এই কবিতাগুলা সেপ্টেম্বর,২০১৭ থিকা ফেব্রুয়ারি,২০১৯, এই সময়ে লেখা।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
ফ্রিডম ।। দুপুরবেলা ।। রাইটার্স ব্লক ।। জুতা ।। বিনয় মজুমদার ।। পুরানা লিরিকস ।। ঘুরতেছে, একটা দুপুরবেলা ।। তুমি হাসলা ।। একটা চড়ুই ।। দেখি ।। না-থাকা ।। ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস ।। বটগাছ ।। ইনসেইন ।। ডোপামিন ।। হেলাল হাফিজ ।। মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড ।। আমি তোমার করলার ফুল ।। সকাল ।। তালশহর ।। কোন একটা ইউরোপিয়ান সিনেমা ।। কোন এক মফস্বলে, সন্ধ্যাবেলা… ।। আমি একটা পুরানা গান ।। ইয়েস্টারডে ।। কাঁটা ।। তুমি আমারে বুঝাইতেছো ।। দেজা ভ্যু ।। সাবজেক্ট ।। আমার ভুল ।। মর্নিং জ্যাজ ।। ডিম্পল ।। একটা চিন্তা থিকা একটা উদাহারণের মতন আলগা হয়া গেলাম আমি ।। পর্ণোগ্রাফিক ।। দুপুরের বার।। সমাপ্ত ।। একটা পাত্থর ।।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
ফ্রিডম
চলো মাছ, অন্য পুকুরে যাই
দুপুরবেলা
একটা ইলিশ মাছ কিনলাম আমরা
আমাদের বিল্ডিংয়ের উপর দিয়া বিকট শব্দ কইরা বিমান উইড়া গেলো
তারপর কয়েকটা চড়ুইয়ের ডাকাডাকির ভিতর
দুপুর চইলা আসলো ঘরে,
ঘুমায়া পড়লাম আমরা
বাইরে, কি যে রইদ!
উড়তেছিলো পাতা, ছিঁড়া কাগজ, নগন্য একটা দুইটাকা…
সিলিং ফ্যানটা ঘুরতেছিলো, একলা
আশ্বিন মাস,
রাস্তায় তাও আছে প্যাকঁ-কাদা
‘অইখানে থাইমেন না, অইখানে থাইমেন না…’
বলতে বলতে রিকশাটা থামছিলো সাইডে
হন্তদন্ত ঠ্যাংগুলি হাঁটতেছিলো…
গাছটার ছায়া নিরব হয়া আসতেছিলো
একটা টি-স্টলের কাছে
আমাদের নিরবতাগুলি নিরবতার ভিতর দিয়া নিরবতার সাথে কথা কইতেছিলো
একটা সময় ঘুমায়া পড়লো অরাও…
চড়ুইগুলি ডাকতেছিলো একটু পরে পরে
স্বপ্নে? নাকি বাস্তবে?
আমি মনে-ই করতে পারতেছিলাম না
রাইটার্স ব্লক
হেমিংওয়ের চা খাওয়া হইলো না
সলঝেৎসিনের সিএনজি’তে চড়লাম,
কবুতর নিয়া তিনটা ছবি তুলছেন উনি;
দস্তয়েভস্কি রিকশা চালাইতেছিলেন,
উঁচা বিল্ডিংয়ের জানালা দিয়া হাইকোর্ট দেখতেছিলেন ওরহান পামুক
রাস্তার অন্য পাশ দিয়া হাঁটতেছিলেন জেমস জয়েস
যাওয়ার সময় একটা ধাক্কাই দিলেন আমারে এলিজাবেথ বিশপ
একটা গলির ভিতর দিয়া হাঁটতে হাঁটতে আসতেছিলেন ববকাট চুলের শিম্বোরস্কা
‘ঢাকা শহরটা ভইরা গেছে বিদেশি দিয়া, বুঝছো?’ কইতেছিলেন সুসান সনট্যাগ,
কিছুটা প্লেফুলনেস আর বাদবাকি সিরিয়াসনেস নিয়া…
জুতা
আমার এক জোড়া জুতা
তোমার এক জোড়া জুতার পাশে
বইসা আছে, কোন সম্পর্ক ছাড়া…
বিনয় মজুমদার
ফিরে এসো, বাল!
