কবিতার বই: গান

We are ugly, but we have music – Leonard Cohen

…………………

গান গাই আমার মন’রে বুঝাই
মন তাকে পাগল-পারা

/শাহ আবদুল করিম
………….

গান ১

কার জানি, কি জানি
কই ও কোথায়
আসলো পৌষ ও মাঘ
হরে দরে দৃশ্য বিলাইতেছে
ক্যামেরাগুলা
শাট! শাট! শাট!
লে-অফ হইতেছে পাটকল
লে-অফ হইতেছে চিনিকল
আসতেছে চুতমারানিরা
কল কল ছল ছল
গান গাইতে গাইতে
ভিজা যাইতেছে
জামা জুতা মোজা
একে তো শীতকাল
বসন্ত আসলে না জানি
শুরু হবে আবার কোন চোদা!

গান ২

এই গান, বুঝছো
আমরা গাবো
গোবেচারা গোরুগুলি
একটু দূর থিকা
বড় বড় চোখ নিয়া
আমাদেরকে দেখবে
(অদেরকে লাগবে, সিনে
অডিয়েন্স হিসাবে)
আর আমরা এই গান
গাবো, বুঝছো?
কতো সুখ
কতো আনন্দ
শীতের দিনের
গরম পেশাবের মতো
আমরা বাইর হয়া যাবো
সারারাত সা রা রা ত
এই গান গাবো
চাঁদ নিয়া মাথার উপ্রে
ধীরে ধীরে হাঁটবো
গলিতে কুত্তার ডাকে
হা হা হাইসা উঠবো
কু কু কু গান
আমরা মনে নিয়া
বলবো, এই গান
এই গানটাই, বুঝছো!

গান ৩

ঝরে পড়তেছে তোমার
বুঝতে পারা’র ঝোল
কাঁচা হাড়ি ফুটা হয়া
টপা টপ টপ

আর মন-মাঝি
গাইতেছে গান
শুকায়া যাওয়া নদীতে
নিয়া বৈঠা ও বোট
ও মন চোদনা রে…


গান ৪

শরীর পবিত্র
তার চাইতে পবিত্র হৃদয়
নিয়া চুদাচুদি শুরু করার আগে
জিগায়া নিবা, কন্ডম আনছেন তো?

তা নাইলে বলবা, মাল ভিত্রে পড়লে
আমি কিন্তু এবরশন করায়া নিবো

খামাখা আবেগ কমায়া রাখা তো ভালো

আর তখন কমন নিরবতার ভিত্রে
হাসাহাসি শুরু হওয়ার আগে
বাবা-খাওয়ার পরের গান
গাইয়া উঠবেন
নুসরাত ফতেহ আলী খান

দমা দম মাসকালান্দার…

গান ৫

গন্দমে গান
ভাইসা যাবে
টো টো টো
টাইমের ভিতরে
আমরা আঁকুপাঁকু প্রাণ
এক কোষি অ্যামিবার মতন
আলাদা হয়া যাবো আবার
গাইতে থাকবো গান
গন্ধযুক্ত গেন্ডারিয়ার
ও পুরান ঢাকা, ও পুরান ঢাকা রে
পুটকি মাইরা গেলো আমায়
সরোয়ার্দি’র হিজড়া রে

গান ৬

যদি অরা
লিখে ফেলে কোনদিন
আমাদের গান,
আমরা বলবো,
ধুর!
এগ্গলা তো আমরা না
আমরা পথে পথে
ট্রাফিক জ্যাম
পেঁ পোঁ আওয়াজ
রিকশার ক্রিং ক্রিং
একটা দুপুরের বিকাল হইতে থাকার
ইল্যুশন
বিকালের চাঁদ উঠে গেছে
আকাশে তখন
বেগম আকতার পজ
হয়া আছেন মোবাইলে
আর একটা কল
বাজতেছে ধরেন
যেই রিং-টোন আপনি
বদলাইতে ভুলে গেছেন
কোন এক গ্রুপ অর্গির
পরে
পইড়া আছে যেমন
নেতানো ধোন
আর
‘হাত রেখে তোমার বুকে’
অরা আবার লিখবো গান
হেই সামালো ধান হে
হেই সামালো ধান….

