আমার ফ্রেন্ডের বউ ড্রাইভ করতে পারে। শে আমারে ড্রাইভ কইরা নিয়া গেলো নিউমার্কেটে। যাওয়ার সময় আমি তারে কইলাম, আমার গাড়ি কিন্তু ব্যাকে যায় না, ইঞ্জিন পুরান হইতেছে তো, মেইনটেইনসও নাই। এই কারণে শে বাইরে পার্ক করলো। আমরা ড্রাইভার’রে নেই নাই গাড়িতে তখন, নিউমার্কেট যাওয়ার সময়। পরে যখন পার্ক করা হইলো রাস্তায়, সে আইসা হাজির। ফ্রেন্ডের বউ এর আগে গাড়ির দরোজাও লক করতে পারতেছিল না ঠিকমতো। তখন আমি কইলাম, চাবি ড্রাইভার’রে দিয়া দাও। রাস্তায় গাড়ি রাখা এমনেও রিস্কি। সে থাকবো নে গাড়ির সাথে। এর আগেই অবশ্য শে গাড়ির দরোজা লক করতে পারতেছিল। আর ড্রাইভার, যারও নিজের কোন নাম নাই, চাবিটা হাতে পাইয়াই সামনের দিকে হাঁইটা চইলা গেলো, এমন একটা ভাব যেন পরে ফেরত আসবো আর গাড়ি’র কাছেই থাকবো, এই মোমেন্ট খালি আরেকটা কাজ পইড়া গেছে বা আমার অর্ডার খুব একটা পাত্তা না দিলেও চলে এইরকম একটা ব্যাপারও থাকতে পারে। আমি ওরে ঝাড়ি দিবো কি দিবো না এইটা ডিসাইড করার আগেই সে চইলা গেলো আর ফ্রেন্ডের বউ আগাইয়া আইসা আমার হাতে ধরলো। আমি ড্রাইভারের কথা ভুইলা গেলাম।
নিউমার্কেটে আমাদের ভালো লাগতেছিল না। আমরা একজন আরেকজনরে জড়াইয়া ধরতে পারতেছিলাম না। তখন আমরা গল্প করতেছিলাম, আমার ফ্রেন্ডের লগে রিলেশনশীপটা ওর কেমনে হইলো। ওরা একই সার্কেলে যাওয়া-আসা করতো। আমার ফ্রেন্ড একটু সিনিয়র ছিল। সে যখন ওর চোখে তাকাইয়া কইছিলো, আই লাভ ইউ; তখন শেও তারে কইছিলো, আই লাভ ইউ। বেশ ইনসটেন্টলিই কইছিলো শে। মোমেন্টের একটা যাদু আছে না! আর তখনই যার বাসায় ওরা ছিল, তিনি আরে একটু বেশি সিনিয়র, আইসা কইছিলেন, আমি জানতাম তোমারে যে একজন আরেকজনরে আই লাভ ইউ। তখন ওরাও শিওর হইছিল; না, ঠিক আছে তাইলে। শে ভাবে নাই যে, এই কনর্ফামেশন আসলে ছিল ওই সিনিয়র-এর তার বউরে ভালো না বাসতে পারার বেদনা, যেইটা ওদের ওপর ইম্পোজ হইছিল। ওরা এখনো হ্যাপি। হ্যাপিনেস ইজ হ্যাভিং লাঞ্চ উইথ হুবি! হ্যাপিনেস ইজ হ্যাভিং ডিনার উইথ ওয়াইফি! এইরকম ইমেজের ভালোবাসা এখনো আছে ওদের। ভালোবাসা ত কয়েকটা ইমেজই, তাই না? এইটা অবশ্য আর আমরা বলি না। আমার মনেহয়, না বললে জিনিসগুলা নিয়া আমরা আরো ভাবতে পারি, তারপর ভাবতে ভাবতে ভুইলা যাইতে পারি। বইলা ফেললে তো থাইকা গেলো, ভুইলা যাওয়া আসলে আরেকটা মনে করা-ই। এইরকম হাবিজাবি কথা বইলা আর ভাইবা আমরা হাঁটতে থাকি।
হাঁটতে হাঁটতেই মনেহয় একটা বাসায় চইলা আসলাম। ওইখানে সোশ্যাল এনভায়রমেন্ট। লগে বারান্দাও আছে, আরেকটা ঘরের সমান। অনেক মানুষ বইলা আলাদা আলাদা কইরা এর ওর দিকে তাকানো যায়; মনে মনে ভাবাও যায় অনেককিছু। ভাবনা করাও ত একটা অ্যাক্ট-ই। এইরকম ভাইবা শান্ত থাকা যায়। কিছু না কইরা, তাকাইয়া তাকাইয়া অনেককিছু কইরা ফেলা যায়। আর এইটা অন্যরা, যারে নিয়া ভাবা হইতেছে যখন বুঝতেও পারে, মজা না তখোন। তখোন করাটা পসিবল হয়, ভাবনাটা। আমাদের আগে আমাদের ভাবনাটা আগাইয়া যায়, তারপর আমরা ওইখানে গিয়া রিচ করি। হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলি, আসছি জান!
