সামার ওয়াইন (গরমের দিনের শরবত)
রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়াইতেছি আমি
কয়েকটা কাঠাল-পাতার লোভে
একটা টুনটুনি আমার পিছন পিছন ঘুরতেছে
বলতেছে, এই ছাগল’টা আমার ক্রাশ!
চৈত্র-মাসের উল্টা-পাল্টা বাতাসে আমি
জৈষ্ঠ্য-মাসের স্বপ্ন দেখতেছি
লালমাটিয়ায়, মোহাম্মদপুরে…
বিকাল
দেয়ালে ঠেস দিয়া দাঁড়ায়া থাকা
তোমার আয়েসি ভঙ্গির মতো
রইদ আইসা বইসা আছে গাছের পাতাগুলাতে,
অনেকগুলা ধুলা-বালি ওড়তেছে, রাস্তার বাতাসে
কই যে যাবে তারা, কই যে যাবে…
শাহবাগের ছড়া ১
পুলিশ আমার ভাশুর লাগে
বাকশাল আমার বাপ
প্যার্টিয়ার্কির পুটকি চাটি
আমরা শাহবাগ!
কমদামি সবজি
বাজারে,
কম দামে
বেচা হইতেছে
কোন সবজি?
পুরুষ মানুশের
বিচি।
কইলো দোকানদারে,
আমার দুইটাও
ফ্রি’তেই দিতেছি
দুপুর
মনে মনে
আর ফুলে ফুলে
অনেকগুলা ভুল
দুলতেছে
চৈত্রের বাতাসে
ইফতার
অনেক ক্যালরি তো দরকার
এই কারণে অনেক কার্ব খাইলাম,
প্রোটিনও খাইলাম,
ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আরো কি কি জানি…
এতো কিছু খাওয়ার পরেও
শান্তি পাইলাম না তেমন, মনে হইলো
বুট, মুড়ি আর পেঁয়াজু-ই তো ভালো!
তুমি নিয়া লেখা কবিতা
তুমি হইতেছো ভ্যাকুয়াম আরেকটা
তুমি কালো ব্রিফকেস, অনেকগুলা টাকা
তুমি খয়রাতি মেগ, চৈত্রমাসের
তুমি সকালের ট্রাফিক জ্যামে বইসা থাকা ঢুলুঢুলু চোখ
তুমি উপমা
তুমি রিপ্লেসেবল ইমেজ বিলবোর্ডের
তুমি মিথ্যা-সংবাদ, একজন নিউজপ্রেজন্টারের নিজেরে সুন্দর দেখাইতে চাওয়া,
আরে নিউজ কি শুনবেন! আমার উচ্চারণ খেয়াল করেন,
আমারে দেখেন! বইলা কথার ফাঁকে ফাঁকে একটু একটু হাসা
তুমি হাসতে হাসতে হাঁসেদের পুকুরের পানিতে নাইমা যাওয়া,
উইঠা আইসা গা-ঝাড়া দিয়া বলা,
“জীবন তো কচুপাতার পানি!”
তুমি
তুমি হুমায়ূন আহমেদের পুরান নাটক, ইউটিউবে দেখা
তুমি অহেতুক রঙ
আজাইরা কথা
সকালের বিস্টিতে কারেন্টের তারে বইসা বইসা ভিজতে থাকা তিনটা কাক
তুমি অভাগা যেইদিকে চায়, সাগর শুকায়া যায় টাইপ
সাঁতরাইতে সাঁতরাইতে টায়ার্ড
দ্যান আরেকটা ভ্যাকুয়াম
ক্রিয়েট করতেছো নিজে নিজেই
তারপরেও
তুমি আমি হইতে পারতেছো না আর
আর আমি বলতেছি, তুমি সবসময়ই হইতেছো অন্য আরেকটা তুমি
তুমি হাসতেছো, চৈত্রের মেগের মতো সইরা যাইতেছো
রইদ আসতেছে, বাতাসও
আর এইসবও তুমি
“তোমার কথার ময়ূর-সিংহাসন আসে
একটি পদভারও সয় না আমার”
এইরকম পুরান কবিতা মতো
তোমার শরীরের গন্ধ আমার কবিতাতে থাকে
ফেইড হইতে থাকে, আর হারায়া যায়
কোন না কোন রিডিংয়ের ভিতরে,
ধুর, এইগুলা কোন কিছু হইলো!
যা কিছু হইতে পারে, তা-ও তো
তোমার মতো, অন্য কোন কিছুই
আছে বইলা নাই, আর নাই বইলা থাকতেছে
তারপরে বলতেছে,
“আমার আর ভাল্লাগতেছে না, বুঝছো!”
আর অইটুক ভালো-না-লাগার ভিতর
পুরা দুনিয়াটা গায়েব হয়া যাইতেছে
হয়তো অন্য কোথাও আরেকটা আমি’রে খুঁজতেছে,
আর পাইতে পাইতে খুশি হয়া যাইতেছে, বলতেছে, ফাইনালি!
আর কিছুদিন পার হওয়ার পরে দেখতেছে,
এত্তো এভারেজ জিনিসগুলা!
এত্তো অর্ডিনারি!