গান ৭

এই যে আমরা, আমাদের হাসি-খুশি মন নিয়া
বইসা থাকলাম না, জোকস-টোকস কইলাম না
সিগ্রেট ধোঁয়ার মতন সময়রে উড়ায়া দিলাম না
কইলাম না যা কিছু কইতে পারতাম, বা বারবার
বলতে বলতে যা আর বলতে ইচ্ছাও করে না

আমরা, যাদের আমরা বইলা কিছু নাই আর
যারা ভুলে গেছি, যারা কোনদিনই ভুইলা যাবো না
বইলা ঠিক করছি, কে ছিলাম, কি ছিলাম বইলা
কোন কবিতা লিখলাম না, গান গাইলাম না

কষ্ট কি একটু কম হইলো আমাদের?

গান ৮

আর গান
গাইতে ইচ্ছা
করে না,
অরা আমার
গলার ভিতরে
বইসা বইসা বলে
এইটা না অইটা
অইটা না সেইটা
আমার আর
কথা কইতেই
ইচ্ছা করে না,
মনেহয়
আমি যেন
একটা গান
যেই গান
তুমি
কোনদিন
গাইবা না
আর

গান ৯

বন্ধু আমার চুতমারানি,
গান গায় আর হাসে, কয়
চিনলা না আমারে তুমি!

গান ১০

এইখানে না, এইখানে না
অরা কইলো, অরা কইলো
আমি দেখলাম, আমি দেখলাম
কি যে ঝলমল অদের চোখগুলা
কি যে আনন্দ অদের মুখগুলায়
অরা বলতেছিল আমারে
এইখানে না, এইখানে না
আরেকটু দূরে, অই ঝোপটার কাছে, অন্ধকারে
অরা হাসতেছিল, অরা হাসতেছিল
অরা গান গাইতেছিল ভালোবাসার
আমি মুততেছিলাম, আমি মুততেছিলাম
আহ্, ভালোবাসা! আহ্, ভালোবাসা!
এইখানে না, এইখানে না…

গান ১১

আমরা জন্মাইলাম
আর মারা গেলাম
আমরা কোটি কোটি প্রাণ
কোটি কোটি প্রাণরে
ভেঙ্গাইলাম,
গান গাইলাম,
চুপ থাকলাম
৩২টা পজিশনে
যারে সামনে পাইলাম তারেই
চুদলাম; আর তারপরে
কইলাম, “জীবন
এইরকমই!”

গান ১২

অনেকগুলা ঘুণপোকা
আমাদের শরীরের ভিতর
গাইতেছিল গান

হুমম, হুমম… হ, সেইটাই
এইরকমই তো…
বলতে বলতে, বলতে বলতে

ঘুমায়া পড়তেছিল অরা
একটানা অই সুরের ভিতর
যেন আমাদেরই আরেকটা শরীর

গান ১৩

চলে যাইতেছে ট্রেন সকালের, ঝরঝরা রইদের ভিতর
গুনগুন করতে থাকা একটা গানের মতন
যেই গান আমরা ভুলে গেছি, যেই গান আমরা মনে রাখি নাই…

গান ১৪

একটু ফেইম-ই তো চাইতেছে,
দিয়া দাও অদেরকে!
চাইটা-পুইটা খাক,
ভালো থাকুক, ভালো বাসুক
ফুলের গন্ধে, মন-আনন্দে
ফুলে ফুলে মধু নিয়া
হয়া থাকুক অরাও ফুল,
আর গান গাইতে গাইতে
হারায়া যাক
হ্যামিলনের ইন্দুরগুলার মতন;
বাঁশিওলার ছবি আঁইকা দিয়া
বলুক, “শোন, ব্যাকগ্রাউন্ডে
বাঁশি বাজতেছে
পোঁ পোঁ পোঁ…”

