কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে বাংলা-কবিতার ঠাকুরদেরকে শুভেচ্ছা

 

মূল কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বলাকা: ১৪

কত লক্ষ বরষের তপস্যার ফলে
ধরণীর তলে
ফুটিয়াছে আজি এ মাধবী ।
এ আনন্দচ্ছবি
যুগে যুগে ঢাকা ছিল অলক্ষ্যের বক্ষের আঁচলে ।
সেইমতো আমার স্বপনে
কোনো দূর যুগান্তরে বসন্তকাননে
কোনো এক কোণে
একবেলাকার মুখে একটুকু হাসি
উঠিবে বিকাশি—
এই আশা গভীর গোপনে
আছে মোর মনে ।

 

কবিতার অনুবাদ:

ইমরুল হাসান

লক্ষ বছরের তপস্যার কারণে আজকে পৃথিবীতে মাধবী ফুটছে। দেখা-না-যাওয়া’র বুকের আঁচলে অনেকদিন ধইরা সে ঢাকা ছিল। এইরকমভাবে আমার স্বপ্নে, অনেকদিন পরে, বসন্তের বাগানে, একটা কোণায় একটাবেলায় এই হাসি দেখা যাবে। আমার মনের ভিতরে, গোপনে এই আশা আছে।

_________________________________

 

মনু’র (রেজাউল করিম) রিকোয়েস্টে এই অনুবাদটা করছিলাম – রবীন্দ্রনাথের কবিতা থিকা ‘ছন্দ’ বাদ দিয়া দেখছিলাম, যা থাকে সেইটা কবিতা কিনা! যেহেতু কবিতা লিখার অভ্যাস আছে এই কারণে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের মতো ষ্ট্রেইট অ-কবিতা হইতে পারে নাই অনুবাদটা, শামসুর রাহমানের আধা-কবিতার মতো হইছে। কিন্তু এইটাতে অন্তঃত স্পষ্ট করা যায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতার জায়গাটা।

উনি ডেফিনেটলি ‘গুরু’, নানান কারণে; তবে গুরু হিসাবে উনি ‘গদ্যছন্দ’-এরও যে আবিষ্কর্তা –  এইটা তথ্য হিসাবে এইটা ঠিক না। কিন্তু ফ্যাক্ট নিয়া ফাইট করাটা এইখানে আমার বিষয় না। বিষয় হইলো, কবিতা কয়েকটা নির্দিষ্ট ছন্দে লিখা যায় না; কবিতা লিখার ভিতরেই অসংখ্য ‘ছন্দ’ থাকে। এই অসংখ্য ছন্দ আবিষ্কার করা যাইতেই পারে। কিন্তু ছন্দের ভিতর দিয়া কবিতা আবিষ্কৃত হবে – রবীন্দ্রনাথের এই বিশ্বাস, আমার নাই। এই ‘সত্য’ বাঙালি কবি’রা যখন ফিল করতে পারবেন, রবীন্দ্রনাথের কবিতা তখন স্পষ্টভাবে পড়া সম্ভব হবে। কিন্তু যাঁরা ছন্দের ভিতরে কবিতারে আটাইতে চান; তারা কেমনে রবীন্দ্রনাথরে না-পইড়া থাকতে পারেন! একজন কবি খালি নোবেল পুরষ্কার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সাফল্য পাইছেন বইলা তারে এতোটা ঈর্ষা, অপমান ইত্যাদি করাটা ঠিক না।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে বাংলা-কবিতার ঠাকুরদেরকে শুভেচ্ছা।

 

Leave a Reply