পুরানা লিরিকস
তুমি ঘুরতে থাকা বাতাস
আমি দাঁড়ায়া থাকা গাছ
ঘুরতেছে, একটা দুপুরবেলা
আমি তোমার মতো ঘুরতে গিয়া
পথ হারায়া কোন বনে যাই হইতে নিয়া
দুপুরবেলা রইদের ভিতর ছায়া ছায়া
রাস্তার সাইড ধইরা হাঁটার পরে দেখি মা
ছেলে নিয়া যায় স্কুল থিকা আর হাঁটে যেন
হাঁটার মানে নাই কোন, নাই রিকশা আর
আসে, তারপর হাঁটতে গিয়া হাঁটি এমন
আমিও যেন একটা চিন্তার ভিতর
ঘুরতেছি, ফিরা ফিরা আসতেছি আর
তোমার যাওয়া, যাওয়ার ভিতরে বইসা বইসা
তোমার মতো, পিঠে ব্যাগ, ঘুরতে ঘুরতে
নাই, নাই আর নাই আর তারপরে
কোন বনে যাই? দুপুরবেলা বিকাল হইতে
থাকবে আর কতোদিন পরে? কতোদিন পরে
মনে হবে, আমরা আমাদের লগে আর থাকবো না…
তুমি হাসলা
আসো, কোন এক ইউরোপিয়ান ফিল্মের সিন হইয়া বইসা থাকি,
যেন কথা কইতেছি আমরা
অথচ ইংলিশ সাবটাইটেল ছাড়া কিছু বুঝতেই পারতেছি না
তুমি বলতেছো, ঠিক মতো ট্রান্সলেট করতে পারতেছো তো তুমি?
আমি তো এমনেই কনফিউজড, কইলাম
যারা দেখতেছে অরা কেউ তো আর এই ভাষা জানে না,
বা ধরো জানলোই,
ভুলভাল কথা কইতে পারবো না আমরা?
তুমি হাসলা,
যেন বাচ্চা ছেলের কান্ড মাফ কইরা দিলা…
তোমার হাসিও ট্রান্সলেট হইলো
কোন এক ইউরোপিয়ান ফিল্মের সিন হইয়া
একটা চড়ুই
একটা চড়ুই পাখি ভুল কইরা ঢুকে পড়ছিলো ঘরে। বিকালবেলায়, সন্ধ্যার আগে। কেমনে যে চইলা আসছিলো সে নিজেই জানে না।
ঘরে ঢোকার পরে খুবই ভয় পাইলো সে। টিউবলাইট’টা জ্বলতেছিলো। তার উপরে বসলো সে। গরম লাগতেছিলো মেবি তার ঠ্যাং’য়ে। সিলিং ফ্যানটা চলতেছিলো না। বাইরে বৃষ্টির আবহাওয়া। ফ্যানের একটা ব্লেডের উপরে গিয়া বসলো সে। জানালাটা একটু ফাঁক করা ছিলো, অইদিক দিয়া ঢুকছিলো মনেহয়। জানালাটা আরো খুইলা দিলাম আমি। দরজাটাও। তারপর, তারে খেয়াল করাটা বাদ দিলাম। এখন তো সে বাইর হয়া যাইতে পারবে, যে কোন দিক দিয়াই।
সন্ধ্যা নামলো। চড়ুইটা বাইর হইয়া গেলো কখোন যে, দেখিও নাই।
দেখি
আমি বইসা থাকি
তোমার দুই চোখে একবার করুণা
আর একবার মন-খারাপ আইসা বসে
আমি কথা কইতে থাকি
তোমার দুই চোখে একবার নিরবতা আর
একবার চাতুরি কথা কইতে থাকে
আমি বৃষ্টির গন্ধ লাগা আন্ধার
আন্ধার ঘুপচি একটা বারের
সন্ধ্যাবেলার বন্ধ জানালা হয়া থাকি
তুমি বাইরের দোকানের আবছা লাইটের মতো
আমারেই দেখতে থাকো খালি
না-থাকা
আমি নাই তোমার দেশে
তোমার দেশে আমার একটা
না-থাকা আছে
ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস
একলা একটা ঘরে একটা টিভি সারাক্ষণ আমার দিকে তাকায়া আছে
বটগাছ
শোনো বটগাছ, ওগো বটগাছ
আমার বটগাছ
তুমি বটগাছ হইয়া থাকো!