পোঁ পোঁ পোঁ
পোঁ পোঁ পোঁ

গান ১৫

জুবুথুবু, থুবুজুবু
বুজুথুবু, বুথুজুবু
কতো কিছু, কতো কিছু
যে আছে মানুশের মনে
আর দুনিয়ায়,
তুমি কি জানো?
তুমি কি জানো?
জিগাইতেছিল
আমারে তোমার গান,
তুমিও কি ভালোবাসো
নুসরাত ফতেহ আলী খান?
আমি যে কি প্রেমে পড়ছি তোমার!
আমি বললাম, থ্যাংক ইউ!
আর গান তখন রাগে গর গর
গর গর গর গর
করতেই থাকলো,
করতেই থাকলো,
আমি জুবুথুবু থুবুজুবু
মিসোজনিস্ট, ফেলোসেন্ট্রিক…
আর কি কি কি হইতে হইতে
একটা অন্ধকার ফুটবলের মতো
অন্ধকারে ঘুরতে ঘুরতে
যে কোন একটা গান
যে কোন একটা গানরেই
জিগাইতে চাইলাম, বলো তো
জোনাকিদের পুটকি-ভর্তি
কেন এতো আলো?
গান রইলো নিরুত্তর।
গান আবার গিয়া
কারে জানি কইলো,
জানো, কি যে প্রেমে পড়ছি
আমি তোমার!
অরা তখন আবারো
গান, আবারো শাহবাগ
যাইতে আসতে
আসতে যাইতে
পায়ের নখ উপড়ায়া
ফেলতে গিয়া কইলো,
নয় মন ঘি তো
এটলিস্ট দরকার!
আমি পঁচা শামুকের
মতন
রাস্তার
কোণায়, দেখি
সিন্ডারেলা পা তাঁর
হাঁটতে হাঁটতে
চলে যাইতেছে
ঐ সুদূর নীলিমায়…
‘ফাক ইয়োরসেলফ!’
বলতে বলতে
যেইরকম সন্ধ্যাবেলাগুলা
রাতের ভিতর চলে যায়,
আর গান
ক্যাসেটের ফিতার ভিতর
ইন্টারনেটের স্লো কানেকশনের ভিতর
আটকায়া থাকে,
ফিরা আসতে পারে
না
আর

গান ১৬

বাতাসের মতো এই গান
বাতাস জাউরা কিসিমের,
বাতাস, সন্ধ্যার
পাল্টায় জবান;
বলে, আমারে তুমি ভালোবাসো নাই!
আমারে তুমি ভালোবাসতে তো পারতা!
বাতাস উল্টা-পাল্টা,
বাতাস ঘুরতে থাকে
তারে আমি বলি না তাঁর নাম,
সে আমারে বলে,
আমি জানি, তুমি
আমারে ভালোবাসো নাই,
গাছের পাতাগুলারে ঝাঁকায়,
অরাও হাসে, অরাও গান গায়
কয়, কি ফালতু লোক একটা!
বাতাস আসে আর বাতাসে
ভাসতে থাকে গান
বসন্তে, ভালো না বাসার

