কবিতা: ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নোও দাইসেলফ

আমরা কি জানি না?
আমরা তো জানি।
আমাদের জানা-বোঝা-ই দেখি
আমরা বানায়া রাখে আমাদেরকে

আমরা কুয়াশায় হাঁটি
আমরা টের পাই বাতাস
চেইঞজ হইতেছে ধিরে ধিরে
বাতাস আইসা থাইমা থাকতেছে
একটা মোমেনটে আমাদের দমে

আমরা জানি, আমাদের জানা’রে
পুরাপুরি জানতে পারতেছি না আমি
দমে দমে দম ফেলার-ই ফুসরত নাই
দমে দমে মনরে বলি, বলো,
“লা ইলাহা ইললাল হু মুহামমদুর রাসুলললাহ…”

দম ফুরায়া যায়, আমাদের জানা শেষ হয় না

এইখানে

এইখানে বিকাল, এইখানে সনধা
এইখানে ছাদ, এইখানে কার্নিশ,
এইখানে এইখানে আরে একটা কাক

এইখানে ভালোবাসা, এইখানে চুপ কইরা থাকা
এইখানে ধিরে ধিরে চলে যাইতেছে সময়
এইখানে ব্রিজের গোড়ায়,
পানি ঘুরতেছে ড্রিমের ভিতর; কার?

এইখানে, এইখানে তুমি বসো
এইখানে বিকালের রইদ, এইখানে সনধার বাতাস

কবিতা কোমপানি পাবলিক লিমিটেড

ভাষা এমনিতেই বাঁকা, তারে আর বাঁকানোর দরকার নাই কবিতাতে, বরং নানান লেয়ার তৈরি করার নামে সিউডো-গভিরতা অনেক হইছে, cliche’র লেভেলও পার হয়া গেছে আসলে; ‘অনেক কথা বইলা কিছুই না-বলা’ জিনিসটা অনেকটা বাকশালি-নিউজগুলার মতো ‘মিনিংলেস’-ই না খালি, পলিটিকালি ill-motivated একটা ঘটনা; এমন একটা কালচারাল কারখানা, যা মানুশের কথা-বলার জায়গাগুলারে নিরবতার ভিতর ঠেইলা দেয়ার দিকে আগায়া দিত আগে, কিনতু এখন চুপ করায়া রাখতে চায় – এইরকম ইভিল জায়গাতে গিয়া রিচ করছে।

অনেক সময়, বাইরে থিকা মনে হইতে পারে, দুনিয়া মালটি-লেয়ারড, কিনতু ইন ইটস কোর এইখানে শাদা আর কালা’র জায়গাটা আছে, যেইখান থিকা কালারগুলা তৈরি হইতেছে; অইখানের পজিশনটা না নিতে পারাটা পলিটিকাল ইন-এবিলিটি না, পোয়েটিক ইন-জাসটিসের ঘটনা; অইটাতে না পৌঁছায়া কবিতা লেখা যায় না; মানে, এইখানে একজন কবি’র কথা-ই বলতে চাইতেছি আমি, ভাষা ও আইডিয়া নিয়া টেকনিকালি-স্কিলড কিছু লোকের কথা না…

এইখানে আমি টি.এস.এলিয়ট ভারসেস পাবলো নেরুদা’র ঘটনারে রেফার করতেছি না, যেইখানে ট্রেডিশন থিকা সরতে পারাটারে পিপল থিকা ডিটাচড হইতে পারা হিসাবে দেখা হইছিল, বা পিপলের সাথে এনগেইজমেনটের জায়গাটারে মবের কাছে সাবমিট করা হিসাবে দেখা হইছিল; অই ‘তর্ক’ পার হয়া আসছি আমরা; বা লোরকা যেই ‘দুয়েন্দে’র কথা কইতেছিলেন, সেইটা আর ম্যাজিক না কোন, একটা এসকেইপের জায়গা-ই; মানে, অই বেইজ থিকা কবিতারে দেখতে যায়-না না, অই দেখাটা অনেককিছুরে মিস কইরা যায়, যা আর রিলিভেনট রাখতে পারে না নিজেরে; কবিতারে জাসট একটা টুল বানায়া রাখে…