নেশা ছুইটা যাওয়ার পরে হ্যাং-ওভারের মতো বাজে
আরেকটা নেশার দিকেই ছুইটা যাওয়ার মতো
একটা চক্র, ঘুরতেছে, ঘুরতেছে, দুনিয়াটার মতো
তুমি একটা গোলকধাঁধা, একটা ট্রাপ
অথচ একটা সলিউশনের মতো অ্যাপিয়ারড হইতেছো
আমি দেখতেছি, গাছের পাতাগুলা কাঁপতেছে বাতাসে
বাতাস হয়া আমাদের শ্বাসে তুমিই তো আছো?
তুমি তাকায়া আছো, দেখতেছো,
চুপচাপ, অনেক অনেক কিছু ভাবতেছো
একটা কবিতার মতো নিরব, কিন্তু কথা বলতেছো
তুমি কথাগুলার মতো হারায়া যাইতেছো,
আমি ধুলার মতো, সময়ের মতো তোমার পিছন পিছন
যাইতে যাইতে হারায়া যাইতেছি, আর খুঁজতেছি তোমারে
কোথায় যে, কোথায় যে…
অথচ তুমি
আরেকটা নিরবতার মতো আমার কথার পাশেই থাকতেছো
আর আমি তোমারে দেখতেছি না,
একটা আন্ধারের মতন তোমার অন্ধকারের ভিতর ডুবে থাকতেছি
বলতেছি, এইটা এইটা তুমি
তুমি একটা ডিফাইনিং এটিটুড যেন!
সবসময় একটা নিয়মের পাশে একসেপশন হয়া আছো
তুমি, আছো তো? তাই না?
আর আমারেই তো ভাবতেছো?
যেইরকম অনেকগুলা পাথর
অনেক বছর পরে
ঝর্ণার মতো
ভেসে যাইতেছে
গানের সুরের মতো
কেউ শুনতেছে না যদিও
মানে, এর তো দরকার নাই কোন!
তুমি আমারে বুঝাইতেছো
আমি ডুবে যাইতেছি
ধীরে ধীরে…
একটা না-বুঝার ভিতরে,
তোমার
আর
আমার
আর ভাবতেছি তোমার কথা-ই
জবাফুলের গান
হলুদ ফুলে লাগে গো বাতাস
হলুদ আমার জবাফুল
উল্টা-পাল্টা বাতাসে যে দুলে
হলুদ আমার জবাফুল
হলুদ ফুলে লাগে গো বাতাস
বাতাস থামায় আমার মন
মনে মনে দুলতেছে দেখো
হলুদ আমার জবাফুল
হলুদ ফুলে লাগে রে বাতাস
হলুদ আমার জবাফুল
আফটার রেইন
অনেকদিনের বিস্টি আসছে
অনেকদিনের পরে
অনেক বাতাস উড়ায়া নিয়া আসছে
অনেক ধুলা,
অনেক ঘুমের পরে জিরাফের মত লম্বা লম্বা ঠাং ফেলে
হেঁটে যাইতেছে ইউরোপিয়ান মেয়েটা
আম্রিকান এম্বেসির পাশ দিয়া,
ভ্যান-ভর্তি অনেকগুলা মানুশ
বইসা আছে চোখে অনেক ঘুম নিয়া
চলে যাইতেছে গুলশান দুই নাম্বারের মোড়ে,
মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক জ্যাম শুরু হইতেছে খালি
আমি দেখতেছি অনেকদিনের বিস্টি
আসছে যে অনেকদিনের পরে
পাখি পাকা পেঁপে খায়
“হে গো ছুটলে পাখি ধরা দিবে না” – রাধারমন দত্ত
“এই পৃথিবী একবার পায় তারে – পায় নাকো আর” – জীবনানন্দ দাশ
২.
“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়” – লালন ফকির
“আমার মনে আছে এক নীলপাখি”- চার্লস বুকোউস্কি
লেনিন
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনেহয় আমিই পুতিন!
কাজের কথা
আমার আছে অনেক কাজ।
কাজগুলা কইলো, ঠিকাছে,
আজকে নাইলে থাক! তুমি
বারান্দায় দাঁড়াও, বিস্টি দেখো
একটু মন-উদাস হও আর
মন-খারাপ আর মন-ভালো
নিয়া ভাবো! আমি কইলাম,
না, থাক, আমার তো অনেক
কাজ! কাজগুলা উদাস হইলো
তখন, ওয়াটার-কালার পেইন্টিং
হয়া থাকলো। শাদা কাগজের উপর
তারা ছড়ায়া যাইতে থাকলো একটু
একটু আর রইদ উঠলে পরে শুকায়া
রইলো, বাতাস আইসা কাঁপাইলো।
অরা পইড়া থাকলো অদের মন-খারাপ
নিয়া, আমার কাজ হইলো না আর।
আমি ভাবলাম খালি, আমার তো
ছিল রে ভাই অনেক অনেক কাজ।
জুতার ফিতা
সকালবেলা, জুতার ফিতা
বাঁধতে বাঁধতে মনে হবে
হায়! এই জীবন কতো যে জটিল!
Leave a Reply