গান ১৭

গান কেন ভালো?
একটা কারণ হইতেছে যে,
যেহেতু গান, সুরটাই আসল
সুরে সুরে যে বলা হইতেছে, সেই
ঘটনা’টা; কথাগুলা আছে, কিন্তু
সুরের ভিতর দিয়া যেহেতু
বলা হইতেছে, কথাগুলাও
অন্যরকম তখন; যা কিছু
যে কোনকিছুই বলা যাইতেছে;
গানে তো বলা যায় সবকিছুই!
গান না অইটা! গান-ই তো!
গান বইলাই যেন ভালো,
যেমন আমরা বিপ্লব করতেছি,
বিপ্লব করতেছি বইলা খুনও
করতে পারি; প্রেম করতেছি
বইলা বাটপারিও করতে পারি;
এইরকম কথাগুলা আছে আর কি,
থাকতে থাকতে একটা সময়
নাই হয়া যায়, না-থাকতে
থাকতে ফিরা আসে আবার,
“কথাগুলি হইতেছে গান”
গান বুঝাইতেছে আমারে,
আমি জানি, কিন্তু আমি
গান’রে বলি, তুমি কি জানো
সেক্স করার সময়
তোমারে হাই ভলিউমে বাজানো হয়,
যেন কেউ শুনতে না পায়
দুপুরবেলায় আমাদের মোওন?
গান হাসে, গান ভালোবাসে
আমাদের উইয়ার্ড কথাগুলি
আর পুরাতন মন

গান ১৮

কথাদের দোষ
একটাই
অরা খালি গান হইতে চায়

গান ১৯

দুপুরের বার,
কেউ নাই আর
ভূতের মতন কয়টা বারটেন্ডার
ঘুরে বেড়াইতেছে দিনের বেলায়
নাই কোন কাস্টমার
কাচের গ্লাসগুলাতে পিছলায়
আলো আর অন্ধকার
অরা বইসা আছে,
কখোন আসবে সন্ধ্যা,
কখোন আসবে রাত!
মাতাল হয়া কোন বুড়া
চিল্লায়া উঠবে,
চুতমারানি চাঁদ!
ঝলমল কইরা উঠবে চারপাশ,
আর টিভি’তে
হিন্দি-সিনেমার গান,
সাত্বনা দিবে তারে
যেই প্রেম ছিলো না তার
যেই প্রেম সে সিনেমায় দেখছে
কবিতায় পড়ছে, গানে শুনছে
ভাবছে, আরে, এইটাই তো লাইফ!
আর তার লাইফ সে
মদ খায়া উড়ায়া দিতেছে…
লাল দোপাট্টার মতন
উড়ে যাইতেছে,
আর ভাবতেছে সে
যে কোন একটা গান
যে কোন একটা গান আইসাই যেন
বাঁচায়া ফেলবে
আমাদেরকে
এই ক্রুয়েল জীবনের হাত থিকা,
নিয়া যাবে চাঁদের দেশে

হাহ্, চুতমারানি চাঁদ…

গান ২০

সকালের ভিতর
চোখ বন্ধ করে
শুইয়া থাকে
অনেকগুলা
সকালের চোখ,
গান গায়
অস্পষ্টতার,
বলে, এইটাও
জানো না তুমি!
জানা’র খবরে
মুর্গির খোঁয়ার থিকা
চোখ খুলে তাকায়
একটা এগ,
লাল কুসুমের সূর্য
শচী’র আঙিনার মাঝে
গৌর চাঁদ হয়া
নাচতে থাকে
কোরান তেলওয়াতের সুরে
রইদে ঝিলমিল করে রে
রইদে ঝিলমিল করে রে
আর
সকালের ভিতর চোখ বন্ধ করে শুইয়া থাকে অনেকগুলা সকালের চোখ

গান ২১

জ্বর আসলে
ঝন ঝন কইরা উঠে শরীর
বুঝা যায় এই শরীরও এক্টা মেশিন
বাজতে থাকে বাজতে থাকে
আনটিল দ্য মিউজিক এন্ডস

গান ২২, হাউল

বিরহ চুদতে চুদতে
বিরহ চুদতে চুদতে চাঁদ
গাইতেছে গান
আমি তার গলিতে যাইবাম

কুত্তাগুলা হা হয়া শুনতেছে
চান্দের এই হাউল
আর বেগম আখতার

বাইজাই যাইতেছে
টুংটাং টুংটাং টাংটুং

গান ২৩

ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজতেছিল
হিন্দি গান, ব্যান্ড-সংগীত আইসা
বলছিল একটা সময়,
বাংলা-গান’রে বাঁচান!

