কবিতা লেখার দিন
কবিতা লেখার দিন
শেষ হইছে আমার
কয়েক বছর আগেই
কিন্তু অনেক সময়
শব্দগুলা এইটা বুঝতে চায় না
অরা কবিতার মতো একটা কিছু হইতে চায়
আর পরে মন-খারাপ করে
কয়, হ, শব্দগুলাই তো আর কবিতা না!
কবিতা হইতেছে এক তিল অন্ধকার, মনের।
দুপুরবেলা
বিশতলা বিল্ডিংয়ের
ছাদের কোণায়
একটা চিল আইসা বসে,
বইসাই থাকে
যেন কোন বুড়া বাপ,
বাঁইচা থাকতে থাকতে
টায়ার্ড
শীতের দিনে,
রইদ পোহাইতেছে
কবিতা-টবিতা, এইসব আর কি…
পার্ট ১
১.
সে এক আবুল হাসান আছে, কেবলই স্যাড হয়া থাকে
২.
আমি পত্রিকায় পত্রিকায় নিউজ ছাপায়া দিবো, তুমি শামসুর রাহমান
৩.
হেলাল হাফিজ নিবে, হেলাল হাফিজ, নানান রকমের হেলাল হাফিজ আছে
পার্ট ২
১.
মানুশ বড় অসহায়, তুমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় হয়ে তার পাশে দাঁড়াও
২.
আমি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হয়ে বসে থাকি, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা পড়বো বলে
৩.
এই নবারুণ ভট্টাচার্য আমার দেশ না
বিকাল
এইখানে বিকাল
কুমড়া ফুলের মতো
ম্লান
“তুমি আমি এক হইলাম না যৎ সামান্য ব্যবধানে“*
তুমি
আর আমি
একই না
তুমি, আকাশের ধারণা নিয়া
উড়তে থাকা পাখি
আমি, আকাশ বইলা কিছু না-থাকার রিয়ালিটি
তুমি আর আমি একই জিনিস নিয়া কথা বলতেছি,
একই শব্দ, একই কথা, একই ভাষা-ভঙ্গিমা, কিন্তু
তুমি আর আমি একই না…
…
*জালালউদ্দিন খাঁ’র লাইন
মেটামরফসিস
শুঁয়াপোকা’টা জানে না যে সে বাটারফ্লাই হবে,
কিন্তু বাটারফ্লাই’টা জানে যে সে শুঁয়াপোকা ছিল
ভালোবাসা
চিপা গলির ভাঙ্গা-রাস্তা দিয়া হাঁটতে হাঁটতে
ভালোবাসার কথা মনেহয়;
ছোট ছোট রেসিডেনশিয়াল বিল্ডিং, দুই রুমের ফ্ল্যাট
নিচে মুদির দোকান, রাস্তায় তরকারি’র ভ্যান
অফিস শেষে হাতে বাজার, হাসি-খুশি ক্লান্ত মুখ
দেখার পরে ভালোবাসার কথা মনেহয়;
দুই টাকার চাইরটা লজেন্স, দশ টাকায় দুইটা সিগারেট
একটা কোকের প্লাস্টিকের বোতল, দুইটা বিরিয়ানির প্যাকেট,
চায়ের দোকানের পাশ দিয়া ভালোবাসা হেঁটে যাইতেছে
আলু, পেয়াঁজ আর শীতের কিছু সব্জি নিয়া,
ফুডপান্ডার সাইকেল মোবাইল হাতে নিয়া এড্রেস খুঁজতেছে
ও, এইখানে পিজ্জার ভালোবাসা, এতো কাছে, আমি দেখিই নাই!
ভালোবাসা যাইতেছে রিকশা ও মোটরসাইকেলে,
হঠাৎ সিএনজি’র ধাক্কায় থামতেছে
চিপা গলির ভাঙ্গা রাস্তায়
পুরির দোকানের পুরিগুলা ফুলে উঠতেছে
ভালোবাসায়, শীতের সন্ধ্যাবেলায়
ম্যানহোলের খোলা ঢাকনায়, পা পিছলায়া পড়তেছে
হায়, হায়, আমাদের ভালোবাসাই…
মাছরাঙা পাখি
কতগুলা মাছ খাওয়ার পরে
মনে হবে আমার,
পানিতে সাঁতরাইতেছি আমি?