ইনসেইন
আমি আবার গিয়া বসছি তোমার কাছে। তুমি আবার চেইতা রইছো। আমি কিছু বুঝতেছি না। বুঝতেছি না যেহেতু আমারও চেত উঠতেছে। কিন্তু রাগারাগি’টা করতে পারতেছি না আমরা। যেহেতু বাইরে। যেহেতু আরো মানুষ-জনও আছে আমাদের সাথে। তুমি আড্ডা দিতেছো, তোমার ফ্রেন্ডদের লগে। পরে তোমার ফ্রেন্ডদেরকে বলবা, কি রকমের একটা বাজে লোক, জানোস তো না! কিন্তু সামনাসামনি কিছুই বলা যাইতেছে না। আমিও খোঁচা দেয়ার কোন চান্স খুঁইজা পাইতেছি না। এইদিকে বিকাল হয়া যাইতেছে সন্ধ্যা। রাত হইতেছে। আমাদের ঝগড়া’টা আমরা শুরু করতে চাইতেছি আবার। শুরু’র আগে, আমি গিয়া বসছি তোমার কাছে। তুমি ভাব নিয়া বইসা আছো। আর যেহেতু তুমি পাত্তা দিতেছো না, আমি কি ঠিক আমি কিনা সেইটাই আমি বুঝতে পারতেছি না। তোমার কনফার্মেশনের লাইগা বইসা রইছি। তুমি কখোন তাকাবা, আর আমি তোমার চোখের দিকে তাকায়া বুঝতে পারবো যে, এই আমি’টা আমি-ই কিনা। তুমি তাকাইতেছো না। আমি কনফিউজড। ঝগড়াটা কি আমরা শুরু করবো না? আবার?
ডোপামিন
অনেক অনেক ডোপামিন জমা হইলো;
অনেক অনেক ডোপামিন
বারুদে আগুন ধরাই, আসো
বৃষ্টির পানিতে ভিইজা যাওয়ার আগে
বৃষ্টির ধারণার ভিতরে পোতাইয়া যাওয়ার আগে
আমার ডোপামিন,
ডোপামিন তুমি
থাকো;
মগজের ভিতর কিলবিল
নড়তে থাকা কেঁচো, মাটিতে সার যেমন
ফার্টাইল করতে আছো
একটা বীজ আসে বাতাসে,
তুমি তারে গাছ বানায়া ফেলো
ধীরে ধীরে, শরীরে বাসা বানায় সে
ডোপামিন, টের পাই তখন
তুমি আছো
আমার ডোপামিন
ডোপামিন তুমি
ওভার-ডোজড
একদিন মাইরাই ফেলবা, তবু…
হেলাল হাফিজ
এই নাও একটা লাইক, তোমাকে দিলাম
মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে
মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে আইসা বইসা রইছি। চায়ের দোকানে। দুপুর দুইটা বাজে। রইদ। মানুষজন কম। চায়ের দোকানদার চা বানাইতেছে। জিনিসপত্র গুছাইতেছে। আমি আইসক্রীম খাইলাম। তারপর দুধ চা, চিনি ছাড়া। কয়েকটা রিকশা দিয়া আসতেছে কয়েকজন মানুষ। রইদ বাড়তেছে আরো। রাস্তার গর্তে বৃষ্টির পানি শুকাইতেছে। আমি রিকশাগুলি দেখতেছি। রিকশায় মানুষগুলি। এইরকম কোন একটা রিকশায় আসতেছো তুমি। আমি ভাবতেছি। কি যে রইদ! এইরকম রইদ তো আছে, চরপাড়া’তেও মেবি। আমি রইদের সাইডে বইসা রইছি। রইদ দেখতেছি। বইসা থাকতে ভাল্লাগতেছে। আমি জানি, তুমি আসতেছো! এইরকম জানতে পারা’র ভিতর চুপচাপ একটা গাছের মতন শান্ত হইয়া বইসা আছে দুপুর। মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে। চা’য়ের দোকানে আমি বইসা বইসা মানুষ দেখতেছি। তুমি আসতেছো! কি যে ভালো লাগতেছে আমার! তুমি যে আসছো!