এখন ক্যাসেট প্লেয়ার-ই নাই,
হেডফোন ঝুইলা থাকে গলায়
গাননাই নাইগান গানগান
বাজতে থাকে কলিজায়
আমাদের সাধের অন্তরায়

গাননাই নাইগান
আরো কতোকিছু
আরো আরো কতো
না-থাকা
গান

গান ২৪

I could sing you a song, play you a tune
I know it’s just a little thing, but it’s something I can do

/Ray LaMontagne

গ্রিন লাইনের বাস ড্রাইভার
বাজাইতেছে রবীন্দ্র সং
নাইটকোচে
সিলেট-চিটাগাং হাইওয়েতে
ফেঞ্জুগঞ্জ ফেরিঘাটে

আমরা দেখতেছি স্টেরি স্টেরি নাইট
হেডফোনে শুনি, এই তারা-ভরা রাতে…
পাশাপাশি সিটে বইসা থাকে
সারাজীবনের ৫০০ মাইলের ডিসট্যান্স

ফাইভ হান্ড্রেড মাইলস পার হওয়ার পরে
ডিসট্যান্স সবসময় ফাইভ হান্ড্রেড মাইলসই থাকে

গান ২৫

আমরা কথা বলি, কারণ
আমরা এখনো মরে যাই নাই

আমরা কথা বলি, কারণ
আমাদের আত্মা আমরা ভয়ের কাছে বেইচা দেই নাই

আমাদের কথা জালিমের কথার সাথে
সুর মিলায় না, আমাদের কথা
আমাদের বাঁচায়া রাখবে – এই আশা’তে
আমরা কথা বলি না; আমরা জানি
মইরা গেলে, আমরা আর কথা
বলতে পারবো না, আর
মরা আইডিয়ার মতো, মরা শব্দগুলার মতো
মরা একটা ভাষার মতোই
আমাদের কথাগুলাও মারা যাবে একদিন

কিন্তু আমাদের আত্মা জানে
যা কিছু সত্যি, আমাদেরকে তা বলে যাইতে হবে

আর যদি তা সত্যি হয়,
গান গাইতে থাকবে আমাদের কথাগুলিরে, বাতাসরে বলবে

শোনো! এই কথাগুলি হইতেছে গান, আমাদের…

গান ২৬

কতো কতো বই ছাপাইলাম আমি
শক্ত, ইটের মতন মোটা
কতো লাখ লাখ শব্দ
লেখলাম আমি, অরা সবাই
বোবার মতন আমার মুখের
দিকে তাকায়া থাকে;
যেন আমারে মাফ
করে দিতেছে, কোন
গভীর একটা পাপ,
গোপনে মুছে দিতেছে
আমার মনের
ভিতর থিকা, আর

