং ইমোশনটারে কেমনে ফিল করবেন, ডিল করবেন, সেইটার ঘটনা।
এই রেইজ’টা বা চেইতা যাওয়া’টা আসতেছে অই জায়গাটা থিকা যে, যেইটা ‘সত্যি’ সেইটারে তো আমরা বলতে পারতেছি না! উল্টা এইটারে ‘সত্যি’ বইলা ভাবি বইলা ঝামেলায় পড়তে হইতেছে আমাদের!… এর স্ট্রেস’টা নিতে হইতেছে সবসময়ই আমাদেরকে। এক সময় একটা কালেক্টিভ ট্রেস, বা সোশ্যাল ট্রমা’র জায়গাও তৈরি হওয়ার কথা।
এই কারণে এর সলিউশন’টাও ইন্ডিভিজ্যুয়াল ট্রমার বাইরেও এক ধরণের কালেক্টিভনেস ভিতর দিয়াই অ্যাচিভ করতে পারতে হবে। এই ন্যারেটিভের সাজেশনও এইটা।
২.
আরেকটা সাজেশন হইতেছে, সামহাও আপনার কোন ভালো কাজ কোথাও না কোথাও কাউরে হয়তো বাঁচায়া দিতে পারে। এইরকমের একটা ঘটনা বয়হুড সিনেমাতেও আছে; ম্যাসনের মা যখন একটা রেস্টুরেস্টে যায়, সিনেমার শেষদিকে, তখন রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার আইসা কয় যে, সে তার স্টুডেন্ট ছিল, আর উনি কোন একটা ক্লাসে একটা কথা বইলা তারে ইন্সপায়ার করছিলেন। এইরকম গ্রেস আর ক্যারনের ভালো করতে চাওয়া’টা ম্যারি’র লাইফ’টারে বাঁচায়া দিছে।
তো, এইটা ক্রিশ্চিয়ান মোরালিটিরই ন্যারেটিভ। আমি দেখি যে, একজন ক্রিশ্চান তার জায়গা থিকাই দেখবে, এইটাতে ঝামেলার কিছু নাই; যতক্ষণ না এইটা ফোর্স করতেছে নিজেরে ‘একমাত্র’ মোরাল পজিশন বইলা। তো, এইখানে ধর্ম’রে ডরানোর কিছু নাই, বরং রাষ্ট্র আর ক্যাপিটালিজমের যেই নতুন ধর্ম-ব্যবস্থার দিকে আমরা আগাইতেছি আরো, সেইখানে সাবধান হওয়াটা দরকারি। মানে, টার্মিওনলজিগুলা ইর্ম্পটেন্ট। যে কোন সিস্টেম যখন নিজেরে একমাত্র ও মহান কইরা তোলে, তখন সেইটারে একটা ধর্ম-ব্যবস্থা হিসাবে বুঝতে পারা’টা দরকার। ধরেন, ইসলাম বা ক্রিশ্চান ধর্মমতগুলার বাইরে লিবারাল, সেক্যুলার বা বিজ্ঞান নামে এক রকমের নন-রিলিজিয়াস না, বরং নতুন ধরনের কোন প্যাগান ধর্মের দিকেই যাইতেছি আমরা, আবার।…
৩.
(এই জিনিস’টা এই সিরিজের সাথে এতোটা রিলিভেন্ট না, কিন্তু যেহেতু এইটা দেখতে গিয়াই মনে হইতেছিল, এইজন্য ভাবলাম এইটাও বইলা রাখা যাইতে পারে।)
এই যে, আর্ট-কালচার আমাদের সোসাইটি’তে এতোটা ‘ইউজফুল’ জিনিস হয়া উঠতেছে, সেইটারে মনেহয় খেয়াল করতে পারা’টা দরকার। কয়দিন আগে একটা ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি কমেডি-ড্রামা টাইপ সিনেমা দেখলাম ‘ইক লাকড়ি কো দেখা তো অ্যায়সা লাগা’ নামে, এলজিবিটি মুভমেন্ট নিয়া বানানো আসলে। মানে, ফ্যামিলি ড্রামা যারা দেখেন, তাদেরকে ‘লিবারাল’ বানানোর একটা প্রজেক্ট একটা। ব্র্যাক বা অন্য এনজিও’রা যেইরকম পথ-নাটক বানায়, অইরকম।
মানে, আর্ট-কালচার যে কখনোই সোসাইটি’তে ইউজফুল জিনিস ছিল না – তা তো না, সবসময়ই ছিল। ভাইকিংস সিরিজেও এক রাজা যুদ্ধে জিইতা আইসা কইতেছিল, কবিগুলা যদি এইগুলা বাড়ায়া না লেখে ধইরা বেতামু, এইরকম কিছু। ইবনে ইসহাকের লেখা সিরাতে রাসুল (সা.) এ প্রতিটা যুদ্ধের পরেই আছে কবি’রা কেমনে কি লিখছিলেন। সব রাজা’রাই কবিদের’কে কেন পালতেন? বা এখনো মিডিয়া-হাউসগুলা, পলিটিক্যাল গ্রুপগুলা কবি কেন পালে? ইউজলেস বইলা তো না! বরং এইগুলা ইউজফুল জিনিস, দরকারি জিনিস, সবসময়। তো, এই যে আর্ট আর এর সোশ্যাল পারপাস ফুলফিল করার জায়গাগুলা, মাঝখানে (প্রয়াত) বুর্জোয়া আমলে এতোটা ডাইরেক্ট ছিল না, এক ধরণের পর্দা-প্রথা 🙂 মাইনা চলতো। এখন এইটার প্রয়োজন পুরাপুরি না হইলেও, ধীরে ধীরে ফুরাইতেছে মনেহয়।
এই সিরিজ’টা সেইভাবে গল্প-কবিতা না, একটা আর্টিকেল; বা ফর্মের দিক থিকাও ফিকশন না ততোটা, যতোটা ডকুমেন্টারি টাইপ। মানে, এইখানে লুকানোর কিছু নাই যে, এইটা সার্টেন ইস্যুরেই প্রমোট করতেছে। কিন্তু আর্ট’রে যে ‘উদ্দেশ্যহীন’ হইতে হবে – এইটা যেমন জরুরি না, একইভাবে কোন না কোন উপায়ে যে ‘ইউজফুল’ হয়া উঠতে হবে – এইটাও জবরদস্তি একটা । সো-কল্ড কমিউনিস্ট রিজিমগুলাতে এইটা পাইবেন; আর একটা কন্ট্রোলড সোসাইটিরও লক্ষণ মেবি এইটা; যে, আর্ট’রে কোন না কোন পারপাস সার্ভ করতে হবে, কোন অডিয়েন্সরে রিচ করতে হবে; এইরকম।
Leave a Reply