অই জায়গাগুলারে মার্ক না কইরা, দেইখাও না-দেখার ভান কইরা থাকতে পারাটা, একনোলেজ না-করাটা এভারেজ ভালো-কবিতা লেখা কনটিনিউ করতে থাকাটা ভাড়া-খাটা ইনটেলেকচুয়ালদেরই জাসট একটা একসটেনডেড উইং, এর বেশি কিছু না।

এই বইলা ‘সিরিয়াস-কবিতা’ বাদ দিয়া ‘পপুলার-কবিতা’ লেখতে থাকবো আমরা – এইটা জাসট একটা টিটকারি মাইরা কনফ্লিকটের জায়গাটারে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই একটা; ডিসিশান দেয়া যেমন কবিতার কাজ না, একইভাবে একটা ইন-ডিসাইসিভ মুড’রে এনেবল করাটাই কবিতার ঘটনা না; ইন প্লেইন সাইট মনে হইতে পারে, এইগুলা জরুরি কোন জিনিস তো না-ই, বরং ফাঁপা কিছু আলাপ, কিনতু যেই জায়গাগুলারে আমরা খেয়াল করতে রাজি না, সেই জায়গাগুলা নাই না, বরং আমাদের না-খেয়াল করতে পারার বা চাওয়ার ঘটনাই…

কবিতা, এমনকি যে কোন কিছুই, যা আমরা জানি, সেইটা একটা না-জানার ঘটনা না, অনেক সময় জানার জায়গাগুলারে একরকম ঢাইকা রাখার ঘটনাও হয়া উঠতে পারে; মানে, জানা এবং না-জানা, দেখা এবং না-দেখার মধ্যে একটা পর্দা তো আছেই, কিনতু শব্দের কাজ কোনকিছুরে গোপন করা না, বা একটা বলার ভিতরে তারে ন্যারো কইরা তোলা না, রিভিল করার ঘটনা; এইটা পুরানা কথা, কিনতু তাই বইলা মিথ্যা না আর কি…

আমি বলতে চাইতেছি, কবিতা – যা আমরা আন-ডিফাইনড, ম্যাজিকাল কোন ঘটনা বইলা মনে করতে চাই, এর এগেনেসটে টেকনিকাল বা মেথডলজিকাল কোন জিনিস তো না-ই, বরং এই যে বাইনারি’ ভিতর তার আলাপটারে আটকাইতে চাওয়া, এমনকি মালটিপ্লিসিটি’র ভিতরে তারে ছড়ায়া দিতে চাওয়া, সেইটা কবিতার কোর এনগেইজমেনটের জায়গাটারে বেশিরভাগ সময়ে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই হয়া উঠে কিনা, সেইটা খেয়াল করাটা যে কোন সময়ের চাইতে এখন জরুরি একটা ঘটনা…
যদিও এই কথাগুলা ইসপেসিফক না হইয়া একটা ওভারঅল ইসটেইটমেনট হইতে গিয়া, আরো ঝাপসা হইছে, আরেকটা ক্লিশে হওয়ার দিকেই রওনা হইছে, তারপরও বলতে-পারাটা, বলার ইচ্ছাটা নিরবতার চাইতে বেটার না হইলেও, অনেক হাউকাউয়ের ভিতরে হারায়া গেলেও, এই ট্রাই করাটা আমরা বাদ দিয়া দিতে পারি না; একটা জানা দিয়া যেমন কমপ্লিট হয়া থাকতে পারি না, একটা না-জানা দিয়া এমপটি হয়া থাকাও পসিবল না…আমরা জানি যে, আমরা জানি না; আর সেই না-জানাটারে আর্টিকুলেট করার ট্রাইটা কইরা যাইতে হবে

অনেক না-বলার জায়গাগুলার ভিতর দিয়া কোন একটা কিছু বলার জায়গাটাতে যাওয়ার দিকে যাইতে হবে আসলে; কবিতা একটা টুল না, শব্দের; মিনিংয়ের বাঁইকা যাওয়াটারে সোজা কইরা দেয়া না, ডেফিনিট কইরা তোলা না, বরং আমাদের কথাগুলা যেন তার মিনিংগুলারে হারায়া না ফেলে, সেই কোশিশ করতে থাকার ঘটনা, এই জায়গা থিকা দেখলে।