বলতেছে, শোনো,
একটা না-শোনা
গানের মতন
হারায়া যাও
তুমি
এখন

গান ২৭, বয়ফ্রেন্ড

My heart is empty
But the songs I sing
Are filled with love for you

/NICO

লতিব্বাই
তো আমারে লাগাইতে চায়
আবার, সকালবেলায়
মর্নিং ওয়াকের পরে,
এইদিকে আমার বয়ফ্রেন্ড
যার বউ আছে ঘরে
মেসেঞ্জারে আমারেও
বিজি রাখতে চায়, অথচ
আমি যাইতে চাই
লতিব্বাইয়ের কাছে,
উনি উতলা হয়া আছেন,
মেসেজ পাঠান, তুমি কই!
এখনো সকাল হয় নাই তোমার!
লতিফের এই উতলা-ভাব
আমারে আরো হর্নি করে,
আসতেছি বইলা আমি
বাইর হয়া যাই পথে,
কি যে ভাল্লাগে আমার!
যদিও উনার বয়স হইছে
উনার আদর
ভাল্লাগে আমার;
আমার বয়ফ্রেন্ড
আমারে শিকল দিয়া
বাইন্ধা রাখতে চায়
কন্ট্রোল করতে চায়
আমার লাইফ,
লতিব্বাই
স্বাধীনতা আমার,
উনি বাথরুমে গেলে
আমি বয়ফ্রেন্ড’রে
মেসেজ পাঠাই,
মিস করতেছি তোমারে!
সে বলে, কালকে তো
দেখা হইতেছেই!
আমি জানি, আমি জানি
কিন্তু লতিব্বাই,
আবারো ডাকবে,
আবারও আদর
করবে এইরকম?
যদি উনিও বিয়া
করে ফেলেন,
বয়ফ্রেন্ড কি
হবেন আমার?

গান ২৮

ফাঁস আইসা লাগতেছে গলায়

এইবার আমি সাবধান,
আমি বলতেছি, গলায় ফাঁস
নিবো না আমি

আমি পানির তেষ্টায় মারা যাবো,
‘থাকতে নদী মেঘনা’

গান ২৯, ফুলবনের বাতাস

একটা ফুলবন
ফুলের ভিতরে
ঘুমায়া পড়তেছে

দুপুরের রইদ
আর ছায়া

একটা পর্দা
আড়াল কইরা রাখতেছে

যা কিছু দেখা যায়
যা কিছু দেখা যায় না
তার সবকিছু নিয়া

ঘুমায়া পড়তেছে
একটা ফুল

ফুলবনের বাতাস,
তারে তুমি জাগায়া দিও না!

গান ৩০, ফুল, পাখি, গান

একটা ধারণার মতন
মিনিংফুল
হয়া উঠতেছো না
কেন তুমি?
বললো একটা ফুল,
আর শে তাঁর
ঠোঁট
বাঁকাইলো,
যেন মিনিং
তৈরি হইলো কোন

আর
আসলো
একটা পাখি,
বসলো একটা
কোহেনের
একলা তারে,
কইলো শে,
তোমারে চিনি তো
আমি!
তুমি ভুল,
তুমি পারা
আর না-পারা নিয়া
কনফিউজড,
প্যারানয়া,
একটা দুপুরবেলা,
আজীবন,
থমকায়া থাকা

ধী রে ধী রে
তারা
বুইঝা ফেললো
আমারে,
একটা
ধারণার
মতন;
আর গাইতে থাকলো
তাদের
গান
আ মা র ই ম ত ন

গান ৩১, Mo Chuisle

আমি ধূলাতে মিশে,
বাতাসে ভেসে
জীবাণুর মতো ছড়ায়া যাবো

একদিন শ্বাসে, নাক দিয়া ঢুকে
ফাগুন নাইলে চৈত্র মাসে
রক্তের ভিতরে তোমার
ঘর বানায়া বসবো

তুমি শুনবা, নজরুল-গীতি
‘আমারে দিবো না ভুলিতে…’