আমি তোমার করলার ফুল
আমি তোমার করলার ফুল;
দুপুরবেলা, বৃষ্টির পরে
তিনতলার একটা ছাদের উপরে ফুটে আছি,
বনানীতে
অথবা ধরো বসুন্ধরা অথবা
গাইবান্ধায় অথবা সিলেট অথবা চিটাগাং অথবা
কোন এক জায়গায়
আমি আছি;
তোমার করলার ফুল হইয়া
আমি ফুটে আছি
তুমি দেখবা বইলা, দুপুরবেলা, বৃষ্টির পরে…
বলবা, “আমি একটা করলার গাছ লাগাবো,
এইরকম একটা করলার ফুল থাকবে
আমার বারান্দায়…”
আমি ফুল, হাসতে হাসতে দেখবো তো তখন,
তোমারেও
সকাল
তোমার পায়ের উপড়ানো নখও নতুন হইয়া উঠবে
আমার শরীরের ফ্যাকাশে চামড়ার সাথে মিইশা যাবে তোমার দাঁতের দাগ
একই রাস্তায় বারবার হাঁটতে হাঁটতে ভুইলা যাবো
কখোন ঘটছিলো যে কি, কোনদিন, রাত তিনটায়…
ইন্ডিভিজ্যুয়াল টেররের ভিতর হারায়া যাবে
সোশ্যাল স্টিগমা
ঘুমের ভিতর দুঃস্বপ্নে চিল্লায়া উঠতে উঠতে
মনে হবে, এইসব কোনকিছুই তো আর ঘটতেছে না!
একটা আয়না,
আয়নার ভিতরে আটকা পড়ে আছি আমরা
বাইর হয়া আইসা হাসতেছি, বলতেছি
“কি যে সব মেটাফোরিক্যাল ব্যাপার-স্যাপার এইগুলি,
সত্যি তো আর না!”
একটা সকাল ডুবে যাইতেছে চা’য়ের কাপে
রইদ জাইগা উঠতেছে রাস্তায়…
যা কিছু আছে, যা কিছু নাই
কই যে ছিলো তারা, আর কই যে যাইতেছে
আমি ভাবতে চাই না আর তুমিও বললা,
“চলো, ভুইলাই যাই!”
অন্য আরো কতো কতো রিয়ালিটি আছে তো দুনিয়ায়
আর আমি ভাবতেছি,
এই একটু রইদের কণা, তোমার চুলের ডগায়
কেনো থাইকা গেলো না, আরেকটু সময়…
তালশহর
জীবনের ছোট ছোট ডিসট্যান্সগুলিই কখনো পার হওয়া হয় না
ভৈরববাজার থিকা মেঘনা নদী পার হয়া
আশুগঞ্জে গেলাম আমি
তালশহর আর কোনদিনই যাওয়া হইলো না…
একটা ইউরোপিয়ান সিনেমা
একটা ইউরোপিয়ান সিনেমাতে আমরা অ্যাক্টিং করতেছি
ইউরোপিয়ানগুলি এতো বেশি ইন্ডিভিজ্যুয়াল, বুঝছো?
