ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতা আমি ফেসবুকেই পড়ছি। আমার ফেসবুক-ফ্রেন্ডদের অনেকেই উনার কবিতা শেয়ার দেন, তখন পড়া হইছে। উনার সাথে আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ডশীপ নাই, ছিল মনেহয় কোনসময়, বা এখনো থাকলেও উনার পোস্ট আমার নিউজফিডে আসে না। উনার কবিতা তো আছেই, কবিতার বাইরে এই আলাপগুলাও আছে উনারে নিয়া যে, উনি জনপ্রিয় কবি। মানে, একজন কবি দুই-তিন হাজার লাইক পান ফেসবুকে, এইটা তো বড় ব্যাপারই।
তো, উনি জনপ্রিয় বইলাই ‘খারাপ কবি’ – তা তো না; কিন্তু এর একটা প্রেশার উনি নেন মনেহয়। একজন পারফর্মারের জন্য এই এটেনশনটা খালি দরকারই না, বরং জরুরি একটা জিনিস, তার কাজের রিকগনিশন এইটা; কিন্তু একজন কবি’র জন্য ঘটনা’টা একইরকম না।
একজন কবি’র ইচ্ছার মধ্যে এইটা তো থাকেই যে, তার কবিতা সবাই পছন্দ না করলেও, উনি যাদের জন্য লেখেন বা যাদেরকে লাইক করেন, ইম্পর্টেন্ট মনে করেন, তারা উনার কবিতা লাইক করবে; কিন্তু এই এক্সপেক্টশনটার ভিতর কনজিউমড হয়া যাওয়াটা ঠিক না।… তো, ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতা নিয়া ঢাকার ‘সিরিয়াস কবি-সাহিত্যিক-সম্পাদক’রা’ এতোটা ‘উচ্ছ্বসিত’ না, আর এইখানে ‘জেলাসি’র কিছু কন্ট্রিবিউশন তো থাকারই কথা। কারণ উনার কবিতা ‘খারাপ’- এই কথাও কেউ বলেন না; বলেন, পপুলার! 🙂
এইরকম ‘ভালো’ কবি’র বাইরে ‘পপুলার কবি’ও বাংলা-সাহিত্যে আছেন বা ছিলেন; নাম হিসাবে, হেলাল হাফিজ, মহাদেব সাহা’র নাম মনে হইলো; মানে, উনারা যতোটা না ‘ভালো’ কবি, তার চাইতে ‘পপুলার কবি’ (ইভেন পপুলার না হইতে পারলেও)। তো, ইমতিয়াজ মাহমুদ এইরকম ‘পপুলার কবি’ হইতে চান – এইরকম আমার মনেহয় নাই, কিন্তু উনি এই রেইসটার মধ্যে ঢুকে গেছেন বা আছেন… (এইটা খারাপ বা ভালো, সেইটা পরের কথা)
বাংলা-কবিতায় উনার সিগনিফিকেন্স আমার কাছে মনে হইছে যে, উনি কয়টা ফর্ম বা প্যাটার্নরে ‘কবিতা’ হিসাবে এস্টাবলিশ করাইতে পারতেছেন। এইরকম না যে, এই ফর্মগুলা উনিই শুরু করছেন, বরং অই ফর্মগুলাতে ভালো পারফর্ম করতে পারছেন।
একটা সময়ে খেয়াল করলে দেখবেন মিডল-ক্লাসের ভিতরে শামসুর রাহমানের মতন কবিতা-লেখার ব্যাপার ছিল। (আল-মাহমুদের মতন লেখার চলও হইছে এখন।) প্যাটার্নগুলা কোন কোন সময় এতোটাই সরল যে, আপনি বুঝতে পারবেন, যেমন একটা ছিল “স্বাধীনতা তুমি” টাইপ; এইরকম ইমতিয়াজ মাহমুদের একটা টাইপ হইতেছে “দুই-লাইনে ছন্দ-মিল দিয়া” লেখাটা (এইরকম আরো কিছু টাইপ আছে মেবি…); এখন এইরকম লিখলেই মনে হবে – ‘কবিতা’! 😛
এইরকম কবিতার ফরম্যাটের বাজে দিক হইলো, একটা সময়ে অনেক সময় কিছু বলতে পারবেন আপনি ফরম্যাটগুলাতে; কিন্তু যতো কপি হইতে থাকবে, ততো ময়লা হইতে থাকবে, ফেড হইতে থাকবে, কবিতা হিসাবে। এখন শামসুর রাহমানের অই ফরম্যাট দেখবেন আর কাজ করে না, ‘কবিতা’ মনে হইতে পারে না।… কিন্তু এই ফরম্যাটের বাইরে যে শামসুর রাহমানের কোন কবিতা নাই বা ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতা নাই – তা না, কিন্তু এইভাবে পারসিভড হওয়াটা মেবি কবি হিসাবে ‘সাকসেসফুল’ হওয়ার ব্যাডলাক একটা 🙂
তো, শুরুতেই যেইটা বলতেছিলাম, উনার খুববেশি কবিতা আমি পড়ি নাই, কিন্তু পড়ার ইচ্ছা আছে; মাঝখানে ভাবছিলামও উনার বইগুলা কিনবো, কিনা হয় নাই আর; কিন্তু কিনবো হয়তো, তখন যদি পড়া হয় উনার কবিতা নিয়া আরো দুয়েক কথা বলার ইচ্ছা থাকলো।… আজকে দেখলাম উনার বার্থডে। এই কারণে “হেপি বার্থডে” বলার জন্য এইটা লেখা। হ্যাপি বার্থডে ইমতিয়াজ মাহমুদ!
Leave a Reply