এই গান শোনার আগে
একটা ‘তবু’ শব্দ ভাবারও আগে

আমরা বইসা থাকবো
জীবাণু হয়া, রক্ত হয়া,
আমাদের শরীরে…

গান ৩২, ছবির মতো সুন্দর জীবন

ইন্ডিভিজ্যুয়ালের মরা ছাড়া আর কি করার আছে! হিরো হওয়ার দিন তো শেষ! যতদিন বিপ্লব ছিল, মদ-গাঞ্জা-গান ছিল, জীবনে লাইফ ছিল। এখন, যেই নক্ষত্র ম’রে গেছে, তাহার গায়ের শীত, ইন্ডিভিজ্যুয়ালের শরীরে লাগতেছে। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন…’ এর তাজিয়া মিছিল দেইখা নিজের শরীর খামচাইতেছে। শেখ মুজিব’রে খুন করার পরে মেজর ডালিম তার দলের নাম রাখতেছে ‘ফ্রিডম পার্টি’। কবুতর উড়াইতেছে বিহারি ক্যাম্পের আকাশে আওয়ামী লীগের ক্যান্ডিডেট, পার্লামেন্ট ইলেকশনের আগে। ইন্ডিভিজ্যুয়াল শরতের মেঘ, বাচ্চা ছেলের মুতের মতন এতটু বৃষ্টি ঝরায়া বলতেছে, “লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির!” “কাশফুলের নরোম ছোঁয়া…” বইলা হাসতেছে ম্যাচিউর নারী ও পুরুষ, মদের আড্ডায়। দূরে, মইষের বাঁকা শিংয়ের মাথায় বইসা আছে চাঁদ। তারে ধরতে গিয়া শেয়াল ধরার ফান্দে পড়লো ইন্ডিভিজ্যুয়াল। “হাক্কা হুয়া, হাক্কা হুয়া…” বইলা চিল্লাইতেছে। আর আমরা ভাবতেছি, কি জানি গভীর ইশারা, এই জীবন! একটা ভালো সেক্সের পরে সেক্স পার্টনার দুইজন ফ্রেন্ড “যৌনতার ডিসকোর্স” নিয়া আলাপ করতেছে; জাগায়া তুলতেছে আমাদের শরীর; কিন্তু নিজেদেরকে জাগায়া তুলতে পারতেছে না। ঘুমায়া পড়তেছে ধীরে ধীরে, ধারণার ভিতরে। সকাল হইলে আবার ইন্ডিভিজ্যুয়াল হয়া উঠতে হবে, অদেরকে। যার যার গু তার তারেই সাফ করতে হবে। কেউ কারো জামিনদার হবে না, কোনদিন।

গান ৩৩, আমি তোমার গান গাই

আমি তোমার কাছে
যাওয়ার আগেই
পথ
আমারে নিয়া যায়
অন্য কোন পথে,
পথগুলা সরতে থাকে
অরা নিজেরাও জানে না
অরা কই যাইতে চায়

আমি তোমার কাছে যাই
পথ আমারে নিয়া যায়
অন্য কোথাও

আমি তোমার গান গাই
গানগুলা অন্ধ পথে পথে ঘুরে

দূরে, নদীর পাড়ে সন্ধ্যা ঘনায়
আমারে শে বলে বলে, চলো
তোমারে পারে লইয়া যাই

আমি দেখি তাঁর মুখ
‘বেতের ফলের মতন’ দুখী
নারিকেলের পাতার মতন টান টান
দুলতেছে বাতাসে

একটা গান তার পথ ভুইলা
তাউরাইতেছে, তাউরাইতেছে

আর বলতেছে,
এইটাই তো গান, আমাদের না-শোনার

লেকের পানিতে ভেসে ভেসে যাইতেছে
একটা মরা কড়ইয়ের ডাল

গান ৩৪, এই বইয়ের শেষ গান

অন্য সব ক্যাওসের মত
অন্য সব আওয়াজের মত

এই গানও থাইমা যাবে

যেইখানে কোন সময় নাই
যেইখানে কোন স্পেইস নাই

যেইখানে নাই কোনকিছুই

সেইখানে একদিন, কোন একটা সময়
জাইগা উঠবে আবার মনেহয়

অনেকগুলা বোবা পাথর
ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে

কোন এক বাতাসের কাছে
চইলা আসবে, বলবে
আরে, এই গান আমি তো শুনি নাই!

আলিফ লাম মীম
ওঁম ওঁম ওঁম
আনেক জাতি সন্তারম

আমি ভেসে যাইতেছি এইরকম
তোমার না-জানায়, তোমার জানতে চাওয়ায়
তোমার অতীতের ভিতর…

 

Leave a Reply