আমার তো ভাল্লাগতেছে না!
আমি তোমারে বলতেছি, চলো আমরা সিনেমাটা থিকা বাইর হয়া যাই, অনেক গ্লুমি লাগবো পরে…
তখন দেখি তুমি আরেকটা সিনে চইলা গেছো,
কার কার সাথে জানি, অন্য আরেকটা কাহিনি’তে,
আমার কথা শোন-ই নাই,
অন্য কাহিনি’তেও তুমি একই আছো;
মুভিটা নন-লিনিয়ার
আমি যতোই ট্রাই করি ফিরা আসতে
পারতেছি না আর;
সাইডে দিয়া চইলা যাই, চিল্লাই
কিন্তু ক্যামেরা আর আমারে দেখে না
যেহেতু আমি আর নাই
আমি তো কিছু কইতেও পারতেছি না তোমারে,
ক্যামেরা’র পিছনে, সাইড-টাইড দিয়া ঘুরতেছি,
যদি কখনো চান্স পায়া যাই, তোমারে জিগাবো আবার,
‘একটা ইউরোপিয়ান সিনেমার দুনিয়া থিকা আমরা কি গো আর বাইর হইতেই পারবো না?’
কোন এক মফস্বলে, সন্ধ্যাবেলা…
কোন এক মফস্বলের সন্ধ্যাবেলা। শুইয়া আছি বিছানায়। জানালা দিয়া দেখতেছি, সামনের বাসায় টেবিলে পড়তে বসছে দুইটা ছেলে আর মেয়ে। তুমি রান্নাঘরে কি জানি টুং টাং করতেছো। জিগাইতেছো, চা খাবো কিনা। আমি ভাবতেছি, এই তিরিশ বছর বয়সের স্বপ্ন কেন আমি দেখতেছি? যদি তুমি রান্নাঘর থিকা বাইর হয়া আসো আর দেখি অন্য কেউ আর তখন তো বুইঝা ফেলবো এই শুইয়া থাকা লোকটাও আমি না; কোন একটা কারেক্টার, অ্যাভারেজ কোন একটা গল্পের। আমি কোন কথা বলি না। আমি ভাবতে থাকি, কোন এক মফস্বলের সন্ধ্যাবেলা। অফিস থিকা ফিরা’র পরে শুইয়া আছি আমি। জানালা দিয়া দেখতেছি, অনেকগুলি টিভি চ্যানেলের মতোন অনেকগুলি জানালা, দেখাইতেছে দৃশ্যগুলা। তুমি আছো রান্নাঘরে। তুমি যে আছো, এই শান্তি নিয়া আমি শুইয়া আছি। আরেকটা ঘরে। কোন এক তিরিশ বছর বয়সের কথা।
আমি একটা পুরানা গান
আমি একটা পুরানা গান
সুরটা তোমার জানা, একই তো টিউন
ভাল্লাগে না আর, তুমি বললা
আমি হাসলাম, জীবন ছোট্ট আর
আমরা’র দরকার আরো অনেক
নতুন নতুন গান
আমি একটা পুরানা গান
খামাখাই বাজতে চাইলাম,
আবার, আবার…
ইয়েস্টারডে
তার পর দিন
তার পরের দিন
তার পরের দিনের পরের দিন
ইয়েস্টারডে
থাকবে না তো
আর
একটা কাঁটা
একটা কাঁটা
রাস্তার মাঝখানে
জ্বলজ্বল করতেছিলো
আমি তারে তুইলা নিয়া
কবর দিলাম
রাস্তার সাইডে
কইলো শে আমারে আইসা
একদিন স্বপ্নে,
বিঁধতে তো পারতাম আমি একবার
তোমার পায়ে!