ব্ল্যাক মিরর
যা চাই না, তা তো পাই-ই
যা চাই, তা-ও যেন মাঝে-মধ্যে পাই
পাইতে থাকি আমারেই আমি বারবার
আর নিজেরে ঘঁষতে থাকি
একটা কালা আয়নার সামনে, সময়ের
মেটাফোর
শীতের দিনগুলা চলে যাইতেছে
যেন একজন ল্যাংড়া লোক খুঁড়াইতে খুঁড়াইতে হেঁটে যাইতেছে
সকালের রাস্তা দিয়া
কালাচাঁন
ধারণার ভিতরে বইসা থাকা
নরম কোমল সাপ
ডাকতেছে আমারে
বলতেছে, এতো দূরে দূরে
সইরা থাকলে কি হবে!
কাছে আসো, পাশে বসো
জাপটায়া ধরো আমারে,
কালাচাঁন আমার!
আমি ধারণা’র ঢোলে নাচি না
নাচতেছে কমলা-সুন্দরী
দুনিয়া ব্যাপিয়া
আমি তো অডিয়েন্স,
তোমারই একটা ধারণা!
জেমস বন্ড (প্রো) – বাংলাদেশি ভার্সন
মাই নেইম ইজ খান)
আমি একজন ইন্টেলেকচুয়াল
(আই অ্যাম অ্যা মুসলিম)
আমি জিয়াউর রহমান’রে পছন্দ করি
(বাট আই অ্যাম নট অ্যা টেররিস্ট)
কিন্তু আমি বিএনপি করি না
– শাহরুখ খান, বাংলাদেশ, ২০২২
মেটাফোর
একটা অন্ধকার ঘরে
কয়েকটা ইন্দুর খুঁটখুঁট করতেছে
যেন কিছু শব্দ কবিতা হয়া উঠতে চাইতেছে
আমাদের হাসি আসছে
ধরো, আমরাই আছি,
হাসাহাসি করতেছি,
শীতের দিনের বৃষ্টির মতো
বাড়াবাড়িই হইতেছে একটু,
কিন্তু কি করবো বলো!
আমাদের হাসি আসছে,
হাসতে হাসতে পানি পানি
হয়া যাইতেছি আমরা,
শীতকালও অবাক হইতেছে,
ইডিয়ট! জোকার!
বইলা গাইল দিতেছে
দুনিয়াতে কতো মানুশ না খায়া আছে,
কতো মানুশ ঠান্ডায় মারা যাইতেছে,
আর তোমরা হাসতেছো!
কিন্তু আমাদের দুনিয়াতে
আমরা ছাড়া আর কেউ নাই তো!
শীতকালরে আমরা কেমনে বুঝাই,
দুনিয়ারেই কেমনে যে বুঝাবো!
শীতের সন্ধ্যায়
যা কিছু নাই, তা তো আছেই,
যা কিছু আছে, তা-ও আছে, থাকতেছে
আমাদের বাঁইচা থাকা
শীতের সন্ধ্যায় নেমে আসতে থাকা শাদা কুয়াশার মতো
মিলায়া যাবে একটু পরে, অন্ধকারে, আবার
মেটাফোর
টিসিবি’র ট্রাকের পিছনের লাইনগুলা লম্বা হওয়ার মতন
বাড়তেছে জিডিপি’র নাম্বার…
রুমি’র আয়না
এইটা তো আমার চেহারা না!
এইটা কই থিকা আইলো!
কেউ ফটোশপ কইরা বসায়া দিছে নাকি
আমার ঘাড়ের উপর!
এই যে মেনিমুখ বিলাই
করুণ কুত্তা, রাস্তার
ধূর্ত শেয়াল, যার লেজ নাই
মিটিমিটি হাসি, ক্ষণিকের
স্যাড রিয়েল ফেইস
মানুশ, মানুশ ভাব
ফেরেশতা নাকি?
অথবা শয়তান…
কি কি যে এইসব
আমার ঘাড়ের উপর,
বসায়া দেয়া হইছে, আর হইতেছে
আর আমি বলতে পারতেছি না কিছুই!
এইটা তো আমার চেহারা না!
এইটা কই থিকা আইলো!
Leave a Reply