গাছের ছায়া

গাছটার নিচে দাঁড়াও
তোমার সাথে গাছটার একটা ছবি তুলি

গাছটার কথা আমাদের মনে থাকবে,
গাছটাও মাঝে-মধ্যে আমাদের কথা ভাববে

আমাদের মতো আরো কেউ কেউ
গাছটার সাথে ছবি তুলবে,
তারাও গাছটার কথা মনে রাখবে মেবি
গাছটাও ভাববে তাদের কথা,
হয়তো একটু প্যাঁচ-ট্যাচ লাগায়া ফেলবে
তারপরও মনে তো থাকবে

একটু তেরছা হয়ে আসতেছে রইদ
নিভে যাবে একটু পরে

আমরা মারা যাবো,
গাছটাও মারা যাবে

আমি আর আমার তালগাছ

আবার ভাদ্রমাসে, দেখা হবে, তোমার সাথে আমার
তালগাছ, তাঁর গাল ফুলায়া বলে আমারে

যেইখানে রইদ নাই, ছায়া নাই, উইড়া যায় বকপক্ষী
তা-ও অনেক দূরে, আমরা দেখি

আমি আর আমার তালগাছ, আমাদের দূরত্ব বুঝি
আর বলি, ভাদ্রমাসের রইদে আবার দেখা হবে তাইলে

একটা প্রেমের কবিতা

আমি তোমাকে ভালোবাসি
এই ভালোবাসা নরোম, পুরাতন, আর একটু ভারীও

কিন্তু তোমাকে ভালোবাসতে পারার মতো জরুরি

বাতাস বইতেছে ধিরে, চুপ হয়া আসতেছে
আমি তোমাকে ভালোবাসি – এইরকম ফিস ফিস করে বলতেছে

যেন এই ভালোবাসা, আমাদের মতোই ফ্রেজাইল, লোনলি
কিনতু বাঁইচা থাকার মতোই ইমপসিবল, এবং অবিশ্যসমভাবি

সেই ভালোবাসা, হাসতে হাসতে বলতেছে,
আমি তো তোমারে ভালোবাসি!

কবি ও কবিতা

বগলে কবি
নিয়া ঘুরি

কবি যেন মৌমাছি
গুনগুন করে গুনগুন করে
আমার ভালো লাগে না যে…

যেমনে নাচে রাই
তেমনে সে নাচতে চায়

চাইতে চাইতে সনধা
সূর্য ডুইবা যায়

বগলের গনধে
আমার আর ভালো লাগে যে
চল আমরা ড্রেনের পানিতে সাঁতরাই

কবি বলে কবি বলে
বুড়িগঙগার পাড়ে
সদরঘাটের কিনারে
দাঁড়ায়া থাকি

ঘুরি ঘুরি
যেন ঘুড়ি
উদাসি বাতাসে

‘বগলে মে ইট
মুহ্ মে শেখ ফরিদ’

মেটাফিজিকস

দাজ্জাল-ই ব্লাকহোল? নাকি ব্লাকহোল-ই দাজ্জাল?

এই কোশচেনের সামনে দাঁড়ায়া
তোতলাইতেছিল থিওলজি আর সাইন্স

দখিনা বাতাস

বাতাস বাউলি মাইরা ঘুরে গেছে
উত্তর থিকা দকখিনে

কয়দিন ধইরাই ঘুরতে চাইতেছিল,
পারতেছিল না, থম ধইরা ছিল
অনেক বাতাস পারবোও না, তারা
ঝড় হয়া আসবে চৈত্র মাসের

একটা বাতাস চলে আসছে আগে
সামনের গাছ’টা পাতা নাড়ায়া হাসতেছে,
দেখো, আসছে আমার নাগর,
রসের ঢেউ নিয়া, এতোদিনে

চালের আড়ত

নিম্ন-মাধ্যমিক চালের আড়তে
আমি ইনদুর নতুন

এতো এতো ধান-চাল!
বস্তা বস্তা পাহাড় সমান!
আমি দেইখাই কুলাইতে পারি না

আমারে দোস্ত বলে, এইগুলা তো কিছুই না
এইরম আরো আছে, পুরা গলির সব গোডাউনগুলা

‘রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হলো সারা’

ধানখেত থিকা এইজন্য আমরা
চলে আসছি চালের আড়তে

খাইতে খাইতে আমরা টায়ার্ড, ঢেকুর তুলি,
আর বলি, কি উইয়ার্ড! কি উইয়ার্ড এই দুনিয়া!