তুমি আমারে বুঝাইতেছো
কেমনে যে বুঝাও তুমি,
আর আমি বুঝি, ‘হ, ঠিকই তো, এইরকমই…’
তারপর বুঝতে পারি,
আমি তো বুঝতেই চাইছি,
কি কি বুঝাইতেছো সেইটা আর
ইর্ম্পটেন্ট না তো!
তুমি বুঝাইতে থাকো, তারপরও
‘এইটা হইলো ওইটা আর
ওইটা ছিলো সেইটা…’
তুমি যে আমারেই বুঝাইতে চাইতেছো,
এইটাই তো ভালো!
এইটার সত্যি-মিথ্যা দিয়া আমি কী করবো…
দেজা ভ্যু
তোমার শরীর জড়ায়া ধরলো
শরীর’রে আমার, কইলো
“আই লাভ ইউ!”
ভালোবাসা, কালা একটা বিলাই
কালা একটা অন্ধকার ঘরে, নিরবে
হাঁইটা গেলো।
সাবজেক্ট
“কোন সাবজেক্ট তো নাই,
আসো তোমারে সাবজেক্ট বানাই,” আমি বলি।
“এই নাও তোমার সাবজেক্ট,” তুমি হাসো,
ক্যামেরার সামনে একটা অপরাজিতা গাছের বাড়তে থাকা ডালের মতো;
তোমার হাসির ভিতর
পানির ফিল্টারের একটা ট্যাপ
তাকায়া তাকায়া দেখে আমাদেরকে
দুইটা মানুষ গড়ায়া গড়ায়া পড়ে যাইতেছে
একটা সাবজেক্টের চিন্তার ভিতর
কোন কারণ ছাড়াই…
আমার ভুল
আমি সারাজীবন ধইরা চাইছি সারাজীবনটা থাক
আমি হাজারবছর ধইরা চাইছি হাজারবছরটাও থাক
কিন্তু দেখো, এই যে গ্রামার, বানান-ভূল আর চিন্তার ফাঁকিবাজি আমার
এইসবকিছুই থাকতেছে আর
তুমি বলতেছো আমারে, এইটা এইটা তো ভুল!
সারাজীবন আর হাজারবছর
মাথা নিচু কইরা বইসা থাকতেছে তখন
কিন্তু তারপরও, থাকতেছে…
মর্নিং জ্যাজ
ইউটিউবে একটা রেডিও’র লাইভ স্ট্রিমিং শুনতেছিলাম, মর্নিং জ্যাজ। সাইডে চ্যাট বক্সে অনেকে কমেন্ট করতেছিলো, মোস্টলি কে কোন জায়গায় আছে, সেইটা বলতেছিলো। কেউ কইতেছিলো, হাই, আই অ্যাম ফ্রম ইন্দোনেশিয়া, আই অ্যাম ইন কানাডা, সিওল… এইরকম। একজন লিখলো, আই অ্যাম ফ্রম মার্স। তো, মানুষ আসলে খুব বেশি দূরে যাইতে পারে না, পৃথিবী ছাইড়া ওই মঙ্গলগ্রহ পর্যন্তই যাইতে চায়। আমি নিজেও এন্ড্রোমিডা’র বেশি ভাবতে পারলাম না। একই তো ইউনিভার্স!
ডিম্পল
তুমি নাই বইলা আমি আর. ডি. ল্যাং’রে খুঁইজা বাইর করলাম
পিকি ব্লাইন্ডার্স ডাউনলোড করলাম
এই-সেই করতে করতে শেষে
ডিম্পলের আন্ধারে গিয়া বসলাম সন্ধ্যাবেলায়
পাশের চেয়ার’রে কইলাম, ‘আমি তো আছি, তাই না?’
