পতেঙ্গা
তুমি কথা বলতে পারো, কিন্তু সেই কথা সাগরে হারায়া যায়
কোথাও কোন একটা ফুলে, গাছের পাতায়, সূর্যাস্তে তোমার চোখ আটকায়
স্মৃতিগুলি তুমি মনে রাখতে রাখতে একদিন স্বপ্নের মতোই ভুলে যাবা
যা কিছু আছে বইলা থাকে – থাকে না আর;
যা কিছু’র না থাকতে থাকায় অভ্যস্থতা আসে তোমার
তাদের কথা তুমি বলতে পারো,
বিয়ারের গ্লাসে বুবুদ্ব উঠে, উপচায়া পড়ে;
কিন্তু তারা হারায়া-ই যায় শেষে, সাগরে…
#পকেটমার #আড্ডা #ব্যথা #মুরাকামি #কাব্য #ভুল #লাশ #ঠান্ডা
একবার এক পকেটমারের সাথে আলাপ হইছিলো, এক আড্ডায়। সে কইতেছিলো, ধরা পড়ার পরে মাইর খাওয়ার সময় প্রথম কয়েকটা কিল-ঘুষি-লাত্থিতে মারাত্মক ব্যথা লাগে। পরে শরীরটা আটা-ময়দার মতো হইয়া যায়। মাইর পড়ে ঠিকই শরীরে। কিন্তু সেনসেশন আর কাম করে না। অনেক দূরের ব্যাপার মনেহয়। তো, একই রকমের কথা হারুকি মুরাকামিও কইছেন একটু কাব্যিক কইরা। আমি খালি একবার ভুল কইরা ভাবছিলাম, লাশটারে যে ওরা বরফ দিয়া রাখে, লাশটার কি ঠান্ডা লাগে না?
কুরবানি
‘তোমারে দেখলে আমার ভয় করে!’ বইলা শে আমার ঘাড়ে একটা কোপ দিলো। আমি দুইভাগ হইলাম। শে কয়, মরলা না তবু তুমি! কাইটা টুকরা টুকরা করবো আমি তোমারে! ষোল থিকা বত্রিশ, চৌষট্টি, ছিয়ানব্বই টুকরা হইলাম। তারপর শে তাল তাল মাংসের দিকে তাকাইলো। কইলো, ‘তোমারে দেখলে আমার ভয় করে!’ মাংসগুলি আমার তখনো হাইসা উঠতে চাইলো একটু।
আলো-অন্ধকারে যাই
আলোর ভিতরে নিভে যাইতেছে অন্ধকার
অন্ধকার দেইখা আমি বললাম তোমারে,
‘আসো আমরা কিস করি!’
ঠোঁটগুলি আগায়া আসলো আমাদের
একটা ডিপ অন্ধকার ক্রিয়েট করতে চাইলাম
আমরাও
চারদিকে সন্ধ্যার আলো
আলোর ভিতরে ধীরে ধীরে নিভে যাইতেছিলো, অন্ধকার…
ফাস্ট ট্র্যাক
টাইম আইসা বলে আমারে,
‘আমারে ধইরা রাখো!’
টাইমের গায়ে হাত দিয়া
দেখি আমি,
টাইম নাই কোন
একটা মিথ্যার ঘড়ি
কব্জিতে জড়ানো
তাঁর
হলুদ পাতাগুলিরে
গাছ থিকা সরায়া ফেলতেছে বাতাস
খয়েরি হওয়ার পর
মাটিতে মিশে যাবে
টাইমের ভিতর বইসা থাকতে থাকতে
হাঁসফাঁস লাগে
টাইম আইসা বলে,
‘ধইরা রাখো আমারে!’
মাফ
প্রতিবার তোমারে আমি মাফ করে দিই,
প্রতিবার আমারে তুমি
পান থিকা চুন খসার পরে
ফ্লাইওভারের উপর থিকা নিচে থুতু ফেলতে ফেলতে
একটা লম্বা দুপুর একলা একলা শুইয়া থাকতে থাকতে আর কিছু না ভাবতে চাওয়ার ভিতরে…
আমারে মাফ করে দিতেছো তুমি প্রতিবার
প্রতিবার তোমারে আমি
‘তোমারে কোনদিনই মাফ করবো না আমি’
বিড়বিড় কইরা বলতেছি তারপরেই,
তার একটু পরেই
পায়েদের কথা
তোমার ঠ্যাং আইসা বলে
আমার ঠ্যাং’রে,
‘পায়ের তলে মাটি কি আছে?
