কবিতা: জুলাই, ২০১৭

মিথ্যাবাদী রাখাল

মিথ্যার নদী সাঁতরাইয়া পার হইলাম
মিথ্যার পাহাড়ে উইঠা বইসা থাকলাম
মিথ্যার সাগর-পারে বইসা মিথ্যার সূর্যরে কইলাম, নিইভা যান…

মিথ্যার বৃষ্টিতে মিথ্যার রাস্তাতে হাঁটলাম

মিথ্যার সকালবেলায় নিজেরে একটা মিথ্যা বানায়া জাগায়া তুললাম…

মিথ্যার বাঘ আইসা বলবেন আমারে, ‘মিথ্যাবাদী রাখাল!
আরো অনেক অনেক মিথ্যা আপনি বলেন আমারে
যেন তারা সত্যি হয়
এইরকম সুন্দর সুন্দর মিথ্যার মতোন!’

 

যে কোন কিছুই

অ্যাভারেজ একটা দিনের শেষে অ্যাভারেজ একটা সন্ধ্যা

অ্যাভারেজ একটা বার, ঢাকা শহরের
অ্যাভারেজ কোন ড্রিঙ্কস
মানে যা যা হয় আর কি, যা যা হইতে পারে আর কি…

‘সবকিছুই অনুমান কইরা ফেলা যায়, বুঝছিস?’,
বিচার কইরা যাইতেছে পাশের টেবিলের কয়েকটা কিশোর মদখোর
আর বলতেছে অদের অ্যাভারেজ প্রেমিকাদের কথা…

অ্যাভারেজ টিভি’তে বাজতেছে অ্যাভারেজ হিন্দি গান

অ্যাভারেজ একটা শাদা কাপড়ে
লাল সুতা দিয়া করা অ্যাভারেজ একটা কাজ
অ্যাভারেজ একটা মেমোরি’র
অ্যাভারেজ একটা লাইন
অ্যাভারেজ একটা হলুদ দেয়ালে টানানো:
‘বন্ধু, ভুইলো না আমায়!’

অ্যাভারেজ কোন নাটকের অ্যাভারেজ কোন সিন

অ্যাভারেজ রাস্তায় অ্যাভারেজ বৃষ্টির পানি
অ্যাভারেজ কিছু প্রেমের কবিতার মতোন
শুকায়া যাবে যারা সকালের রইদে
অ্যাভারেজ আরেকটা দিনের ভিতর

অ্যাভারেজ কিছু টাইম, কথা-বার্তা, হল্লা-চিল্লা…

কে যে কার কথা শুনতেছে
কে যে কেউ কেউ হইয়া বইসা আছে

আমাদের অ্যাভারেজ মন, অ্যাভারেজ সেই কথা যেন জানতেই পারতেছে না

অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকের অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকার রেফারেন্স ছাড়া…

 

আমার তালগাছ

আরো কিছু অবদমন
বিলের পাড়ে
একটা তালগাছের আগায়
কয়েকটা তালের
আধা-পাকা তালশাঁসে
ঝুইলা আছে

গলির মোড়ে
ফলের ভ্যানে
সেই তালশাঁস
দেইখা
ফ্রয়েডের ভাঙ্গা-চোরা
আধুনিক ফিমেইলের মনে-

হয়,
আরে!
আমারও তো আছে
তালগাছ,
যদিও সেইটা
দূরে আর
গ্রামে…

 

অনেক অনেক দিন

অনেক অনেক দিন পরে মনে হবে
অনেক অনেক দিন তো
পার হইলো

অনেক অনেক দিন পরে
অনেক অনেক
দিন

অনেক অনেক দিনের কথাই আবার
মনে হইলো
ধরো…

 

মন

মানুষ যে কেমন!
দুইটা দিন আরেকটা মানুষের সাথে থাকলেই
সাথের মানুষটার মতোন হইতে থাকে চেহারা,
মন

তাকানোই যায় না…
মনে হইতে থাকে, যে আছে, সে তো আছেই
যে নাই, তার সাথেই

মানুষের চেহারা যে কেমন!