শুইনা চেয়ার’টা হাসে, টেবিল’টা কুঁচকায়া তাকায় একটু
তারপরে অরাও উদাস হয়,
কয়, ‘হ, আমরাও তো আছি…’
থাকতে থাকার নামে কতকিছু যে থাকে,
যেমন আছে, তোমার কয়েকটা ছবি, তুমি নাই’টাও তো থাকেই…
একটা চিন্তা থিকা একটা উদাহারণের মতন
আলগা হয়া গেলাম আমি
একটা চিন্তা থিকা
একটা উদাহারণের মতন
আলগা হয়া গেলাম
আমি
আর তারপরে দড়ি-ছিঁড়া
বাছুরের মতোন
একটু দূরে গিয়াই
খাড়ায়া রইলাম
দেখলাম,
তুমি আমারে
দেখো কিনা…
একটা চিন্তা থিকা
একটা উদাহারণের মতোন
আলগা হয়া রইলাম আমি
তোমার কাছ থিকা
তারপরও থাকতেছি
যে কোন একটা
উদাহারণের
মতন
নট নেসেসারি
যে
উদাহারণ একটাই,
আরো আরো
উদাহারণ হইতে পারে
তো
চিন্তার;
আরো আরো
রিলিভেন্স
থাকতেই পারে,
এইরকম
একটা অপশন
আমি
তোমার;
ভাষার ভিতরেও
আমি
একটাই
হইতে চায়
আর কয়,
অনেকগুলি তুমি
জানি
আছো;
অথচ
যেই তুমি
অনেক,
একজনই
তো;
তারপরে
লিখলাম,
তুমি একটা কথা,
কথার ভিতর
তুমি
থাকলা
একটা তোমারই মতন;
আর
আমি
তখন উদাহারণ
হয়া
তোমার পিছন পিছন
একটা গাছ
থিকা
পইড়া যাওয়া
একটা পাতা
হলুদ
শীতের দুপুরে
ঘুরতেছি
একলাই;
তারপরে
রাস্তায়
ধূলায়
আরো আরো
ধূলা-বালির সাথে
‘আর কে জানি
আর কে জানি…’
উত্তরের বাতাস
আইসা
ইনকোয়ারি করে,
পাওয়ারে না-পায়
হারায়
সন্ধ্যার আকাশও
কয়,
‘কোন মেমোরি
তো
নাই’
পর্ণোগ্রাফিক
এইটা তো সত্যি কথা
আমি তোমার শরীর’রে মিস করি
শামুকের মতন মসৃণ পাছাতে হাত বুলাইতে বুলাইতে আমি
যেমন ভাবতে পারতাম সমুদ্রের কথা,
পিঠে ঠোঁট ঘঁষতে ঘঁষতে যেমন মনে হইতে পারতো দুপুরবেলা
কোন মাঠে হাঁইটা যাইতেছি আমি,
যেমন ঘাড়ের কাছে লুকাইয়া থাকতো কোন
ঘামের নদী
ছোট ছোট চুলের ভিতর মন-খারাপের বন,
চড়ুইয়ের ডাকের মতন নিঃশ্বাস
আর যখন আমরা চুমা খাইতাম
লালাগুলি দিয়া মুখের, একটা নদীর পানি
যেন মিশতেছে আরেকটা নদীর সাথে
তোমার পেটে হাত রাখলে মনে হইতো
এই নাড়ি-ভূঁড়ির জীবনটাই তো আমাদের খনি
সীসার মতোন, ইস্পাতের মতোন উঠে আসতেছে
চেরি ফলের গন্ধ আর আমরা টাইম আর টাইমরে হারায়া দিতে
ঘোড়া দৌড়াইতে দৌড়াইতে যাইতেছি…
আমাদের জীবনের পিপাসা মিটতেছেই না
কুয়া থিকা পানি উঠতেছে,
কলসি ভরতেছে না;
তোমার শরীর, আমি মিস করি তো!