বাতাসের সুর

কেউ যখন আমারে পছন্দ করে,
তখন তার থিকা আমি দূরে থাকতেই পছন্দ করি,
আর কেউ যখন আমারে হেইট করে
তার তো ছায়াও মাড়াইতে চাই না আমি;
আমার ধারনা, মানুশ-জন এইটা বুঝে
আর বুঝে বইলা তারা আমার কাছ থিকা দূরে দূরেই থাকে

এইরকম ডিসটেনস ভালো, কিনতু তারা
দূর থিকা মেবি খেয়ালও করে মাঝে-মধ্যে
আম খাইয়া আমের আঁটি’টা ছুঁইড়া মারে আমার দিকে

আমি কোন কথা বলি না, মানে, কি বলবো আমি তাদেরকে…

তারপর তারা আমারে ইগনোর করে
যেন আমি মারা গেছি, কারন
মানুশ-জন তো বাঁইচা থাকে কোন না কোন
যোগাযোগ, এনগেইজমেনট আর ইনটার-একশনের ভিতর দিয়াই!

আমি নিজের সাথে কথা বলি,
আমি নিজেরে বলি, শোন, মানুশের সাথে কথা-বলার
জায়গাগুলা আমি অনেকদিন আগেই হারায়া ফেলছি,
তারা এমনভাবে কথা বলে, যেন তারা আরেকটা মানুশেরই ছায়া, ফটোকপি;
আর এই ফটোকপিগুলা খালি কথা বলতে চায়
কথা বলতে বলতে সময়টারে পার কইরা দিতে চায়!
অরা ভয় পায়, যদি কোন কথা না বলে, তারা যেন মারা যাবে,
বা মানুশ-জন যেন ধইরা নিবে তারা মারা গেছে,
এই ডর থিকা তারা খালি কথা বলে, কথা বলতে থাকে…

কাউরে পছন্দ করে, কাউরে অপছন্দ করে
কাউরে অরা অনেক অনেক ভালোবাসে
কাউরে অরা অনেক অনেক হেইট করে
সবার দিকেই কোন না কোন ফিলিংস অদের আছে,
ভালো-লাগা আর খারাপ-লাগায় তাদের জীবন তারা
পার করে দিতেছে; তারপর মেশিনে মেশিনে
আরো আরো ফটোকপি’র মতো তারা ছড়ায়া যাইতেছে

আমারে দেখলেই জড়ায়া ধরতে চাইতেছে,
বা অনেক সময় খেইপা যাইতেছে,
হেই, হেই ইউ, তোমার এতো দেমাগ কিসের!
তুমি তো আমাদের মতোই, অথচ ভাব ধইরা আছো
যেন সামথিং ডিফরেনট!
একটা কাগজই তো তুমি! কিছু আবোল-তাবোল লেখা!
যেইরকম আমি, যেইরকম আমরা…

বলতে বলতে অরা হয়রান হয়া যায়,
তারপর একসময় ইনটারেসট হারায়া ফেলে

অন্য কোন বাতাস আইসা নিয়া যায় তাদেরকে
অন্য কোন দিকে;

আমি জিগাই বাতাস’রে, হেই বাতাস,
কোন মেঘ নিয়া আসতেছো তুমি আজকে? বিস্টি কতো দূরে?

বাতাস হাসে, বাতাসের সুরে

বাতাসের সাথে কথা বলি আমি
বাতাস আমারে বলে, এই টুক নিরবতা-ই আছে খালি
তোমার আমার মাঝখানে

ডাক্তারের ফি দেয়ার জন্য আমাদের রোগ’গুলা জনম নিল

আমি তারে জিগাইলাম, আপনার শরীর এখন কেমন?

উনি কইলেন, আমি তো মারা গেছি, দুইদিন আগে,
তুমি তখন জিগাও নাই, এই কারনে এখন জবাব দিতে আইছি

শবনম

‘তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না’

‘তুমি আমার মিলনে অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না’

‘তুমি আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না’

Leave a Reply