আমাদের এই আসা, ওরা মনেহয় বুঝতে পারে; যে আমি আর আমার ফ্রেন্ডের বউ কেন একলগে ঘুরি। এমনে বলি যে, ওর (ফ্রেন্ডের) তো অফিস আছে, এইজন্য বাইর হইতে পারে না! একটু পরে আসবে। পরে আসলে ফ্রেন্ড আর আসে না, ফ্রেন্ডের বউ-ই চইলা যায়। এইটা সবাই জানে বইলা আমরা ভাবি, আমরা জানি বইলাই। একটু পরে কথা কইতে কইতে, আমরা খেয়ালই করি নাই, এইরকম কইরা আমরা ঘরের পাশের বারান্দাতে চইলা যাই। আমি ওরে বলি যে, দেখো আমি আমার ফ্রেন্ডের লগে বেঈমানি করতে পারবো না, উই শ্যুড স্টপ দিস! ফ্রেন্ডের বউ চুপ কইরা থাকে। না’টা আসলে শে কইতে চাইছিলো। এখন আমি আগে বইলা দেয়াটা ভুল হইলো আসলে। হিউম্যান রিলেশনশীপ নিয়া ওর আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালো, এইকারণে খুব একটা গালিগালাজ করে না। ওই শুয়োরের বাচ্চা পর্যন্তই। তারপর বলে, আমি চইলা যাওয়ার পরে তুমি ওই ভাইয়ের বউ’রে লাগাইবা, না! এইটা করার লাইগা তুমি আগে থিকা রাস্তা ক্লিয়ার করতেছো! ও বলার পরে মনে হইলো, আমি এইটা আসলেই ভাবি নাই। মানে, হইতেই পারে। উনি জানি কেমনে তাকায় আমার দিকে। আমি রিড করতে পারি না, মানে মনেহয় যে, হইতেই পারে, খারাপ কি! কিন্তু এর লাইগা ছাইড়া দিতেছি? তাই? মানে আমাদের রিলেশনশীপ তো ওইরকমকিছু হয় নাই। এখনো তো অনেককিছু বাকি। নাকি ও আমারে আগেই ডাম্প করতে পারে দেইখা আমি কশাস হইতেছি। বলতেছি, চইলা যাও। ও তো এমনেই চইলা যাবে। সেইটা শেও জানে; নাকি আমারে টাইমটা দিতে চাইছিলো, শে-ই। আমি জাস্ট তার ট্রাপেই পা দিলাম। আর আটকাইয়া থাকলাম একটা বারান্দায়, বিকালবেলায়!
বিকালবেলাতে তখনো রোদ আছে। আর কেউ নাই। ঘরে দুইজন মহিলা। একজনরে পরে দেখছি আসলে। আরেকজন যিনি ড্রেসিংটেবিলের সামনে, উনারে দেখছি আগে। বা উনিই আমারে দেখলেন যে আমি একলা খাড়াইয়া আছি। উনি আইসা আমারে জড়াইয়া ধরলেন। তখোন আমি ভাবতেছিলাম আরে, বিছানায় যিনি শুইয়া আছেন, লেপমুড়ি দিয়া উনি আমারে দেখতেছেন না তো আবার! মানে, উনিও তো আমারে ভালোবাসতে পারেন; এখন উনি যদি আমারে দেইখা ফেলেন, তাইলে কি উনি আমার সাথে আর আই লাভ ইউ করবেন! বা এমনো হইতে পারে যে, উনি একটু বেশি কইরাই চাইতে থাকবেন। আমরা দুইজনে তখোন বারান্দায় চইলা আসছি; ড্রেসিং-টেবিলের সামনে যিনি ছিলেন, আমরা দুইজনে জড়াজড়ি কইরা। আর বিছানায় উইঠা বইসা উঁকি দিয়া আরেকজন যে দেখতেছে, আমি আসলে তারেই জড়াইয়া ধরতেছি। শে ওইটা বুঝতে পারতেছে, আমি জানি। মানে আমি জানি বইলাই উনি জানতে পারতেছেন। আর যে আমারে জড়াইয়া ধরছে শে আসলে আমারে জড়াইয়া ধরতে চায় নাই। শে চাইতেছিলো আয়নায় ভিতরে দেখতে যে তারে কেমন লাগে যখন কেউ তারে জড়াইয়া ধরে আর এই কারণে শে জড়াইয়া ধরলো আমারে। আমি ধরলাম তারে। কিন্তু বারান্দায় চইলা গেলাম। কেমন একটা সন্ধ্যা! গ্লুমি ধরণের আলো। দিন চইলা গেলো। যাবে বইলাই জানতাম। হঠাৎ-ই যখন চইলা গেলো, তখোন মনে হইলো; সন্ধ্যা নামলো।
সন্ধ্যার একটা ক্যাফে’তে বইসা ছিলাম আমরা। আমি আর আমার ফ্রেন্ডের বউ। আমাদের আই লাভ ইউ নাই আর। ফ্রেন্ডের লাইগা ওয়েট করতেছি। তখন দেখি চশমা-পরা একজন লোক। আমার পুরান ফ্রেন্ড; এখন আর ফ্রেন্ড নাই সে। সে হাসে আমারে দেইখা। কয়, আরে তুমি এইখানে! তুমি এইখানেও আসো নাকি! হাসে। সে যা ভাবে, সেইটা যেহেতু সে বলে না আমিও বলতে পারি না। ওরে মনে মনে শুয়োরের বাচ্চা বইলা গাইল দেই আমি। সে মনে হয় বুঝতে পারে। এর লাইগা আরো হাসে। মজা নিতে চায়। আমি আমার ফ্রেন্ডের বউ’রে বলতে চাই; চলো, আমরা অন্য জায়গায় যাই। শে আমার কথা শুনে না আর। আমাদের শুনা-শুনি’গুলা শেষ হইয়া গেছে। শে খালি বইসাই আছে। তার হ্যাজব্যান্ডের লাইগা ওয়েট করে। আমার যে ফ্রেন্ড সে কি আসবে না, আজকেও!
Leave a Reply