গ্রাউন্ড কই তোমার, আর্গুমেন্টের?’
‘তাইলে কি হাঁটতে যাইতে পারবো আমরা?
জুতা ছাড়া?’
আমি ভাবি, আমার ঠ্যাং
জিগাইতে পারবে হয়তো কোনদিন
তোমার ঠ্যাং’রে, এই কথা।
ফ্রিডম
চলো মাছ, অন্য পুকুরে যাই
এইটা, ওইটা
তোমার হার্শ আর হাস্কি বলা কথা
এই যে তোমার ঝিলের পানিতে ঝলমল চুপ কইরা থাকা
এই যে তোমার মন, মনোরোগ, প্যাটার্ন
ক্লেশ, বিদ্বেষ, জেলাসি, পেইন…
‘এই যে তোমার প্রেম,’
চাইনিজ সালাদে ক্যাপসিকাম
খুঁইজা পাওয়া…
ভুল
অনেকগুলি ভুলের ভিতর দাঁড়ায়া আছে অনেকগুলি ভুলগাছ
বিকাল,
একটু একটু ভিজা মাটি
পাতাগুলি সবুজ,
হলুদ,
গ্রে…
দুইটা শালিক, একটা চড়ুই
আর আশেপাশে
অনেকগুলি ভুল
অনেকগুলি ভুলের ভিতর দাঁড়ায়া আছে অনেকগুলি ভুলগাছ
দুপুরবেলা
একটা ইলিশ মাছ কিনলাম আমরা
আমাদের বিল্ডিংয়ের উপর দিয়া বিকট শব্দ কইরা বিমান উইড়া গেলো
তারপর কয়েকটা চড়ুইয়ের ডাকাডাকির ভিতর
দুপুর চইলা আসলো ঘরে,
ঘুমায়া পড়লাম আমরা
বাইরে, কি যে রইদ!
উড়তেছিলো পাতা, ছিঁড়া কাগজ, নগন্য একটা দুইটাকা…
সিলিং ফ্যানটা ঘুরতেছিলো, একলা
আশ্বিন মাস,
রাস্তায় তাও আছে প্যাকঁ-কাদা
‘ওইখানে থাইমেন না, ওইখানে থাইমেন না…’
বলতে বলতে রিকশাটা থামছিলো সাইডে
হন্তদন্ত ঠ্যাংগুলি হাঁটতেছিলো…
গাছটার ছায়া নিরব হয়া আসতেছিলো
একটা টি-স্টলের কাছে
আমাদের নিরবতাগুলি নিরবতার ভিতর দিয়া নিরবতার সাথে কথা কইতেছিলো
একটা সময় ঘুমায়া পড়লো অরাও…
চড়ুইগুলি ডাকতেছিলো একটু পরে পরে
স্বপ্নে? নাকি বাস্তবে?
আমি মনে-ই করতে পারতেছিলাম না
ফ্রয়েড
ফেইক ইজ হিজ ডেস্টিনি
একটা কবিতা
আমার আর কবিতা লেখার টাইম নাই;
আমার কবিতাগুলি অন্য কেউ লেইখা দিলেও হয়
টাইম নিয়া খুব যে টানাটানিতে আছি – তা না;
লিখতে ইচ্ছা যে করে না – তাও না,
কবিতার দিকে তাকায়া থাকতে থাকতে
কাহিল লাগে; বলি তারে,
‘আমি তো লিখবো না আর,
তুমি অন্য কারো কাছে যাও
আমি কবিতা লিখবো না আর আমার কবিতা
চুপচাপ বইসা থাকবো…’
একটা কবিতা গুটিশুটি বইসা থাকে
আমার কাছে আইসা
সে থাকে, না-থাকা একটা সন্ধ্যার মতো
কোন একটা ঘরের
বাইরে, দেখি না তারে আর আমি
ভাবি, ছিলো যে একটা থাকা, তারে আর
না ভাবি
ভাবনার ভিতরে একটা কবিতা, তারপরও
থাকতেই তো পারে…
লিখলাম না
Leave a Reply