আমি মিস করি তোমার শরীর, তোমার চোখও,
যা দেখতে থাকতো আমার শরীরটারে, যে
এই শরীর এতোটা সুন্দর কিছু তো না,
পর্ণোগ্রাফিকই বরং
কিছুটা।
দুপুরের বার
দুপুরের বারে আমি ছাড়াও বইসা আছে
আরো ফকিন্নি দুইজন
একজন বিজনেস করেন, আরো দুইজনের লাইগা বইসা আছেন
এইরকমভাবে সিঙ্গেল পেগ খাইতেছেন
পাশের টেবিলের জন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন, ঢাকায় আসছেন
বেড়াইতে, ফ্রেন্ড নাই কোন মনেহয়,
বিয়ারের দাম আবার বাড়াইছে বইলা কিছুক্ষণ চিল্লাইলেন,
বিদেশে থাকলে ঢাকা শহর’রে যেইরকম চিপ মনেহয়, এইরকম তো না
একটা হ্যানিকেন বিয়ারের দাম ৫০০ টাকা,
আর দুপুরবেলা যেন আমাদেরকে দয়া করতেছে
বারের লোকজন, বসবার একটু জায়গা দিয়া;
যেন রেস্টুরেন্টই এইটা, খালি ড্রিংকসও সার্ভ করে
এইরকমভাবে বইসা থাকার ট্রাই করতেছি আমরা
তারপরও
ফকিন্নির মতোই লাগতেছে আমাদেরকে
আমাদের লোনলিনেস তিনটা টেবিলে
তিনটা পাশাপাশি কলাগাছের মতন
খামাখাই
দাঁড়ায়া আছে।
সমাপ্ত
ওকে বস, চলেন তাইলে…
আমরা পথ হাঁটতেছি
আমাদের পথে পথে ছড়ায়া আছে
অনেক পেয়ারা’র গাছ, অনেক পুকুর, অনেক ঘোড়া
অনেক সুবজ সুন্দর গাছ আর ঘাস, অনেক অনেক ছায়া আর
মৃদু-মন্দ আমরা হাঁটতেছি
তুমি ভুলে গেছো আর মনে করতেছো
গতকাল রাতে তোমার প্রেমিকের আদরের স্মৃতি আর
নতুন কোন প্রেম আসতেই তো পারে আবার, ভাবতেছো
আর শীতের বাতাসে ঝইরা পড়তেছে পাতাগুলা
আমাদের পায়ের কাছে
মড় মড় শব্দ কইরা তাদের পাড়াইয়া যাইতেছে
আরো কিছু মানুষ আর কুত্তা
আমরা দুইজন গাধা, হাঁটতেছি শেষে
ওক্কে, ঠিকাছে!
চলেন বস, তাইলে যাইগা!
এইরকম একটা সিনে, সিনেমায়
কালা পর্দায় লেখা উঠতেছে শাদা কালিতে
‘সমাপ্ত’
ছবিঘর সিনেমাহল থিকা বাইর হয়া দেখি,
একই তো সন্ধ্যাবেলা
বাইরেও, একই সিনেমা যেন চলতেছে
একই একই গান আমরা গুনগুনাইতেছি
সিনেমা শেষ হওয়ার পরে শুরু হইতেছে
আরেকটা সিনেমা
একটা পাত্থর
একটা পাত্থর সরানোর ট্রাই করতেছি অনেকক্ষণ ধইরা।
পাত্থরটা সরতেছেই না।
অনেকক্ষণ পরে বুঝলাম, পাত্থরটা আসলে নাই।
পাত্থরটা আমি বানাইছি আমার লাইগা।
পাত্থরটা এই কারণে সরতেছেই না।
আমি ভাবতেছি, এইটা তো নাই!
না-থাকা পাত্থরটারে তারপরও আমি সরাইতেই পারতেছি না।
Leave a Reply