খুব কমন, খুবই কমন…

 

এই বৃষ্টির ভিতর থিকা আমি

এই বৃষ্টির ভিতর থিকা আমি তোমারে বাইর কইরা নিবো
এই বৃষ্টির পানির ফোঁটার ভিতর আমি বইসা থাকবো
টুপটাপ পানিগুলা মাটিরে কইরা ফেলবে কাদা কাদা
পিছলা খায়া পড়বা না তুমি, ধরে ফেলবা প্রেমিকের হাত
হাইসা দিবা… বৃষ্টির ভিতরে এইসব কল্পনা করতে করতে
তুমি বাইর হইয়া যাবা, বৃষ্টির ইল্যুশন থিকা, বাস্তবতায়…

 

না-থাকা

ঘুমের ভিতরের নিরবতা দিয়া কিনলাম এই এইটুক টাইম
ফুটপাতে কাইত হয়া শুইয়া রাস্তার সাইডে জমা বৃষ্টির ঘোলা পানিতে তাকাইলাম
দেখি, পানির ভিতর দেখা যাইতেছে আরেকটা রাস্তার পাড়
জড়াজড়ি কইরা শুইয়া আছে দুইজন, রাতের বেলা আরো কয়েকজনের সাথে,
বলতেছে অদের প্রেমের কথা, ফিসফিস করতে করতে,
একজন আরেকজনের বুকে পেটে হাত দিতে দিতে;
এনাফ হইতেছে না যখন ভাবতেছে তখন উইঠা পড়লো অরা
অ্যাভারেজ ডেইলি লাইফের আলাপ করতে থাকলো অরা
একটু দূরে হাসপাতাল, কিডনি বেচা যায়…

অদের কথার ভিতরে মেলানকলিটা আমি, কথার ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে
কথার ভিতরে হারায়া যাই

কই কই যে চইলা যাইতে পারে ঘটনা, ভাবতেছিলাম মনেহয়

ঘুম ভাঙ্গার পরে আরেকটা ঘুমের ভিতর
পাহাড়ের নিচে, লম্বা টিকিটের লাইন, তিনটা
সবচে বামদিকেরটাতে খেয়াল করতে গিয়া দেখি সামনে
একটা বাচ্চাছেলের মতোন দাঁড়ায়া আছি আর তখনই
তরুণী মেয়েটা আসলো, বললো দেরি যে হইছে এইটা শে
ইচ্ছা কইরা করে নাই। আমি বুঝতেছিলাম না চইলা যাবো কিনা
নাকি আমরা একসাথেই যাবো একটা পাহাড় থিকা আরেকটা পাহাড়ের
রোপওয়েতে; কিন্তু টিকিট পাইতে তো সারাদিন লাইগা যাবে…
আর তখনই খুব হাসি-খুশি এক ইয়াং পোলা লাইনটারে ধাক্কা দিতে লাগলো
অন্য দুইটা লাইনের লোকগুলি স্থির, আর আমাদের লাইনে হল্লা-চিল্লা, ফূর্তি
আগাইয়া যাইতে থাকলো, আরো দ্রুত, আরো দ্রুত, আরো…

আর আমি সেই ফূর্তি হইয়া বাইর হয়া গেলাম

আমি সেই মেলানকলিয়া, একটা পাহাড় থিকা আরেকটা পাহাড়ে যাওয়ার
না-থাকা রোপওয়ে, থাইকা গেলাম

 

ডিটাচমেন্ট

আমি ঘুমাই আর
স্বপ্ন দেখি তোমারেই, দেখি
একটা ক্যাকটাস গাছে
সবুজ কাদার মতোন গাঁদ
মোটা পাতার নিচ দিয়া
নিয়া যাইতেছে কচি কচি
কাঁটাগুলি

অন্ধকারে পার্পল আলো,
একটা ঘরের ভিতর
কয়েকজন মানুষ ঘুরতেছে…
অ্যাক্ট করতেছে
আমাদের রোলে

অনেক চেষ্টা কইরাও
আমি
তোমার মুখ
দেখতে পাইলাম
না।

 

বদ্রিয়াঁ

ম্যাসকুলিনিটিরে রেখো না মনে

 

Leave a Reply